নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের অনেক অন্ধ এখন চোখে দেখছেন, অনেক বধির এখন কানে শুনছেন আবার বলতে ও পারছেন। বিবেক বর্জিত এই মানুষ গুলির বিবেক এখন দুপুরের সূর্যের মত প্রখর তাপে উত্তপ্ত। আমার কথা শুনে সবাই কি আশ্চর্য বোধ করছেন? প্রশ্ন হঠাৎ বাংলাদেশে এমন পরিবর্তন? হ্যাঁ বাংলাদেশে হুট করেই এমন পরিবর্তন। আমি ঐ সকল বিবেক বর্জিত মানুষ গুলির কথা বলছি যারা গত পনের বছর চোখ থাকতে ও কোন অন্যায় অপরাধ চোখে দেখেন নাই, মুখে স্পষ্ট বুলি থাকতে ও ভোটার বিহীন নির্বাচন, দিনের ভোট রাতে, আমি তুমি আর ডামি নির্বাচন, গুম,খুন, দুর্নীতি ব্যাংক লুট সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা হরণ সহ রাষ্ট্র যন্ত্রের নানা অপকর্ম নিয়ে কোন কথা তো বলেন ই নাই বরং তৎকালীন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার ও তার দোসরদের উৎসাহ দিয়ে গেছেন। কানে প্রখর শ্রবণ শক্তি থাকার পর ও জনগনের নানান নিপীড়নের কথা তাদের কানে পৌছে নাই। তারা সব সময় ই ছিলেন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বন্দনায় ব্যস্ত। অথচ গত কয়েক দিন যাবত এদের উৎপাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকা দায়। কারন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ই তাদের বুলি আওরানোর একমাত্র মাধ্যম ও স্হান। তারা এখন মানবাধিকার বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনায় ব্যস্ত। দেশের কোথাও মানবাধিকার লংঘন হলে তার জন্য দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের ই দায়িত্ব এর প্রতিবাদে জোড়ালো ভাবে প্রতিবাদের আওয়াজ তোলা। তবে সেই প্রতিবাদের আওয়াজ যখন কোন স্বার্থ কেন্দ্রিক হয় তখন ই নানান প্রশ্ন তোলা বাঞ্ছনীয় হয়ে পরে।
সম্প্রতি আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পর থেকেই পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী শ্রেণীদের মধ্যে বিশেষ প্রতিক্রিয়ার জন্ম নিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেই আটটি জাতীয় দিবস ইতোমধ্যে উৎযাপন বা পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই দিবসগুলি হলো ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস। তার আগে জাতীয় দিবস কি তা একটু বলা দরকার। কারন যারাই এই আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সমালোচনায় ব্যস্ত তাদের অনেকের ই হয়তো জানা নেই জাতীয় দিবস সম্পর্কে। জাতীয় দিবস হলো একটি নির্ধারিত দিন যে দিনের উৎযাপন কোন রাষ্ট্র বা সার্বভৌম জাতির জাতিসত্ত্বা চিহ্নিত করে। এই জাতিসত্ত্বাটির স্বাধীনতার তারিখ, প্রজাতন্ত্র গঠনের তারিখ বা কোনও রক্ষাকর্তা সাধু বা শাসকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তারিখ (জন্মদিন, রাজত্ব, অপসারণ ইত্যাদি) দ্বারা প্রতীকী হতে পারে। প্রতিক্ষেত্রেই দিনটিকে "জাতীয় দিবস" বলা হয়না তবে এটি উৎযাপন করা হয় এবং একই ধরনের বিবেচনা করা যেতে পারে। জাতীয় দিবসটি প্রায়শই জাতীয় ছুটির দিন হয়ে থাকে। অনেক দেশে একাধিক জাতীয় দিবস আছে। বাংলাদেশে মোট জাতীয় দিবসের সংখ্যা ছিল ৭৯ টি এর মধ্যে একই দিনে একাধিক জাতীয় দিবস ও পালিত হয়। তবে আমাদের পালনকরা জাতীয় দিবস গুলির মধ্যে কতগুলি দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে ভুমিকা রাখছে বা আমাদের জাতীর জন্য কতটুকু গুরুত্ব বহন করে তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন থেকেই যায়।
আমাদের দেশে গত পনের বছর স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা প্রশাসন, বিচার বিভাগ সহ রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তর যেমন দলীয়করণ ও পরিবার কেন্দ্রিক করেছেন জাতীয় দিবসের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম করেন নাই। যেমন ১৭ মার্চকে জাতির পিতার জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্টকে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্টকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস, ১৮ অক্টোবরকে শেখ রাসেল দিবস হিসেবে জাতীয় দিবস হিসেবে পালন। এই প্রতিটি দিবস ই শেখ হাসিনার পরিবার কেন্দ্রিক জাতীয় দিবস। যা একটি স্বাধীন গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মোটেও মানানসই না বা একটি স্বাধীন গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সাথে যায় না। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের মানুষকে অনেকটা জোর করেই উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের কায়দায় তার পরিবার কেন্দ্রিক জাতীয় দিবস গুলি মানতে বাধ্য করিয়েছেন।
গত পনের বছর বাংলাদের জানগনের বুকে চেপেবসা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান বাংলাদেশের একজন অবিসংবাদিত নেতা এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তবে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের অন্য সকলের অবদানকে অস্বীকার করে শুধু মাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানকে যেই ভাবে সর্বেসর্বা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল তাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য সম্পুর্ন দায় শেখ হাসিনা ও তার রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের। এর ই ফলশ্রুতিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের স্মৃতি বিজরিত সমস্ত স্হাপনা ধ্বংস করতে দেশের সাধারন জনগন মোটেও কুণ্ঠাবোধ করেন নাই। আর এমনটাই হওয়ার কথা ছিল এবং এমনটিই হওয়া উচিত। আমাদের প্রানপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনে তিতুমীর, হাজী শরিয়তউল্লাহ, মাস্টারদা সুর্য সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, একে ফজলুল হক, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সহ নাম জানা অজানা অগনিত মানুষের আত্মত্যাগ জড়িত। শেখ হাসিনার ও তার দোসররা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মত একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা যিনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক সেই সাথে একজন সেক্টর কমান্ডার এবং রণাঙ্গনের বীর তাকে নিয়ে কতইনা বিষোদগার ও কটুক্তি করছেন। যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
