নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কারো যদি গোপন সাফল্যের চাবিকাঠি থাকে, তাহলে সেটা থাকে তার অন্যের কথার দৃষ্টাকোণ আর নিজের দৃষ্টি কোণ বুঝে নেওয়ার মধ্যে।।
উপরের চিত্রটি চিহ্ন হয়তো সবার চেনা। সবাই আমরা ভালোবেসে পাই বলে ডাকি। আহ্, কী মধুর নাম। পৃথিবীর কত গণিতবিদ ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। হয়তো রোমিও -জুলিয়েট বা ফরহাদ-শিরির প্রেম কে ছাড়িয়ে যাবে। আমার মতে এটি হলো পৃথিবীর অন্যতম একটি অদ্ভুত আবিষ্কার।
আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। জ্যামিতি ক্লাস ছিল সেদিন। বিষয়বস্তু ছিল বৃত্ত। আল্লাহর রহমতে সমস্ত লেকচার মাথার উপর থেকে যাচ্ছিল, কিছুই ভিতর ঢুকছিল না। ক্লাসের মাঝে হঠাৎ স্যার আমাদের গল্প বলতে শুরু করল তাঁর বাস্তব জীবনের। তার বাবার লোহার ওয়ার্কসপ আছে। সেখানে তারা বিভিন্ন লোহার জিনিস তৈরি করে। আমাকে বললেন, ‘’আমি হিসাব করে দেখলাম, তোদের থেকে আমার দোকানের কর্মচারীরা বেশি শিক্ষিত। যদিও জীবনে স্কুলের বারান্দায় পা দেয়নি।’’
কারণ চাইলে তিনি বললেন দেখ তোরা সামান্য পাই বুঝছিস না। অথচ আমার দোকানের কর্মচারীরা এটি দিয়েই কত বড় বড় কাজ করে ফেলছে। যখন তাদের কাছে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনারা কিভাবে এত বড় একটি গোলক নির্ভুলভাবে তৈরি করছেন। তখন সোজাসাপ্টা জবাব এলো সোয়া তিন থেকে সামান্য কিছু কম নিয়ে মধ্যবিন্দু থেকে যদি ঘুড়িয়ে আনা হয়, তাহলে এটি তৈরি হয়ে যাবে। আমরা তো শুনে তাজ্জব হয়ে গেলাম। সত্যি জিনিসটা তো মজার।
পাইয়ের প্রাচীন সন্ধান পাওয়া যায় ব্যবলিন এবং মিশরে প্রায় 4000 বছর আগে। তখনকার লোক এটি বুঝতে পারে যে পাই হচ্ছে কোন বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত। সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো তারা পাই এর যে মানটি ধরেছিল তাতে মাত্র পয়েন্ট পাঁচ পার্সেন্ট ভুল ছিল। তারা 25/8 দিয়ে পাই এর মান বের করত।
বর্তমানে আমরা হিসেবে সুবিধার্থে 22/7 দিয়ে পাই এর মান বের করে থাকি। তবে এটিও পুরোপুরি সঠিক নয় আমাদের প্রচলিত প্রথা 22/7 সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিলেন ইউরেকা বলে দৌড় দেয় বিজ্ঞানী ( কি অবস্থায় দৌড় দিয়েছিল সেটা না বলাই উত্তম )। আশাকরি নামটি সবাই বুঝতে পেরেছেন, আর বলতে হবে না।
পাই এর ব্যবহার অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি সভ্যতা্য় বিপ্লব এনে দিয়েছে। তাই এর গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা হয়তো অজান্তেই পাই ব্যবহার করছি। একে নিয়ে বিভিন্ন উপখ্যান রচিত হয়েছে। বিভিন্ন লিজেন্ডের তৈরি হয়েছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রায় প্রতিটি শাখায় পাইয়ের অবাধ বিচরণ রয়েছে। গণিতের কথা তো বাদই দিলাম। পাই ব্যবহার করে আপনি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য, এছাড়াও যে কোন গোলকের আয়তন, নদীর দৈর্ঘ্য, কোন বস্তুর ব্যাসার্ধ, ক্ষেত্রফল ইত্যাদি বের করতে। পারেন এমনকি জেনেটিক্সে ডি এন এর গঠন বোঝার জন্য অনেক ক্ষেত্রে পাই এর মান দেখা হয়। আরেকটি মজার কথা না বললেই নয়, আমরা যে জিপিএস সার্ভিস এর সাথে পরিচিত এটিতে পাইয়ের সাহায্য নেওয়া হয়। জনসংখ্যা পরিসংখ্যান বের করতে, ঘড়ির ডিজাইন করতে, বিমানের ডিজাইন করতে ইত্যাদি বহুবিধ ক্ষেত্রে পাই এর ব্যবহার হয়ে থাকে। আধুনিক সভ্যতা কে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। এর সুফল যেমন আমরা ভোগ করছি আমাদের পূর্বপুরুষরা এবং তাদের পূর্বপুরুষরা এভাবে যদি আমরা পিছনের দিকে যেতে থাকে তাহলে দেখতে পাব, প্রাচীন সভ্যতা থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় সবাই পাই এর সুবিধা ব্যবহার করে আসছে। সেই হিসেবে বিবেচনা করলে এটি একটি এনসিয়েন্ট-মর্ডান কম্বিনেশন আবিষ্কার বলে বিবেচিত হবে।
