নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী। কর্মস্থল- হাইকোর্ট।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah
রোজী-আকাশ এর সম্পর্ক দুই বৎসর যাবত। অপরূপ প্রেম। দুইজন ভার্সিটিতে পড়ে। একজন প্রাইভেট, একজন পাবলিকে। সাপ্তাহ যেতে না যেতেই ডেটিং। রিকসায় শহর জুড়ে ঘুরে বেড়ানো। বাতাস খাওয়ার সাথে সাথে ভাব বিনিময়। এরই মাঝে ঘর বাঁধার স্বপ্ন আঁকে তারা। আকাশের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হলেই রোজীর আম্মুর কাছে যাবে। রোজীরও একই সিদ্ধান্ত। আকাশের পরীক্ষা শুরু। প্রতীক্ষা স্বপ্নের দিনটির। রোজী খুব চাপে। বিয়ের। দিন দিন নতুন নতুন অফার আসতেছে ফ্যামিলিতে। কিভাবে যে কি করে। কেউবা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, লন্ডনের পিএইচডি ধারী। রোজীর ফ্যামিলিও দ্বিধাদ্বন্ধে। কেউই কারো চেয়ে কম না। রোজীরও মোড ভালো নেই ইদানিং। আকাশকেও বোরিং লাগতেছে। পরীক্ষা বলে সময় কম দিতেছে আকাশ তাই মনে হয়, আকাশের ধারণা। দুই সাবজেক্ট ইতোমধ্যে শেষ। আর মাত্র ৬টি। ৪টিই শেষ হত, হরতালের কারণে পিছালো দুটি। কিন্তু দুইদিন আকাশের কোন খোঁজ নেই। রোজীও মোডে রয়েছে। দুইদিন পর একটা মেসেজ দিল। কিন্তু নো রেসপন্স। রোজীর তো আর ঠেকা পড়েনি। রেসপন্ড না করলেও কেন শুধু শুধু মেসেজ দেবে। পারসনালিটি কেন লস্ করবে! এইভাবে কেটে গেল ১৫দিন। কারো কোন সাড়া নেই। পনের দিন পর এক আন্নোন নাম্বার থেকে রোজীর নাম্বারে কল। কণ্ঠ আকাশের। হ্যালো রোজী, কেমন আছ? আই অ্যাম সরি! আমি মাত্র জেলগেট থেকে বের হলাম লক্ষিটি। তোমাকে অনেক কষ্ট দিলাম এতোদিন। সরি রোজী, কেমন আছ? পুলিশ কেন ধরছিল তোমাকে? (রোজীর জিজ্ঞেস)। এমনিতে। তোমাকে পরে বলব বিস্তারিত। পলিটিক্যাল সন্দেহে...। চুপ, একদম চুপ। আমাকে বলতে হবে না। আমার সাথে আর একটা কথাও বলবে না। লজ্জা করতেছে না জেল থেকে বের হয়ছি বলতেছো যে। আমার লজ্জা হচ্ছে, তোমার মত ছেলের সাথে এতোদিন প্রেম করছি? এই তোমাকে আমাকে এতো বিশ্বাস করছি? আমার ফ্যামিলি তোমার মত লম্পট পলিটিক্স করা ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিবে? তুমি এই মুহুর্ত থেকে আমাকে আর কল মেসেজ দিবে না। আমাকে আল্লাহর দোহাই আর ডিস্টার্ব করবে না। লাইন কেটে দেই রোজিই। আকাশ কিছুই বুঝতেছে। ও আর যতোই কল দেই রোজী কেটে দেই। আর মেসেস পাঠায়, “আল্লাহর দোহাই আমাকে আর...। এই ভাবে কেটে যায় চার মাস। আকাশ এর মাঝে ডিস্টার্ব না দিয়ে অপেক্ষা করে রোজীর সাড়ার। কিন্তু রোজী নিরব। আকাশ যে চার মাস আগে হরতালের দিনে সকালে নাস্তা করতে বের হলে রাস্তায় ককটেল বিস্ফোরনকারী সন্দেহে গ্রেফতার হয় তা রোজীকে আর বলার সুযোগ হলো না...। যদিও রোজীর বাস্তবতা তার আর বুঝতে বাকি রইল না।
মোহাম্মদ তরিক উল্লাহ
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী
[email protected]
©somewhere in net ltd.