নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কারো যদি গোপন সাফল্যের চাবিকাঠি থাকে, তাহলে সেটা থাকে তার অন্যের কথার দৃষ্টাকোণ আর নিজের দৃষ্টি কোণ বুঝে নেওয়ার মধ্যে।।
সমাপনী পরীক্ষার পরে আমি ঢাকায় চলে যাই। কিছুদিন পর আমার পরিবার অন্য এক জায়গায় একটা ভাড়া বাসায় উঠেছে। তা আমি তখনও ঢাকাতেই। তখন ফেব্রুয়ারি মাস ক্লাস শুরু হয়ে যাবে তাই চলে আসলাম। তেমন কোন সমস্যাই ছিল না। তবে যেহেতু ওটা গ্রাম সাইট, অনেক গাছ-পালা। আর আমাদের বাড়িও গ্রামে এসব অতিরিক্ত গাছ পালা কোন সমস্যাই না। কিন্তু একটা গাছ নিয়ে অবশ্যই সমস্যা ছিল। সেটা একটা আম গাছ, খুব বড়সর একটা গাছ। রাস্তার পাশেই ছিল। সমস্যাটা হলো ওই গাছটা-তে নাকি একটা মহিলা ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে,তাই সেটার নিচ দিয়ে যখনই যেতাম কেমন একটা ভয় কাজ করত। তাছাড়া নিয়মিত ভূত FM শুনেও অন্তরে কিছুটা ভয় একদম সেটে গেল। যখনই আত্মহত্যা বিষয়ক গল্প গুলা শুনতাম শরিরে লোম গুলা কাটা দিয়ে উঠত। এরই মাঝে ৩ টা বছর শেষ হয়ে গেল। আমি একা এক ঘরে থাকতাম ১ ঘরে বাবা-মা। আরেক ঘরে ছোট ভাই আর দাদী থাকত। একদিন সকাল বেলা ছোট ভাইটা বলল, "ভাইয়া কালকে না.."।
"কি হইছে? " জিজ্ঞেস করলাম আমি।
"রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেছে, তাকায়া দেখি ঘরে কে জানি হাটতাছে।"
"আম্মা মনে হয়।"
"না আম্মুরে জিগাইছি আম্মু বলে আসে নাই!"
"কি বলিস?"
"হু সত্যি কথা।"
"তার পর?"
"দাদী দেখি বিছানার পাশে বসে রইছে।"
আমার দাদী বহু বছর ধরেই অন্ধ। তাই দিনের বেলাতেও অনেক ঘুমায়। যার ফলে প্রায় রাতেই এভাবে বসে থাকে যখন ঘুমাতে পারে না।
"পরে কি হইছে?" বিরতি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
- "তো দাদু যখন ফ্লোরে পা দিছে তখন হাতুরী,প্লাস এগুলার মাঝে মনে হয় পা লাগছে।" কাঁপা গলায় উত্তর দিল ছোট ভাই।
-- "তো কি হইছে?"
-- "পরে যেই না লোহার আওয়াজ হইছে, আর কাউরে দেখি নাই!"
-- "ওই সব কিছু না তুই ঘুমের ঘোরে অন্ধকারে এমন ভাবছস।" একটু ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করি আমি।
-- “কইতে পারি না!”
-- “আইচ্ছা যা এখন তর স্কুলের সময় হইছে।”
টপিকটা বন্ধ করতে তাকে তাড়াতাড়ি স্কুলে পাঠিয়ে দিলাম। তারপর ছোট ভাই স্কুলে চলে গেল। আমি আর এসব ভাবি নাই। ধরে নিলাম এসব হেলোসিনেসন। এর পরে আর এমন কখনও হয় নাই আমরা সেই বাসাতে ৭ বছর থাকি, তারপর অন্য একটা বাসাতে চলে যাই। যেটা অনেক বড় একটা বাড়ি। রুম খুব বড় বড় এবং ৮ টা রুম। এই বাসাটার কাজ শেষ হইছিল ৩ বছর আগে তবে শুধু দরজা লাগানো হয়নি আর বাথরুম,রান্নাঘর ঠিক হয়নি। এই পুরা বাড়িটার পাশেই বড় জঙ্গল কেমন একটা ভূতুরে পরিবেশ দেখলেই ভয় হওয়ার মতো। তার উপরে আবার এই ৩ টা বছর এই বাড়িটা ছিল সব খারাপ কাজের আখড়া। মানে এলাকার বাজে যুবকরা যা খারাপ কাজ করে এখানেই তা চলত। যেমন মদ, গাঁজা, জুয়ার আসরই ছিল এটা।
