ছেলেদের জন্মই হয় আশেপাশের মানুষ কে খুশি রাখার জন্য। তার উপরই নির্ভর করে তার পরিবারের খুশি। অনেক সময় শত কষ্ট পেলেও সে তা বলতে পারেনা। শুধু ভাল থাকার অভিনয় করে যেতে হয়। ছেলে হয়ে জন্মগ্রহন করেছেন তার মানে আপনি আপনার মা, বাবা, ভা-বোন, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে সবাইকে খুশি রাখতে বাধ্য। হয়তো তারা আপনাকে কষ্ট দিবে, আপনার কথা শুনবেনা, আপনাকে কথা শুনাবে। কিন্তু ভুলে যাবেননা তাদেরকে খুশি রাখার জন্যই আপনার জন্ম।
খুব ছোটকাল থেকেই চিন্তা করুন। হয়তো অনেক ভাল পড়ালেখা করার পরেও আপনি আপনার প্রত্যাশানুযায়ী রেজাল্ট পাননি, হয়তো আপনার প্রত্যাশানুযায়ী ভাল কোথাও ভর্তি হতে পারেননি, হয়তো অনেক চেষ্টা করেও মামা,খালু না থাকার কারনে ভাল একটা চাকরি পাননি। হয়তো টাকা না থাকার কারনে আপনার প্রিয় মানুষটি আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে।
আপনি এখন কি করবেন? আত্তহত্যা করবেন ভাবছেন? তাহলে জেনে রাখুন এই কষ্ট কোন কষ্টই না। জেনে রাখুন আপনি একজন ছেলে। শত কষ্ট পেলেও আপনি তা মানুষের কাছে প্রকাশ করতে পারবেননা। একটু ভেবে দেখুন কে বেশি বুদ্ধিমান। আপনি নাকি উপরওয়ালা? উপরওয়ালা আপনাকে ছেলে বানিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে কারন উনি জানেন আপনার মাধ্যমেই হয়তো কিছু মানুষ ভাল থাকবে। হয়তো বন্ধুদের সাথে কোথাও যাওয়ার প্ল্যান করেছেন কিন্তু বাসায় এসে ছোটখাটো চাকরি করা বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আর সাহস হয়নি টাকা চাওয়ার। হয়তো প্রিয় মানুষটিকে খুশি না রাখার কারনে চলে গেছে। মন খারাপ? কেন মন খারাপ করছেন? মন খারাপ করার আরও অনেক কিছু আছে। এইসব ফালতু বিষয়ে মন খারাপ করার মানে নেই। হাতে একটা সিগারেট নিন ,ধোঁয়া ছাড়ুন আর ভাবুন আপনার দায়িত্ত তো এখনো শুরই হয়নি। দায়িত্ত কি জিনিস তা আপনার বাবার কাছ থেকে শিখুন।
খুব কম বেতনের একটা জব করেন। অনেক সময় বেতন সময়মত না পেলেও বস কে কিছু বলতে পারেননা, হয়তো চাকরিটা চলে যাবে এই ভয়ে। দিন শেষে বাসায় এসে যখন দেখেন আপনার ছেলে-মেয়ে কথা শুনছেনা, আপনার স্ত্রী আপনাকে সময় না দিয়ে হিন্দি সিরিয়াল নিয়ে পরে আছে তখন হয়তো ভাবেন কাদের জন্য এসব করছেন, কাদের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিচ্ছেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন এই কষ্ট আপনি কাওকে দেখাতে পারবেননা। কারন আপনি একজন ছেলে। আপনার স্ত্রী,ছেলে-মেয়ে এসব বুঝবেনা। বিশ্বাস করেন ভাই বুঝবেনা। কিন্তু ভয় পাবেননা, যুগের পর যুগ এভাবেই চলে আসছে। আপনার বাবা, তার বাবা, তার বাবা......।
হয়তো রাতে ছাঁদে উঠে চীৎকার করে কাঁদবেন, কারন আপনি একজন ছেলে, তার আগেও আপনি একজন মানুষ। নিজের কষ্টটা হয়তো নিজেকে ছাড়া আর কারো সাথে সেয়ার করতে পারবেননা।
প্রিয় মানুষগুলোর সুস্থ থাকার জন্য দিনের পর দিন না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন, সুস্থ হলে হয়তো তারা আপনাকে পাত্তাও দিবেনা। প্রয়োজনে আপনি তাদেরকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন, সমাধান হয়ে গেলে হয়তো আপনাকে ভুলে যাবে। কি হয়েছে তাতে? আপনার জন্মইতো হয়েছে মানুষগুলোকে ভাল রাখার জন্য। দিন শেষে হয়তোবা আপনার বিবেকের কাছেই আপনি জয়ী হবেন। আর এভাবেই যুগের পর যুগ ছেলেরা প্রিয় মানুষগুলোকে ভাল রাখার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৫