নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিরকূট

আ. স. ম. জিয়াউদ্দিন

আ. স. ম. জিয়াউদ্দিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের সম্ভাব্য আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা (রিপোস্ট)

২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:৪১


(নোট: ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:০৫ প্রকাশিত এই পোস্টটি আবার পোস্ট করা হলো - পিছনে ফিরে দেখা আর অতীতের ভাবনাগুলো মিলিয়ে নেওয়ার এই সুযোগ নিলাম - যারা পড়ে চান পড়তে পারেন - ভাল লাগতেও পারে -ধন্যবাদ)


গত পাঁচ বছর অবিরাম বিএনপির সমালোচনা করেছি। কারন ছিলো মুলত দুইটা - প্রথমত বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতকে আইনী, রাজনৈতিক এবং শক্তি দিয়ে সহায়তা করছিলো এবং বিএনপির ভিতরেও যুদ্ধাপরাধীর আশ্রয় আছে - এমনকি বিচারাধীন আসামীও বহাল তবিয়তে আছে। আর দ্বিতীয়ত বিএনপি তাদের শাসনামলে যে সকল ভুল এবং অন্যায় করেছিলো - তার নিয়ে সামান্য দুঃখিততো হয়নি বরঞ্চ তাদের দুর্ণীতিগ্রস্ত নেতাদের পুর্নবাসন করতে গিয়ে নিজের দলকেও দূর্বল করেছে - যা মুলত সরকারকে আরো বেপোরোয়া হওয়ার সুযোগ দিয়েছে।

আর আমাদের মতো অনেকেই যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে সরব থাকার সুবিধাটাও পেয়েছে আওয়ামীলীগ - যা অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের করতে হয়েছে - কারন বিএনপি জামায়াত রাজনৈতিক ভাবে একটা অন্ধকার কানাগলিতে ঢুকে পড়েছে।

এইতো গেলো পুরানো কাসুন্দি। এখন কি?

বিএনপি (জামায়াতের রহস্যজনক নিরবতার মাঝে) আন্দোলনের হুমকী দিচ্ছে। বাস্তবতা হলো - বিএনপির এই হুমকী একটা বায়বীয় হুমকী হিসাবেই দেখা ভাল। কারন হলো - বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা। বাংলাদেশে প্রতিবার যাই - দেখি সাধারন মানুষের পরিবর্তন। এখন প্রায় পুঁজিবাদী সমাজে উত্তীর্ন হয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেখানে সবার মাঝে আছে স্বপ্ন। হতাশা নেইই বললেই চলে। তাই ৫২, ৬৭, ৬৯ অথবা ৯০ এর মতো আন্দোলনে সাধারন মানুষের আগ্রহ থাকার কথা না - কারন সময় মানেই টাকা। সময় নষ্ট করে নেতা-নেত্রী বত্তৃতা শুনা আর রাস্তা গিয়ে পুলিশের নির্যাতন সহ্য করে একটা আন্দোলন করার মতো সময় সাধারন মানুষের নেই বলেই মনে করছি। তবে ডাইহার্ট সমর্থক আর পেইড কর্মীদের কথা আলাদা। সেখানে আছে অর্থকড়ির বিষয়। খোড়া ঘোড়ায় বাজি ধরার মতো মানুষ কম - তাই প্রচুর অর্থ খরচ করে কিছু করা্র মতো সরবরাহও পাওয়া সম্ভাবনা নেই। দ্বিতীয় যে কারনে বিএনপি আন্দোলন সুবিধা করতে পারবে না তা হলো - দলের সাংগঠনিক দূর্বলতা। দীর্ঘদিন ধরে একটা মহাসচিব নিয়োগ দিকে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বয়সের ভারে নূজ্যমান দলের প্রধানের ঘাটতি পুরন করতে পারতো একজন দক্ষ মহাসচিব। কিন্তু তার পক্ষে কাজ করাও কঠিন হতো - কারন বিএনপির দ্বৈত নেতৃত্ব। একজন লন্ডন থেকে ফোনে নির্দেশ দিচ্ছে আরেকজন ঢাকায় বসে দলের কাজ করছেন গভীর রাতে - ফলে নেতাকর্মীরা প্রকৃতপক্ষে বিভ্রান্ত এবং দিশাহারা।

