নিজেদের প্রিয়, পরিচিত মানুষদেরকে খুব বেশি বিশ্বাস করে থাকি আমরা। নিজেরদের সর্বশক্তি দিয়ে আমরা তাদের উপকার করার চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, আপনি যদি তাদের সব আবদারে সাড়া দেন, তবে তারা বুঝে ফেলে যে আপনি অতিরিক্ত নমনীয় একজন মানুষ এবং তারা নিজেদের স্বার্থে আপনাকে “ব্যবহার” করা শুরু করে দিতে পারে তখন। আমরা কখনোই বিশ্বাস করতে পারি না যে আপন জনেরা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য আমাদের ব্যবহার করে, কিন্তু এটাই বাস্তবতা।
কি করে বুঝবেন প্রিয়জনেরা আপনাড় ফায়দা লুটছে কিনা? কি করে বুঝবেন আপনি তাদের ইচ্ছে পূরণের জন্য নিজেকে অতিরিক্ত কষ্ট দিচ্ছেন? কি করেই বা বুঝবেন আপনি নিজের জীবন পুরোই নষ্ট করছেন তাদের স্বার্থে? এখন আর অনুমান করে থাকতে হবে না। চটজলদি দেখে নিন এই কুইজটি এবং জেনে নিন, আপনি কি আসলেই অতিরিক্ত নমনীয় মনের মানুষ এবং আপনজনেরা আপনাকে ব্যবহার করছেন কি না।
১)পরিচিত কেউ আপনার কাছে টাকা চাইতে আসলো। আপনি কি করবেন?
- ক) কোনো প্রশ্ন না করেই যত টাকা চাচ্ছে তা দিয়ে দেবেন
- খ) পুরো টাকাটা না দিয়ে আপনার পক্ষে যত টাকা দেওয়া সম্ভব তা দিয়ে দেবেন
- গ) টাকা থাকলেও বলবেন আপনার কাছে এখন টাকা নেই
- ঘ) সোজা বলে দেবেন যে আপনি টাকা দিতে পারবেন না
২)আপনি কোনো একটা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন(শপিং মল, সিনেমা হল, পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি) এবং আপনার কিছু বন্ধু এসে আপনার সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে যেতে চাইলো, আপনি কি করবেন?
- ক) নিজের সামনে তাদেরকে দাঁড়ানোর জায়গা দেবেন
- খ) সোজা না করে দেবেন
- গ) এমন ভাব করবেন যেন আপনি তাদেরকে দেখতেই পাননি
- ঘ) বলবেন কেউ আপনার সামনে এবং কেউ আপনার পেছনে দাঁড়াতে পারেন
৩)পরীক্ষার সময় আপনার পাশে যে মানুষটি বসেছে সে আপনার খাতা টুকে উত্তর লিখতে চায়, আপনি কি বলবেন?
- ক) “অসম্ভব! টিচার...... ও আমার খাতা দেখছে!”
- খ) “প্রথম কয়েকটা লাইন দেখতে পারো।”
- গ) “দেখতে পারলে দেখো, সমস্যা নেই।”
- ঘ) “আমার সব উত্তর ভুল, দেখে লিখলেও তোমার লাভ নেই।”
৪) আপনার বন্ধুরা জানে আপনি কাউকে পছন্দ করেন, কিন্তু আপনি তাকে এখনও কিছু বলেননি। বন্ধুরা আপনাকে না জানিয়ে এমন কিছু করলো যাতে সেই মানুষটি এটা জেনে যায়। আপনি তখন কি করবেন?
- ক) বন্ধুদের ওপরে রেগে যাবেন না। ধরে নেবেন তারা আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছিলো
- খ) তাদেরকে বকাবকি করবেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত বনিবনা হয়ে যাবে
- গ) তাদের ওপরে এতই রেগে যাবেন যে তাদের সাথে কয়েক দিন কোনো কথাই বলবেন না
- ঘ) বলবেন যে আপনি সেই মানুষটিকে আসলে পছন্দ করেন না .......
৫) কেউ আপনাকে নিয়ে একটা বাজে গুজব ছড়াচ্ছে। আপনি কি করবেন?
