নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সন্ধ্যা প্রদীপ

আমার সমস্ত চেতনা যদি শব্দে তুলে ধরতে পারতাম

সন্ধ্যা প্রদীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মন্দিরা

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

মেয়েটাকে দেখি। মাঝারি গড়ন,কাঠালীচাঁপার মত গায়ের রং,কোমর পর্যন্ত লম্বা ঢেউ খেলানো চুল,প্রতিমার মত বড় বড় চোখে নির্মল দৃষ্টি আর লাবন্যে ঢলঢল মুখখানি আমাকে কেন জানি অনেক টানে।আমি চিরকাল এমনই।প্রশাধন বহুল অপ্সরাদের চেয়ে সাদাসিধে চেহারার রমনী আমার চোখে বেশি মায়াময় মনে হয়।আমার বেডে অলস শুয়ে তাকে দেখি,যতই দেখি ততই মুগ্ধ হই।তার কপালের লাল টিপ আর সিথিঁর সিঁদুর মুখের লাবন্য যেন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।তাকে দেখলেই মনে হয় তার সাথে একটু আলাপ করি, বসে একটু গল্প করি।চেহারার মত তার স্বভাবটাও মিষ্টি,খুবই আন্তরিক ব্যবহার।আমি যদি ছেলে হতাম হয়ত এমনি একটা মেয়ে খুজে বের করতাম জীবন সাথি করবো বলে।

উনাকে অবশ্য মেয়ে বলা যায় না কারন উনি রীতিমত বিবাহিত মহিলা।দুই মেয়ে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন বড় মেয়েটির চিকিতসার জন্য।মেয়ে দুটোও মায়ের রূপ পেয়েছে।বড়টির নাম মৈত্রী,বার তের বছর বয়েসের এক কিশোরি।পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে বসে থাকে আর ছোটটার সাথে ঝগড়া মারামারি করে।চঞ্চল প্রজাপতির মত ছোট মেয়েটির নাম মম।সারাদিন ওয়ার্ডের এমাথা ওমাথা লাফিয়ে বেড়াচ্ছে আর নার্সদের বকা শুনছে।এত ছোট বলেই হয়ত মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকার অনুমতি মিলেছে।