আর কোন বাড়ি যদি আলোহীন ভাবে খালি পরে থাকে তবে এটা জ্বীনদের বাসস্থল এ পরিনত হয় এটাতো আমরা সবাই-ই জানি। ১ম যেদিন বাসাতে উঠি, সেদিন আমি রুমে একা ছিলাম।প্রতিটা ছোট ছোট আওয়াজ আমাকে ভয় পৌছাতে ছিল। আমার কবুতর গুলা ছিল সিঁড়ি ঘরে। সেখান থেকে যদি কোন শব্দ আসে তবুও শরীর কেপে উঠছে। এরকম হাজারো শব্দের আড়ালে অতি কষ্টে ঘুমালাম। এর পর আর কখনো ভয় পাইনি।
বাড়িটা অনেক বড়। যার ফলে তার ভিতরে নেট পায় না। আমি নেট ব্যবহার করার জন্য ছাঁদে যাই। ছাঁদে না গিয়ে নেট ব্যবহার করা যায় না। ছাঁদের কোনায় একটা তেঁতুল গাছ। যার ডাল-পালা কতোগুলো ছাঁদের উপরে উঠে এসেছে। তারই পাশে বসে আমি ইন্টারনেট ব্যবহার করি।
সেখানেই আমি আমার কলেজ জীবন অতিবাহিত করলাম অতপরে অনার্সে ঢাকা চলে গেলাম। মেসে থেকেই অনার্স শেষ করলাম।।একটা ছোট কাজও আল্লাহর রহমতে পেয়ে গেলাম। ঢাকা শহরে একটা রুমের ব্যবস্থা করা যে কতো কঠিন তাতো অনেকেই জানেন। ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া আর কে দেয় বলেন? সবাই অবিশ্বাস করে। তারপরও অনেক কষ্টে একটা বাসা মেনেজ করলাম মাত্র একটা রুমের। এই রুমে আগামী ৪-৫ মাস কেউ ছিল বলে মনে হয় না। তবে ঘরটা এতো গুছানো কি করে তা কিছুতেই মাথায় আসে না, একটা মাকড়শার জাল পর্যন্ত নাই। হয়তো বাড়ি ওয়ালা পরিস্কার করিয়েছে। এসব নিয়ে আমায় ভাবতে হবে না। আমি কেবল রাতে থাকব সকালে অফিসে যাব,আবার রাতে আসব। একটা কাজের বুয়াও পেয়ে গেলাম। যদিও কাজের বুয়া পাওয়া আর নাগিনের মনি পাওয়া এখন এক রকমের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই টাকাটা একটু বেশী হলেও বুয়া পাওয়াতে বেশ ভালোই হলো, সমস্ত ঝামেলা শেষ। শুধু ঘুমাব আর অফিস করব।
আজ ১ম রাতে ঘুমালাম। কেমন যেন নিজেকে অপ্রস্তুত ফিল করতেছি।
রাতের বেলা হটাৎ ঘুম ভেঙে গেল কিছুর শব্দ পেয়ে। আমি স্পষ্ট ভাবে রান্না ঘর থেকে বিভিন্ন জিনিস নাড়ানোর শব্দ পাচ্ছি। কিন্তু আমার পায়ে কোন প্রকার শক্তি পাচ্ছি না। কোন ভাবেই বিছানা ছেড়ে উঠে যেতে পারছিনা। আমার সারা শরীর ঘেমে যাচ্ছে। তবে অবশেষে শব্দ থেকে গেল,আর আমি পায়েও যেন শক্তি ফিরে পেলাম। কিন্তু এটা সম্পর্ণ নতুন জায়গা তাই আর উঠে গিয়ে কিছুই দেখলাম না। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি ১২.৩০ বাজে। হয়তো শব্দটা ১২ টার দিক থেকেই শুরু হয়েছে।
কালকে অফিস আছে তাই আর বেশি কিছু না ভেবে ঘুমের রাজ্যে বিচরন করলাম। সকাল বেলা এলার্মের যন্ত্রণাদায়ক শব্দে ঘুম ভাঙল। এখনও অফিসের ৩ ঘন্টা বাকি আছে,ভাবলাম ছাদে গিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করি। দারওয়ান এর কাছে চাবি চাইতেই সে ছাদের চাবি দিতে সম্পূর্ন অস্বীকার করল।
-- “চাচা দিন না চবিটা একটু ছাঁদে হাঁটাহাটি করি।” আকুতি করলাম আমি।
-- “শোন বাবা তুমি আমার ছেলে বয়সী তুমি আমাকে ভুল বুঝোনা। ছাঁদের চাবি দেয়া যাবেনা কখনও না, কাউকে না।”
-- “কেন চাচা?”
-- “কোন কেন জানতে চাইবে না। ছাঁদে কখনও উঠার চেষ্ঠা করো না।”
-- "কেন চাচা?”
