ছেলেটি কার?
ড. আকবর জাদেহ। তিনি বর্তমানে মাশহাদের (ইরানের একটি শহর) একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। বয়স ৪০-৪২ হতে পারে। অনেক মজার মানুষ। মাঝে মাঝে আমরা একসাথে ভলিবল খেলি। একদিন সবাই বসে বসে গল্প করছিলাম। নিচের কাহিনীটা তিনি ফার্সি ভাষায় বলেছিলেন, বাংলায় অনুবাদ করলাম। একেতো ফার্সি ভাষায় দক্ষ না হওয়া দ্বিতীয়ত আমার লেখালেখির অভ্যাস না থাকায় হয়তো পুরোপুরি স্বাদ পাবেন না, তারপরও পোষ্ট করলাম।
তিনি সবেমাত্র তেহরান (ইরান) বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। কলেজ লাইফ গ্রামে কেটেছে। তেহরানের অলিগলির সাথে এখনও পরিচিত হতে পারেন নাই। একদিন তিনি ময়দানে শুহাদায় দাঁড়িয়ে আছেন। এমন সময় এক মহিলা এসে বলল, আমার বাচ্চাটাকে দেখিয়েন আমি দোকান থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে আসছি। এই বলে মহিলাটি ৪-৫ বছরের তার ছেলেকে দিয়ে একটা দোকানের দিকে চলে গেল।
তিনি বাচ্চাটাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
সুন্দর বাচ্চা পেলে সবাই আদর করে এটাই স্বাভাবিক। তিনিও মাঝে মাঝে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
দেখতে দেখতে ৩০ মিনিট চলে গেল। মহিলা আর আসেনা। তিনি খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। বাচ্চাটাকে নিয়ে মহিলা যে দোকানে গেছে, সে দোকানে গেলেন। দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন-
আকবর : একজন মহিলা এখানে এসেছিল?
দোকানদার : না এখানে কোন মহিলা আসেনি।
আকবর : ৩০ মিনিট পূর্বে আমি এ বাচ্চার মাকে দোকানে প্রবেশ করতে দেখলাম। আর আপনি বলছেন, আসেনি?
দোকানদার : এ বাচ্চাকে আপনি নিয়ে এলেন। এটা আপনার বাচ্চা।
আকবর : না, এটা আমার বাচ্চা নয়। ঐ মহিলার বাচ্চা।
দোকানদার : বসেন।
দোকানদার তাকে বসতে দিয়ে পুলিশকে কল করল। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ চলে এল। পুলিশ এসে বিস্তারিত শুনল। আকবর জাদেহ এর হাতে হাত কড়া পড়িয়ে দিল। সাথে বাচ্চাটাকেও নিয়ে গেল। পরদিন কোর্টে নিয়ে যাওয়া হল।
পুলিশ ঐ মহিলাকেও হাযির করল। যে বাচ্চাটাকে আকবরকে দিয়ে গিয়েছিল।
মহিলাকে বিচারক প্রশ্ন করলো-
বিচারক : এ বাচ্চাটি আপনার।
মহিলা : না, আমার নয়।
বিচারক : রেজা (বাচ্চার নাম) বলে ডাকুন।
মহিলা : রেজা! এদিকে আস।
বাচ্চাটি মহিলার ডাকে সাড়া দিল না। এবার বিচারক আকবর জাদেহকে বলল, আপনি ডাকুন।
আকবর জাদেহ : রেজা! এদিকে আস।
রেজা বাবা! বাবা! বলে তার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আকবর জাদেহ হতভম্ব।
পাশে দাঁড়ানো একজন পুলিশ মিথ্যুক বলে আকবর জাদেহ এর পায়ে বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করল।