বর্তমান সময়ের আলোচিত বিষয় সড়ক দূর্ঘটনার প্রতিবাদে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহতের তালিকা দীর্ঘ হয়েই যাচ্ছে, এই তালিকা ধীরগতি করতে এমন আন্দোলন একান্তই দরকার ছিল।
গত রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হবার পরই যদি জাবালে নূর এর ঘাতক চালক ও সহযোগীদের আটক করা যেত তবে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার সহজ হতো। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞ নৌ-মন্ত্রীর হাসিমাখা চেহারা শিক্ষার্থীদের রাস্তায় টেনে নামিয়েছে। শিক্ষার্থীদের বয়স অনুযায়ী গাড়ী ভাংচুর এর ঘটনাকে খুব বড় করে দেখার কিছু নেই। ঘটনার পরদিন প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের দমনে না নেমে লাইসেন্স বিহীন চালক ধরতে নামান হতো তাহলেও কাজে দিত। কিন্তু অদ্ভুত এক কারণে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দমনে লাঠিয়াল বাহিনি হয়ে গেল!!
বর্তমান আপডেট জাবালে নূর এর দুই চালক ও দুই সহযোগী আটক কিন্তু ঘাতক চালক নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। আটককৃত চালকদের লাইসেন্স আছে কিন্তু পেশাদারী লাইসেন্স নয়! মানে তারা ছোট গাড়ী বা ১২ সিটের গাড়ী চালনার অনুমতি প্রাপ্ত। এথচ জাবালে নূর এর মালিক চালকদের লাইসেন্স ও দুর্ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে নারাজ!!
তিনি নারাজ হলেই কি শেষ? আপনার বন্দুক আপনি কার হাতে দিবেন তা একান্তই আপনার বিষয় কিন্তু সেই বন্দুকে কেউ আহত বা নিহত হলে প্রথম দায়ভার আপনার। ঢাকার চালকদের কথা বলে কি লাভ, তারা পাচ্ছে টিপ মেরে টাকা নিচ্ছে!! কিন্তু গাড়ী যার তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে এই মৃত্যু মিছিল এর লাগাম টানা যাবে না।
শুধু জাবালে নূর কেন, খোঁজ নিন কয়টি কোম্পানির কাছে তাদের চালক ও সহকারীর পুর্ণ তথ্য আছে? কিছু পোলাপাইন লেগুনায় হাফপেন্টে টাকা তোলা শুরু করে, যারা কিছুদিনেই ওস্তাদের বদলে গাড়ি ঘোরানো, লাইনে নেয়ার কাজ পায়। একটু শিখলেই তারাই লেগুনার ড্রাইভার!!
লেগুনা থেকে চান্স পেলেই মুড়ির টিন সাইজের ছোট বাস তারপর শুধুই পদোন্নতি! আর এই পেশায় পদোন্নতি এতো দ্রুত হয় যে আপনার অনার্স শুরু করে শেষ করার আগেই তারা আপনাকে চাকরির ইন্টারভিঊ এ নিয়ে যেতে চালকের আসনে বসে পড়ে।
এবার আসি পিয়াল হত্যার বিষয়ে, সবকিছুকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেবার সুযোগ থাকলেও হানিফ পরিবহন কৃতক পিয়াল হত্যাকান্ডকে দুর্ঘটনা বলার কোন সুযগ নেই। এখানে হানিফ পরিবহনকে মোটা অংকের টাকা জরিমানার পাশাপাশি আগামী এক বছরের জন্য নতুন রুট ও নতুন গাড়ীর পারমিট এ নিষেধাজ্ঞা দিলেই কুত্তার লেজ সোজা হোক আর না হোক সব বাস মালিকই সোজা হয়ে যেত।
এবার আসি নারায়ণগঞ্জ এ শ্রমিক পরিবহনের আন্দোলন নিয়ে। অন্যরা আন্দোলন করলেও সরকারি বাস চালকদের নিজ দায়িত্বে যাওয়া উচিত। এটাই সময় গনপরিবহনকে লাইনে আনার। আসলেই চালকদের অনেকেরই এখন নিরাপত্তা দরকার। আর এই নিরাপত্তা দেবার দায়িত্ব প্রশাসন এর। প্রশাসন চাইলে শুধু সঠিক লাইসেন্সধারীদের নিরাপত্তা দিতে পারে। কিন্তু শ্রমিক পরিবহনের আন্দোলনএ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পেটানোর যে গর্হিত কাজ হয়েছে তাতে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ভরসা দিয়ে ফেরাতে হবে, দমন সুত্র প্রয়োগে নিউটনের তৃতীয় সুত্রের ফল ব্যাতীত কিছু আসবে না।
আজ শনির আখরায় যে ঘটনা ঘটেছে তার রেশ কাটাতেও প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের বন্ধু ও অভিভাবক হয়ে সামনে আসতে হবে। আর শিক্ষার্থী ভাইবোনদের বলব, প্রশাসনে সাইজ করার অনেকে থাকলেও কিছু অভিভাবক আছে। তাই কেউ সাইজ করতে আসলেই মারমুখী না হয়ে জোট করে নিজেদের প্রাচীর বানাও অথবা সবাই সাইজ হতে উঠে যাও। কাউকে একা বা একাংশকে সাইজের জন্য ফেলে এসো না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