মজার বিষয় হলো - আওয়ামীলীগও জানে যে বিএনপির আন্দোলনের চাবি এখন তাদের হাতে। কিন্তু আওয়ামীলীগের নেতাদের কর্মকান্ডে মনে হচ্ছে তারাই চাইছে বিএনপি আন্দোলনের নামুক - রাস্তায় বাস পুড়ুক - টিভির পর্দায় জ্বলত্ব বাসের ছবিতে ভরপুর হয়ে যাক - ফলে তাদের দূর্বলতা গুলো ঢকা পড়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগের ফাঁদে পা দিয়েছিলো - খেলেছে আওয়ামীলীগ আর বিএনপি দৃশ্যমান ভুমিকায় ভিলেন হয়ে গেছে। এবারও তাই হবে।

এখান একটা কথা না বললেই নয় - তা হলো বিএনপি বায়বীয় কিছু ইস্যুতে আন্দোলন করার চেস্টা করছে যার প্রকৃত কোন মূল্য নেই বাস্তবে। জনগনের ভোটের অধিকার মানেই কি একদল ক্ষমতায় পাঠানো বা সরানো? ধরা যাক - বিএনপি গত নির্বাচনে ১৪৯ সিট পেলো - কিন্তু তারা কি সে্ই নির্বাচন মেনে নিতো - আমরা আগেও দেখেছি - বিরোধীদল কোন ভাবেই সংসদীয় প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে না। বিএনপি গত পাঁচ বছরে বিরোধীদল হিসাবে ইতিহাসের সবচেয়ে নির্লজ্জ ভূমিকায় ছিলো। তাই মানুষের কাছে সংসদের বিরোধী থাকা না থাকার বিষয়টা সমান। তাইলে মানুষে চায় কি? মৌলিক চাহিদাগুলোর বিষয়ে নিশ্চয়তা, অর্থনীতিতে অগ্রগতি, বিদ্যুৎ আর জ্বালানির নিশ্চয়তা তথা দেশের উন্নতি। তা তো হচ্ছে - তাইলে মানুষের কাছে ভোটের অধিকারের বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ন হবে?

প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের যে ইস্যুতে বিরোধীদল সবচেয়ে সরব হতে পারতো তা হলো দূর্নীতি এবং সুশাসন। বিশেষ করে দূর্নীতি ইস্যুতে বিরোধীদল সবচেয়ে সুবিধা করতে পারতো। গত ছয় বছরে কি বিপুল পরিমান সম্পদ দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে তার কিছু ধারনা পাওয়া যাবে যদি কেউ টরন্টোর বাইরে রিচমন্ডহিল শহরে বাংলাদেশীদের মিলিয়ন ডলারের বাড়ি কেনার হিড়িক দেখে্ই অনুমান করা যায় - যাদের মধ্যে সরকারী দলের অনেকেই আছেন।

দুঃখজনক হলেও সত্য - এই ইস্যুতে বিএনপি দূর্বল। কারন তাদের নিজেদের ঘরেই দূর্নীতির আখড়া। কানাডায় বাড়ি কেনায় যেভাবে আওয়ামীলীগের নেতার আছেন - তেমনি আছেন বিএনপির নেতারাও। বিএনপির ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটির নেতাদের অনেকেরই পরিবারের অর্ধকে টরন্টোতে বাস করেন - সচিব এবং আহ্বায়কের পরিবার থাকে টরন্টোয় - দেশ থেকে ডলার আসে - কিভাবে আসে তা না হয নাই বললাম। মুল কথা হলো - এদের পক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদ করা সম্ভব নয়। কারন এরা ক্ষমতায় থেকে যে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলো তা রক্ষা করাই এদের প্রধান কাজ হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো - লন্ডনে বসে ফিনফিনে শার্ট পড়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হল ঘরে সরকার বিরোধী জ্বালাময়ী বত্তৃতা দেওয়া আর পল্টনের উত্তপ্ত পীচের রাস্তায় নেমে জনগনকে আন্দোলনের ডাকা কখনই সমান না - মানুষও এই বুঝে।

