নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

To call me \"awesome\" is an understatement.

ওয়ান টাইপ

To fight. To die. Enjoy the afterlife.

ওয়ান টাইপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১২টি উপদেশ যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পারে যদি আপনি চান

২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০০

পুরো শিরোনামটা হবে "১২টি উপদেশ যা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতে পারে যদি আপনি একরোখা না হন।"
আপনি যদি ভেবে থাকেন Nobody is perfect. তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য।

প্রত্যেক মানুষেরই নিজ নিজ পন্থা আছে বেঁচে থাকার। কেউ কেউ সব ক্ষেত্রে সৎ, কেউ কোন কোন ক্ষেত্রে সৎ আবার বাঁকি ক্ষেত্রে অসৎ। কেউ কেউ সম্পূর্ণই অসৎ। কেউ কেউ সুযোগের অভাবে সৎ। মানে সৎ হওয়ার সুযোগ পান নি তাই এখনও সৎ-ই আছেন। কেউ তাকে ঘুষ সাধেইনি, তাই আর ঘুষ খাওয়া হয়ে ওঠে নি। তাই তিনি আজতাক সৎ।

বেঁচে থাকার সাথে সততার একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে। আপনি একা বাঁচতে পারবেন না। আপনার হয় পরিবার থাকবে। আপনার আত্মীয় থাকতে পারে। আপনার বন্ধুবান্ধব থাকতে পারে। আপনার পরিচিতজন থাকতে পারে। তাদের সাথে চলাফেরায় আপনাকে একটি সামাজিক নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। আপনি অসামাজিক ঠিকাছে, কিন্তু অসামাজিক হলেও আপনাকে কিছু কিছু বেসিক নিয়ম মেনেই বেঁচে থাকতে হবে। সেই বেসিক ১২ টা সামাজিক ও ব্যক্তিগত বিষয় আমি তুলে ধরেছি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর হাদিসের আলোকে।


১) নিজের যৌবন, স্বাস্থ্য, সম্পদ, সময় এবং জীবনের সঠিক ব্যবহার
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "তোমরা তোমাদের ৫ টি জিনিসের সঠিক ও সময়োপযোগী ব্যবহার করবে। বৃদ্ধ হওয়ার আগে তোমার যৌবনের, অসুস্থ হওয়ার আগে তোমার সুস্থতার, অভাবের পড়ার আগে তোমার সচ্ছলতার, ব্যস্ত হওয়ার আগে তোমার অবসরের, মৃত্যু হওয়ার আগে তোমার জীবনের।"
আমরা ভুলে যাই আমরা একদিন বার্ধক্যে উপনীত হবো। তাই বার্ধক্য আসার আগে আমরা যে যৌবনের সোনালী সময়গুলো পাই সেগুলো কাজে লাগানো। যখন সুস্থ থাকি তখন যেন সচেতন হয়ে চলাফেরা করি। খাবার-দাবারে, নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে। যখন পকেটে টাকা থাকে শেষ হওয়ার আগে যেন হিসেব করে চলি। যখন ফ্রি থাকি সময়টা যেন কাজে লাগাই। ব্যস্ত হয়ে গেলে নিজের সময় বলে কিছুই থাকবে না। চাইলেও মন যা চায় করতে পারবো না। একদিন সবাইকেই মরতে হয়, আমাকেও মরতে হবে। ফুর্তি করে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে এমন কিছু যেন করি মৃত্যুর পরও যেন সেটা কাজে লাগে।

২) ইচ্ছাপূর্বক কোনও কাজে বিলম্ব করা বা গড়িমসি করা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "অবশ্যই তোমরা সচেতন থাকবে বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে। যদি তুমি আগামীকাল পেয়ে যাও সেটাই হবে তোমার আজ। কেননা কেউ জানেনা আগামীকাল সে কী করবে। আর যদি তুমি আজ'কে কাজে লাগাতে না পারো, আগামীকাল না পেলে তুমি আফসোস করবে কেন গতকাল করলাম না।" "এমনকি যখন তুমি সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠবে রাতের ব্যপারে চিন্তিত হবে না তেমনিভাবে রাতের সময়ে পৌছলে পরদিন সকালের ব্যপারে চিন্তিত হবে না। কেননা কেউ জানেনা পরদিন সকালে সে আদৌ জেগে উঠবে কি না অথবা সকালে জেগে উঠে আদৌ রাত পর্যন্ত বাঁচবে কি না।"
শুনেছি ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ। কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করতে করতে যদি সেই ভবিষ্যতটাই না পাই? বর্তমানতাকে মিস করে ফেলি? আমরা প্রায়ই এমন করি, সময় তো শেষ হয়ে যাচ্ছে না, এখন না হয় না করি, পড়ে করে ফেলব। অথচ যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে যে কোন সময়। হতে পারে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। হতে পারে অসুস্থ হয়ে গেলাম, হতে পারে মারাও গেলাম। হতে পারে ভুলে গেলাম। :) তাই কোনও কাজেই বিলম্ব করা উচিৎ নয়, সুযোগ থাকলে সময়ের কাজ সময়েই সেরে ফেলা উচিত।

