নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক
ছেলেটিঃ নীরা কেমন আছ?
মেয়েটিঃ ভাল আছি।আপনি কেমন আছেন শাহেদ ভাই?
ছেলেটিঃভালই আছি।তা কেমন চলছে দিনকাল?
মেয়েটিঃ চলে যাচ্ছে একরকম।বাসার সবাই ভাল আছে?
ছেলেটিঃহ্যাঁ তা আছে।আমার পোস্টিং তো বাসার কাছেই হয়েছে এইজন্য অনেক সুবিধা।
মেয়েটিঃতাহলে তো ভালই।
ছেলেটিঃবিয়ে কর নি কেন এতদিনেও?
মেয়েটিঃহা হা হা! এই উত্তর কিভাবে দিব?
ছেলেটিঃযেভাবে সবাই দেয়।যেভাবে মেসেঞ্জারে টাইপ করছ সেভাবেই দাও।নাকি কল দিব?
মেয়েটিঃনা না এত রাতে কল দিতে হবে না।আসলে যেখানে বিয়েটা ঠিক ছিল সেখানে হলোনা।সেসব কারনে অনেক দেরি হয়ে গেল।এখন বাসা থেকে দেখছে।মিলে গেলে বিয়েটা করে ফেলব।
ছেলেটিঃ যেখানে ঠিক ছিল সেখানে হলোনা কেন বলা যাবে?
মেয়েটিঃআসলে এই বিষয়গুলো কাওকে ব্যাখ্যা করা সহজ না।নিজেদের মধ্যে সমস্যা ছিল,বাসা থেকেও বাধা ছিল।সব মিলিয়েই হয়নি।
ছেলেটিঃও আচ্ছা!ঠিক আছে অনেক রাত হয়েছে।বিদায় নিচ্ছি।
মেয়েটিঃ ঠিক আছে। শুভরাত্রি।
দুই
ছেলেটিঃ নীরা জেগে আছ।
মেয়েটিঃ হ্যাঁ আছি তো।আপনি এত রাতে অনলাইনে কি করেন?
ছেলেটিঃ এইত ফেসবুক, এটাসেটা আর কি।আচ্ছা তুমি যে সেদিন বললে বাসার পছন্দে বিয়ে করবে।তাহলে আর পিছুটান নেইত?
মেয়েটিঃনা পিছুটান থাকবে কেন?সবকিছুই তো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে।এসব কথা বলতে ভাল লাগছে না।অন্যকিছু বলেন।আপনার জীবন কেমন চলে?
ছেলেটিঃ এইত কর্মক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকি।বাসায় ফিরে রান্নাবান্না করি।সপ্তাহান্তে গ্রামের বাড়িতে যাই আর বড় ছুটি পেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাই।
এইত। এভাবেই কেটে যাচ্ছে দিন।
মেয়েটিঃ বাহ! ভালইত।তা আপনি রান্না করতে পারেন?
ছেলেটিঃ হ্যাঁ অনেক আগে থেকেই তো রান্না করি আমি।তোমার ছবিগুলো দেখছিলাম তুমি কিন্ত বেশ সুন্দর দেখতে।
মেয়েটিঃ হা হা হা! তাই নাকি?
ছেলেটিঃ হ্যাঁ।
মেয়েটিঃ শাহেদ ভাই রাত হয়েছে।ঘুমিয়ে যান।কাল আমার অফিস আছে।
ছেলেটিঃ আচ্ছা।তোমার ফোন নাম্বারটা দাও।
মেয়েটিঃ ইয়ে, ফোন নাম্বার তো সাধারণত কাওকে দিই না।
ছেলেটিঃ আমি তাহলে মেসেঞ্জারে কল দিব।
মেয়েটিঃ কেন কল দিবেন?
ছেলেটিঃ আমার ইচ্ছা।
মেয়েটিঃ বুঝলাম।
ছেলেটিঃ কি?
মেয়েটিঃ কি?
ছেলেটিঃ আচ্ছা ঘুমাও।
মেয়েটিঃ শুভরাত্রি
তিন
ছেলেটিঃ হ্যালো নীরা!
মেয়েটিঃ হ্যালো শাহেদ ভাই।কেমন আছেন?
ছেলেটিঃ ভাল।তোমার কেমন চলছে?
মেয়েটিঃ ভালই তো।আপনি সত্যিই কল দিলেন।
ছেলেটিঃ সত্যিই দিলাম।কি করছিলে?
