সত্যিকারার্থে একটি ওয়েব সাইটরে কাজ শেষ করার সময় স্বাভাবিকভাবেই প্রোগ্রামার অনেক উত্তেজিত থাকে। অনেক সময় এটা কোন ভাল বয়ে আনে আবার এটার অসুবিধাও আছে। বেশ কিছু দিন কাজ করার পর আপনি যখন ভাবছেন সাইটের কাজটা শেষ হয়েছে, এখন এটা উম্মুক্ত করার সময় এসেছে-সেই সময় এই বেপারগুলো দেখে নিয়েছেন কিনা ভেবে দেখুন।
আপনা একটা ওয়েব ডিজাইনার/ডেভলপার আপনার কাজের এটা পরিশিমা আছে আর সেই পরিশিমার মধ্য থেকেই বলছি-অনেকে বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি নজর না দিয়েই শুরু করে দেয় যা একটু আধটু সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে
(আমার পরের লেখাগুলো ই-মেইলের মাধ্যমে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করে ইমেইল ঠিকানাটি দিন এবং ই-মেইলটি চেক করে কনফার্ম করে নিন)
আলোচনাঃ
সাইটের কাজটা শেষ পর্যায়ে চলে গেলেও কিছু কিছু বেপারে হয়তো আপনার সন্দেহ থেকে যায় যে, এ কাজটি এভাবে না করে ও ভাবে করলে কেমন হয়? এমন কিছু বেপারও থাকতে পারে যা ক্লায়েন্ট বুঝবে না, বা তার সাথে কথা বলে লাভ নেই। সেই সব বিষয়ে আলোচনা করে নিতে পারেন। আপনার সামাজিক নেটওয়ার্কের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে নিতে পারেন। তবে, বেপারটা এমন নয় যে অতীব জরুরী… এমন নয় যে আপনি কারো কাছ থেকে সাজেশন নিচ্ছেন। আসলে বেপারটাকে এমন ভাবে নিচ্ছেন যে, শুধুই আলোচনা। তার মধ্য থেকে ভাল জিনিষটি নিতে হবে।
একটু ধীরে সুস্থে কাজ করাঃ
ওয়েব ডিজাইনের শেষের কাজগুলো অনেক শ্রমসাধ্য হয় এবং পরিশ্রমও বেশি দিতে হয়। তাই একটু সাইটটি লাঞ্চ করার আগে আপনাকে বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেব। সাইট আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশের আগে নিশ্চিন্তে একটা দিন কাটালে এটা আপনার উপকারই হবে।
বিশ্রামের পরে এমন কিছু জিনিষ মনে আসতে পারে যা অনেক কাজের চাপের সময় খেয়াল ছিল না।
আপনি সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকেন- এটা প্রকাশ করতে আপনার ভাল লাগে? আপনার ক্লাইন্ট হয়তো ফোন করলো যে, আমার কাজের কি খবর আপনি বললেন-আপনার কাজটিই করছি। আমি অবশ্য এরকম উত্তর দেয়ার চেয়ে পছন্দ করবো-ভিন্ন কিছু। আপনি যে, সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকেন এটা আপনার দিক থেকে অনেকটা পজিটিভ হলেও মানুষ হিসেবে অন্যরা এরকম লোক পছন্দ করে না।
প্রকৃত ব্যপার এই যে, সবাই রিলাক্স লোক পছন্দ করে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে সবাই যাতায়াতে কষ্ট ইত্যাদি বৃষ্টির দুঃনাম গাইছে। সেই সময় আমি হুট করে বললাম- কি মজার বৃষ্টি, আমার কাছে ভালই লাগছে। এতে অনেকে আমার কথাটা পছন্দও করে ফেলে – আমি যে ভাল আছি তারা আমার এই কথাটায় বুঝতে পারে।