৩) সময় নষ্ট না করা বা তুচ্ছ অনর্থক জিনিসে সময় ব্যয় না করা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "তুমি দুইটি বিপদজনক অবস্থানে আছো যদি দেখো 'আনন্দের কিছু নেই তবুও তুমি অযথাই আনন্দ পাচ্ছো, আর দুর্বল নও তবুও বিশ্রামে সময় ব্যয় করছো'।"
আমরা কী করি? হাতে কাজ নেই, অথবা কাজ আছে সেটা ফেলে রেখে ফেসবুক স্ক্রল করতে থাকি। স্ক্রল করতে করতে নিচে নামতে নামতে শেষ হয়ে গেলে আবার রিফ্রেশ করে আবার স্ক্রল করতে থাকি। এটা জাস্ট একটা উদাহরণ দিলাম। এইযে এভাবে সময়গুলো নষ্ট করছি, এটা না করে এমন কিছু কি করা যায় না যেটা অর্থবহ? পরে করলেও চলবে, এখন যেহেতু সময় আছে করে ফেলি। আগের একটি কাজ করা হয় নি, এখন যেহেতু সময় আছে করে ফেলি। অথবা পরিবারের লোকদের সময় দেই। ঘরের কাজ করি।

৪) নিজের অজ্ঞতা স্বীকার করা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "যখন তোমার কাছে এমন কিছু জানতে চাওয়া হবে যা তুমি জাননা, অথবা এমন কিছু জিজ্ঞেস করা হবে যাতে তোমার ধারনা নেই, অবশ্যই নিজের অপারগতা স্বীকার করে নেবে। বলতে হবে 'আমি জানিনা'। না জেনে কোনও বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবে।"
জ্ঞানী সাজা। জ্ঞানী জ্ঞানী মতামত দেয়া। ধারনা পোষণ করা। জ্ঞানী জ্ঞানী উপদেশ দেয়া। না জেনেও একটা মন্তব্য করে ফেলা এটাতে কিন্তু সবাই কমবেশি পটু। আবার এমনও হয়, যেটা জানিনা, জানার ভান করি, কেননা জানিনা এটা প্রকাশ পেলে মানসম্মান থাকবে না। আমাদের উচিৎ যেটা জানিনা সেটা নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নেয়া। না জেনেও মন্তব্য করে ধরা খেয়ে গেলে যে বেশি মানসম্মান যাবে সেটা মনে রাখা।

৫) অপরকে উপদেশ দেয়া উপাদান নিজে আগে অনুশীলন করা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "এমন এক দিন আসবে যখন জান্নাতবাসী কিছু লোক জাহান্নামে পতিত কিছু লোকের উপরে থাকবে এবং তারা বলবে, আপনারা জাহান্নাম আগুনে প্রবেশ করেছন? নিশ্চয়ই আপনারাই আমাদেরকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছেন, পথ নির্দেশ দিয়েছেন কিভাবে জান্নাতবাসী হওয়া যায়। যা দিয়ে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করেছি। তারা বলবেঃ আমরা অন্যদেরকে ভাল উপদেশ দিতাম কিন্তু নিজেরা তা পালন করতাম না।"
কাউকে উপদেশ দেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজ হিসেবে ধরা নয়। ঠিক বলেছি তো? একজনকে উপদেশ দেয়া অবশ্যই অপরাধ নয়, বরং ভালো। কিন্তু উপদেশ দেয়ার আগে একটু ভেবে নিতে হবে আমি নিজেও সেটা মানি তো? আমি নিজেও সেটা করি তো? আমি নিজে অনেক মিষ্টি পছন্দ করি, কিন্তু আরেকজনকে উপদেশ দিলাম বেশি মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়। আমি নিজে নামাজ না পরলেও আরেকজনকে বলি নামাজ পড়া উচিৎ। আমি নিজে সারাদিন ফেসবুকে থাকি, আরেকজনকে বললাম তুমি দেখি সারাদিনই ফেসবুক গুঁতাও। এমন অনেক উদাহরণ আছে। আমরা নিজে মানিনা করিনা কিন্তু অপরকে ঠিকই ওইটার ব্যপারে উপদেশ দিয়ে জ্ঞানী হয়ে যাই।

