নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুর আর গান।স্নিগ্ধতা আর শুদ্ধতা।কৃষ্টি কালচার আর শিল্পসাহিত্য।এ সবই আত্মার বিশুদ্ধতম সৌরভ আর মানব মনের মধুরতম খোরাক।কিছু কিছু মানুষের প্রতিভা পূর্নিমার চাঁদের মত বিকশিত কিন্ত একই সাথে জ্যোৎস্নার মত স্নিগ্ধ। একটা সময়ে এমনি সব আলোকিত মানুষেরা দলে দলে নেমে এসেছিলেন বঙ্গভূমিতে।তাদের ঐশ্বরিক প্রতিভায় আলো হয়ে উঠেছিল এই সবুজ কোমল আঙিনা। শুধু তাই নয় সেই আলোতেই ভাস্বর হয়ে থাকত এই আঙিনার মানব মনগুলি।তাইতো সুরুচিসম্পন্ন, বিবেকবান মানুষের দেখা মিলতো হাঁটতে চলতে।শিক্ষা আর সংস্কৃতি তখন একে অপরের সাথে জড়িয়ে ছিল নিবিড়ভাবে। বাবা মা কে দেখেছি।তাদের ভাইবোন বন্ধুবান্ধবকে দেখেছি।তাদের কথাবার্তা চলাফেরা দেখে মুগ্ধ হতাম।এক ধরনের মার্জিত শালিনতা ছিল সবার আচরণে। আড্ডার বিষয়বস্ত গুলোও ছিল দারুণ!
সেই সময়ে ভালো লেখা ভালো গান তৈরি হতো।মানুষ তার কদর করতে জানতো।আমরা যখন বড় হলাম তখন সবকিছু অনেক বদলে গেছে।সময়ের সাথে শিল্প সাহিত্যের রূপ বদলায়।এটা স্বাভাবিক। কিন্ত উন্নত মানের সাহিত্য, গান আর সিনেমা এখন যে আর সেভাবে তৈরি হচ্ছে না এ ব্যাপারে অনেকেই একমত হবেন।মানুষগুলোও বদলে গেছে।নতুন প্রজন্ম হিরো আলমকে চেনে কিন্ত সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কে চেনে না।
স্নিগ্ধ মিষ্টি বাংলা গানের মাধুর্য সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় যেভাবে ধারণ করেছিলেন তার সাথে তুলনা করা যায় খুব অল্প মানুষের।আমি নাম না জেনেও তাকে চিনেছিলাম তার গানের মাধ্যমে। বাবার ক্যাসেটে শোনা মিষ্টি কিছু গান ছোট থেকে কানে লেগেছিলো। এখানে ওখানে এই গানগুলো শুনতাম।তার 'ঘুম ঘুম চাঁদ' গানের আবহে যেন দিনে দুপুরে চাঁদ নেমে আসতো।
'চন্দনে পালঙ্কে শুয়ে' গানটি শুনে সেই কবে এক বিরহিণীর লুকানো ব্যাথা নিজের মনে অনুভব করেছিলাম।'খোলা আকাশ কি এত ভালো লাগত' গানটি আমাকে ভাবনায় ফেলত।মধু মালতী, এ শুধু গানের দিন, এসব গান মুহূর্তেই পরিবেশটা উৎসবমুখর করে ফেলতে পারত।তাইতো এসব গান এখনো আমার প্লে লিষ্ট জুড়ে রয়েছে।আমার শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য যৌবন বাংলা গানের অনাবিল আনন্দে ভরিয়ে রাখার জন্য তার মত শিল্পীদের কাছে আমি ঋণি
লতা মঙ্গেশকরের পর গতকাল চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। দুই গানের পাখির বিদায়,যেন একটি আলোকিত যুগের সমাপ্তি!রেশ না কাটতেই আজ চলে গেলেন বাপ্পি লাহিড়ী। এক একটি নক্ষত্র হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চেনা পৃথিবী থেকে।পৃথিবীটা বদলে যাচ্ছে দ্রুত।
ছোটবেলায় নিভৃতপল্লীর নিঝুম দুপুরে বাবার সৌখিন ক্যাসেটের ফিতায় শোনা মিষ্টি কণ্ঠের গানের দিনগুলো যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে।তার স্থান দখল করছে অস্থির ব্যস্ত দিনরাত।অসহিষ্ণুতা, নির্দয় নির্মমতা এখন সবখানে।পার্থিব আর অপার্থিব লাভ হাসিলের জন্য সবাই ছুটছে।লাইক,শেয়ার,ভিউ পাওয়ার জন্য উদ্ভট থেকে উদ্ভট কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে।এখন লতা,সন্ধ্যা, হেমন্তের মিষ্টি একটা গানে কার মন প্রাণ জুড়ায় জানিনা।তবে আমি সে অভ্যাস ছাড়তে পারিনি।বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বৃষ্টিস্নিগ্ধ সন্ধ্যায় কানে হেডফোন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের 'হয়তো কিছুই নাহি পাব' গানটি শুনে মন যেমন হু হু করে উঠত আজও কর্মজীবনে গভীর রাতে ঘুম ভাঙলে এই গান শুনে তেমনি অনুভুতি হয়।তাই অর্নব,শিরোনামহীন,জলের গানের সাথে লতা, আশা,সন্ধ্যা,হেমন্ত, কিশোরের মত কিংবদন্তিদের গান থাকে আমার প্লে লিস্টে।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মত দ্বীপ শিখারা নিভে গেলেও তাদের আলোটুকু থেকে যাবে গানের সুরে সাথে।হয়ত শত বছর পরেও কোনো তৃষিত হৃদয়কে ভরে তুলবে আলোর মিছিলে।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৬
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: হ্যাঁ। খুবই দুঃখজনক!
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: গত কয়েকদিনে তিন জো শিল্পী মারা গেলেন।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৮
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: সেটাই।
চেনা জানা বিখ্যাত মানুষেরা আর থাকছেন না।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:৫১
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: কতো সুন্দর সুন্দর শব্দের সমন্বয়ে পোস্টটি আরম্ভ করেছেন।দ্বীপ শিখা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় দের আলোটুকু অম্লান থাকুক অনন্তকাল।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৯
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ।হ্যাঁ আলোটুকু থাক চিরকাল ---
৪| ৩০ শে মে, ২০২৪ রাত ২:৪৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার! একেবারে আমার মনের কথাগুলো লিখেছেন। খুব ভালো লাগল।
অর্ধ শতাব্দী ধরে আমি ওনাদের কালজয়ী গানগুলো শুনে আসছি, "আত্মার বিশুদ্ধতম সৌরভ" শুঁকে শুঁকে!!!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২১
কালো যাদুকর বলেছেন: একে একে সব প্রদীপ নিভে যাচ্ছে ৷