নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিল। কিন্তু লেখাগুলো খুঁজে পায়নি। অনেক কিছু বলতে চেয়েছিল। কিন্তু সেগুলো শোনারও সময় কারও ছিল না

মন থেকে বলি

Stay Hungry. Stay Foolish.

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেহ নিয়ে হেয়

২১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০৭




দেহ নিয়ে হেয়। শরীরের স্বীকৃতি। দেহ-নিরপেক্ষতা।

হলি কাউ! এগুলো কী? গঞ্জিকায় টান মেরে লিখছেন নাকি?

জানা কথা, পড়ার জন্য আমাদের সামনে টোপ ঝোলাতে হয়। তো আমার সিম্পল টোপ - লেখাটা পড়ার পর আমাকে যে কোন একটা ফিডব্যাক দেবেন - (১) আই লাভড ইট, অথবা (২) হোয়্যাট আ বুলশিট। যেটাই হোক, পড়ার পর যেটা ইচ্ছা বলবেন।


মাতৃভাষা খুব ভালো ব্যাপার। তবে 'শার্ট'কে 'পিরান' ডাকলে ৯০% পাঠক ক্ষেপে উঠবেন। তাই বহুল প্রচলিত ইংরেজিগুলোই থাকুক। নইলে একদম শুরুর তিনটা 'টার্ম' পড়লে বাংলা অক্ষরে হিব্রু মনে হতে পারে। সো, লেটস নো দ্য রাইট টার্ম।


বডি শেমিং। বডি পজিটিভিটি। বডি নিউট্র‍্যালিটি।

কদিন আগে মনে হচ্ছিল (ইদানিং আমার আবার অনেক কিছুই মনে হয়। বুড়ো হচ্ছি, না অভিজ্ঞ হচ্ছি, না পক্কবাল হচ্ছি, আল্লাহই জানেন), রিসেন্ট এই মুভমেন্ট দুটো (বডি পজিটিভিটি এবং বডি নিউট্র‍্যালিটি) নিয়ে লিখবো। বডি শেমিং সেই ১৮৫০ সালের গল্প, যদিও চলছে আজও। কিন্তু এখন ফোকাসটা সরানো দরকার। আর সেটাই আজকের লেখাটার উদ্দেশ্য।

তার আগে ছোট্ট করে জেনে নেয়া যাক এই তিনটি বিষয় নিয়ে।


বডিশেমিং কী?

খুব সংক্ষেপে বললে, নিজের স্বাভাবিক শারীরিক আকৃতিকে তুলনা করে অসন্তুষ্টি থেকে সমালোচনা করা ও লজ্জা পাওয়া। এমন কেউ নেই, যে বডিশেমিং এর শিকার হননি। এমনকি কেউ যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে লে যে 'আমাকে মোটা বা শুকনো লাগছে', তো সেটাও বডিশেমিং। এ হলো নিজেই নিজেকে বডিশেমিং করা।


এবার অন্য একটা পারসপেক্টিভ থেকে ব্যাপারটা দেখা যাক। আমি কিন্তু নিয়মিত বডি শেমিং করি, তবে নিজেকে। অন্যকে কখনও করি কিনা, খেয়াল করিনি। তবে নিজের বডিশেমিং করে আমার তিনটা লাভ হয়েছে একদম নগদে। কী সেগুলো?

ক. এককালে দিনে ১০+টা অষুধ খেতে হতো। এখন সেটা ১টা।

খ. প্রিয় পোষাকগুলো খুব উপভোগ করে পরতে পারি।

গ. ফিটনেসটা বেড়েছে মন্দ নয়।

বডিশেমিং নিয়ে আমার শেষ কথা, শব্দটা যদি না-ও মাথায় আসে, তাহলেও অন্যকে তার বাহ্যিক আকৃতি নিয়ে আলোচনা করা সব আঙ্গিকেই উচ্চ মাত্রার অন্যায়। এটাই বডিশেমিং নিয়ে সর্বজনগ্রাহ্য ধারণা এবং সর্বান্তকরণে সঠিকও। তবে নিজেকে মাঝে মধ্যে ছাড় না দিলেও চলবে। জাস্ট শব্দটা বদলে নিন - বডি পজিটিভিটি।


২০১২ তে এই মুভমেন্টের বুম করলো অনলাইনে - বডি পজিটিভিটি। এরও ইতিহাস প্রাচীন, সেই ১৯৬০ সালের 'ফ্যাট অ্যাকসেপ্টেন্স মুভমেন্ট' থেকে।

তো এই বিষয়টা, মানে বডি পজিটিভিটির ব্যাপারটা তাহলে কী?