৬) নিজের যেকোনো পাপকে ছোট করে না দেখা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "নিশ্চয়ই একজন ইমানদার ব্যক্তি নিজের ছোট ছোট পাপগুলোকে নিজের পথের নুরি হিসেবে দেখতে পায় পথ চলার সময়। এবং একজন অবিশ্বাসী তার ছোট ছোট পাপকে সে দেখতেই পায়না, শুধু দেখে তার পাপগুলো পাখি হয়ে তার নাকের সামনে দিয়ে উড়ে চলে গেলো। যিনি তার পাপের ব্যপারে সচেতন ও লজ্জিত নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তার পাপকে তার দুই চোখের সামনে দৃশ্যমান করে দেন। আর যিনি নিজের পাপের ব্যপারে উদাসীন, লজ্জাবোধ করেন না, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ আর পাপগুলোকে তার পিঠের পেছনে সরিয়ে রাখেন, যেন সে তার পাপ দেখতে না পায়।" "পাপকে কখনো ছোট বড় করে ভাবতে নেই, পাপ পাপই। বরং দেখতে হবে আমি আল্লাহ্‌র কোন আদেশ কে অমান্য করলাম কি না।"
চোর চোরই। পকেট থেকে খালি মানিব্যাগ চুরি করুক আরেক দামি আইফোন নিয়ে যাক। অথবা হাল্কার উপরে একটা মিথ্যা বলে পাড় পেয়ে গেলাম। সত্য বললেও তেমন ক্ষতি হতো না, তবুও অতো ছোটখাটো মিথ্যায় কিছু হয় না। হার্ডকোর থ্রি এক্স দেখি না কিন্তু ফেসবুকে ইন্সতাগ্রামে, টুইটারে এই একটু, হাল্কা পাতলা খোলামেলা। ওসব কিছু না। মনে রাখতে হবে, পাপ পাপই। চুরি চুরিই। মিথ্যা মিথ্যাই। ছোট হোক আর বড় হোক। এগুলোর জন্য শাস্তি অবধারিত।

৭) প্রার্থনার অগ্রাধিকার
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "নামাজকে তোমরা তেমন বাধ্য ভাব যেমন তোমরা ক্ষুধা লাগলে খাবারকে ও তৃষ্ণা পেলে পানিকে ভাব। নিশ্চয়ই ক্ষুধার্ত ব্যক্তি খেতে পেলে যেমন তৃপ্ত হয়, তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি পানি পেলে যেমন তৃপ্ত হয়, নামাজ সম্পন্ন করতে পারলে তেমনি যেন তৃপ্ত হয়।" "নিশ্চয়ই যতক্ষণ তোমরা নামাজরত থাকবে ততক্ষণ তোমরা যেন মহান রাজার দরজায় আঘাত করছো। এবং যে যতো বেশি দরজায় আঘাত করবে মহান রাজা তার দরজা ততো তাড়াতাড়ি খুলে দেবেন।"
এক। ফরজ নামাজের বিকল্প ফরজ নামায়াজই। ওয়াজিব, সুন্নাত, নফল যার যার গুরুত্ব আলাদা আলাদা কোনটা দিয়ে কোনটা ঢাকা যাবে না। দুই। যেটাই পড়ি মন থেকে পড়তে হবে। নামাজ পড়তে দাড়িয়ে অংক মিলিয়ে ফেললাম, ফেসবুকে একটা পোস্ট দেবো সেটা মনে মনে কমপ্লিট করে ফেললাম, গার্লফ্রেন্ড কে নামাজের পর কল দিয়ে কি বলব মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, সুন্দর একটা মটিভেশনাল পোস্ট ঠিক করলাম সামুতে দেয়ার জন্য, একটু আগে ঝগড়া করে আসছি 'ও আমাকে এইভাবে অপমান করলো?' নামাজ শেষে ওরে এইটা এইটা বলে ধরবো, দাড়া। ব্যপারটা ক্লিয়ার করি। প্রার্থনা যেটাই হোক, নামাজে সুরাগুলো আর বাঁকি একটিভিটিগুলো মন দিয়ে করা, রোজা রাখলে মনের ভিতর আল্লাহ্‌ ভিতই রাখা। হজ্জে গেলে আল্লাহ্‌কে সন্তুষ্ট করতেই যাওয়া, হাজি উপাধি পেতে, অথবা আমার অনেক টাকা না গেলে লোকে খারাপ বলবে, অথবা লোক দেখানো কারণে গেলে। যাকাত দিলে এলাকায় সম্মান বাড়ে এইসব ভাবা। যেটাই করেন, নিয়তই সবচেয়ে বড় জিনিস।