-- “বল্লাম না কেন বলবে না ,আমি দিতে পারব না এটাই শেষ কথা। এর বেশী তোমার জানার কোন প্রয়োজন নেই।”
-- “আরেপ বাবা বুড়ার কি তেজ এটাই শেষ কথা!” মনে মনেই কথা গুলো বললাম।
-- “কি বলো বাবা?”
-- “না চাচা ও কিছু না। থাক তবে আমারও অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে।”
এ কেমন কথা! ছাদে কখনও উঠার চেষ্ঠা করবে না। যা এখন এই বোড়িং টাইম গুলাও ঘরে বসেই কাটাতে হবে! বুয়া এখনও আসেনি ভাবলাম গোসল করে নিই আগে। এমনি দড়জায় শব্দ।
-- “কে এসেছে?”
-- “সাহেব আমি।”
গলার আওয়াজ শুনেই বুঝতে পারলাম বুয়া এসেছে।
-- "ও চাচি আসুন ভিতরে।”
-- “হুম " কিছুক্ষন থেমে বলল, "সাহেব আপনার এখানে কোন সমস্যা হয়নাতো?”
-- “না কিসের সমস্যা!" উত্তর দিয়ে বললাম, "আচ্ছা আপনি রান্না করেন আমি গোসল করে আসি।”
-- “ ঠিক আছে সাহেব।”
আমি গোসল করতে চলে আসলাম। গোসল করে অন্য কাপড় পরব। দেখি আমার সব কাপড় সুন্দর করে আলনায় গুছিয়ে রাখা। আমিতো কাপড় গুলা এভাবে গুছিয়ে রাখিনি মনে হয়,আমিতো এতো গুছানো ছেলে না। এই কাপড় কে গুছিয়ে রাখল! আর মেরেকুতু আবতাক সাদী বি নেহি হোয়ি।
থাক হয়তো আমিই ঠিক করে রেখেছি। এখন আর মনে পড়ছেনা। নিজের মাথায় নিজেই একটা থাপ্পড় দিলাম। আমার রুমের প্রত্যেকটা জায়গা কেমন একটু গুছানো লাগছে। কে এতো বড় মহত লোক যে এভাবে ঘরটাকে গুছিয়ে রাখছে নাকি আমিই গুছিয়েছি। আমার ঘর আর কে গুছাবে! খেয়ে দেয়ে অফিসে চলে গেলাম। রাতে অফিস থেকে ফিরতে দেরি হয়ে গেল। প্রায় তখন রাত ১১টা। বড় রাস্তায় বাস ঠিকই পেলাম,কিন্তু রিকশা আর এতো রাতে পাওয়ার কথা নয়। তাই বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। বাসায় পৌছাতে হয়তো আর ২০ মিনিট কি ১৫ মিনিট লাগবে। যদি আগের মতো জোড়ে হাটি তবে ১০ মিনিট। মনে সাহস নিয়ে অন্ধকারে হাটতে শুরু করলাম। চারদিকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কেবল রাস্তাটা বুঝতে পারছি। কানে আসছে কেবল ঝিঝি পোকার আওয়াজ। বার বার শীতল বাতাশ টা আমার গায়ের লোম গুলাকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎই কে যেন পিছন থেকে আমার নামে ডাকল।
এখানে এতো রাতে আমাকে কে চিনবে। আবারো ডাকল এভাবে তিন বার হবার পরে। পুরো শরীরটাকেই পিছনে ঘুরালাম দেখি কেউ নেই। এভাবেই ৩-৪ বার পুনরা বৃত্তি করলাম। হটাৎ ই মনে হলো যে আমাকে ডাকছে সে আমার খুব কাছেই। আমার মধ্যে ভয় কাজ করতে লাগল। সারা শরীর শিরশির করতে লাগল।
এবার খুব নরম সুরে কাছ থেকে ডাক দিল। পিছনে তাকিয়েই দেখলাম ধবধবে সাদা পোশাক পরিহিত একটা মেয়ে ব্রিজের উপরে বসে আছে।
( চলবে ইনশা আল্লাহ....) (গল্পটা প্রায় ৩ বছর আগের লেখা বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন প্লিজ।)
গল্প : #অতৃপ্তি ( ১ম পর্ব)
২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৭
মেহেদি_হাসান. বলেছেন: বানান ভুল তেমন চোখে পড়লো না শুধু তবে অবশেষে শব্দ থেকে গেল,আর আমি পায়েও যেন শক্তি ফিরে পেলাম এখনে বোধহয় 'থেমে' হবে।
আপনার গল্প ভালো লেগেছে চালিয়ে যান।
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
কোন বাড়ীতে মানুষ ণা থাকলে, আলোনা থাকলে ওখানে জীন থাকে, এ'হলো আপনার ধারণা? ভাবনায় সমস্যা আছে
৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
Sujon Mahmud বলেছেন: হুম, হয় তো বা
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: মোটামোটি।