যারা যুক্তিতর্ক ও জটিলতা বুঝেন কম এবং সরল বিশ্বাসী মুসলমান তাদের জন্য এই পোষ্ট পড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যারা দ্বিধা-দ্বন্দে রয়েছেন তারা পড়ুন।
بسم الله الرحمن الرحيم
قَالُوا سُبْحَانَكَ لَا عِلْمَ لَنَا إِلَّا مَا عَلَّمْتَنَا إِنَّكَ أَنْتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ (32(
অর্থঃ তারা বলল,আপনি মহান পবিত্র,আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন তাছাড়া আমাদের তো কোন জ্ঞানই নেই,নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী,অতিশয় প্রজ্ঞাময়।" (বাকারা:৩১-৩২)
আল্লাহ্ই সকল প্রশংসার প্রকৃত হকদার, অসংখ্য দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
আস্তিক ও নাস্তিকের মাঝে যুক্তিতর্কের প্রথম পর্যায়ে আস্তিক সাধারণতঃ এভাবে বলা শুরু করে যে, কোন কিছু শূন্য থেকে নিজে নিজে অস্তিত্ব লাভ করতে পারেনা।কোন ঘটনা বিনা কারণে হয় না। প্রত্যেক ঘটনা দুর্ঘটনার পিছনে অবশ্যই একটি কারণ আছে।কোন কিছুই এমনি এমনি হয় না, হতে পারে না। এটাকে বলে কার্যকরণ সূত্র । এটা এমন একটি স্বভাবজাত বিষয় যা একটা পাগলও বুঝে, এমনকি চতুষ্পদ জন্তুরাও বুঝে।পুরা বিজ্ঞান এই কার্যকরণ সূত্রের উপর দাঁড়িয়ে আছে। খেয়াল করুন ,যে ঘটনাটা মাত্র ঘটলো বা কোন একটা কিছু আগে ছিলনা এখন হলো,সেক্ষেত্রেই বলা হচ্ছে যে অতি অবশ্যই এর পিছনে একটি কারণ আছে ।এটা হলো আস্তিকের যুক্তির প্রথম ধাপ,যাতে কোন সন্দেহ নাই।
এখন এই দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে আস্তিক ও নাস্তিকের মাঝে আলোচনাটা সাধারণত এভাবে অগ্রসর হয় যে,আস্তিক বলেঃ সুতরাং এই পৃথিবী ও মহাবিশ্বও এমনি এমনি হতে পারে না।অবশ্যই এর পিছনে একটি কারণ আছে।আর সেই কারণটিই হলো সৃষ্টিকর্তা।তখন নাস্তিক বলেঃ সব কিছুর জন্যই যদি একটি কারণ লাগে,তাহলে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব হলো যে কারণে,সেই কারণটির অস্তিত্বের পিছনে কোন্ কারণ রয়েছে? অর্থাৎ সহজ ভাষায়,সৃষ্টিকর্তাকে কে সৃষ্টি করলো?(সেই মহাবেয়াদবীমূলক প্রশ্ন)এবার আস্তিক বলেঃ জনাব!যেটা আগে ছিলো না,পরে হয়েছে সেটার ক্ষেত্রেই শুধু বলা হয়েছে যে,অবশ্যই এর পিছনে একটি কারণ আছে।সৃষ্টিকর্তা তো এমন নন যে,আগে ছিলেন না পরে অস্তিত্ববান হয়েছেন।সৃষ্টিকর্তা তো অনাদি।তাঁর কোন শুরুই নাই।তাই তাকে কে সৃষ্টি করলো এ প্রশ্নই অবান্তর।এখন নাস্তিক বলেঃ আচ্ছা!আপনি যদি সৃষ্টিকর্তাকে অনাদি ধরতে পারেন,তাহলে আমি কেন এই মহাবিশ্বকেই অনাদি ধরতে পারব না।তাই আমি বলছি এই মহাবিশ্বই অনাদিকাল থেকে বিদ্যমান আছে। সুতরাং এর অস্তিত্বের পিছনে অন্য কোন কারণ বা সৃষ্টিকর্তার প্রয়োজন নাই।এবার আস্তিক বলে ..................(২য় পর্বে আসছে)
উপরের এই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় আস্তিক-নাস্তিক উভয়ের যুক্তিতর্কের মধ্যেই বেশ ত্রুটি আছে। মনে হয়, সাথে সাথে জবাব দিতে গিয়ে তাড়াহুড়া করার কারণেই এরকম হয়েছে। এখন কথা হলো, কি ত্রুটি আছে ? এবিষয়ে আল্লাহ্ চাহেতো ২য় পর্বে আলোচনা করবো। অনেকেই নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে বুঝে গেছেন বা আগেই বুঝা আছে যে কি কি ত্রুটি আছে। যারা নতুন তাদেরকে বলছি আপনারা এই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনাটা কয়েকবার পড়ে নিজেরাই ত্রুটিগুলো বের করার চেষ্টা করুন।
জানি সামনে আলোচনা দু'পক্ষ থেকেই আরো অগ্রসর হয়। তবে যতটুকু আলোচনা আমি দিয়েছি অন্তত এতটুকুর মধ্যে আস্তিক বা নাস্তিক কারো কোন দ্বিমত আছে কিনা তা জানতে চাচ্ছি। তবে যেসব প্রশ্নের উত্তর ২য় পর্বে আসছে এরকম প্রশ্ন সম্বলিত কমেন্ট প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার জন্য মুছে দেয়া হতে পারে। আশা করি এটাকে সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি আপনাদের তুলনায় অনেক কম জানি। আপনাদেরই বিভিন্ন লেখা পড়ার পর আল্লাহ্ পাক আমাকে যেই উপলব্ধি দান করেছেন তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।আমার এই লেখা মূলতঃ কোন আস্তিক বা নাস্তিকের জন্য নয়, যারা সত্যকে খুঁজছেন তাদের সামনে কিছু চিন্তার খোরাক দেয়াই উদ্দেশ্য। আমি হয়ত অনেক জায়গায় যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারিনি, কিন্তু আপনি যদি সত্যের প্রেমিক হন তাহলে অযথা আমাকে ভাষা ও যুক্তির প্যাঁচে না ফেলে আপনি নিজেই সেটা সুন্দর ভাবে বুঝে নিন এবং আমাকেও জানিয়ে দিন যে, অমুক জিনিষটা ঐভাবে না বলে এভাবে বললে সুন্দর হয়। আপনাদের সবার মূল্যবান মতামত, বুদ্ধি ও পরামর্শ কামনা করছি। আল্লাহ্ তা'য়ালা সবাইকে সঠিক বিষয় উপলব্ধি করার তওফিক দান করুন। আমিন। ওয়াস সলাতু আলান নাবী।
আল্লাহ্র অস্তিত্বঃ আস্তিক ও নাস্তিকের যুক্তিতর্কঃ আমার উপলব্ধি -২
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১২:২৫