নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিল। কিন্তু লেখাগুলো খুঁজে পায়নি। অনেক কিছু বলতে চেয়েছিল। কিন্তু সেগুলো শোনারও সময় কারও ছিল না

মন থেকে বলি

Stay Hungry. Stay Foolish.

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিমান - আকাশে শান্তির নীড়

১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:১৮




বিমানের ফ্লাইটে নেপাল যাচ্ছি।

বিজনেস ক্লাস পার হয়ে ইকোনোমিতে ঢুকে আমার সিটে চেপে বসলাম। পাশে এক মোটু। পেটের পরিধি সিটের সীমানা ছাড়িয়ে আমাকে আলতো ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে। গোদা হাত হাতলের পুরোটারই দখল নিয়েছে। মাইন্ড করলাম না। কি করবে বেচারা? হাত তো আর খুলে রাখতে পারবে না। ভুঁড়িও না। সুতরাং আমি নিভার দিকে যথাসম্ভব চেপে বসলাম। চাপতেই যদি হয়, নিজের বউকেই চাপি।

উড়ছি।

মিনিট বিশেক পার হতেই খাবার দিয়ে গেল। একটা বার্গার - দুই ইঞ্চি চওড়া, চার ইঞ্চি লম্বা আর সোয়া ইঞ্চি পুরু। এত বিতং করে ডাইমেনশন কেন দিলাম - ক্রমে প্রকাশ পাবে। প্ল্যাস্টিকে মোড়ানো বার্গারটা নরম এবং হালকা গরম। ফ্রেশই মনে হলো। কিন্তু খিদে নেই বলে খেলাম না। সাথে একটা কাপকেক ছিল। সেইটে মেরে দিলাম।

দু'দিন পর ফিরতি ফ্লাইট। এইবার খিদে নিয়েই উঠেছিলাম। তাই ব্যাগ্রভাবে অপেক্ষা করছিলাম কখন খাবার দেবে। একই ভাবে খাবার সার্ভ করল। মেন্যু হুবহু এক। বার্গার আর কাপকেক। সাথে আড়াইশ মিলি কোক আর পানি। হামলে পড়লাম বার্গারের ওপর।

সেইই বার্গার। কিন্তু লোহার মত শক্ত আর বরফের মত ঠান্ডা। নিশ্চিত - দু'দিন আগে আমার ফেরত দেয়া বার্গারটাই সংরক্ষিত ছিল। খাবার অপচয় করা হয়নি। মারহাবা! পেটে গ্যাস আগেই ছিল। ধারনা করার চেষ্টা করলাম, এই জিনিস পাকস্থলিতে পৌঁছে কি করবে। গ্যাস বেলুন হয়ে উড়ে যাব না তো আবার? ধুত্তোর! খাই তো আগে। সিটবেল্ট তো বাঁধাই আছে। আর এতবড় প্লেনে 'কুকর্ম' যদি করতেই হয় তবে কে করল তা ধরা অসম্ভব।

কামড় বসালাম। ভুসভুসে পাউরুটির গুঁড়োতে মুখ ভরে গেল। আরে...মাল মসল্লা গেল কই? ভাল করে তাকিয়ে দেখেই স্মৃতিকাতর হয়ে পেলাম। আমাদের শৈশবে দুই টাকায় বাটারবান পাওয়া যেত। তার পুরো ক্ষেত্রফলের এক চতুর্থাংশে বাটার নামক চিনিমেশানো ডালডা মাখানো থাকত। আমরা পুরো শুকনো পাঁউরুটি আগে খেয়ে সবশেষে ওই বাটার মাখানো অংশটা খেতাম।

আ..হা...!! এই বার্গার হুবহু সেই ফিলোসফিতে বানানো। আট বর্গইঞ্চির মধে দুই বর্গইঞ্চিমতো জায়গায় চিকেনকুচি (১০%) আর মেয়োনিজের (৯০%) মিশ্রন মাখানো। চিকেন আসলেই ছিল কিনা শিওর না। তবে বানানোর সময় সামনে চিকেন নিশ্চয়ই ছিল। নইলে কি আর চিকেন বার্গার হয়?

