গল্পটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। নিজ দায়ীত্বে পড়লে ভাল হয়।
পুলিশগুলার মত এত খারাপ বোধহয় আর কেউ নাই। শালারা জন্মের খারাপ।ওসি মোদাস্সের আজও ফ্রি করে গেল। জরিনার বয়স হয়েছে, তার উপর মাত্র কিছুক্ষন আগে দুজন খদ্দেরকে বিদায় করেছে। এর মধ্যে মোদাস্সের হারামজাদা হাজির।“চলরে হাতে সময় বেশী নাই” এমন ভঙ্গিতে বলবে যেন জরিনা শুধু তার জন্য বসে আছে। জরিনা ভিতরে ভিতরে মেজাজ খারাপ করলেও মোদাস্সেরকে তা বলেনা। খুব নমনীয় ভঙ্গিতে বলল “স্যার মাত্র দুইজনরে বিদাই দিলাম,একটু রেস্ট লই?
-রেস্ট কিসের? ডিউটি আছে ,হাতে টাইম নাই। তোর টানে চইলা আসছি।
-চলেন ,কি আর করবেন? বাঁচতে হইলে আপনাগোরে ফিরি দিতেই হইবো
-তুই ক,সবগুলা ধরা খাইছে তোরে কখনো ধরছি?
-হের লাইগাইতো!!!!
জরিনা বয়স হলেও পাড়ার সবচে সুন্দরী সে। সময়ের ১৮ বছর বয়সী কারো চেয়ে কম যায় না। তাইতো এই বয়সে এসেও চাহিদা এতটুকু কমেনি। কত ধনী লাট সাহেব ঘরে সুন্দরী সেক্সি বৌ রেখে জরিনাকে এখনো বিছানায় পেতে চায় তার কোন হিসাব নেই।এ ব্যাপারে জরিনার ভিতর কিছুটা অহংকারও আছে, সাথে সাথে লাইনের অন্য মেয়েদের হিংসার পাত্রীও হয়। অন্যরা যখন রিকশাওয়ালার সাথে ৩০০ টাকায় যায়, জরিনা তখন কোন বিজনেসম্যানেকে হাজার টাকার সুখ দেয়। রিকশাওয়ালারা জরিনাকে কেবল স্বপ্নই দেখে।
জরিনা যখন এই লাইনে আসে তখন বয়স ছিল সতের। ষোল বছর বয়সে অভাব অনটনের দ্বায়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে। এসেই মানুষের বাসায় কাজ শুরু করে। সেখান থেকেই প্রথম। জরিনার এখনো মনে পড়ে একদিন বাসার ম্যাডাম মার্কেটে গেছে বাচ্চা নিয়ে, মেয়ে মানুষ মার্কেটে গেলে দেরী করে। সেই সুযোগে সাহেব জরিনাকে জোর করে ভোগ করেছিল। জরিনা সেদিন ততটাই কেঁদেছিল,সাহেব যতটা ঘেমেছে । ভাবলেই জরিনা অবাক হয়ে যায়, যার জন্য একদিন সে কেঁদেছিল সেটা এখন তার ব্যবসা। সেটার উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে জরিনার পঙ্গু বাবা এবং মা। এরপর জরিনা যে বাসায় কাজ করেছে সে বাসায় কিছু না কিছু হয়েছে। দুতিন বাসার পর জরিনা ব্যাপারটায় আনন্দ পেয়ে গেল। মাঝে মাঝে বাসার সাহেব অথবা ছেলেকে নিজেই বিশেষ কায়দা নিমন্ত্রন করত। নিমন্ত্রনের ফাঁদে ফেলে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়ে জরিনা উদাও হয়ে যেত। এভাবেই একদিন এক মেয়ের সাথে গার্মেন্টেসে যায়। সেখানেও জরিনা হয়ে উঠে সবার টার্গেট, আর সবাই হয়ে উঠে জরিনার টার্গেট। চলছিল এভাবেই। একদিন ঝিনুক নামের তার গার্মেন্টসের এক মেয়ের হাত ধরে জরিনা সার্টিফিকেটধারী হয়ে যায়। গার্মেন্টেসের কাজ ছেড়ে দেয়।জরিনার জন্য ভালই হয়েছে এখন আর কষ্ট করে টার্গেট খুজতে হয় না। টার্গেটগুলো খদ্দের হয়ে গেছে। ছলছাতুরীও করা লাগে না।তবে ঝামেলা হয়েছে আগে কৌশলে যা হাতানো যেত পুরোটাই নিজে পেত। এখন খদ্দের যা দেয় তার বড় অংশ খালাকে দিতে হয়। খালা হল এই এই পাড়ার প্রধান।অবশ্যই জরিনা নাকি খালার ব্যবসা জমজমাট করে দিয়েছে। অন্য মেয়েরা যখন খদ্দেরের খোজেঁ রাস্তায় নামে, খদ্দের তখন জরিনাকে ফোনে বুক দেয়।
