পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে বেড়ে চলেছে ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা। বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক একাউন্টের সংখ্যা ১২ লক্ষেরও বেশী। ১৬ কোটির মাঝে সংখ্যাটা কম দেখালেও এটা শুধু ফেসবুকে যারা নিজ দেশ হিসাবে বাংলাদেশ সিলেক্ট করেছে তাদের সংখ্যা।
ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়াতে যেমন সুবিধা হয়েছে, তেমনি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এখন ক্লাস সেভেনের শিক্ষার্থীদের হাতেও ইন্টারনেট সুবিধার মোবাইল ফোন থাকে, অনেকেরই বাসায় কম্পিউটার আছে। ফেসবুকে সবারই আনাগোনা, সেই সুযোগে কিছু মানুষ যৌন আকাক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে "বাংলা চটি" বিষাক্ততাকে। যেখানে মা-ছেলের বিকৃত যৌনাচার, ভাই-বোনের যৌনাচার লেখা থাকে। আর সঈ পেজগুলোতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে, আমাদের ছোট ভাই বোনেরা। সেখান থেকেই তারা ঘুড়ছে পর্ণ সাইটগুলোতে, নিচ্ছে বিকৃত স্বাদ।
গুগলে তাই "মা" শব্দটিকে সার্চ দিলেই আসে কোন না কোন চটি পেজের লিংক। হ্যা এটা সত্য যারা নিজ কম্পিউটার থেকে কখনোই কোন খারাপ পেজে যাননি, তাদের কাছে ব্যাপারটি সেইভাবে আসার কথা নয়। কিন্তু একবারেই আসবে না, তা নয়। আমারটাতে বেশী আসে কারণ আমি গত কয়েক মাস ধরে "চটি পেজ" নিধন করার নিয়তে চটি পেজের লিংক যোগাড় করার কাজ করেছি।**
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে ভিজিট হওয়া সাইটগুলোর মাঝে ১৪ নং ক্রমিকে রয়েছে পর্ণ সাইট, বলতে দ্বিধা নেই আসলে আমরাই নিজেদের ক্ষতি করছি।
ফেসবুকের বিকৃত যৌনালাপ নিয়ে চালিত পেজগুলোর লাইক বা কতোজন মানুষ তা নিয়ে আলোচনা করছে তা দেখলে অবাকই হবেন। আমি নিজে দেখেছি, কোন ইসলামিক বা ধর্মীয় পেজ নিয়ে এতোজন আলোচনা করে না। বিষয়টি নজরে আসার পর থেকেই ফেসবুক কে চটি মুক্তকরতে কাজ করে যাচ্ছি। কাজটি মুলত সবাই মিলেই করছি, ফেসবুকের চটি পেজগুলোকে সরিয়ে ফেলতে বরেবরই রিপোর্ট করে চলেছে আপনাদেরই কয়েকজন। কিন্তু সে সকল পেজ বেশী জনপ্রিয় তা সরাতে আমরা ব্যার্থ হয়েছি, তাই সহযোগ্ধা হিসাবে আপনাদের পাশে চাই।
আমাদের ফেসবুক গ্রুপ- চটি মুক্ত অনলাইনের লক্ষে। (অনলাইন যোদ্ধা)
গ্রুপের সেটিংটি সিক্রেট করা আছে, যেন কেউ বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অসুবিধায় না পড়েন। তাই গ্রুপের পোস্ট বা মন্তব্য বাইরের কেউ দেখতে পারবে না, আপনি চাইলেই আমাদের সাথে যোগ দিতে পারেন।
কাজের ধরণ
গ্রুপটিতে মূলত "চটি পেজের" লিংক শেয়ার করা হয়। যার মাধ্যমে আপনি পেজটিতে গিয়ে রিপোর্ট করবেন। সবাই মিলে একটি পেজে রিপোর্ট করলে ফেসবুক কতৃপক্ষ পেজটি সরিয়ে নেয়(সর্বদা নাও হতে পারে)।
এভাবে আমরা এপর্যন্ত পাচটি পেজকে ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলেছি, গতরাতে নতুন একরি পেজের লিংক দেওয়া হয়েছে। আশা করি সেটিও সরিয়ে ফেলতে পারব।
কেন করবেন
হয়তো আপনি কখনোই চটি পড়েন নি, তাই এর থেকে দুরে থাকতে চান। অথবা আপনার বয়স হয়েছে তাই এখন এসব কাজের কোন মানে হয়না ভাবছেন। কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন, ২০০৬ এর ফেসবুক বাংলাদেশে ছড়াতেই যার ২০১০ সাল পেরিয়ে গেছে, সেখানে ২০১৫তে চটি পেজের যে সমাহার তাতে ভবিৎষতে কী হতে পারে।
আপনি পড়েন নাতো কি হয়েছে, আগামীতে আপনার সন্তান পড়বে। যদি আসলেই তাই হয় তবে তার ছোট মনে যৌনাচার যে দাগ কেটে যাবে তা কি মুছতে পারবেন। বর্তমানে যে হারে নিজ মা-বোনকে জড়িয়ে বিকৃত রসালো চটি লেখা হচ্ছে তাতে আপনার সন্তানের মনে কী প্রভাব ফেলবে ভেবেছেন। হ্যা হয়তো সে নিজের মা কে খারাপ চোখে দেখবে না, কিন্তু পাশের বাসার মহিলা, বন্ধু মা! আপনার ছেলের বন্ধু যে আপনার স্ত্রী বা আপনার মেয়ের দিকে কু নজরে তাকাবে না তারই বা কি নিশ্চয়তা। তাই আসুন এক হয়ে এই বিকৃতমনা মানুষদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই, আমাদের আগামী প্রজন্মকে একটি সুন্দর পৃথিবী উপহার দেবার চেষ্টা করি।
** আপনারা চাইলে আমাকেও অন্য কিছু ভেবে নিতে পারেন, কিন্তু তারপরও চাইব আপনারা আমাদের সাথে যোগ দিবেন। প্রতি সপ্তাহে একটি পেজ নামাতে সহয়তা করবেন। এই বিষয়ে আপনাদের যে কোন মতামত এই পোস্টে বা ফেসবুক গ্রুপে জানাতে পারেন।