মেয়েটিঃ একটু ঘরের কাজ করছিলাম।কেন কল দিলেন বলেন।
ছেলেটিঃ তুমি আমাকে বিয়ে করবা?
মেয়েটিঃ কি!
ছেলেটিঃ বলছিলাম আমরা তো বিয়ে করতে পারি।দুজনেই এডাল্ট,দুজনেই উপার্জন করি।এতে তো বাধা কিছু নাই।
মেয়েটিঃ আমি আপনাকে ভাল করে চিনিও না।আপনার সম্পর্কে জানিও না।হুট করে এটা জিজ্ঞাসা করলে কিভাবে উত্তর দেব?
ছেলেটিঃ আরে তুমি ফ্রী হও।কথা বল।একে অন্যকে জেনে নেয়া যাবে।
মেয়েটিঃ ধুর! আপনি ইয়ার্কি করছেন।আপনি এত কোয়ালিফাইড আপনার তো মেয়ের অভাব হওয়ার কথা না।আজকাল ছেলেরা অনেক ছোট বয়সের মেয়েদের পছন্দ করে।নিশ্চয়ই এমন অনেক প্রস্তাব আছে আপনার জন্য।আমি তো অনেক বড় হয়ে গেছি আমাকে পছন্দ করার মত কিছুই নেই।
ছেলেটিঃহ্যাঁ এমন প্রস্তাব আছে অনেক।কিন্ত আমার সেগুলো ভাল লাগেনা।
মেয়েটিঃ এসব কথা বিশ্বাস করা কঠিন।
ছেলেটিঃ আমার এখন রোমান্টিক হতে ইচ্ছা করছে।আমি কিন্ত খুবই রোমান্টিক মানুষ বুঝেছ?
মেয়েটিঃ বুঝলাম।কিন্ত হুটহাট কারো সাথে রোমান্টিক হওয়া যায় না।
ছেলেটিঃ আরে! আমরা তো ছোট না।
মেয়েটিঃ ছোট না সেটা ঠিক। কিন্ত আপনার সাথে আমার তেমন পরিচয় নেই।তাছাড়া আমার কাজ আছে।পরে কথা হবে।রাখব এখন।
ছেলেটিঃ এখনি রাখতে হবে?
মেয়েটিঃ জ্বী।এখনি রাখতে হবে।খোদা হাফেজ
মেয়েটিঃ হ্যালো।
বান্ধবীঃহ্যালো, খবর কিরে তোর?
মেয়েটিঃ এইত ভালই।জানিস একটা অবাক ব্যাপার হয়েছে।
বান্ধবীঃ কি ব্যাপার?
মেয়েটিঃ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাই কথা নেই কিছু নেই হুট করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসলো।
বান্ধবীঃ তাই নাকি। তো সে করে কি?
মেয়েটিঃ ভাল সরকারি চাকরি করছে।
বান্ধবীঃ তাহলে তো খারাপ না।তুই কি বললি?
মেয়েটিঃ আমি কি বলব?আমি তো শুধু তার চেহারা চিনি।কিছুই জানিনা তার সম্পর্কে।সে কেমন মানুষ, তার ফ্যামিলি কেমন তাও জানিনা।তাছাড়া আমার মনে হচ্ছে সে মজা করছে।এত কমবয়েসী সুন্দরী মেয়ে দুনিয়াতে থাকতে সে কেন আমায় বিয়ে করতে যাবে?আমার বয়স ত্রিশ ছুয়েছে,সেই ফিটনেস ও নেই আর আহামরি কিছু সুন্দরীও না আমি।
বান্ধবীঃ আজগুবি কথা বলিস না।সবাই যে কম বয়েসী মেয়ে পছন্দ করবে তা তো নাও হতে পারে বোকা।দেখতে কেমন সে?
মেয়েটিঃ আছে মোটামুটি।বেশি লম্বা না মনে হয়। সেটা বড় কথা না বড় কথা হচ্ছে আমি কোনো ছেলেকে আর বিশ্বাস করতে পারিনা।অনেক খারাপ সময় তো পার করলাম।কারো সাথে সেভাবে আলাপ করতেও ইচ্ছা হয়না।মনে হয় সবাই সুযোগ সন্ধানী। সঙ্গ উপভোগ করবে কিন্ত দায়িত্ব নেবে না।অনেক তো দেখলাম দোস্ত।আর ভাল লাগেনা।
বান্ধবীঃ আরে এত হতাশ হওয়ার দরকার নেই।কথা বল, দেখ সে সত্যিই সে সিরিয়াস কিনা।আর যারা তাকে ভাল করে চেনে এমন কারো কাছে ভাল করে খোঁজ খবর নে।সব ঠিক থাকলে রাজি হয়ে যা।সংসার তো করাই লাগবে একদিন।তাইনা?
