পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পর এবার ওরা ফাঁদ পেতেছে বাংলাদেশে। আর ওদের ফাঁদে পা রাখছে এদেশের সরলমনা মুসলিমরা। এখনই সময় ওদের এই চক্রান্তগুলোকে ধূলিসাৎ করা। আর দেরি নয়। নতুবা হয়ত আর কিছুদিন পর শোনা যাবে এদেশের শতকরা ৫০ ভাগ লোকই খ্রিস্টান হয়ে গেছে। তাই যাদের দিলে বিন্দু মাত্র ঈমান আছে তাদের এখনই স্বচ্চার হতে হবে। ওরা কিভাবে এদেশের মানুষকে বোকা বানাচ্ছে তেমনই একটি ঘটনা জানাতে চাই আপনাদের।
গাজিপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার তেলিরচালা গ্রামে ওরা একটি বাড়ি ভাড়া করে স্কুল প্রতিষ্ঠার নামে। এর পর ওরা বাড়ি বাড়ি ছাত্র জোগাড়ের নামে চালাতে থাকে ওদের দাওয়াতি কার্যক্রম। কোচিংয়ের নামে বিনামূল্যে স্কুল ব্যাগ (যীশুর ছবি যুক্ত), বই, খাতা ইত্যাদি প্রদানের লোভ দেখিয়ে ছাত্র জোগাড় করে ওরা তাদের হাতে ক্রসের চিহ্ন একে দিত। আর ওদের এই চিহ্ন এমন পদ্ধতিতে আঁকা হত যে জীবনে একবার সিল মারার পর যেন আর সেই সিল কোনভাবেই ওঠানো না যায়।
প্রতি রবিবার আর শুক্রবার কোচিং-এ অনুষ্ঠানের নামে ওরা সরলমনা মুসলিমদের সাথে করত প্রতারণা। খবর শুনে আমি নিজে ওদের ঐ কোচিং-এ গিয়েছিলাম। দিনটি ছিল রবিবার। সকাল ১০.০০ টায় অনুষ্ঠান শূরু হয়। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে আমি সহ পুরুষের সংখ্যা ছিল ৫ জন আর মহিলার সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৫০ জন। এর পর দেখলাম আসলে সেটাত কোন অনুষ্ঠান না বরং মুসলিম অথবা হিন্দুদের প্রতারিত করে খ্রিস্টান ধর্মের দীক্ষা দেওয়া। প্রথমে দেখলাম ওরা ওদের ধর্মীয় কয়েকটি গান গেল। তারপর ওদের তথাকথিত বাইবেল থেকে পাঠ করল। এর পর বলল যে প্রভূ আমাদের এগুলো মানার তৌফিক দান করুন। এর পর সবাইকে বলল যে সবাই আমীন বলুন। অনেকেই আমীন বলল। অর্থাৎ প্রতারনার মাধ্যমে সবাইকে দিয়ে ওদের তথা কথিত বাইবেল অনুসরনের জন্য সম্মতি নিল। এর পর কয়েকবার সবাইকে চোখ বন্ধ করে পিতা অথবা পুত্রের (আমার পরিষ্কার মনে নাই) কাছে প্রার্থনা করতে বলল। আর আমি দেখলাম যে সবাই চোখ বন্ধ করল। এর পর ওদের একজন জোরে প্রার্থনা করা শূরু করল। আর শেষে অনেকেই আমীন বলল। আল্লাহ পাকই ভাল জানেন আসলে তারা কি বুঝেই এমন করল নাকি না বুঝেই করল। আমিত না বুঝে করার মত কিছু দেখছি না। আর না বুঝে করলেও এর পর ঈমানের কত অংশ বাকী থাকে তা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন।
এরপর ওদের ঐদিনের প্রোগ্রাম শেষ হয়ে গেল। প্রোগ্রাম শেষে ঘোষণা দেওয়া হল যারা আজকে নতুন এসেছেন তারা আমাদের সাথে দেখা করে যাবেন। আমি দেখা করতে যাই নাই। কারন আামকে ঢুকার সময়ই সন্দেহ করেছে। তবে আমি যা শুনেছি যে ওরা তাদেরকে চাল, ডাল, টাকা পয়সা ইত্যাদি প্রদান করে এবং বলে পরবর্তীতে আরও লোক নিয়ে আসার জন্য। যারা লোক নিয়ে আসবে তাদের আরও বেশি টাকা-পয়সা দেওয়া হবে। ওদের এই পদ্ধতিটা এত ফলপ্রসূ ছিল যে মাত্র কয়েক মাসেই ৫০-৬০ জন লোক সংগ্রহ করে ফেলেছিল। ৫০-৬০ জন মানে কিন্তু ৫০-৬০ টি বাড়ি অর্থাৎ একটি এলাকা বা তার অর্ধেক।
