সনাতন হিন্দু প্রথা এবং বিজ্ঞান ।
মানুষের বাসপোযোগী আমাদের এই বর্ণিল বৈচিত্রময় ছোট্ট সবুজ উপগ্রহে অনেক সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন । তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রাচীনতম সভ্যতা আর্যহিন্দুসভ্যতা । প্রাচীনতম সভ্য জাতি আর্যহিন্দু জাতি । গ্রীক, রোম, ব্যাবিলন প্রমুখ আর্যদের প্রায় সমসাময়িক যে সব প্রাগ্রসর সভ্যতা একই সাথে যাত্রা শুরু করেছিলেন-কালস্রোতে কালচক্রে কালগ্রাসে তারা সবাই এই উপগ্রহের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হয়ে ইতিহাসবাসী হয়ে আছেন । একমাত্র টিকে আছেন নম্রনিরীহ চির সহিষ্ণু এই আর্যহিন্দু জাতি । অথচ পুরাণ এবং ইতিহাস বলে প্রাগৈতিহাসিক পৌরণিক যুগের আসুরিক আক্রমন থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক যুগের একেরপর এক বিজাতীয় আঘাত আক্রমণের বুলড্রোজারে এই জাতিকেই নিষ্পেষিত করেছে সবেচয়ে বেশি । সর্বগ্রাসী কালকে জয় করে বিস্ময়করভাবে টিকে থাকা এই জাতির উপাসনা পদ্ধতি বর্তমান প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় । পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ধর্মমতের মানুষই বিশ্বাস করেন স্রষ্টা আছেন এবং তিনি এক অদ্বিতীয় অনন্ত অসীম নিরাকার । এ ব্যাপারে প্রায় সমস্ত ধর্মমতই একমত কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত ধর্মমতের মধ্যে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মমতই অবতারবাদে বিশ্বাসী । শুধু এই একটি মাত্র জাতিই কেবল বিশ্বাস করেন সেই অসীম নিরাকার স্রষ্টাই সসীম সাকার মানুষ হয়ে যুগে যুগে অবতীর্ণ হন । উপনিষদে আছে-
অনোরোনিয়ান মহতোমহীয়ান ।- অর্থ ঃ তিনি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ হতেও বৃহৎ এবং সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্রতম অনু হতেও ক্ষুদ্র ।
তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন-
অসীম সে চায় সীমার নিবিড় সঙ্গ,
সীমা হতে চায় অসীমের মাছে হারা ।
এই সীমার নিবিড় সঙ্গ পেতে সেই পরমপ্রেমন অসীম সমীম মানুষ হ'য়ে আছেন । গীতাঞ্জলিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ বড় মরমস্পশী করে বলেছেন-
দয়া করে ইচ্ছে করে আপনি ছোট হ'য়ে,
আস তুমি এ ক্ষুদ্র আলয়ে,
তাই তোমার মাধুর্য সুধা,
ঘুচায় আমার আঁখির ক্ষুধা,
জলে স্থলে দাও যে ধরা কত আকার লয়ে ।...... চলবে ....