এ লাইনে গুনে গুনে ২০ বছর হল। বয়স হয়ত খুব বেশী নয়। তবে দীর্ঘ কাজের কারনে জরিনার শরীরটা ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করেছে।এই কাজ এমন কাজ যৌবন শেষতো ব্যবসা শেষ।তবুও জরিনার কিছু খদ্দের আছে যারা গত ১০ বছর যাবত জরিনাকে নিয়ে সময় কাটায়।ওসমান তাদের একজন। বিরাট ব্যবসায়ী। এই সাইত্রিশ বছর বয়সেও ওসমান জরিনাকে ডাকল হোটেলে।মাগীদের কেউ চুমু খায় না। কিন্তু ওসমান জরিনাকে চুমু খায়, এটা গোপন কোন ভালবাসাও হতে পারে। জরিনাও কাজ শেষ হলেই চলে যায় না। ওসমানের চুলে বিলি করে দেয়। ওসমান একেবারেই শেষ অবস্থায় আছে। দম নাই,কামে দম না থাকলে জরিনার ভাল না লাগলেও দম থেকে টাকাটা বেশী দরকারি।অন্যদিনের মত সেদিন জরিনাকে চুমু খেয়ে শুরু করেছে ওসমান সাহেব। জরিনা জানে ব্যাটা এখনই ব্লাউজের ভিতরে হাত দিবে।অন্যদিনের মতই নিয়ম অনুযায়ী সব হচ্ছিল।মাঝপথে হঠাৎ ওসমান সাহেব থেমে গেল। উঠে গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে বলল “নারে জরিনা তুই আগের সেই জিনিস নাইরে”
জরিনা হতচকিত হয়। ওসমান সাহেবের কথায় বুঝে যায় জরিনার সময় শেষ। তবুও জরিনা ওসমান সাহেবকে কাছে টানার চেষ্টা করে “ওরে বুড়া গত দশ বছর যাবত করতাছেন আর কত চাঁন? দিল দিয়া করেন দেখবেন মজা পাইবেন” ওসমান সাহেবকে খুব বেশী আগ্রহী মনে হল না।মুখ থেকে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললেন “তুই বাদ জরিনা”
৫ বছর পর।
জরিনা এখন পাড়ার সর্দারনী। ব্যবসার মূলধন শেষ হয়ে গেলে বড় ব্যবসায়ীরা পথে বসে, এই লাইনে এই মজা পথে বসতে হয় না। অবশ্যই জরিনার ব্যাপার আলাদা। সবাইতো পথেই বসে। যতদিন যৌবন,ততদিন ক্ষুদা নেই। যৌবন শেষ হয়ে গেলে পেটে লাথি পড়ে বেশীরভাগরই। ৩৫ জন মাগীর সর্দারনী জরিনার যে দুঃখবোধ নেই তা না। ক্ষমতা থাকলেওতো বেকার। সারা জীবন যেই সব পুরুষ মানুষ জরিনার জন্য কাঙ্গাল ছিল আজ তাদের কোন খবর নাই। খবর থাকবেই বা কেন? জরিনাতো আর টাকা ছাড়া কাউকে কিছু দেয় নাই। অসি মোদাস্সেরও জরিনার রুমে আসে না। লীলা নামের এক মেয়ে আসছে। চুপেচুপে তার রুমে যায় আবার বের হয়ে যায়।নষ্টা মাইয়্যা মানুষ পাল্টায় পুরুষগুলা সব একই থাকে,তারা থাকবেই।মাঝে মাঝে জরিনা পান চিবোতে চিবোতে নতুনদের বলে “আল্লাহ মেশিন দিছে, কিন্তু তেল বেশী দেয় নাই।সাবধানে থাকবি,ট্যাকা কিছু জমা নাইলে শেষ বয়সে মরবি। কোন খানকির পোলা তখন চাইয়্যা দেখবো না”
সাহস নিয়ে লিখে ফেললাম গল্পটি। ঠিক গল্প না। একটি জীবন প্রণালী বলা যেতে পারে।ভুলগুলো ক্ষমা করে পড়বেন।
গল্পটির ২য় পার্ট এখানে।এখানেই গল্পটি মূলত শেষ হয়েছে।