দেশের এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষরত আছি, বর্ষ পরীক্ষা শেষে গিয়েছিলাম দেশের মানুষগুলোকে একটু দেখে আসতে। বেসরকারী মানেই নিয়ম-রীতি এক বড় পাহাড়, তাই এখানে ভর্তি হবার পর গত তিন বছরের কখনোই কোন ঈদেও এতো দীর্ঘ সময় বাসায় কাটাতে পারেনি। তাই বাসায় থাকার সময়টুকুতে যেটুকু সময় ছিলাম কিছুটা ঝামেলাহীন থাকার চেষ্টা করেছি, এমনকি ফেসবুক, সামু কেও এড়িয়ে গেছি, আর ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম এ দেশের মহান-রাজনৈতিক নেতা ও আমাদের দুই মহান নেত্রীকে।
আমি বরাবরই বাসা যাবার ব্যপারে রেলপথটাকেই বেছে চলেছি, কিন্তু এবারতো বাধ্যই ছিলাম। আর আসার সময় দেখেছি মানব জীবনের ভয়াভ কিছু কষ্ট ও নির্মমতা। ঈদের ছুটি শেষে আসার সময় রেলের ভীড় সামলানোর অভিঞ্জতা আমার ভালোই, কিন্তু ঈদের দ্বিগুন নয়, তারও বেশী মানুষ এবার কষ্ট করেছে। যারা রেলেগাড়ীতে ছিল তাদের জীবন ধাক্কায় আর চাপে শেষ, আর যারা প্লাটফর্মে রেলের অপেক্ষায় ছিলেন তাদের রেল ছুটে যাবার এক ভয়। ঈদের সময় চেষ্টা করা হয় মহিলাদের একটু জায়গা করে দেবার কিন্তু এবার মহিলারাও কোন সুবিধার মুখ দেখেননি, বরং সবার মাঝে কে মহি আর কে পুরুষ তা ভাবার সুযোগ কারোই হয়নি। আমি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি তারাও সেই ভাবনাটা ভেবে উঠতে পারেনি।
গত ১০ তারিখের ঢাকাগামী একতার ধরতে কিছুটা আগেই এসেছিলাম। সময় ছিল রাত ৯:৫০ আর তা আসল কখন জানেন, পরদিন বিকাল ৪টায়। আবার ১০-১২ঘন্টার ভ্রমন হয়ে দাড়াল ৩২ঘন্টারও বেশী।
কথা তা নয়, সবাই জানে আমাদের রেল কতোটা দেরী করে। কিন্তু সেই মানুষের চাপ, আর দিনাজপুরের মতো জায়গায় একটি রাত প্লাটফর্মে কাটানো তাও এমন শীতে ভাবতে পারেন?
এতো কষ্ট কিশের জন্য? আজ দুই দল গনতন্ত্র গনতন্ত্র বলে আমাদের পিশে চলেছে, আর আমরা?
যারা বের হন না, বা এখন দীর্ঘ ভ্রমণ করছে না তারা তো ভাবছেন, যাক না দিন তো কেটেই যাচ্ছে। ভাই এভাবে আর কতোদিন? আমি আপনাদের অন্যদের পাশে গিয়ে তাদের দলভারী করতে বলব না। কিন্তু আসুন না নিজের জন্য, আমাদের পরিবারের জন্য নিজের দাবী আদায় করে নেই।