এবারও মাইন্ড করলাম না। বুঝলাম - বিমান ক্ষনিকের জন্য হলেও আমাদের শৈশব ফিরিয়ে দিতে চাইছে। সেই ভালবাসার দান গোগ্রাসে গিললুম। আড়চোখে দেখি নিভা আস্তে করে সরিয়ে রাখল। আমার অবস্থা দেখেই কিনা।

প্রশ্ন উঠতে পারে, এই মাল আমি খেলাম কেন? বিশ্বাস করুন, কাজটা জনস্বার্থে করেছি। কারন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছিল যে আমি এবারও না খেলে বার্গারটা আবার সংরক্ষিত হবে। যে ব্যক্তি এটা পরেরবার খাবে তার দাঁত পড়ে যাবেই। আর বুড়ো হলে টেঁশে যাবে।

সুতরাং....জনস্বার্থে বিমানে চড়ুন এবং এক ঠোঙা কাঠবাদাম পকেটে রাখুন। আখেরে খিদেয় কাজে দেবে।


#রম্যতাড়না
(১৫ই জুলাই ২০১৭ | রাত ১১;৫৯ মিনিট)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


৪৬ বছরে বিমানের লোকেরা কিছুই শিখলো না; অন্যরা হাসে

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৭

মন থেকে বলি বলেছেন: আমি অতটা নিরাশাবাদী নই। মজা করেই লিখেছি। দেশের ফ্ল্যাগশিপ যাই হোক।

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৫৩

আরিফ শাহরিয়ার জয় বলেছেন: বিমানের ভিতরের অভিজ্ঞতা জানতে পারলাম।

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৭

মন থেকে বলি বলেছেন: এরকম আরও কত যে অভিজ্ঞতা আছে

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৫৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমিও জনস্বার্থেই বিমানে যাতায়াত করি।। সমাদর পাই কখনো, কখনো না।। শুধু একটি ভাবনাই কাজ করে, বছরে একবারই তো।!! ঘরের টাকা থাক না ঘরে।।

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৮

মন থেকে বলি বলেছেন: সহমত।
লেখাটা নেহায়েতই মজা করে লেখা।
আমি নিজ দেশের বিমানকে ছোট মনে করিনা। তবে উন্নতির অনেক জায়গা আছে।

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:১৫

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: অনেকেই হয়তো খেতে চায় না, তাই পুরনো জিনিসই সার্ভ করা হয় হয়তো!

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

মন থেকে বলি বলেছেন: বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।

৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৩১

প্রজ্জলিত মেশকাত বলেছেন: এদের আর উন্নতি হবেনা।

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৯

মন থেকে বলি বলেছেন: হবে হবে। শুধু ধৈর্য ধরতে হবে....আরও বহু বছর।

৬| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৩৪

আবদুল মমিন বলেছেন: বহুবার চেয়েছি বিমান কে খালাত বোন বানাতে কিন্তু খালি বেইমানি করে ,মানে সিডিউল মিস ।

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫০

মন থেকে বলি বলেছেন: হেহ হেহ হেহ

৭| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪০

পদ্মপুকুর বলেছেন: বিমান কোনদিনই লাভের মুখ দেখবেনা বিমানের নিজস্ব লোকেদের জন্যেই। বিহেভিয়ার বলে এক জিনিস যে আছে, এরা জানেই না।

ঢাকা কলকাতা ফ্লাইটে যাচ্ছি, উইন্ডো সাইড সিটে বসেছি। করিডোরে আসতে হলে দু'জনকে মাড়িয়ে আসতে হয়। এ রকম অবস্থায় নাস্তার প্যাকেটটা কেবিন ক্রুর হাতে দিলাম ডাস্টবিনে রাখার জন্য, আল্লারে! কেবিন ক্রু এমন একটা ব্যবহার করলো যে মনে হইলো যেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে আমার জুতাখান ধরাইয়া দিছি।

এরপর থেইক্যা বিমানরে তালাক দিছি।

১৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫১

মন থেকে বলি বলেছেন: আমারও এর কাছাকাছি অভিজ্ঞতা আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.