লেন-দেন সম্পর্কিত বেপারঃ
ওয়েবসাইটটি রিলিজ দেওয়ার বেপারে আপনাদের টাকা -পয়সা দেয়ার বেপারে যে রকম কন্ট্রাক্ট হয়েছিল তার বাস্তবায়নের বেপারটা পরিষ্কার করে নিন। স্বাধারনত কাজ শেষ হলে সম্পূর্ণ টাকাটাই নিয়ে নিতে হয়। অনেক সময় টেস্টিং এর জন্য কয়েকমাস সময় দিতে হয়। প্রফেশনালিজম নিজের মধ্যে না আনতে পারলে-সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পরে টাকা পয়সার বেপারে। তার পর একটা ঝামেলা হয়-এবং তা থেকে শিক্ষা। তার চেয়ে বরং এ বেপারগুলো পরিষ্কার থাকাটা অনেক জরুরী।
তাই ওয়েবসাইটের কাজটি রিলিজ দেওয়ার আগে-
* INVOICE বানিয়ে নিন
* টাকা পাওয়ার বেপারটি নিশ্চিত হয়ে নিন
* সাইট রিলিজের পরের সার্ভিসের কোন বেপার থাকলে তা একটি চুক্তি পত্র তৈরী করে নিন।
* সাইটের ডিজাইন ও অন্যান্য ডকুমেন্টেশনের কোন হার্ড কপি প্রয়োজন হলে তা সংরক্ষন করুন।
ওয়েব সাইটের কম্পাটিবিলিটি চেক করাঃ
* আপনি হয়তো কোন একটি ব্রাউজার ব্যবহার করেছেন । মজিলা ফায়ারফক্স, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, অপেরা, সাফারী ইত্যাদি ব্রাউজারের মাধ্যমে চেক করে নিন বানানো সাইটটি।
* সাইটের লোডের সময় কতটুকু লাগে তা চেক করে নিন। ছবিগুলো সঠিক অপটিমাইজ করা হয়েছে তা কিন্তু দেখা দরকার।
* বিভিন্ন রেজুলেশনে আপনার সাইট কেমন লাগে ? দেখেছেন তো? ইদানিং অনেক বড় বড় মনিটেরের ব্যবহার বাড়ছে। যেমন আমি সর্ব শেস যে মনিটরটা কিনেছি তা ৯০০*১৬০০ পিক্সেল স্ট্যান্ডার্ড।
* কাজ করার সময় অনেক সময় কিছু কিছু অপ্রয়োজনীয় ফাইল ও কোড লেখা হয়। এবার চাইলে আপ্রয়োজনীয় কোডগুলোও মুছে দিতে পারেন।
ব্যাকআপ নেওয়াঃ
কাজটি যদি শেষ হয়েছে বলে মনে করেন, তাহলে সম্পূর্ণ কাজটির ব্যকআপ নিন । কাজটি ক্লআন্টের হাতে যাওয়ার পরে আপনার ডিজাইনটির কি অবস্থা হবে তা আপনি নাও জানতে পারেন। তাই, নিজের করা কাজটি ব্যাকআপ নিয়ে তারিখ দিয়ে রাখুন। আর বিভিন্ন অংশের স্ন্যাপও নিতে রাখতে পারেন। ডাটাবেজ টেবিলের রিলেশন সহ কিছু তথ্য নোট করে রাখা দরকার পরলেও তা করে নিন।
বিষয়গুলো আপনাদের কেমন লেগেছে জানাবেন। আশা করি পরবর্তিতে নতুন নতুন কাজের আইডিয়া শেয়ার করতে পারবো।
আমার পূর্বের লেখাগুলো পড়তে পারেন যা কাজে লাগতে পারেঃ
ওয়েব জগতে নতুন উদ্যোগ নেয়ার বেপারে কিছু তথ্যপূর্ণ উপদেশ
লেখাটি পূর্বে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্লগ ও টিউটরিয়ালবিডিতে প্রকাশিত হয়েছে।