বেশ কয়েক দিনে ধরে একজনকে খুব ভাল লাগছে। কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছেন না কী করবেন। আসলে আপনি খুব `কনফিউজড`। আপনার এই ভাললাগা অথচ কিছুটা কঠিন সময়ের জন্য থাকল কিছু টিপস
১) চোখের ভাষা বোঝো
বেশ কয়েকদিন ধরে তো ওর দিকে দেখেছেন, ভেবে দেখুন তো একবারও কি চোখের মাধ্যমে কোনও সংকেত আদানপ্রদান হয়েছে কি। যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে বলব, এবার বোঝার চেষ্টা করো ওই দুটো চোখ ঠিক কী বলতে চাইছে। উত্তরটা নেগেটিভ নাকি পজেটিভ সেটা মাথা দিয়ে, অঙ্ক দিয়ে ঠান্ডা মাথায় বিচার করুন। মনে রাখবে ওই অঙ্কটা কিন্তু আপনার আগামী কটা দিনের জন্য হয়ত বা আজীবনের জন্য খুব গুরত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আর তাই চোখের ভাষাটা শুধু নিজের পছন্দের মত করে মানে করবে না, আর চোখের সংকেতকে ভাষায় পরিণত করার কঠিন কাজটা নিজেই করুন, প্লিজ বন্ধুদের সাহায্য নেবেন না। এতে বিভ্রান্তি বাড়বে।
যদি চোখের মাধ্যমে কোনও এখনও কোনও যোগাযোগ স্থাপন না করে থাকেন তাহলে বলব, এখুনি করে ফেলুন। হ্যাঁ, না এসবের কিছু একটা কিছু একটা সংকেত অবশ্যই পাবেন। মনে রাখবেন চোখটা মনের আয়না। চোখে অবশ্যই মনের প্রতিফলন পড়বে। এবার আপনার ব্যাপার সেই আয়নার ছবিটাকে আপনি ঠিক কী মানে করবেন।
২) পছন্দের মানুষটার ভালো লাগা-খারাপ লাগাগুলো জানুন
আস্তে আস্তে জানতে থাকুক পছন্দের মানুষটা ভাললাগা খারাপ লাগাগুলো ঠিক কীরকম। প্রিয় রঙ, প্রিয় সিনেমা, প্রিয় নায়ক- নায়িকা, পছন্দের পোষ্য, হবি এসব মোটা দাগের পছন্দের মধ্যেও অনেক বার্তা থাকে। মনে রাখুন কাউকে ভালবাসতে হলে তার ভাললাগাকে ভালবাসতে হয়। হতে পারে আপনি হয়তো একটু `সেকেলে`, আর আপনার পছন্দের মানুষটা হয়ত লেট নাইট পার্টি আর হেভি ড্রিংকস তত্ত্বে বিশ্বাসী .. কিংবা হয়ত ঠিক তার উল্টোটা... ভেবে দেখেন এবার কী এগোতে চান!
৩) তাড়াহুড়ো করবেন না---- এমন একটা মনের অবস্থায় সবচেয়ে কঠিন কাজ নিজেকে শান্ত রাখা। নিজের মনের কথা জানানোর আগে কয়েকবার ভেবে নিন আপনার ভালবাসাটা অপাত্রে দান হয়ে যাচ্ছে না তো। এতে হয়তো এতে কিছুটা সময় যাবে, কিন্তু মনে রাখবেন ভাল জিনিস পেতে গেলে তাড়াহুড়ো করলে চলে না। এই যে খনি থেকে কত কয়লা ভাঙলে তবে একটা হিরে পাওয়া যায়। শ্রমিকরাই বলে, কত কয়লা এমন পড়ে নষ্ট হয়ে যায় যেগুলো শুধু তাড়াহুড়োর কারণেই হিরে আছে কিনা জানা যায় না। সম্পর্কস্থাপনের প্রক্রিয়াটাও ঠিক কয়লা থেকে হিরে বের করে আনার মত। তাড়াহুড়ো করলে অনেক দামী জিনিস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৪) প্রস্তাবের দিন (First Dating)--- এই দিনটা একটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটায় নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখুন। আলাদা করে নিজেকে সাজিয়ে রাখবেন না। আপনি যেরকম সেরকমই নিজেকে উপস্থাপন করুন। নিজের পেশা, ভাললাগাগুলো সত্যি সত্যিই বলুন.. মনে রাখবেন আমরা অনেক সময় মোড়ক দেখে জিনিস কিনি ঠিকই, কিন্তু সেই জিনিসটা ভাল না হলে ব্যবহার করি না শুধুই সাজিয়ে রাখি। তাই মোড়ক নয় আসল আমিটাকেই তোমার প্রিয় মানুষটার সামনে তুলে ধরুন। হতে পারে সেটা তাঁর দারুণ পছন্দের হল না। কিন্তু সততা আর সত্যির একটা আলাদা মুল্য আছে। ভালবাসার ক্ষেত্রে কথাটা বড় বেশি করে সত্যি।
৫) সত্য রে লও সহজে-- লুডো খেলেছেন কখনও। তা হলে তো জানেনই, এই যে আমরা ডায়াস মানে গুটিটা যখন কোর্টের মধ্যে ছুঁড়ি তাতে ছক্কার পরার সম্ভাবনা থাকে ১/৬ ভাগ। অঙ্ক জিনিসটা বড় কাঠখোট্টা, ওসব হিসাবটিসাব মানে না। আপনি যাকে প্রেমের প্রস্তাব করছেন তার কাছ থেকে পজেটিভ উত্তর আসার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। আবার প্রত্যাখানের সম্ভাবনাটাও ওই ৫০ ভাগ। এই অঙ্কটা যদি বুকে পাথর চড়িয়েও মেনে নেন তাহলে ভাল। প্রস্তাবের দিন ওর মুখে না শুনে নিজেকে বদলে ফেলেন না, জোর করবেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যে কথাটা খুব বলতেন সেটা মেনে নিন। সত্য রে লও সহজে...আর অবশ্যই উত্তর যদি হ্যাঁ আসে তাহলে একেবারে সপ্তম স্বর্গে উঠে যাবেন না। মনে রাখবেন যেই মুহূর্তে উত্তর হ্যাঁ এল আপনার ওপর অনেক দায়িত্ব এল। আসল দায়িত্বটা হল যে মানুষটা আপনাকে এত বিশ্বাস করে হ্যাঁ বলল, সেই বিশ্বাসটা ফিরিয়ে দেওয়ার। এটা কিন্তু অনেক কঠিন কাজ।
৬) যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখুন--- প্রস্তাব করার পর উত্তর যাই আসুক যোগাযোগ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখেন। জানি কথাটা মুখে বলা অনেক সহজ, করা কঠিন। কিন্তু শুধু আপনার প্রস্তাবে না করেছে বলে আপনি দেবদাস হয়ে পাগলামি করবেন কিংবা শক্তি কাপুরের মত ভিতু হয়ে লেজ গুটিয়ে পালাবেন এমন কাজ করবেন না। তবে হ্যাঁ তাকে ভুলে যাওয়ার জন্য কদিন একটু দূরে থাকতেই পা্রেন। আর প্রেমের প্রস্তাবের উত্তর হ্যাঁ আসলে ফোন,এসএমএস, মেইলের সংখ্যা অতি উত্সাহে এমন বাড়িয়ে ফেলবেন না যাতে সে বিরক্ত হয়। মনে রাখুন আপনি যতই ক্ষুধার্ত হন বেশি খেলে কিন্তু বদহজম হয়ে যায়।
- See more at: Click This Link