মেয়েটিঃ হুম।দেখি, তোকে জানাবো।তবে উনাকে আমার বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হলো।মনেহয় মাথায় বুদ্ধি আছে,গাধা টাইপ না।সুন্দর করে কথা বলে।কথা শুনতে ভাল লাগে।
চার
ছেলেটিঃ এই।
মেয়েটিঃ কি?
ছেলেটিঃ ভিডিও কল দিই একটু।
মেয়েটিঃ না না।
ছেলেটিঃ না কেন?দিচ্ছি।আরেহ, তুমিতো সাজ ছাড়া সাধারন ভাবেও অনেক সুন্দর!
মেয়েটিঃ ধুর কি যে বলেন আপনি!
ছেলেটিঃ আমার সাথে বিয়ে হলে কিন্ত তোমাকে দ্রুত বাবু নিতে হবে।বুঝেছ।
মেয়েটিঃ বুঝলাম। আপনার ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি আমার মনে হয় বিয়ের পর ছয় মাস একবছর সময় রেখে তারপর বাবু নেয়া উচিত। কারন বাবা-মা হওয়া তো অনেক বড় দায়িত্ব এটা কাধে নেয়ার আগে দুজনের কিছু সময় একান্তে কাটানো দরকার।এতে বোঝাপড়া বা সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়।
ছেলেটিঃ হুম।
মেয়েটিঃ আপনি কি সত্যিই দ্রুত বাবু চান?
ছেলেটিঃ আরেহ না।আমি মজা করছিলাম। আমি অনেক এঞ্জয় করতে চাই বউয়ের সাথে।অনেক ঘুরে বেড়াতে চাই।
মেয়েটিঃ তাহলে অমন বললেন কেন?আপনিতো খুব--
ছেলেটিঃ হা হা হা।কি? আমি অনেক দুষ্ট।তুমি দিনে দিনে বুঝবা।তুমি কি খেয়াল করেছ তোমার ঠোঁট দুটো খুব সুন্দর। একদম পারফেক্ট!
মেয়েটিঃ কি যে বলেন।আমার কিছুই তেমন সুন্দর না।
ছেলেটিঃ তুমি তাহলে নিজেকে আয়নায় দেখনা।তোমার সাথে কথা বলতেও বেশ ভাল লাগে।অনেক সুন্দর কথা বল তুমি।প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছা হয়।
মেয়েটিঃ পড়েছেন নাকি প্রেমে?
ছেলেটিঃ পড়েছিই তো।আমার এখন রোমান্টিক কথা বলতে ইচ্ছা করছে।
মেয়েটিঃ উফফ! আবার! অচেনা মেয়ের সাথে এমন কথা কিভাবে বলে মানুষ?
ছেলেটিঃ আমি তো চেনা হতে চাই,তোমার একান্ত আপন হতে চাই।
মেয়েটিঃ সে যখন হবেন তখন দেখা যাবে।এখন ঘুমিয়ে পড়েন। শুভরাত্রি
পাঁচ
বান্ধবীঃ কি রে খবর কি?
মেয়েটিঃ কি একটা যন্ত্রণায় পড়লাম বলত!
বান্ধবীঃ কেন কি হয়েছে?
মেয়েটিঃ শাহেদ ভাই খুব যন্ত্রণা করছে।তার সাথে কথা বলাই একটা বিপদ।
বান্ধবীঃকেন? কি বলে সে?
মেয়েটিঃ সাধারণ কথাই বলে।কিন্ত সমস্যা হচ্ছে মাঝে মাঝেই সে বেশি রোমান্টিক হয়ে যায়।এটা আমার ভাল লাগেনা।
বান্ধবীঃ হা হা হা!