এবার আসি জাতীয় দিবসের বির্তক নিয়ে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেই আটটি দিবস জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন তার মধ্যে ৭ মার্চ জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস এটা অস্বীকার করার কোন পথ নাই। এই ৭ মার্চ নিয়ে আওয়ামী দোসরদের খোঁচাখুঁচি। তবে বাকী দিবস গুলি রাষ্ট্রের জন্য কোনই গুরুত্ব ভুমিকা রাখছে বলে মনে হয় না। অনেকেই ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবসকে বাদ দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কথিত আছে ১৯৭২ সালে খুবই তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশের সাধারণ জনসাধারণের কথা মাথায় না রেখে ভারতীয় প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নাকি আমাদের সংবিধান রচনা ও প্রনয়ন করা হয়। যেই সংবিধান পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন সময় তাদের নিজেদের হীনস্বার্থ হাসিলের জন্য বার বার সংশোধন করে কায়েমি হীন স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছে। এর ই ফলশ্রুতিতে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান সংশোধন বা পুনর্লিখনের পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। তাই আদৌ ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না তা নিয়ে ও প্রশ্ন থেকে আছে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রমনার রেসকোর্সে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ অনেক জনপ্রিয়। এই ভাষন আওয়ামিলীগ ও তাদের আর্দশে বিশ্বাসীদের মতে নাকি স্বাধীনতার ঘোষণা। যদি ও ঐ বক্তব্যে মাঝে সমস্ত সামরিক বাহিনীর লোকদের ব্যারাকে ফেরত নিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ( বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ) সাধারণ মানুষদের হত্যা তদন্ত ও জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি দাবী জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন যদি তখন ক্ষমতা দখলকারী পশ্চিম পাকিস্তানী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের দাবী মেনে নিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করতেন তা হলে শেখ মজিবর রহমান হতেন পাকিস্তান সরকারের প্রধান। তার পরবর্তী অধ্যায় কি হতো সেটা ভাবার বিষয়। অবশ্য এই নিয়ে প্রয়াত মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের বড় মেয়ে শারমিন আহমেদের লেখা " তাজউদ্দিন আহমেদ- নেতা ও পিতা " বইয়ে ২৫ মার্চ কালো রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের অবস্থান নিয়ে বিশদ বর্ণনা আছে । যাই হউক ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ থেকে ৭ই মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট জারির নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরে ২০২১ সাল থেকে ৭ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এখন অনেক আওয়ামী প্রগতিশীল ও খুনি হাসিনার দোসরদের বিলাপ আমাদের মুক্তযুদ্ধের ইতিহাস বর্তমান সকার মুছে দেওয়ার পায়তারায় লিপ্ত! আমি তাদের বলতে চাই ২০২১ সালের পুর্ব পর্যন্ত আমাদের চেতনা কেন ভোতা ছিল? শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সহ অন্যান মুক্তিযুদ্ধাদের নিয়ে যখন ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা আমাদের পবিত্র সংসদ সহ নানা জায়গায় নানান কটুক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য করছেন তখন কোথায় ছিল আপনাদের সেই চেতনা? জানি আপনাদের চেতনা শুধু আপনাদের ব্যক্তি স্বার্থের জন্য। তাই আপনাদের এই চেতনার ফাঁদে এখন আর বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ পা দিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করবে না।
১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অগ্রজের আত্মত্যাগের বিনিময় আর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা আমাদের প্রান প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। স্বাধীনতার তিপ্পান্ন বছর পর ও ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আমাদের মাহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস রচনায় ব্যর্থ হয়েছি আমরা। আমাদের মাহান মুক্তিযুদ্ধকে যে যার মত করে ইচ্ছে রচনা করেছেন ব্যবহার করেছেন। আজো ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমার আমাদের জাতীয় দিবস গুলিনঠিক করতে পারি নাই। যদিও আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস সহ অনেক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস ই এখনো বির্তকের বাহিরে। তবে কায়েমি স্বার্থপর গোষ্ঠী নানান সময় নিজেদের কায়েমি স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাদের উপর যেই সকল বির্তকিত জাতীয় দিবস চাপিয়ে দিয়ে জাতি হিসেবে আমাদের বির্তকে নিমজ্জিত করেছে সেই সকল বির্তকিত জাতীয় দিবস গুলি বাদ দিয়ে সঠিক জাতীয় দিবস নির্ণয় করে জাতীয় দিবসকে বির্তকের উর্ধ্বে রাখাই দেশের সাধারন মানুষের প্রত্যাশা।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৮
আখঘণ বলেছেন: শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবা
my perfect hotel
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৩
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার জন্মদিবস কোন কারণে প্রসিদ্ধ কিনা?