- ক) কষ্ট পাবেন কিন্তু সেটা প্রকাশ করবেন না
- খ) কষ্ট পাবেন, কিন্তু ওপরে ওপরে দেখাবেন যে আপনি খুব রেগে গেছেন এবন যে এই গুজব ছড়িয়েছে তাকে নিয়ে গালমন্দ করবেন আপনার বন্ধুদের কাছে
- গ) যে গুজব ছড়াচ্ছে তাকে সোজা বলে দেবেন এমন বাজে কাজ যেন সে আর না করে এবং অন্যদেরকেও পরিষ্কার করে বলে দেবেন যে এই গুজবের কোনো সত্যতা নেই
- ঘ) যে গুজব ছড়াচ্ছিল তার সাথে রাগারাগি করবেন এবং তাকে নিয়ে আপনি নিজেই কিছু আজেবাজে গুজব ছড়িয়ে দেবেন
৬) আপনি যে মানুষটিকে পছন্দ করেন, সে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে আপনার পাশ দিয়ে। এমন সময় তার কোনো বন্ধু আপনাকে ল্যাং মেরে ফেলে দিলো/খারাপ কোনো মন্তব্য করলো। আপনি কি করবেন?
- ক) কিছু বলবেন না। হাসি দিয়ে অন্যদিকে চলে যাবেন
- খ) হাসবেন এবং ধরে নেবেন তারা মজা করছে
- গ) আপনি যাকে পছন্দ করেন তাকে গিয়ে বলবেন এমন আজেবাজে মানুষদের সাথে তার মেশা উচিৎ নয়, এবং যে মানুষটি আপনাকে ফেলে দিয়েছিলো/ খারাপ কিছু বলেছিল তার সাথে রাগারাগি করবেন
- ঘ) তাদের দিকে চোখ গরম করে তাকাবেন এবং যেদিকে যাচ্ছিলেন সেদিকে চলে যাবেন
৭) আপনি কোনো একটা রেস্টুরেন্টে খেতে গেছেন। ট্রেতে করে খাবার নিয়ে বসার জায়গা খুঁজছেন। এমন সময়ে কেউ আপনাকে ধাক্কা দিয়ে আপনার খাবারের ট্রে টা ফেলে দিলো। আপনি কি করবেন?
- ক) তাকে বলবেন তারা যেন দেখেশুনে হাঁটে এবং গিয়ে আরেক ট্রে খাবার কিনে আনবেন
- খ) তার ওপর রেগে চেঁচামেচি করবেন এবং আপনার খাবার মেঝে থেকে তুলে দিতে তাদেরকে বাধ্য করবেন
- গ) বলবেন, “ঠিক আছে, সমস্যা নেই। খাবারটা তুলে নিতে আমাকে সাহায্য করুন।”
- ঘ) কিছুই বলবেন না বরং নিজেই খাবারটা তুলে নেবেন।
স্কোরঃ
১) ক-৫, খ-১০, গ-১৫, ঘ-২০
২) ক- ৫, খ-২০, গ-১৫, ঘ-১০
৩) ক-২০, খ-১০, গ-৫, ঘ-১৫
৪) ক-৫, খ-১০, গ-২০, ঘ-১৫
৫) ক-৫, খ-১০, গ-২০, ঘ-১৫
৬) ক-৫, খ-১০, গ-২০, ঘ-১৫
৭) ক-১০, খ-২০, গ-১৫, ঘ-৫
ফলাফলঃ
৩৫-৬৫ :
দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে আপনি একেবারেই মুখচোরা একজন মানুষ। আপনার সাথে কেউ অন্যায় করলেও তার প্রতিবাদ করতে পারেন না আপনি। এ ধরনের নম্রতা মোটেই প্রশংসনীয় নয় বরং এর ফলে আপনি নিজেকে অন্যদের সামনে দুর্বল হিসেবে উপস্থাপন করছেন এবং তারা ইচ্ছেমত আপনার ফায়দা ওঠাচ্ছে।
৬৬-৯৫ :
কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক, এটা আপনি জানেন। কিন্তু এর পরেও আপনি অন্যদের অবিচার প্রায় মুখ বুজেই সহ্য করে যাচ্ছেন। আপনি হয়তো বেশি শান্তিপ্রিয়, এ কারণে অন্যরা অন্যায় করলেও আপনি প্রতিবাদ করছেন না। এই মনোভাব থেকে বের হয়ে আসুন শীঘ্রই।
৯৬-১২৫:
অন্যরা আপনার সাথে বেশি সুবিধা করতে পারে না বটে, কিন্তু তার কারণ হলো আপনি সহজেই মিথ্যে বলে দেন। পরিচিত মানুষ আপনার থেকে কোনো সুবিধা আদায় করতে আসলে আপনি মিথ্যে বলে পার পেয়ে যান। এতে যেমন আপনার কোনো ক্ষতি হয় না, তেমনি অন্যদের সাথেও আপনার সম্পর্ক খারাপ হয় না।
১২৫-১৪০:
আপনি নিজের স্বার্থের ব্যাপারে বেশ সচেতন। অন্যরা আপনার সাথে বেশি সুবিধে করতে পারে না। আপনি স্পষ্টভাষী এবং কাউকেই কোনো ছাড় দেন না।