পাইয়ের সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য:
১. কম্পিউটার ব্যবহার করে এ পর্যন্ত ২২ ট্রিলিয়ন ঘর পর্যন্ত পাই এর মান নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
২.পাইয়ের প্রথম তিনটি ডিজিট 3.14 অনুসারে মার্চ মাসের 14 তারিখ বিশ্ব পাই দিবস পালিত হয়।
৩.পাই এর মান বের করতে গিয়ে অনেক গণিতবিদ তাদের জীবন ও যৌবন বিসর্জন দিয়েছেন। আহ্! ভালোবাসার কি নমুনা। এই না হলে ভালোবাসা।
৪.আলবার্ট আইনস্টাইন 1879 সালের পাই দিবসে জন্মগ্রহণ করে।
৫.পাই এর বর্তমান চিহ্নের সূচনা ঘটান বিখ্যাত গণিতবিদ লিউনার্দ অয়লার ১৭০৬ সালে।
৬.পদার্থবিদ ল্যারিকে পাই এর যুবরাজ বলা হয় কেননা তিনিই সর্বপ্রথম পাই দিবস এর সূচনা ঘটে।
৭.এবারের তথ্যটি শুনে নিশ্চিত আপনি মাথায় হাত দিতে বাধ্য। পাই এর সর্বাধিক মান মুখস্থ করেছিল ভারতের ভেলোর বিআইটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাজবীর। তিনি 70000 ঘর পর্যন্ত পাই এর মান মুখস্ত করেন এবং একটানা 10 ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বলে বিশ্বরেকর্ড করেন।
অবাক করা তথ্য হলো এই রেকর্ডটি ভাঙার জন্য এখন প্রতিযোগিতা চলছে। একথা সত্য যে রেকর্ড তৈরি হয় ভাঙার জন্য দেখা যাক ,পরবর্তী পাই সুপারস্টার কে হয়।উপরের চিত্রটি চিহ্ন হয়তো সবার চেনা। সবাই আমরা ভালোবেসে পাই বলে ডাকি। আহ্, কী মধুর নাম। পৃথিবীর কত গণিতবিদ ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। হয়তো রোমিও -জুলিয়েট বা ফরহাদ-শিরির প্রেম কে ছাড়িয়ে যাবে। আমার মতে এটি হলো পৃথিবীর অন্যতম একটি অদ্ভুত আবিষ্কার।
আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। জ্যামিতি ক্লাস ছিল সেদিন। বিষয়বস্তু ছিল বৃত্ত। আল্লাহর রহমতে সমস্ত লেকচার মাথার উপর থেকে যাচ্ছিল, কিছুই ভিতর ঢুকছিল না। ক্লাসের মাঝে হঠাৎ স্যার আমাদের গল্প বলতে শুরু করল তাঁর বাস্তব জীবনের। তার বাবার লোহার ওয়ার্কসপ আছে। সেখানে তারা বিভিন্ন লোহার জিনিস তৈরি করে। আমাকে বললেন, ‘’আমি হিসাব করে দেখলাম, তোদের থেকে আমার দোকানের কর্মচারীরা বেশি শিক্ষিত। যদিও জীবনে স্কুলের বারান্দায় পা দেয়নি।’’
কারণ চাইলে তিনি বললেন দেখ তোরা সামান্য পাই বুঝছিস না। অথচ আমার দোকানের কর্মচারীরা এটি দিয়েই কত বড় বড় কাজ করে ফেলছে। যখন তাদের কাছে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনারা কিভাবে এত বড় একটি গোলক নির্ভুলভাবে তৈরি করছেন। তখন সোজাসাপ্টা জবাব এলো সোয়া তিন থেকে সামান্য কিছু কম নিয়ে মধ্যবিন্দু থেকে যদি ঘুড়িয়ে আনা হয়, তাহলে এটি তৈরি হয়ে যাবে। আমরা তো শুনে তাজ্জব হয়ে গেলাম। সত্যি জিনিসটা তো মজার।
পাইয়ের প্রাচীন সন্ধান পাওয়া যায় ব্যবলিন এবং মিশরে প্রায় 4000 বছর আগে। তখনকার লোক এটি বুঝতে পারে যে পাই হচ্ছে কোন বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত। সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো তারা পাই এর যে মানটি ধরেছিল তাতে মাত্র পয়েন্ট পাঁচ পার্সেন্ট ভুল ছিল। তারা 25/8 দিয়ে পাই এর মান বের করত।
