নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কারো যদি গোপন সাফল্যের চাবিকাঠি থাকে, তাহলে সেটা থাকে তার অন্যের কথার দৃষ্টাকোণ আর নিজের দৃষ্টি কোণ বুঝে নেওয়ার মধ্যে।।
সন্ধ্যার বাতাসটা ছিল একটু শীতল। রাস্তায় ব্যস্তভাবে হাঁটছিলেন আরিফ। হঠাৎ তার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল। ওপাশ থেকে তার স্ত্রী রিতু বলল, “আরিফ, তুমি একটু বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে যাও। একটা কথা বলতে ভুল হয়ে গেছে। তোমার বাবা যেন কোনো বিশেষ দিনেও আমাদের বাড়িতে না আসে। পূজো, ঈদ—সবকিছু ওখানে থেকেই পালন করুক।”
রিতুর কথাগুলো শুনে আরিফের মনে ভারী চাপ পড়ল। কিন্তু স্ত্রীর কথা অমান্য করারও সাহস ছিল না। বাধ্য হয়ে সে বৃদ্ধাশ্রমে ফিরে গেল।
বৃদ্ধাশ্রমে পৌঁছে আরিফ একটি অদ্ভুত দৃশ্য দেখল। তার বাবা হাসিমুখে বৃদ্ধাশ্রমের এক প্রবীণ মহিলার সাথে কথা বলছেন। এই দৃশ্য দেখে আরিফের মনে কৌতূহল জাগলো। বাবা কি আগে থেকেই এই বৃদ্ধাশ্রমের মহিলাকে চিনতেন? হঠাৎ করেই তার সন্দেহ জন্মালো।
বাবা কথা শেষ করে তার কক্ষে ফিরে যাওয়ার পর আরিফ ধীরে ধীরে সেই মহিলার কাছে গিয়ে বলল, “আন্টি, একটু প্রশ্ন করব? আপনারা কি বাবার সাথে আগে থেকেই পরিচিত ছিলেন? আপনারা যেভাবে কথা বলছিলেন, তাতে মনে হচ্ছে আপনাদের সম্পর্কটা গভীর।”
প্রবীণ মহিলাটি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন, তারপর বললেন, “হ্যাঁ, আমরা অনেক আগে থেকেই একে অপরকে চিনি। প্রায় ৩৫ বছর আগে, তোমার বাবা আমাকে খুব বড় এক উপকার করেছিলেন। কিন্তু আমি জানি না, সেই সময়ের পর কীভাবে উনি এখানে এসে পৌঁছেছেন।”
আরিফ অবাক হয়ে জানতে চাইল, “বাবা কিভাবে আপনাকে চেনেন?”
মহিলা ধীরে ধীরে স্মৃতি রোমন্থন করে বলতে শুরু করলেন, “৩৫ বছর আগে, আমি খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। আমার একমাত্র মেয়ে তখন গুরুতর অসুস্থ ছিল, চিকিৎসার খরচ চালানোর সামর্থ্য আমার ছিল না। তখন তোমার বাবা এগিয়ে এসে সব খরচ বহন করেছিলেন। সেই সাহায্য ছাড়া আমার মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হতো না।”
আরিফ স্তব্ধ হয়ে গেল। বাবার এই অচেনা দিক সে আগে কখনো জানতো না। মহিলা আবার বললেন, “আমি জানি না উনি এখানে কেন এসেছেন, কিন্তু মনে হচ্ছে, উনি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ ছিলেন।”
এই কথা শুনে আরিফের চোখে জল চলে এলো। সে ভাবতে লাগল, কীভাবে সে তার বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছিল! বুকটা ভারী হয়ে আসলো, সে দ্রুত বাবার ঘরে ছুটে গেল। বাবার পায়ে পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল। কাঁদতে কাঁদতে বলল, “বাবা, আমাকে মাফ করে দাও। আমি তোমার মতো একজন মানুষকে ভুল বুঝেছি। তুমি এত বড় মনের মানুষ, আর আমি তোমার কথা না ভেবে আমার নিজের ক্ষুদ্র চিন্তা নিয়ে চলেছি।”
বৃদ্ধ বাবা ছেলের কান্না দেখে তার মাথায় হাত রেখে বললেন, “বোকা ছেলে, মাফ চাওয়ার কিছু নেই। আমি তো কখনো তোমার ওপর রাগ করিনি। সন্তানের ভুলকে ক্ষমা করাই তো পিতার দায়িত্ব।”
আরিফ চোখের জল মুছে বাবাকে বুকে টেনে নিলো। আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে, সে বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো।
শেষ কথা:
পৃথিবীর প্রতিটি বাবা সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা বিলিয়ে যান। তাঁদের এই ভালোবাসার গভীরতা আমরা হয়তো অনেক সময় বুঝতে পারি না, কিন্তু তা আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সঙ্গী হয়ে থাকে।
১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯
Sujon Mahmud বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য
২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:২৬
আজব লিংকন বলেছেন: সারা জীবন কষ্ট কইরা ছেলেরে বড় কইরা তুলল। রক্ত ঘাম পানি করল। সেই কষ্ট ছেলের নজরে পরলো না। অথচ ৩৫ বছর আগের কোন এক ঘটনা যা অপরিচিত মহিলার কাছ থেকে শুনে পাথর মন গলে গেল। ওই পোলার ইমোশনের সাথে কনেন্ট করতে পারলাম না।
যাইহোক গল্প লিখতে থাকুন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:০২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার লেখা গোছানো, সাজানো, নির্ভুল বানান, কিন্তু গল্পটা দুর্বল হয়ে গেছে।