তখন আমি যশোর থাকি অনেক ছোট কে জি'তে পড়ি মনে হয় । আম্মা ঢাকায় চলে আসে চাকুরী সূত্রে আর আমিও ছোট স্কুল খাওয়া দাওয়া সব মিলায় কষ্ট হতো তাই আব্বা আমকে নানা বাড়ি রেখে আসলো। আমার নানা তখন সরকারী চাকুরী করতেন, থাকতেন সরকারী কোয়র্টার এ । সেই বৃটিশ আমলের কোয়ার্টার সিলিং গুলি অনেক উচুতে। অনেক মজার স্মৃতি আছে সেখানে আমার। আজ এরকম একটা ঘটনা শেয়ার করবো। তখন সম্ভবত রমজান মাস ছিল। সবাই সেহরী খেতে উঠছে যদিও আমি উঠি নাই কিন্তু ঘুম ভেঙ্গে যায় নানার ডাকাডাকিতে। যা হোক আমি পাশের ঘর থেকে বুঝতে পারছিলাম সবার সেহরী খাওয়া শেষ। তো হঠাৎ শুনলাম নানি বলছে খাটের নীচে কিসের যেন শব্দ হলো। আমার নানা বললো ছাগলের বাচ্চা মনে হয় খাটের নীচে ডুকছে। তো আবারও শব্দ হলো নানী আমার এক কাজিনকে বললো খাটের নীচে দেখতে। ও খাটের নীচে তাকায় দেখল সাথে সাথে বলে উঠলো- নানু এটা ছাগলের বাচ্চা না, একটা সাপ খাটের নীচে! আমি তো শুনে উঠে বসলাম হায় হায় কয় কি আমি যে রুমে সেই রুমের দরজা খোলা যদি এই রুমে আসে। আমি শুয়ে পড়লাম কোন নড়া চড়া করিনা, কান পাতলাম কি হচ্ছে পাশের রুমে শোনার জন্য। নানি আমার সেই কাজিনকে বললো পিছনের দরজা খুলে বারান্দা থেকে একটা বড় কাঠের টুকরা আনতে, ঐ গুলি ছিল জ্বালানি কাঠ কুড়াল দিয়ে চেড়া। তো একটা আনলো চোখা দেখে সেটা দিয়ে অনেকক্ষন খোচালো সাপটাকে। কাজিন দেখে সাপটা আর নড়াচড়া করছে না, সেটা দেখে বললো 'মরছে'। তারপর সাপটাকে বাইরে ফেলে দিয়ে আসলো। আমি তো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম কি ভয়ানক রাত উফ এখনো গা শিরশির করে।
খুব সকালে মামা বাইরে থেকে আসলো ঢোকার পর দেখে সাপটা চলে যাচ্ছে সাথে সাথে মামা একটা লাঠি দিয়ে ওটাকে ধরে রেল লাইনের উপর রেখে আসলো একটু পর একটা ট্রেন এসে দুই টুকরা করে ফেললো। মামা যখন বাসায় এসে বলল আমি তো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম মামাকে বললাম মামা তুমি না থাকলে তো আমাদের মেরে ফেলতো, আমি তো কিছু করি নাই, আমাকেও মেরে ফেলতো।
অনেক বছর পর্যন্ত এই ভ্রান্ত ধারনা ছিল যে সাপটা এসে প্রতিশোধ নিবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:১৫