৮) পার্থিব জীবনকে চিরস্থায়ী জীবন না ভাবা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "এই পৃথিবী এবং এই পার্থিব জীবন একজন বিশ্বাসী বান্দার জন্য জেলখানা সরূপ, যেখানে একজন অবিশ্বাসীর জন্য এই পৃথিবীই একটি জান্নাত।" "জান্নাতে প্রথম দিকের সারিতে থাকবেন তারা যারা পার্থিব জীবনে সম্পদের পেছনে সময় ব্যয় করেছিল। যারা পার্থিব সুখদুঃখকেই আসল মনে করেছিল। পার্থিব জীবনে যারা ধনী ছিলনা, যারা পার্থিব জীবনে ছিল গরীব। তারা বলবে 'আমরা তো সম্পদের পিছনে দৌড়াইনি, আমরা ছিলাম তুষ্ট যা আমদের দেয়া হয়েছিলো।"
টাকার পিছনে ছুটতে ছুটতে, চাকরির পিছনে দৌড়াইতে দৌড়াইতে, বড় বড় ডিগ্রির পিছনে ছুটতে ছুটতে, গার্লফ্রেন্ডরে মানাইতে মানাইতে হঠাৎ করে উশটা খেয়ে পড়ে গিয়ে দেখি আমি কবরের গর্তের ভিতর!!! হ্যাঁ ভাই এটাই হয়। পৃথিবী একটা জীবন। বলা হয়নি পৃথিবীর জীবন অনর্থক যা খুশি করো সমস্যা নাই। বলা হয়েছে পৃথিবীতে এমন কিছু করো যেন সেটা এমন অর্থবহ হয় যা মৃত্যুর পরেও কাজে লাগবে। টাকা কামান সমস্যা নাই, মৃত্যুর পড়ে এই টাকা নিয়ে যাইতে পারবেন না, জাস্ট এটাই মনে রাখলে চলবে। বড় বড় ডিগ্রী দুনিয়াতে অনেক সম্মান এনে দেবে, চাকরি না করলে সংসার চলবে কিভাবে? পাশাপাশি এটাও ভাইবেন ডিগ্রিও না চাকরিও না, মৃত্যুর পড়ে ফ্যামিলির মানুষগুলার কী হবে, এদেরও সময় দিয়েন। পৃথিবীটাকে চিরস্থায়ী ভেবে পড়ে ঠৈকেন না।

