নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কারো যদি গোপন সাফল্যের চাবিকাঠি থাকে, তাহলে সেটা থাকে তার অন্যের কথার দৃষ্টাকোণ আর নিজের দৃষ্টি কোণ বুঝে নেওয়ার মধ্যে।।
উপরের ছবিটা দেখে নিশ্চিয় বুঝতে পারছেন, আপনার প্রশ্নের উত্তরে লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির কথা বলছি।
মূলত বহু গোত্রে বিভক্ত ও সদা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ-সংঘাতে লিপ্ত একটি দারিদ্র পীড়িত জাতিকে তিনি তেল সম্পদ আবিস্কারের পর যত দ্রুত একটি উন্নত রাষ্ট্রে রুপান্তর করেছিলেন তা সত্যই বিগত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে আর কোনও নেতা দেখাতে পারেননি!
তার ভালো কাজ সমূহ
* লিবিয়ার পুনর্গঠনে তাঁর অবদান অস্বীকার করবার কোনও উপায় নেই। তাঁর আমলেই শিক্ষিত নাগরিকের হার ২৫% হার থেকে বেড়ে ৮৩% হয়েছিল!
* দেশের মানুষ বিনা মুল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়া হত।
* দেশের মানুষ বিনা সুদে ঋণ পেত (দেশের সকল ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত)।
* তিনি সকল নাগরিকের জন্য সরকারিভাবে বাসভবন করে দিতেন।
* লিবিয়ার প্রত্যেক নবদম্পত্যিকে ৫০ হাজার ডলার দেয়া হতো যাতে তারা বাড়ি কিনে নতুন জীবন শুরু করতে পারে।
* বিনা মূল্যে চিকিৎসা এবং কৃষি খামারিদের সরকারের তরফ থেকে ভূমি ও বীজ সহ যাবতীয় উপকরণ দেয়া হতো (ফ্রিতে)।
* চিকিৎসা বা শিক্ষা সেবা নিতে দেশের কোনও নাগরিককে বিদেশে যেতে হলে তার সমস্ত ব্যয়ভার সরকার বহন করত।
* লিবিয়ার তেল বিক্রির একটা অংশ প্রত্যেক নাগরিকের একটা ব্যাংক নাম্বারে সরাসরি জমা হতো।
* সন্তান জন্ম দিলে প্রত্যেক মাকে পাঁচ হাজার ডলার দেয়া হতো।
* তাঁর সময়ে লিবিয়ার কোনও বৈদেশিক ঋণ ছিল না!
* আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা অন্য কারো কাছে লিবিয়ার এক পয়সাও দেনা ছিল না।
* উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে স্বাক্ষর দেশ ছিল লিবিয়া।
* লিবিয়া ছিল একটি ভিক্ষুকহীন দেশ।
* দেশটিতে ১০০% বেকারের বেকারভাতা নিশ্চিত ছিল।
* পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ ছিল। সেজন্য মাসে ২,৫০০ ইউএস ডলার বৃত্তির সাথে গাড়ি ও আবাসনভাতা।
* উৎপাদন মূল্যে (Ex factory price) গাড়ি দেয়া হতো।
* গাদ্দাফি লিবিয়ায় সবচাইতে বড় সেচ প্রকল্প চালু করেন,যা বিশ্বের ৮ম আশ্চার্য নামে পরিচিত।
মরুভূমিতে সেচ প্রকল্প
তার বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ।
* গাদ্দাফি নারীদের প্রতি আসক্ত ছিলেন। এ নিয়ে তিনি ব্যপক তিরস্কারের শিকার হন। ত্রিপোলির প্রাসাদে অনেক নারীকে আটকে রাখতেন তিনি। আর গাদ্দাফির নানা খেয়ালি ইচ্ছা পূরণে সাহায্যকারী কর্মকর্তারা দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে যেতেন।
নারী দেহরক্ষী দ্বারা বেষ্টিত গাদ্দাফি
* তার আমলে ছিল সিনেমা বন্ধ, থিয়েটার বন্ধ । ফুটবল খেলাও বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন । কাজেই সাথারণ লোকের জন্য কোন কিছুকে উপলক্ষ্য করে একসাথে হওয়া ছিল এক বিরাট সমস্যা।
* ১৯৭০ দশকের শেষ দিকে প্রকাশ্যে লোকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা শুরু হয়েছিল।
* ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি৷ হাজার হাজার মানুষকে, বিশেষ করে গণতন্ত্রকামীদের
* নির্বিচারে হত্যা ও নারীদের ধর্ষন, যৌন নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে তার শাসনামলে৷
* গাদ্দাফি প্রায় হাজারখানেক রাজনৈতিক ভিন্নমতালম্বীকে হত্যার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগে ভীষণভাবে অভিযুক্ত।
* এছাড়াও ১৯৮৮ সালে প্যান আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ১০৩ নম্বর ফ্লাইটে টাইম বোমা দিয়ে মাঝ আকাশে ধ্বংস করার অভিযোগও আছে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে, এই বিস্ফোরণে ২৫৯ জন যাত্রীর সবাই নিহত হয়। পরে এই অভিযোগ স্বীকার করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণও দেন গাদ্দাফি।
* স্বৈরাশাসন,একনায়কতন্ত্র,এবং দেশের ক্ষমতা শুধু একটি পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া ও বিরোধী মতকে নিষ্ঠুর উপায়ে দমন ও হত্যা এগুলোতে সে খুবই আলোচিত ছিল।
* তার আমলে সমগ্র পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করা হয়।
বিরোধী বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের একদমই সহ্য করতে পারতেন না গাদ্দাফি। তার গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ছিলো অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, পরিকল্পিত এবং সর্বত্র সম্প্রসারিত। কারো আচরণে সন্দেহ হলে কিংবা কাউকে তথাকথিত বিপ্লবের বিরোধী মনে হলেই তার ওপর নেমে আসত নির্যাতনের খড়গ, প্রায়শই যার পরিণতি ছিল মৃত্যু।
তথ্যসূত্র
ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর কিছু স্বৈরশাসক | DW | 02.10.2019
ইতিহাসের সাক্ষী: গাদ্দাফির যুগে লিবিয়া
লৌহমানব মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি | বাংলাদেশ প্রতিদিন
কেমন ছিল গাদ্দাফির লিবিয়া
কর্নেল মুয়াম্মর গাদ্দাফি: ইতিহাসের নায়ক নাকি খলনায়ক?
https://roar.media/bangla/main/history/ten-evil-autocratic-leader-with-bizzare-habits/
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪৪
কামাল১৮ বলেছেন: স্বাভাবিক ভাবে বেচে থাকলে এখনো ক্ষমতায় থাকতেন যদি আমেরিকার কথা শুনতেন।হাসিনারও একই অবস্থা হয়েছে।আমাদের অবস্থাও লিবিয়ার মতো হবে।