মেয়েটিঃ হাসবি না খবরদার! আমার মনে হয় এই লোকের মাথায় সমস্যা আছে।না হলে ভাল করে না বুঝে শুনে হুট কেউ বিয়ের প্রস্তাব দেয় নাকি?প্রস্তাব দিয়ে সাতদিন খোঁজ খবর নেই।আবার যোগাযোগ আবার কথা, তারপর আবার গায়েব।
গত সপ্তাহে উনি আবার ফোন দিয়েই বলে আমার সাথে প্রেম করবা?আমি বললাম প্রশ্নই ওঠে না সেটার।উনি বলে-'তাহলে বিয়ে কর আমাকে'
আমি বললাম -ভাই এভাবে তো হয়না।কিছুদিন সময় নিয়ে জানাশোনা হওয়ার দরকার আছে।তারপর সিদ্ধান্ত নেন।
মনে হলো উনি বুঝলেন। আবার এই কয়দিন গায়েব।এতদিন পর আজকে ফোন দিয়ে এমনভাবে কথা বলল যেন কতদিনের আপন আর পরিচিত।
বান্ধবীঃতারপর
মেয়েটিঃ
সমস্যা হলো, যে জন্য সময় নেয়া হলো সেটাই হচ্ছে না।প্রতিদিন ঠিকমতো কথা হলে বোঝাপড়াটা হতো।আমিও তাকে বুঝতে পারতাম কিন্ত উনি এমন হুটহাট গায়েব হয়ে যায় যে আমি বিভ্রান্ত হয়ে যাই।
একবার মনে হয় উনি আমাকে নিয়ে সিরিয়াস একবার মনে হয় উনি ফান করছে।
দোস্ত অনেক তো সহ্য করলাম এতদিন,এই পর্যায়ে এসে যদি কেউ সিরিয়াস বিষয় নিয়ে আমার সাথে মজা করে বা আমার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে তাহলে আমি সহ্য করতে পারব না।এজন্য মনটা খুলে দিইনি।কিন্ত মেয়েদের মন তো অদ্ভুত। মায়া তো জাগেই এভাবে কথা বললে।
বান্ধবীঃ তা তো বটেই।তোর সেই বন্ধু উনার সম্পর্কে কি বলল?
মেয়েটিঃ ও তো শাহেদ ভাইকে ভাল করে চেনে।বলল উনি একটু খামখেয়ালি কিন্ত এমনিতে ভাল।ফ্যামিলিও ভাল।শাহেদ ভাই অনেক সংস্কৃতিমনা অনেক মিশুক ইত্যাদি।তবে সে কখন কি করবে তার ঠিক ঠিকানা নেই,বেশ ভাবুক ধরনের।
ও কিন্ত বলল আমাদের অনেক কিছু খুব ভাল ম্যাচ করে তাই বিয়ে হলে খারাপ হবেনা।
বান্ধবীঃভাল খারাপ মিলিয়েই তো মানুষ।তা তোর মা কি বলে এই বিষয়ে? বলেছিস তাকে?
মেয়েটিঃ প্রথমে বলিনি।পরে যখন উনি দ্বিতীয়বার প্রপোজ করল তারপর বললাম।আম্মা বললেন যদি তোমার কাছে ভাল লাগে আর তারা যদি আগায় তবে আমরা দেখব।তাকে জিজ্ঞাসা কর তার আসল ইচ্ছা কি।
জানিস আম্মার জন্য আমার খুব খারাপ লাগে।আমার সমস্যাগুলো নিয়ে উনি খুব চিন্তিত থাকেন।খুব মন খারাপ করে থাকেন।দেখ ঐ বিষয়টা শেষ হওয়ার পর যত প্রস্তাব আসছে কোনোটাই আমার তেমন ভাল লাগেনি।
বান্ধবীঃ হ্যাঁ সেটাতো জানিই।
মেয়েটিঃ দেখ দোস্ত।আমি চিরকাল এমন একজনকে চেয়েছি যে শিক্ষা দীক্ষায়, চিন্তায় মননে আমার সমান।যাকে বলে ইকুয়াল পার্টনার।যে মুক্তমনের অধিকারী হবে।যার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে শান্তি পাওয়া যাবে।
বরের বাড়ি গাড়ি,বড় চাকরি বা প্রতিপত্তি দিয়ে কি করব যদি মানুষটি মনের মত না হয়।অন্যের ঘাড়ে বসে খাওয়ার ইচ্ছা থাকলে তো হলে আঠারো পেরোতেই বিয়ে করতে পারতাম।অসংখ্য প্রস্তাব ছিল তখন।
নিজে এতদূর এসেছি বলেই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছি।
বান্ধবীঃ আমরা জানি তুই অনেক কষ্ট করেছিস।যার উপরে ভরসা করে ছিলি সে যদি ভরসার দাম রাখত তবে এত কষ্ট পেতে হতো না তোকে।যাক সে কথা।এই ভদ্রলোককে তোর কেমন মনে হচ্ছে?
