প্রথমেই তনুর বিদেহি আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই পোষ্ট টি আমার একান্ত কিছু ভাবনা নিয়ে, যা অকারনে ভাবাচ্ছে।
সোহাগী জাহান তনু, ধর্ষণের পর হত্যার স্বীকার হয়েছেন গত ২০ই মার্চ রাতে। সে অনুযায়ী আজ বাদ দিলেও মাঝে মাঝে কেটে গেছে দুইদিন। কিছুটা অকারনেই প্রথম আলো, ইত্তেফাক এর মাঝে তনুর বিষয় নিয়ে সার্চ দিলাম, কিছুই নেই! যেখানে একটি সেনানিবাসের মাঝে একটি মেয়েকে ধর্ষণ এর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে সেখানে দেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমগুলো চুপ! কিন্তু কেন?
কারণ যাই হোক কারণে যাবার আগে আপনাদের একটু দিনাজপুরের পোশাক শ্রমিক ইয়াসমিন হত্যাকান্ডের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। আমি তখন চোট ছিলাম তাই ঘটনার কতো পরে তা সংবাদে এসেছিল তা জানি না। কিন্তু দেশের ইতিহাসের উল্লেখযোগয় ঘটনার একটি হওয়ায় ও আমি নিজে দিনাজপুরের সন্তান হওয়ায় ঘটনার কিছুটা জানি। সেই ঘটনার বড় খলনায়ক ছিল পুলিশ নিজেই। রাতের টহল গাড়িতে ধর্ষণের পর রাস্তায় ফেলে আসা সেই ইয়াসমিনের দেহ যখন সকালে পাওয়া যায়, তখন পুলিশই গিয়েছিল লাশ আনতে। তারা ইয়াসমিনের নিথর দেহ থকে রাস্তার উপরই কাপড় নামিয়ে নিয়েছিল। চেষ্টা হয়েছিল তাকে দেহ ব্যবসায়ী বলে চালিয়ে দেবার কিন্তু দিনাজপুরের মানুষ তা হতে দেয়নি, পাশে ছিল সারা বাংলাদেশ। সে ঘটনায় দিনাজপুর কতোয়ালী ঘেরাও হয়েছিল, গুলি হয়েছে, আগুন জ্বলেছে, সাধারন মানুষ মরেছে। কিন্তু বিচার হয়েছে, ধর্ষক পুলিশদের ফাঁসি হয়েছে।
#এবার আসি তনু প্রসঙ্গে, ঘটনা ঘটেছে দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গার একটির ভিতরে, সেনানিবাসে। হ্যাঁ, সেনানিবাসের মাঝে জনগনের আনা-গোনা কম, ফাকা জায়গা বেশী। কিন্তু দেশের সব সেনানিবাসে রাতে আলো থাকে, বাইরে বিদ্যুৎ না থাকলেও সেনানিবাসে বিদ্যুৎ থাকে। তাই যদি হয় তবে সেনানিবাসের পাওয়ার হাঊজের পাশে তনুর নিথর দেহ পরে থাকে কিভাবে?
একটি মেয়ের চুল টেনে ছিড়ে ফেলা, ইট দিয়ে মাথা থেতলানো, ধর্ষণ করা এবং হত্যা করা। কাজগুলো করতে তো সময় লেগেছে। দিনের বেলায় সেনানিবাসে যাতায়াত কিছুটা সহজ হলেও রাতে অনেক কঠিন, এবং তা খুব বেশিই কঠিন। আর রাত ১০টায় যখন লাশ পাওয়া গেছিল তখন তনুর কান থেকে রক্ত ঝরছিল। সে হিসাবে হত্যা কখনোই ৮টার আগে নয়, হওয়া উচিৎ ৯ টার পরে। আর সেনানিবাসে সন্ধ্যা ৭টার পরই বাইরের কেউ ঢুকতে বিশেষ জবাব দিতে হয়।
সব হিসেব মেলালে দেশের সংবাদ মাধ্যম এমন বিষয়ে চুপ থাকার একমাত্র কারণ হতে পারে উপরের আদেশ। কারণ রাত ৮টার পর একটি সেনা নিবাসে ধর্ষণ ও খুন শুধু তার ভিতরের লোকেরাই করতে পারে। এখন সেটা কোন সেনা সদস্য হতে পারে বা তাদের সন্তান। আর সেনা ইমেজ বাচাতেই কি সংবাদ মাধ্যমগুলো চুপ!
#ঘটনা যে আমার ভাবনার সাথে মিলে যাবে বা কোথাও একটু মিল থাকবে এমনটা নাও হতে পারে। কিন্তু কোথাও যে কোন কারণ আছে তা সত্য। তা না হলে ঢাকার পাশেই যে শহর, সেই কুমিল্লায় বিক্ষপ হচ্ছে তা জানতে ফেসবুকে যাওয়া লাগে। আজ ফেসবুক না থাকলে দিনাজপুর বাসী জানতেই পারত না দেশে আরেক ইয়াসমিন হত্যার কাহিনি চলছে।
#লেখার ইতি টানব নিজের দেখা এক ঘটনা দিয়ে। আমি নিজে এক ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ছাত্র ছিলাম। আমার কলেজের এক অতি মেধাবী ছাত্রীর সাথে আমাদেরই এক বন্ধুর সম্পর্ক ছিল। তারা দুইজনেই সেনা কর্মকর্তার সন্তান, সেনানিবাসের ভিতরেই থাকত। আবেগের ভালোবাসায় ঝগড়ার কারণে মেয়েটি কলেজের চারতালা থেকে লাফ দিয়েছিল, তারপর দীর্ঘদিন চিকিৎসা হয়েছে, তবুও বাচেনি। তার সাথের বন্ধু ও বান্ধবীরা মেডিকেল, বুয়েট, ঢাবিতে পড়ছে। ছেলেটির খবর জানি না, তবে বিচার হয়নি। পাশের দুই সেনাবাহিনি থেকে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা এসেছিল, রুমে বিচারের নামে বলে গেল মেয়ে দুর্বল ছিল তাই মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। যা স্যার ও সেনাবাহিনির লোকেরা ম্যাচে ম্যাচে গিয়ে বলে এসছিল.।.।.।.।.।.।।।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