৯) নিজেই নিজের সচেতন হিসাবরক্ষক হওয়া
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "তুমি যেন নিজেই নিজের পাপপুণ্যের হিসেব রাখ। যেন যখন তোমাকে চূড়ান্ত দিনে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমার জন্য ওই সময়টা সহজ হবে। নিজেই নিজেকে দাড়ি পাল্লায় মেপে রাখ। যেন চূড়ান্ত ভাবে যখন তোমাকে মাপা হবে, সহজ মনে হবে। কোনও ছোট জিনিসও চোখের অগোচর হতে দিও না কেননা চূড়ান্ত দিনে তোমার সব ছোট ছোট পাপপুণ্যেরও হিসেব নেয়া হবে।" " তিনি জানেন যে তার খাদ্য কোথা থেকে এসেছে এবং কোথা থেকে তার পানীয় এসেছে এবং তার কাপড় কোথা থেকে এসেছে? একটি বৈধ অর্থ থেকে বা একটি নিষিদ্ধ থেক?। যে ব্যক্তি তার টাকা উপার্জন কোথা থেকে আসছে কেয়ার করেন না। আল্লাহ্‌ও কেয়ার করবেন না তাকে জাহান্নামের কোন দরজা দিয়ে নিক্ষেপ করবেন।"
মাল বেচার সময় বললেন এটা আমার কিনা দাম, অথচ তার চেয়েও অনেক কমে আপনার কেনা। মিথ্যা বলে লাভ বেশি করলেন। সেই লাভের টাকা দিয়ে নিজের বাচ্চার জন্য গুরাদুধ আর সুজি কিনে বাসায় গেলেন। বাচ্চাটাকে যখন খাওয়ানো হবে একসেকেন্ড সময় নিয়ে ভাবেবন এটা সেই টাকায় কেনা যেটা কামাতে গিয়ে আমাকে মিথ্যা বলতে হয়েছিলো। পুলিশ ট্রাক আটকিয়ে আটকিয়ে টাকা নিচ্ছে। পাসপোর্ট ইনকোয়েরি অফিসার সবার থেকে ৫০০-১০০০ টাকা করে নিচ্ছে। সরকারি আমলারা ঠিকাদারেরা ফাইল এদিক সেদিক বিলের পরিমাণ এদিক সেদিক করে কত টাকা মারছে। দিন শেষে মাস শেষে ভালো একটা এমাউণ্ট হয়। ঐ টাকা দিয়ে দিয়ে ফ্যামিলির সবাই খেয়ে পড়ে বাঁচে। বিলাসিতা করে। মায়ের চিকিৎসাও করায় সেই টাকায়। পৃথিবীর আর কেউ জানুক আর না জানুক। আপনি জানেন আপনার টাকা হারাম। আপনার এই হারাম টাকায় সবাইকে খুশি রাখছেন। আপনার বিবেক না থাকতে পারে। আপনার চোখে সেটা বড় কিছু না হতে পারে। এই হারাম টাকা সাথে তো নিতে পারবেন ই না, বরং করায় গণ্ডায় হিসেব বুঝিয়ে দিতে হবে মৃত্যুর পর। এখানে এটাই বলা হয়েছে, এমনব কিছু করেন যেন নিজের কাছে নিজেকে ছোট হতে না হয়। এমন কিছু করেন যেন নিজের হিসেব দেয়ার সময় বলতে পারেন হারামের টাকায় কিছু করিনি জীবনে। জাস্ট একটু নলেজে রাখবেন কিভাবে আপনার টাকা আসছে। হারাম না তো?

১০) সংখ্যার চেয়ে মান উত্তম
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "নামাজ পড়তে পড়তে তোমার মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যাক। রোজা রাখতে রাখতে তোমার পাকস্থলী চুপসে যাক, যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমার মনের ভিতরে ভক্তি কাজ করবে সেই নামাজ কবুল হবে না।" "মন দিয়ে কর্তব্যনিষ্ঠা দিয়ে দুই রাকাত নামাজ, মনোযোগ না দিয়ে সারারাত নামাজ পড়ার চেয়ে অনেক উত্তম।"
Quality is better than quantity. এইটা আমরা সবাইই জানি। মন দিয়ে দুই রাকাত ফরফ পড়তে যে সময় লাগে, সে সময়ে আপনি ফরজ সুন্নাত পড়ে মোনাজাত ধরে স্যান্ডেল নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে গেলেন। আপনি মনে মনে তৃপ্ত হলেও আপনার নামাজ কবুল হয়েছে কি না সন্দেহ থেকেই যায়। আল্লাহ্‌ দুই রাকাত নামাজ পড়লেও অনেক খুশি হবেন যদি সেটা আপনি মন দিয়ে পড়েন। তাই কেমন কোয়ালিটির ইবাদত করছেন ভেবে দেখবেন। কোয়ানটিটিতে জোর না দিয়ে কোয়ালিটিতে জোর দিন। ইবাদত বৃথা যাবে না।

