প্রথমেই তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর এর আত্বার মাগফেরাত কামনা করছি। মানতে দ্বিধা নেই, তাঁরা বাংলাদেশের চলচিত্রকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতেন। গণ্ডির বাইরে গিয়ে কিভাবে দর্শকদের পেক্ষাগৃহে আনতে হয় তা তাঁরা জানতেন। যাই হোক, গত ২০১১ এর ১৩ই আগষ্ট এ তাঁরা এক দুর্ঘটায় জীবন হারান। সেই দুর্ঘটায় করা প্রাণহানির মামলায় বাসচালক জামির হোসেন এর যাবজ্জীবন সাঁজা দিয়েছে আদালত। হ্যাঁ, বেপরোয়া গাড়ি চালকদের লাগাম টানতে এই রায়ের অনেক দরকার ছিল।
এই রায়ে সেই দুর্ঘটনায় নিহত ব্যাক্তিদের আত্বীয় ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সন্তুষ্ট। শুধু তারাই নয়, আমার আপনার মতো দেশের হাজারো মানুষ সন্তুষ্ট, এই ভেবে যে এবার যদি মৃত্যুর মিছিল কমে। কিন্তু এই রায়ে হাহাকার জাগিয়েছে লক্ষ মানুষের বুকে, যাদের কেউ এই দেশেরই কোন রাস্তায় নিহত হয়েছে অথচ আমরা জানতেই পারি না। যে দুর্ঘটনার খবর আমরা পাই তার কোনটার বিচার হয়েছে বলে আগে শুনিনি, বিশেষ করে এমন। আগে যদি শুধু লাইসেন্স বাতিল করার বিধান থাকত তবেই, মৃত্যুর মিছিল আজ এতো বড় হতো না।
সড়কপথের কথা বাদ দেন, এই যে লঞ্ঝ ডুবিতে একসাথে শত পরিবার ভেঙ্গে যেতে দেখলাম, তার বিচার কি কেউ পেয়েছে? বরং সকল সরকারের আমলেই ঘটা এইসকল লঞ্ঝ ডুবির ঘটনায় ভুড়িভোজই হয়েছে। তা না হলে এতোদিন কোন না কোন লঞ্ঝ মালিক জেলে থাকত, বা কোন আমলাকে সেই মালিকদের সাথে দেখার কথা ছিল না।
আজকের প্রথম-আলো এসেছে গত ১৫ দিনে ১৫৩ জন জীবন হারিয়েছে। বেচারা এভাবে প্রতি নিয়ত ঝড়ে যাওয়া কেউই তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর নয়। এদের জীবনের প্রদীপ যাদের কারনে নিভে গেল, তারা থানায় রাতও কাটাবে না।
আচ্ছা, এতোগুলো মানুষকে অভাগা বলার চেয়ে ব্যাটা জমির হোসাইনকে অভাগা বলাই উত্তম। তাহলেই নিভে যাওয়া লক্ষ জীবন হয়তো কষ্ট পাবে না। ব্যাটা জমির মারবি তো কোন দোকানে তুলে দিয়ে পালাতি, সাতজন কেন, গোটা বিশেক মরলেও তুই জেলে যেতি না। তোর মালিক ঠিকই গাড়ি নিয়ে যেত, আর তুমিও মিয়া কোন গাড়ির সিটে বসে আবারও ১০০-১২০ স্পিডে প্লেন চালাতা!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৫