তাই পরামর্শ দিচ্ছি বিএনপির উচিত নয় আওয়ামীলীগের ফাঁদে পা না দিয়ে প্রথমত নিজেদের ঘর গুছানো। সেই কাজে প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে তারেক রহমানকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া, খালেদা জিয়াকে উপদেষ্টা করে একটা কার্যকরী সভাপতিমন্ডলী তৈরী করে প্রতিটি জেলা/থানায় সন্মেলন করে দলের কাঠামো নির্মান করা এবং মেধাবী এবং দক্ষদের নেতৃত্বে আনা। তার সাথে সাথে ধান্ধাবাজ টকশো জীবিদের পরামর্শ গ্রহন থেকে বিরত থাকা (বিশেষ করে মান্না, মুজাহিদুল ইসলাম, আসিফ নজরুল, পিয়াস করিম,ইত্যাদি, কারন গত পাঁচ বছর ওদের পরামর্শ শুনেই বিএনপি ভীষন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে)। দ্বিতীয়ত রাজনীতির বিষয়ে বায়বীয় ইস্যুকে (বিসমিল্লাহ শেষ হবে, ভারত দেশ নিয়ে যাবে, ভোটের অধিকার ইত্যাদি) বাদ দিয়ে অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে দূর্নীতিকে কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা।

এই জন্যে দরকার ধৈর্য্য। আর বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটা মিমাংসা করে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করা জরুরী বটে। যুদ্ধাপরাধের বিচার, জামায়াতের সাথে সম্পর্ক, খালেদা জিয়া জন্মদিন, স্বাধীনতার ঘোষক ইত্যাদি ইস্যতে সত্যকে মেনে নেওয়ার মাধ্যমে উদারতার পরিচয় দেওয়া। সবচেয়ে বড় কথা হলো - আগামী দশ বছর পর বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চায় বিএনপি তার একটা রূপরেখা তৈরী করে জনগনের কাছে সুষ্পষ্ট ভাবে পৌছানো - যাতে সেই স্বপ্নটা সাধারনের স্বপ্নের সাথে মিশে যায় - তা হলে আর বিদেশী শক্তি আর দেশীয় কুচক্রিদের উপর নির্ভর করতে হবে না - সাধারনের সমর্থনেই বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারবে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:২৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: দেখি কালকে কি হয়, আমি শুধু দেখেই যাবো।

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৭:১০

ক্লোন রাফা বলেছেন: আপনার যে পরামর্শ বা উপদেশ তা বিএনপি গ্রহণ করবেনা এটা দিনের আলোর মত সত্য। তারা একটি পুর্ব থেকেই এক্সিস্ট করে এমন জনসমর্থিত শক্তি নিয়ে রাজনিতি করছে । যে শক্তিটার প্রকৃত অবস্থান বাংলাদেশ বিরোধী। ২০০১ থেকে ২০০৬ এ সুষ্পষ্ট হয়েছে। তারা একক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযদ্ধের শক্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো! তাদেরকে চ্যালেন্জ করার মত শক্তি যাতে বাংলার মাটিতে না থাকে।
বাংলাদেশে সরকারে এবং বিরোধীদল দু’টোই যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হয় তাহলে এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে রাজনৈতিক সহিংসতা ॥ নির্বাচন নিয়ে কোন সমস্যাই থাকবেনা এটুকু। নিশ্চিত।

ভালো লিখেছেন,আ.স.ম.জি.উদ্দিন। ধন্যবাদ॥

৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৮:২১

কামাল১৮ বলেছেন: যুক্তি আছে।

৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ৯:২২

ধুলো মেঘ বলেছেন: নির্বাচনের বছর এলেই বিএনপির গায়ে গরম লাগা শুরু হয়। তখন লেংটি খুলে একটু নাচানাচি করে। নির্বাচনের সময় উত্তম মধ্যম খেয়ে নির্বাচনের পর পরেই আবার ৫ বছরের জন্য চুপ করে যায়।

৫| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ সকাল ১১:১৮

কাঁউটাল বলেছেন:


নংগু হোগোতিশীল
চংগু খোগোতিশীল
বাংগু পোগোতিশীল
হাংগু নোগোতিশীল

৬| ২৮ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: বিএনপির কোমর ভেঙ্গে গেছে। বাকি জীবনে তাঁরা আর কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.