বের হবার সময় সবাইকে এক প্যাকেট বিস্কুট দিল। আমাকেও দিল । আমি নিয়েছিলাম। কিন্তু খাই নাই। কিন্তু রাস্তায় আসার সময় যখন রাস্তার লোক জন হাতে বিস্কুট দেখল তখন সবাই বলল বাহ ঐ স্কুলটা তো ভাল! সব্ইাকে বিস্কুট খেতে দেয়। অর্থাৎ বিনা বাক্যে তারা পরবর্তীতে ঐ স্কুলে যাওয়ার দাওয়াত পেয়ে গেল।
এই হল বাহ্যিকভাবে আমি যা দেখলাম তার বর্ণনা। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ওরা মানুষকে যা বুঝিয়ে ধোকা দেয় তার একটি:
আমরাও মুসলমান। আমরা কোরআন, বাইবেল সবই মানি। কোরআনেও সূরা বাকারাতে আল্লাহ বলেছেন সমস্ত আসমানী কিতাবে বিশ্বাস করার জন্য। কিন্তু তোমরা শুধু কোরআন বিশ্বাস কর আর আমরা সবই বিশ্বাস করি। অতএব তোমরা যদি কোরআনের সঠিক অনুসরন করতে চাও তাহলে আমাদের বাইবেলও মান। তাছাড়া নাজাত পাওয়া যাবে না। ফলে অনেকেই না বুঝে টাকা-পয়সার লোভে পড়ে পা দিচ্ছে তাদের ফাদে।
এরকম আরও অনেক যুক্তি ওরা দেয়। যার কোন ভিত্তি নেই। কোরআনে আল্লাহ সমস্ত আসমানী কিতাবে বিশ্বাস করতে বলেছেন কিন্তু মানতে বলেন নাই। আমরাও সমস্ত কিতাব বিশ্বাস করি কিন্তু আমল শুধু কোরআন অনুযায়ী করি। আমরা সমস্ত কিতাব বিশ্বাস করি তার মানে এই নয় যে, ওদের বর্তমান চার রকমের বাইবেল বিশ্বাস করি। কারন এগুলো মানুষের লেখা। এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য তাই যা রাসুল(সা) শিখিয়েছেন।
এই রকম একটা নয় দশটা নয় ওদের কাছে এমন মিথ্যা বহুত যুক্তি আছে যা কখনই সত্য না। কিন্তু ওদের প্রতারণাগুলো আমাদের দেশের সাধারন মুসলমানরা না বুঝার কারনে পা দিচ্ছে ওদের ফাদে। তাই তাদেরকে বুঝিয়ে জাহান্নামের হাত থেকে বাচানোর জন্য আমরা সকল মুসলমানকে এখনই এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষত ময়মনসিংহ, মধুপুর, রাঙ্গামাটি প্রভৃতি এলাকা গুলোর অবস্থা খূবই করুন। হয়ত বা আপনার এলাকাও। কারন আমি নিজে ১ মাস আগেও জানতাম না যে আমার এলাকায় এমন অবস্থা।
আরেকটি ঘটনা আপনাদের শুনাই। ঘটনাটি আমি একজন আন্তর্জাতিক মুবাল্লেগের কাছ থেকে শুনেছি। এক এলাকায় খ্রিস্টানরা এমনি ভাবে শুরু করে তাদের প্রতারণা। শুরুতে ওরা মানুষ কে টাকা পয়সা ইত্যাদি দিয়ে সাহায্য করত। যখন ওরা বুঝতে পারল যে ওরা মানুষের মন জয় করতে পেরেছে তখন ওরা সেই এলাকার লোক জন কে ডেকে বলল তোমরা কিসের কোরআন মান। এখন পৃথিবীতে এক নতুন ধর্ম এসেছে। এই সেই ধর্মের কিতাব। এই বলে ওরা তাদের বাইবেল তাদের হাতে তুলে দেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় ওরা তাদের কথা মেনে নেয় আর সবাই খ্রিস্টান হয়ে যায়। মসজিদ পরিনত হয় গীর্জায়। তবে আলহামদুলিল্লাহ, ছোট একটি জামাতের কোরবানীর বদলতে আল্লাহ তাআলা তাদের ঐই পুরা এলাকার লোক জনকে আবার ইসলামের দৌলত দান করেছেন। এরকম একটা নয় হাজারটা ঘটনা আছে। লিখতে লিখতে দিন রাত শেষ হয়ে যাবে কিন্তু হৃদয় বিদারক এই ঘটনাগুলো শেষ হবে না।
শুধূ এতটুকুই যদি বুঝতে পারেন তাহলেই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। এমন এক সময় ছিল যখন পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশে মুসলিমদের রাজত্ব ছিল। কিন্তু আজকে কত অংশ। বাকী অংশগুলোর কি হলো।
প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা,
প্লিজ এগিয়ে আসুন। শুরু করুন ঈমানী এক আন্দোলন।