মেয়েটিঃ ঠিক বুঝতে পারছি না এখনো।কিন্ত সাংস্কৃতিমনা মানুষ সাধারণত ছোট মনের হয়না এটাই একটা ভরসা।তুই তো জানিস আমি মুক্ত বিহঙ্গ!অহেতুক বিধিনিষেধ দিয়ে কেউ আটকে রাখবে সেটা পছন্দ করিনা।
বান্ধবীঃ জানি রে সবই।আজকে রাখি পরে আবার ফোন দেব।
মেয়েটিঃ আচ্ছা।
ছয়
ছেলেটিঃ কি
মেয়েটিঃ কি?
ছেলেটিঃ কি কর?
মেয়েটিঃ এইত একটু কাজ করছিলাম।
ছেলেটিঃ ও।শেষ হবে কখন?
মেয়েটিঃ আপনার সাথে একটু জরুরি কথা ছিল।আমি ফোন দিচ্ছি।
ছেলেটিঃ হ্যালো!নীরা কি ব্যাপার?
মেয়েটিঃ শাহেদ ভাই আজকে আমার জন্য একটা প্রস্তাব এসেছে।আম্মাকে জানিয়েছি,উনি বলেছেন আপনার সাথে কথা বলতে।
ছেলেটিঃ ও।তা সে কি করে?
মেয়েটিঃচাকরি করে মনে হয়।সেটা বড় কথা না।বেশ অনেকদিন তো হলো।আপনি আমাদের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নিলেন?বিয়েটা কবে কিভাবে করতে চান সেটা বলেন।
ছেলেটিঃ তুমি কি এখন অন্য কাওকে বিয়ে করবা?
মেয়েটিঃ বিয়ে তো করতেই হবে একদিন কাওকে না কাওকে।আপনি যেহেতু প্রস্তাব দিয়েছেন,আপনার সাথে এতদিন কথা বলছি, তাই আপনাকেই জিজ্ঞাসা করছি আপনার কি পরিকল্পনা।উদ্দেশ্য না থাকলে শুধু শুধু কি একজনের সাথে কথা বলা ঠিক?অনেক সময় তো পেরিয়ে গেছে।
ছেলেটিঃ আসলে আমি চাকরিতে ঢুকেছি একবছরের কিছু বেশি।মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে সংসার করি,আবার মাঝে মাঝেই ভয় লাগে।হয়ত আমার কিছুটা সময় লাগবে।
মেয়েটিঃ কতটা সময়?
ছেলেটিঃ অনন্তকাল।
মেয়েটিঃ তাহলে আর কথা বলে লাভ কি!
ছেলেটিঃ নীরা!চুপ করে আছ কেন।আরে আমি মজা করছিলাম।
মেয়েটিঃ তাহলে বলেন আমি আম্মাকে কি জবাব দেব?
ছেলেটিঃ আমি একটু ভেবে নিয়ে কাল তোমাকে জানাবো।
মেয়েটিঃ ঠিক আছে।রাখছি।
বান্ধবীঃ হ্যালো নীরা কথা বলিস না কেন?
মেয়েটিঃ ---
বান্ধবীঃ এই নীরা!কি হলো?
মেয়েটিঃ দোস্ত! সবাই আমাকেই পায় নাকি কষ্ট দেয়ার জন্য?
বান্ধবীঃকি হয়েছে?সেই ভাই কিছু বলেছে?
মেয়েটিঃ জানিস তো বিয়ের জন্য আমার মন থেকে কোনো ছেলের প্রতি সম্মতি আসে না।শাহেদ ভাইয়ের প্রতিই কিছুটা সম্মতি আনাতে পেরেছিলাম, মনকে বোঝাতে পেরেছিলাম কিন্ত মনে হচ্ছে উনি আমার সাথে এতদিন টাইম পাস করেছে।
বান্ধবীঃকিভাবে বুঝলি?
