দারুল উলুম দেওবন্দ যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় আলেমই শুধু তৈরি করছে এমন নয় বরং ঈমান ওয়ালা আমল ওয়ালা আলেম তৈরি করেছে যা সর্বজন স্বীকৃত। শুধু মাত্র লামাযহাবের লোক জন ব্যাতীত। তারা এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এমন সব আযে-বাযে মন্তব্য করেছে যা শুনলে যে কোন স্বাভাবিক মানুষ তাদের কে গালি দিবে।
যাই হোক দারুল উলুম দেওবন্দ জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে যে ফতোয়া দিয়েছেন তার সম্পর্কে জাকির নায়েক এখনও কোন মন্তব্য করছেন না কেন? যেটা তার দুর্বলতার প্রমান ।
যাই হোক আমি আজকের পোস্টটা এর আগের পোস্টের পরিপূরক হিসাবে লিখছি। কারন ঐ পোস্টে কিছু নাস্তিক হয়ত ফায়দা লুটতে পারে।
পরিস্কার ভাবে সুরা নুরের ৩১ নাম্বার আয়াত থেকে নিম্নোক্ত কয়েকটি বিষয় প্রতীয়মান হয়।
১। স্বাভাবিক ভাবে যা প্রকাশমান তাছাড়া সব কিছুই ঢেকে রাখতে হবে। পর্দা করতে হবে।
২। বুকের উপর ওড়না দিতে হবে।
৩। এমন ভাবে চলাফেরা করা যাবে না যাতে তাদের গোপন সৌন্দর্য্য প্রকাশ পায়। ........
এখন ১ নাম্বার পয়েন্টে স্বাভাবিকভাবে যা প্রকাশ্যমান এই কথা দ্বারা কি বুঝায়? কোথায় আছে মুখমন্ডল, হাতে কব্জি, পায়ের পাতা। অনেকে আব্বাস (রা.)-র রেফারেন্স দেন। তিনি কোন উদ্দেশ্যে এই কথা বলেছেন? আসলে মেয়েরা যখন ঘরের ভিতর থাকবে তখন মাহরাম পুরুষদের সামনে পর্দা হলো এই রূপ পর্দা । অর্থাৎ শুধুমাত্র মাহরাম পুরষের সামনে এই অঙ্গগুলো প্রকাশিত করা যাবে। যদি গায়েরে মাহরাম পুরুষের সামনে এই অঙ্গ খোলা যায় তবে সেটা এমন পরিবেশ হতে হবে যেখানে মানুষের মধ্যে কামভাব তৈরির কোন সম্ভাবনা নাই। যেমন হজ্জ্বের সময়।
৩ নাম্বার পয়েন্ট থেকে বোঝা যায় যে এমন গোপন সৌন্দর্য (যেমন, ঝুমকো, নুপুর ইত্যাদির শব্দ....) ও গায়েরে মাহরামের সামনে প্রকাশ করা যাবে না। এখন ব্লগার বিবেক বান ভাইদের কাছে আমার প্রশ্ন ঝুমকার শব্দ শুনলে একটা মানুষের মধ্যে বেশি কামভাব তৈরি হয় নাকি তার মুখমন্ডল দেখলে। আপনি যখন বিয়ে করবে আপনি কি আপনার হবু বধুর শুধু নুপুরের শব্দই শুনবেন নাকি তার চেহারাও দেখবেন। কেন দেখবেন? অর্থাৎ ঝুমকোর শব্দ, নুপুরের শব্দ ইত্যাদি যতটুকু কামভাব তৈরি করে তারচেয়ে বেশিকামভাব তৈরি করে মানুষের মুখ মন্ডল। এখন ঝুমকোর শব্দ যদি শুনানো হারাম হয় তাহলে চেহারা দেখানো যায়েজ হয় কিভাবে?
অনেকে একটা হাদীসের রেফারেন্স দেন যেখানে বর্ণিত আছে এক লাল চেহারার মহিলা সাহাবী হুজুর(স.)জে একটি প্রশ্ন করেছিল। যার দ্বারা প্রমান হয় মেয়েদের চেহারা দেখা যায়েজ। কারন বর্ণনা কারি মহিলা সাহাবীর চেহারা দেখেছিলেন যে তার চেহারা লাল।
এখন আসুন বাকিটুকুও পড়ি। সেখানে উল্লেখ আছে এক সাহাবী ঐ মহিলা সাহাবীর দিকে তাকিয়ে আছেন। এবং সে এই কথা স্বীকারও কেরেছে যে তার দিকে তাকানো পর ঐ সাহাবীর মনে মহিলা সাহাবীকে বিয়ে করার ইচ্ছা জাগ্রত হয়। কিন্তু এমন সময় হুজুর(স.) তার চেহারাকে হাত দিয়ে নিচের দিকে নামিয়ে দেন।
এখন বলুন কামভাব জাগ্রত হওয়ার ফলে হুজুর(স.) কি সেই সাহাবীর চোখকে নিচের দিকে নামিয়ে দেন নাই। তার দ্বারা কি এই কথা প্রমান হয় না কামভাব তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সেখানে সম্পূর্ণ পর্দা করা প্রয়োজন। আপনি হয়ত বললেন ঐ সাহাবীর চোখত নামিয়ে দেওয়া হল কিন্তু মহিলাকে ত বলা হল না তুমি তোমার মুখমন্ডল আবৃত কর। আসলে ঐ পরিবেশে দুই একজন ছাড়া অন্যান্যদের মনে এমন খাহেশ জাগার সম্ভাবনা ছিল না। আর যাদের সম্ভাবনা ছিল তাদেরও কোন খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। তাই সেই জমানায় নিষেধ না হলেও বর্তমান জমানায় তা অবশ্যই নিষেধ করতে হবে। প্রমান আলোচিত কোরআনের আয়াত। ঐ পরিবেশ এখন নাই। চোখ নিচের দিকে রাখবে ত দূরের কথা পারলে বোরকার ভিতরে যেয়ে দেখে আসে যে তার ভিতরে কিআছে। এই জমানায় পর্দা করা কত প্রয়োজন। এখন আপনিই বলুন।
বিশেষ অনুরোধ: দয়াকরে একবার সৌদি সরকারের পৃষ্ঠপোশকতায় প্রকাশিত মাআরেফুল কুরআনের সুরা নুরের ৩১ নাম্বার আয়াতের তাফসীর দেখুন। আমি এখানে যা লিখেছি তা একটা হালকা ধারনা দেওয়ার জন্য। ভাল মত বুঝতে হলে তাফসীরখানা অবশ্যই পড়ে নিবেন।