বর্তমানে আমরা হিসেবে সুবিধার্থে 22/7 দিয়ে পাই এর মান বের করে থাকি। তবে এটিও পুরোপুরি সঠিক নয় আমাদের প্রচলিত প্রথা 22/7 সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিলেন ইউরেকা বলে দৌড় দেয় বিজ্ঞানী ( কি অবস্থায় দৌড় দিয়েছিল সেটা না বলাই উত্তম )। আশাকরি নামটি সবাই বুঝতে পেরেছেন, আর বলতে হবে না।
পাই এর ব্যবহার অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি সভ্যতা্য় বিপ্লব এনে দিয়েছে। তাই এর গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা হয়তো অজান্তেই পাই ব্যবহার করছি। একে নিয়ে বিভিন্ন উপখ্যান রচিত হয়েছে। বিভিন্ন লিজেন্ডের তৈরি হয়েছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রায় প্রতিটি শাখায় পাইয়ের অবাধ বিচরণ রয়েছে। গণিতের কথা তো বাদই দিলাম। পাই ব্যবহার করে আপনি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য, এছাড়াও যে কোন গোলকের আয়তন, নদীর দৈর্ঘ্য, কোন বস্তুর ব্যাসার্ধ, ক্ষেত্রফল ইত্যাদি বের করতে। পারেন এমনকি জেনেটিক্সে ডি এন এর গঠন বোঝার জন্য অনেক ক্ষেত্রে পাই এর মান দেখা হয়। আরেকটি মজার কথা না বললেই নয়, আমরা যে জিপিএস সার্ভিস এর সাথে পরিচিত এটিতে পাইয়ের সাহায্য নেওয়া হয়। জনসংখ্যা পরিসংখ্যান বের করতে, ঘড়ির ডিজাইন করতে, বিমানের ডিজাইন করতে ইত্যাদি বহুবিধ ক্ষেত্রে পাই এর ব্যবহার হয়ে থাকে। আধুনিক সভ্যতা কে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। এর সুফল যেমন আমরা ভোগ করছি আমাদের পূর্বপুরুষরা এবং তাদের পূর্বপুরুষরা এভাবে যদি আমরা পিছনের দিকে যেতে থাকে তাহলে দেখতে পাব, প্রাচীন সভ্যতা থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় সবাই পাই এর সুবিধা ব্যবহার করে আসছে। সেই হিসেবে বিবেচনা করলে এটি একটি এনসিয়েন্ট-মর্ডান কম্বিনেশন আবিষ্কার বলে বিবেচিত হবে।
পাইয়ের সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য:
১. কম্পিউটার ব্যবহার করে এ পর্যন্ত ২২ ট্রিলিয়ন ঘর পর্যন্ত পাই এর মান নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
২.পাইয়ের প্রথম তিনটি ডিজিট 3.14 অনুসারে মার্চ মাসের 14 তারিখ বিশ্ব পাই দিবস পালিত হয়।
৩.পাই এর মান বের করতে গিয়ে অনেক গণিতবিদ তাদের জীবন ও যৌবন বিসর্জন দিয়েছেন। আহ্! ভালোবাসার কি নমুনা। এই না হলে ভালোবাসা।
৪.আলবার্ট আইনস্টাইন 1879 সালের পাই দিবসে জন্মগ্রহণ করে।
৫.পাই এর বর্তমান চিহ্নের সূচনা ঘটান বিখ্যাত গণিতবিদ লিউনার্দ অয়লার ১৭০৬ সালে।
৬.পদার্থবিদ ল্যারিকে পাই এর যুবরাজ বলা হয় কেননা তিনিই সর্বপ্রথম পাই দিবস এর সূচনা ঘটে।
৭.এবারের তথ্যটি শুনে নিশ্চিত আপনি মাথায় হাত দিতে বাধ্য। পাই এর সর্বাধিক মান মুখস্থ করেছিল ভারতের ভেলোর বিআইটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাজবীর। তিনি 70000 ঘর পর্যন্ত পাই এর মান মুখস্ত করেন এবং একটানা 10 ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বলে বিশ্বরেকর্ড করেন।
অবাক করা তথ্য হলো এই রেকর্ডটি ভাঙার জন্য এখন প্রতিযোগিতা চলছে। একথা সত্য যে রেকর্ড তৈরি হয় ভাঙার জন্য দেখা যাক ,পরবর্তী পাই সুপারস্টার কে হয়।
২| ১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:১৭
করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। তবে এখন সবাই দেশের ভাবনা ভাবতে ব্যস্ত। তাই আপনার চমৎকার লেখাটি কারো নজরে পড়ছে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩
ঢাকার লোক বলেছেন: Interesting, তবে লেখাটি দুইবার এসেছে !