মেয়েটিঃ আম্মা অনেকদিন থেকে বলছিল সে কবে কিভাবে বিয়ে করতে চায় সেটা জেনে নিতে।আমি এতদিন কিছু বলিনি। আজ এক কলিগ একটা ছেলের প্রস্তাব দিয়ে এমন তোড়জোড় শুরু করল যে কি বলব।বাধ্য হয়ে শাহেদ ভাইকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম।উনি বললেন ভেবে কাল রাতে উত্তর দেবে।
বান্ধবীঃ এতে ভাবার কি আছে?বিয়ের প্রস্তাব তো উনি দিয়েছেই।এতদিন কথা বলল, এখন একটা ডেট ফেলে দিলেই তো হয়।
মেয়েটিঃ এখন মনে হচ্ছে সেটা উনি এমনিতেই বলেছে।সত্যি সত্যি বলেনি।খুব অপমান লাগে জানিস দোস্ত। আমি কিন্ত যেচে পড়ে যাইনি কারো কাছে।উনাকে না চিনলে হয়ত কথাও বলতাম না।কেন করে রে ছেলেগুলো এমন আমার সাথে?কি লাভ হয় এতে?
বান্ধবীঃ তোকে কি বলব বুঝতে পারছি না।আমারই অনেক অবাক লাগছে।কনফিউজড থাকলে শুরুতেই বিয়ের কথাটা না বললেই পারত।আগে জানাশোনার জন্য কথা বললেই হতো।
মেয়েটিঃ সেটাই তো।
বান্ধবীঃ দোস্ত তুই মন খারাপ করিস না।তাছাড়া নেগেটিভ উত্তরই যে হবে তা কেন ভাবছিস?আর হলেই বা কি।একজন গেলে একজন আসবে।জীবন কি থেমে থাকবে?
মেয়েটিঃ না। জীবন কারো জন্যেই থেমে থাকে না।কিন্ত জীবনে একটা অন্ধকার ছাপ পড়ে যায়।সেই দিনগুলোর কথা মনে আসলে মন খারাপ হয়।মানুষের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হয়।
বান্ধবীঃ ঠিক বলেছিস!
মেয়েটিঃ উনার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ ছিল তা কিন্ত নষ্ট হয়ে গেল আমার।
বান্ধবীঃ মন খারাপ করিস না দোস্ত।কাল ফোন দিয়ে খোঁজ নেব।এখন একটু ঘুমা।
মেয়েটিঃ দেখি--
সাত
পরদিন রাতে মেয়েটি বিছানায় শুয়ে আছে।গত রাত অনেকটা নির্ঘুম কেটেছে।নাহ কারো প্রতি অভিমান নয়,কোনো অভিযোগ ও নয়।শুধুই এলোমেলো চিন্তা,হিসাব মেলানো--নিজের অনুভূতিগুলোকে ধরে রাখার চেষ্টা।
ঘর তো চাইলেই বাধা যায়।কিন্ত মনের মত মানুষ না হলে যে মনের মত ঘর হয় না।নীরার খুব ইচ্ছা ছিল তার মনের মত একটা ঘর হবে।
শাহেদ ভাই শুধু বাইরে থেকেই মিশেছে। সে জানতে পারেনি নীরার মনের গহীনে একটা নদী আছে।সেই নদীতে ছোট ছোট ঢেউ ওঠে।নদীর উপরে মুক্ত আকাশে মেঘ ভেসে বেড়ায়।নীরার ভালবাসা সেই মুক্ত নীল আকাশের মত।সেই নদীর তীরে বসে শান্ত স্নিগ্ধ সূর্যদয় দেখা যায়--
সেই নদীর কাছেই ছোট্ট একটা বাড়ি আছে।আর বাড়ির পেছনে যে পুকুরটা আছে তাতে টলটলে সবুজাভ জল।সেখানে কমল বনে পানকৌড়ি ডুব সাঁতার দেয় দিনমান। রাত্রি নামলে চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় শত শত পাপড়ি মেলে ফুটে ওঠে সহস্র শ্বেতপদ্ম। সেই পদ্মের মাতাল করা গন্ধে নীরার হৃদয় সুরভিত হয়ে ওঠে।রাত্রি বাড়ার সাথে সাথে চাঁদের আলো আর পদ্মের গন্ধ ঘরটিকে অপরূপ মায়াবী করে তোলে।নীরার মনের গহীনে গেলে তারসাথে সেই ঘরটিতে মায়াবী সময় কাটানো যায়।শাহেদ জানতেও পারল না নীরা এমন মায়াবী ঘর বাস্তবেও গড়তে পারে।শাহেদের কাছে এই সবকিছুই হয়ত অধরা থেকে যাবে।
ফোনে মিষ্টি শব্দ করে একটা মেসেজ আসল।শাহেদ পাঠিয়েছে।নীরার মেসেজটা খুলে দেখতে ইচ্ছা করে না।তার মন বলছে উত্তর সুখকর কিছু হবে না।থাক! কি দরকার দেখার!যদি উত্তর সুখকর হয় তাতেই বা কি?মানুষের মন তো খেলনা নয়।
যারা কবিতা লেখে তারা নানা রূপে মানবীকে সাজায়, বলে মানবীর মনে রহস্যের অন্ত নেই,তাকে কখনো বোঝা যায় না,পুরোপুরি ধরা যায় না।তারা জানে না খাটি ভালবাসাটুকু পেলে মানবী তার সকল রহস্য আর সুরভিত হৃদয়ের পুরোটুকু নিয়ে ধরা দেয় একান্ত নিবিড়ভাবে।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২৫
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১
রাজীব নুর বলেছেন: না, ভালো লাগে নি।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৪
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: কেন কেন?
