নীরব রাতের পরে তোমার চোখের ভাষা
বড় বেমানান ঠেকেছিল,
তবু, বড় ভাল লেগেছিল
শীতের বিকেলে তোমার উষ্ণ হাতের ছোঁয়াটুকু।
কিন্তু আজ,
নিজেকে নিজে কুড়ে কুড়ে শেষ করে
দিতে ইচ্ছে করে।
তোমার প্রানবন্ত হাসিটুকু আজ
উজ্জীবিত করে না আমায়,
আমাদের চৈতালি দুপুরের সৃতিটুকু
নিরবে নি:শব্দে পিছু তাড়া করে আমায়
শিকারি বাজের মত।
প্যাঁচার চোখ দুটো আজ বড় ভাল লাগে।
ভাল লাগে স্যাঁতস্যাঁতে ভেজা বাতাসে
খালি পায়ে হেঁটে গিয়ে বসতে
বড় শিরিষ গাছটার নিচে।
পায়ের খুব কাছে দিয়ে মাটির নিচের
অন্ধকার সৃতিগুলো বুকে নিয়ে
টেনে - টেনে বুকে হেঁটে চলে কেঁচো -
পেছনে পড়ে থাকে তার সৃতিটুকু দাগ হয়ে।
এক পসলা বৃষ্টির পর
হঠাৎ বাতাসে গাছের পাতা থেকে
ঝর্ঝর্ ঝরে পরে পানির ফোটাগুলো
আমার উপর।
নখের উপর একটা জলকনা আটকে থেকে
হীরের মত দুত্যি দিতে থাকে
এই বিকেলের ম্লান আলোতেও -
ঠিক যেন তোমার চোখের জল।
মুখ বাড়িয়ে ঠোট দিয়ে শুষে নিই;
সেই নরম স্পর্ষ পাই না এতে
পেয়েছিলাম যা - তোমার ঠোঁট শেষবার
চুমে আসার সময়।
বড় ভাল লাগে ভেজা ঘাসের
উপর পড়ে থাকা শিরীষের ভাঙ্গা ডাল।
চাপে পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া
জল-কলসের ফুলটা যেন
তোমার মতই চোখ মেলে
তাকিয়ে আছে আমার দিকে!
মনে হয় সবচেয়ে ভাল পায়ের
চাপে পড়ে থেত্লে যাওয়া ফুল -
তার আর্তনাদ আছে - আর্তি আছে - কান্না আছে,
কিন্তু ফুলটা তুলে নেবার কেউ নেই।
সবচেয়ে উপভোগ্য এই অসহায়ত্ব ।
খুব নিষ্ঠুর কিন্তু সবচেয়ে মধুর।
প্যাঁচার চোখ
ভেজা বাতাস
কেঁচোর দাগ
জল কণা
ম্লান আলো
ভাঙ্গা ডাল
চ্যাপ্টা জলকলস
থ্যাঁতা ফুল
অসহায়ত্ব
সবকিছু ভাল লাগে আমার
বড় ভাল লাগে,
ঠিক তুমি ছাড়া
আমার এই সময়টার মতই ।।