সিম্পল। আমি যেরকম, আমি তাই-ই। এটাই আমার শক্তি; আমি আমার মতোই। ওই তথাকথিত সুপার মডেল, সাইজ জিরো, কার্ভড শেইপ, শ্রেডেড ফিজিক - সব বোগাস। আশবমাস্ট লাভ মাই বডি ফর একজ্যাক্টলি হোয়্যাট ইট ইজ। আমি যা, নিজেকে সেইভাবেই ভালোবাসাকেই বলে বডি পজিটিভিটি।

এই বডি পজিটিভিটির ভালো দিক অসংখ্য। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, নিজেকে দেখতে কেমন লাগছে সেটা নিয়ে খামাখা মাথা ঘামাতে হয় না, কোন স্ট্রেসও হয় না তাই। আত্মসম্মান দৃঢ় হতে থাকে। তথাকথিত গণআকাংখিত ফিগার ও ফিগুর পাওয়ার জন্য অস্থির হতে হয় না, কারণ প্রত্যেকেই তার নিজের মতো করে ইউনিক।


কিন্তু...

হ্যাঁ, এখানে একটা ‘কিন্তু’ আছে।


বডি পজিটিভিটি আপনাকে বিভ্রান্তও করতে পারে। ব্যক্তি কখনও কখনও নিজের অস্বাস্থ্যকর শারীরিক অবস্থাটাকে এতটা গর্বের সাথে স্বাভাবিক মনে করে প্রচার করে থাকে যে, তাতে সে নিজে যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে যায়, তেমনি তার দেখাদেখি অন্যরাও একই পথে হাঁটতে পারে। আমি মোটা, বেশি খাই, - সো হোয়্যাট? আই লাভ মাইসেল্ফ।

প্রিয় পাঠক (এবং পাঠিকাও), এটা বডি পজিটিভিটির ভুল ইন্টারপ্রিটেশন। এজন্যই বডি পজিটিভিটির এই পরস্পরবিরোধী ধারণাদুটোর মধ্যে একটা দাগ টানা খুবই দরকার; (১) আমি কি সব ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি আমলে নিয়েও অস্বাস্থ্যকর শরীরকে বডি পজিটিভিটির ঝান্ডা তুলে প্রচার করবো গর্বের সাথে, নাকি (২) স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর জীবনযাপনের জন্য যে শরীরটা দরকার, সেটার জন্য চেষ্টা করবো?

ভাবুন, ভাবুন।


আমরা এবারে আজকের শেষ টপিকে চলে এসেছি – ২০১৫’র পরে জনপ্রিয় হওয়া 'বডি নিউট্র‍্যালিটি'।

নিজের ‘ঠিক-যেরকম-আছে-সেইরকম’ শরীরের প্রেমে না পড়ে (বডি পজিটিভিটি) বরং খুঁজি, আমার দেহটা কী করার সক্ষমতা রাখে।

বডি নিউট্র‍্যালিটিই আমাদের শেখাল, নিজেকে ভালবাসার (সেল্ফ লাভ) থেকে বরং নিজেকে সম্মান করাটা (সেল্ফ-ওয়র্থ) বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই বডি নিউট্র‍্যালিটি আমাদের নিজেদের দিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিতে শেখায়।

খেয়াল করুন, বডিশেমিং এ নিজের দিকে নেতিবাচকভাবে তাকানো হয় আর বডি পজিটিভিটিতে সুস্বাস্থ্যকে গোল্লায় ঠেলে নিজেকে ভালোবাসতে বলে। এদের মধ্যেই তাই বসে পড়ল বডি নিউট্র্যালিটি।


বডি নিউট্র‍্যালিটি নিজের দিকে একটা নিরপেক্ষ দৃষ্টি দিতে বলছে। অর্থাৎ সবসময় আমি-যা-তাই-ভালো এই ধারণাটাকে সবসময় ভালোবাসার দরকার নেই। কোন কোন দিন একগাদা খেয়ে ফেলতেই পারি অথবা অনেকক্ষন ঘাম ঝরাতে পারি। তাতে উৎফুল্ল না হয়ে বরং এটা ভাবুন, এ সব ভাবনা বাদ দিয়েও আমার শরীরটা কী করতে পারে, সেটা ভেবে আনন্দে থাকা যায়।

বডি শেমিং? বডি পজিটিভিটি? বডি নিউট্রালিটি?


তো, কোন ফিলসফিটা বেছে নিচ্ছেন?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন!

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৭

মন থেকে বলি বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই

২| ২১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো লিখেছেন। টার্মগুলো যদিও জানা ছিল না, তবে এসবের চর্চা নিজের মধ্যে বা অন্যদের মধ্যে দেখা যায়।

দুটো বানান ভুল খুব ধাঁধায় ফেলে দিয়েছিল। আপনিই খুঁজে বের করে কারেক্ট করে নিন :)

লে = বলে
আশবমাস্ট = আই মাস্ট

নিউট্র্যালিটি - কপিপেস্ট করতে পারেন :)

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৮

মন থেকে বলি বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.