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: একেবারে শেষের অনুচ্ছেদটাতে যা বলেছেন, তার সাথে একমত। গল্প সাজানোর স্টাইলটাও ভাল লেগেছে। +
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৫
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: শেষের কথাটা কিন্ত একদম সত্যি।বেশিরভাগ পুরুষ যদিও তা জানেনা।
পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা---
৪| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:১৪
নিভৃতা বলেছেন: সুন্দর গল্প
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৪
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: তাই?
ধন্যবাদ
৫| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৩৯
খাঁজা বাবা বলেছেন: বাস্তবতা এমনই
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০০
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: হ্যাঁ ভাই।
অনেক সময় এমনটা দেখা যায়।
৬| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৫
নীল আকাশ বলেছেন: গল্পটা গতকাল কালকেই পড়েছিলাম। অসাধারণ লিখেছেন। সাত নাম্বার প্যারা পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
প্রথম ছয়টা লাইন বোল্ড হয়ে গেছে। ইচ্ছে করেই কী এইরকম করেছেন? দেখতে দৃষ্টিকটু লাগছে।
আমি মডারেটর হলে এটাকে নির্বাচিত গল্পে পাঠিয়ে দিতাম।
অফ টপিকঃ আমি ভুলে গেছে, আপনি ভাইয়া না আপু। জানালে মন্তব্য লিখতে সুবিধা হতো।
শুভ কামনা রইলো।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০৫
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: তাই নাকি?পচা লাগছে?তাহলে ঠিক করে দেব।
সাত নাম্বার প্যারা ভাল লেগেছে জেনে খুশি লাগছে কারন সেটা মন থেকে, সময় নিয়ে লিখেছি।
ভাইয়া না আপু তা কিন্ত কখনোই বলিনি আমি।আপনার কি মনে হয়?
আমার অবশ্য রহস্যের আড়ালে থাকতে বেশ মজা লাগে।
৭| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০৯
নীল আকাশ বলেছেন: প্রবন্ধ বা এইধরণের লেখায় কিছু ড্যামেজিং লাইন এভাবে বোল্ড করে দেয়া যায় দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য। তবে একটা গল্পে প্রথম কিছু অংশ এভাবে বোল্ড করা ভালো দেখায়। আপনাকে আমি ভাই বলবো। মন্তব্য নিয়ে কোন গিট্টূ লাগলে আপনি দায়ী থাকবেন।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫১
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: হুম বুঝলাম।
আমি অবশ্য লেখায় প্রথম কিছু লাইন বোল্ড করি।এটা ডায়লগ বলেই মনে হয় বেশি অদ্ভুত লাগছে।
৮| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১১
নীল আকাশ বলেছেন: তবে একটা গল্পে প্রথম কিছু অংশ এভাবে বোল্ড করা ভালো দেখায় না।
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫২
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: দিলাম বোল্ড মুছে।
৯| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫৬
রায়হান চৌঃ বলেছেন: শেষের অংশ টুকু অসাধারণ....
এককথায় আপনি ভালো লিখেন, চালিয়ে যান।
১১ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৪৩
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মনোরম লেখা।