নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Stay Hungry. Stay Foolish.
সুতরাং প্রথম যে পেশাদার রেসলার গামার চ্যালেঞ্জ গ্রহন করলেন তিনি হলেন আমেরিকার বেঞ্জামিন রোলার। ফাইট শুরু হতে না হতেই গামা রোলারকে গেঁথে ফেললেন ম্যাটে। মাত্র ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের মাথায়। রোলার কোনমতে উঠে দাঁড়াল। কিন্তু এ যে গামা। পরেরবার ৯ মিনিট ১০ সেকেন্ডের মাথায় রোলার আউট। সেদিন ১৫ মিনিটের মধ্যে গামা ১৩ বার রোলারকে আছাড় দিয়েছিলেন।
দ্বিতীয়দিনে গামা একে একে ১২ জন কুস্তিগীরকে কুপোকাত করে দিলেন। লন্ডন রেসলিং ওয়ার্ল্ড মুখ চুন করে গামাকে গ্রহন করতে বাধ্য হলো।
এবার এগিয়ে এলো দু'বারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন স্টেইন্সলাস জিবাউস্কো লড়তে। লন্ডনের জন বুল স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। শুরু হলো সেই ঐতিহাসিক লড়াই। ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯১০। প্রাইজমানি হলো ২৫০ পাউন্ড আর 'জন বুল বেল্ট'।
শুরু হতে না হতেই গামা জিবাউস্কোকে পেড়ে ফেললেন। এরপরের আড়াই ঘন্টা শুধু একই দৃশ্যঃ গামা জিবাউস্কোকে চেপে আটকে রেখেছেন। মাঝা মাঝে অবশ্য দু'এক মিনিটের জন্য জিবাউস্কো 'ছাড়া' পেয়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ওই অতটুকুই। এরপর আবার একই ভুমিশয্যা। স্টেইন্সলাস বুঝে গেল গামা কি জিনিস। একে তো কব্জা করা তার ক্ষমতার বহু বহু বাইরে। তাই সে ম্যাট আঁকড়ে ধরার ডিফেন্সিভ চাতুরি দিয়ে খেলা শেষ করে দিল। ফলাফলঃ ড্র।
ছিঁচকে কৌশলের কাছে মার খেয়ে গামা দাঁত কিড়মিড় করে ভাবলেনঃ বাছাধন, আরেকটা ফাইট তো বাকি আছে। দেখি ক্যামনে পালাও।
কিন্তু...স্টেইন্সলাস 'বুদ্ধিমান'। মান গেলে যাক, জান বাঁচানো আগে - এই নীতিতেই কিনা পরের খেলার দিন সে আসলই না। ওয়াক ওভার পেয়ে গগেকেন গামা। ফলে গামাকে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ঘোষনা করা হলো।
পরবর্তীকালে জিবাউস্কোর সাথে গামার আরেকবার মোলাকাত হয়েছিল। এবার আর মাফ নেই। মাত্র ৪২ সেকেন্ডেই 'খেল খতম', জিবাউস্কোর পতন।
গামা দেশে ফিরে এলেন।
এসেই লড়তে গেলেন 'পুরোনো শত্রু' রহিম বক্সের সাথে। এবার আর ড্র নয়। ৭ ফিটের দানব রহিম বক্সের কাছ থেকে কেড়ে নিলেন 'রুস্তম-ই-হিন্দ' খেতাব।
অতিমানবিক শক্তিধর এই মানুষটিকে তাঁর পঞ্চাশ বছরের কুস্তির ক্যারিয়ারে সারা পৃথিবীর কোন মল্লবীরই হারাতে পারে নি। হি ইজ দ্য আনডিফিটেড রেসলার। এই বিশ্বরেকর্ড কখনই ভাঙ্গা সম্ভব হবে না। আসলে বলা উচিৎ, কেউ তাঁকে হারাতে পারেনি। না স্বদেশে, না বিদেশে।যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাবে ১৯৫২ সালে তিনি কুস্তি থেকে অবসর নেন।
গামা মারা যান ১৯৬০ সালে, অবিভক্ত পাকিস্তানের লাহোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জীবনের শেষ কটা বছর তিনি হৃদরোগ আর এজমাতে ভুগছিলেন।
গামা সম্পর্কে আরও কয়েকটি তথ্য
--------+-------------+--------
১। গামা দুটি বিয়ে করেছিলেন। একজন পাকিস্তানি, অন্যজন বরোদা, গুজরাটের।
২। পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ শরীফ গামার নাতনি।
৩। গামা কঠোর নিয়মে ব্যায়াম করতেন। অবিশ্বাস্য শোনালেও প্রতিদিন তিনি ৫০০০ বৈঠক এবং ৩০০০ বুকডন দিতেন।
৪। গামার ডায়েটটাও জেনে নিন। প্রতিদিন ২০ লিটার দুধ, ৬টা মুরগি, দেড় পাউন্ড আমন্ড বাদামের পেস্ট দিয়ে বানানো টনিক, আধ কেজি মাখন, ৪ কেজি ফল আর প্রচুর 'আখনি'।
৫। ব্রুস লি'র অনুপ্রেরণা ছিলেন গামা। ব্রুস তার এক্সারসাইজের মধ্যে বৈঠক আর বুকডনের একটা সংমিশ্রিত রূপ ঢুকিয়েছিলেন।
০৫ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৩৫
মন থেকে বলি বলেছেন: ভাল অবার্ভেশন। সেইটা তো চেক করা হয়নি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:০৩
টারজান০০০০৭ বলেছেন: চমৎকার ! এতদিন শুধুই নাম জানতাম , আজ ইতিহাস জানলাম। গামার নাতনি নওয়াজরে কি বাসর রাইতেই আছাড় দিছিলো ? জানতে পারলে ভালো হইতো !