১১) সুখের সময়েও নিজের কর্তব্যনিষ্ঠা স্মরণ করা, ভালো সময়েও আল্লাহ্‌কে মনে রাখা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "তোমার সুখের সময় আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো, যাতে আল্লাহ্‌ তোমার কঠিন সময়ে তোমাকে স্মরণ করেন।"
ছয় মাস হয়ে গেছে চাকরি নেই। চাকরিটা চলে যাওয়ার পর থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছি। আল্লাহ্‌কে উঠতে বসতে স্মরণ করছি। একটা চাকরি দাও আল্লাহ্‌। আল্লাহ্‌ দিলেন। চাকরি টা পেয়ে খুশিতে ১০ রাকাত নফল নামাজ পড়লাম। জয়েন করার পর, সময় পাইনা কি করবো, নামাজটা কনটিনিউ করতে পারছি না। এভাবেই মাসের পর মাস যাচ্ছে। বুঝেছেন ব্যপারটা? পরীক্ষার আগে, আমারে কে পায়। পড়াশুনা আর নামাজ। খাওয়াদাওয়া করতে ভুললেও নামাজ ভুলিনা। পরীক্ষা শেষে অঢেল সময় হাতে। বন্ধুদের নিয়ে সাজেক ভ্যালি। আসলে নামাজের জন্য টাইম পাচ্ছি না। বিপদ কেটে গেলে আমরাও কেটে পড়ি নামাজের পথ থেকে। এটা মানুষের স্বভাব। এটা বদলানো যায় না?

১২) কারো অবর্তমানে তাকে নিয়ে সমালোচনা করা
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, "পরনিন্দা থেকে সাবধান, পরনিন্দা ব্যভিচারের চেয়েও খারাপ! একজন মানুষ ব্যভিচার করতে পারে এবং অনুতাপ করে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইলে চাইতে পারে। কিন্তু পরনিন্দা কে আল্লাহ্‌ ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না ওই ব্যক্তি নিজে ক্ষমা না করেন।" "নিজের জিহ্বা কে তেমনি ভাবে রক্ষা করবে যেমনি ভাবে নিজেদের সম্পদকে রক্ষা তোমরা রক্ষা কর।"
এটা দিনের মতো পরিষ্কার। আপনি যার নামে কুৎসা রটাবেন সে নিজে আপনাকে ক্ষমা না করে অন্নকেউ ক্ষমা করলে তো চলবে না। আপনাকে তার কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে। যদি ক্ষমাই চাইতে হয় তাহলে শুধু শুধু কুৎসা রটিয়ে লাভ কি? বুঝলাম আপনার হিংসা হয়, অথবা উনি আসলেই সমালোচনার যোগ্য, সেটা তার পিছে পিছে তাকে না শুনিয়ে কানে কানে আরেকজনকে বলার কি মানে? তাকে সামনে পেলে তার সামনেই তার ভুল ধরিয়ে দিন। গীবত এতটাই জঘন্য, নিজের মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার মতো। ও যেহেতু কাছে নেই ওর নামে যা খুশি বলি পক্ষান্তরে আমার ভাইটি যেহেতু মরেই গেছে সেহেতু ওর মাংস কেটে কেটে খেলেই বা কি? ও তো আর উঠে প্রতিবাদ করতে পারবে না। তাই কারো অগোচরে সমালোচনা করা উচিত নয়।

লেখার শুরুতে প্রথমেই বলেছি একরোখা হওয়ার কথা। কিছু মানুষ আছে মনে মনে বুঝবে কিন্তু বাইরে দিয়ে মানবে না। কিছু কিছু মানুষ আছে নিজের মতামত ছাড়া পৃথিবীর অন্য কারও মতামতকে মূল্য দেন না। এ জন্যই ঐ ধরণের মানুষকে বোঝাতে যেয়ে নিজের সময় নষ্ট না করাই উত্তম। যারা আগ্রহী শুধু তাদের জন্য। যারা মনে করেন I am not perfect, যেহেতু পৃথিবীর কেউই পারফেক্ট নন।

বিঃদঃ পয়েন্ট ৭, ১০, ১১ শুধুমাত্র ধার্মিকদের জন্য। যারা ইসলাম ধর্ম পালন করেন বা করতে চেষ্টা করেন। হয়তো সহজ বাংলায় বোঝাতে গিয়ে আমি রুঢ় বাংলায় বলে ফেলেছি কোনও কোনও জায়গায়। ক্ষমা করবেন যদি তাইই মনে হয়ে থাকে। আমি দৈনন্দিন জীবনে যা ঘটে, মানুষ মনে মনে যা ভাবতে পারে ঐ ভাবেই বোঝাতে চেয়েছি। (স্বীকারোক্তিঃ একটি ইংরেজি ব্লগ এর থেকে পয়েন্টগুলো ধার করা।)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫১

হাবিব বলেছেন: অনেক মূল্যবান উপদেশ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.