এক দুর্ঘটনায় পড়ে হাসপাতেলে ভর্তি হওয়ার প্রথম দিন থেকে খুব আগ্রহ নিয়ে এই পরিবারটিকে লক্ষ্য করি।ভালই লাগে।দিদির সাথে একসময় ঘনিষ্টতা হয়।জানতে পারি তার জীবনের কাহিনী।দিদির নাম মন্দিরা।ফেনীর এক সচ্ছল পরিবারের মেয়ে।ব্যাঙ্কার বাবা মেয়েকে অনেক ভালবাসতেন,চাইতেন মেয়ে শিক্ষিত হবে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াবে।কিন্ত রূপসী মেয়ে অল্প বয়েস থেকেই লোকের চোখে পড়ে যায়।অসংখ্য বিয়ের প্রস্তাব আসে।কিন্ত বাবার একই জিদ মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হবে চাকরি করবে তার পরে বিয়ে।এদিকে মন্দিরা তার জীবন নিয়ে অনেক খুশি।সে ছাত্রী ভাল।কলেজের সবাই তাকে চেনে,ভালবাসে।বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা দিয়ে,ক্লাস পরীক্ষার ব্যাস্ততায় জীবনটা তার ভালই কেটে যাচ্ছে।বাড়িতেও কোনো ঝামেলা নেই বড় ভাই চাকরি করে,ছোট ভাইটা এস এস সি দিয়েছে।এরা দুজন ,মা বাবা আর সে,চমতকার পরিবার।মা অবশ্য তার বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহি কিন্তু বাবার ভয়ে বেশি কিছু বলতে পারেন না তবে ভাল ছেলের প্রস্তাব আসলে একটু ওকালতি করার চেষ্টা করেন।কলেজেও অনেক ছেলে তার রূপমুগ্ধ,গুনমুগ্ধ।অনেকে সাহস করে ভাললাগাটা প্রকাশও করেছে।সে সারা দেয়নি।আসলে সে এসব বেশ ভয় পায়।তবে একজনকে তার ভাললাগে,বেশ ভাললাগে।ছেলেটি তার চেয়ে এক ক্লাস উপরে পড়ে।এই সুদর্শন ছেলেটি মুখে কখনও কিছু বলেনা কিন্ত তার মুগ্ধ দৃষ্টি না বলা কথাগুলো ঢেকে রাখতে ব্যার্থ হয়।এক বর্ষায় সে কলেজের পাশের এক কদম গাছের দিকে তাকিয়ে ছিল।গাছ ভর্তি অসংখ্য কদম ফুটে আছে।মন্দিরার ইচ্ছা হয় কিছু ফুল হাতে নিতে কিন্ত গাছ বেশ লম্বা।সে কিছুক্ষন ঝাপাঝাপি করেও কোনো ডালের নাগাল পায় না।মনটা খারাপ হয় কিন্ত কি আর করার আছে।পর দিন সে সত্যিই অবাক হয়।সে কলেজের লাইব্রেরীর এক কোনে বসে প্রায়ই পড়ালেখা করে।একপাশে জানালার কাছের একটা চেয়ারে সে সবসময় বসে।খুব কম ছেলেমেয়েই এখানে নিয়মিত আসে তাই তার এই ফাঁকা ফাঁকা জায়গা তার খুব প্রিয়।শুধু পড়ালেখা না মনের সুখে কল্পনাও করা যায় নির্বিঘ্নে।সেদিন সকালে লাইব্রেরীতে যেয়ে সে খুব অবাক হয়।তার চেয়ারের উপরে রাখা একগুচ্ছ টাটকা কদম ফুল।তার মনটা খুশি হয়ে ওঠে কিন্ত একটু ভয় ভয়ও লাগে।সে ভাবে কে তাকে এই ফুল দিয়ে গেল তখনি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে বাইরের বাগানে একটা গাছের নিচে সেই ছেলেটা দাঁড়িয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।সে তাকানো মাত্রই ছেলেটি হাসে,সাথে সাথেই মন্দিরা বুঝতে পারে এটা কার উপহার।তার ভয় ভাবটা কেটে যায়।সেই থেকে হঠাত হঠাত তার চেয়ারে সে নানা রকম ফুল পেতে থাকে।জানালা দিয়ে তাকালেই উপহারদাতা কে দেখতে পায়।ছেলেটি শুধু হাসে তারপর চলে যায়।মন্দিরার খুব ভাল লাগে।সে কল্পনা করার চেষ্টা করে যদি এই ছেলেটির সাথে তার বিয়ে হয় কেমন হবে।তার মনে হয় দুজন কে ভালই মানাবে।

মানুষের জীবন সবসময় একরকম কাটেনা।মন্দিরাদের বাড়িতেও পরিবর্তন হয়েছে।তার বড়ভাই বিয়ে করেছে।মনেহয় রূপে মুগ্ধ হয়েই এই ম্যাট্রিক পাস মেয়েকে তিনি ঘরে তুলেছেন।মেয়েটি মন্দিরার চেয়ে দুই এক বছরের বড় হতে পারে কিন্ত বুদ্ধিতে দশ বছরের বড়।খুব আগ্রহ নিয়েই সে ভাবীর সাথে মিশতে চেয়েছিল কিন্ত পারেনি।ভাবী বাসার সবাইকে বেশ তেওয়াজ করে চলে তবে এইসব কিছুই মন্দিরার কাছে ভান বলে মনে হয়।তার আরো মনে হয় যে ভাবী তাকে হিংসা করে।অনেক আচরনেই এটা প্রকাশ পেয়েছে।তবে ভাবীর প্রতি অপছন্দ চরমে উঠেছে যখন সে জানতে পারে যে ভাবী তার এক দুরসম্পর্কের মামার সাথে তার বিয়ে দিতে চাইছে।সেই পাত্র তার চেয়ে বয়েসে অনেক বড়।পড়ালেখাও বেশিদুর না ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত।সে গ্রামে থাকে একটা ছোট চাকরি করে আর জমিজমা দেখে।বাবা অবশ্য এক ধমকে ছেলের বউকে চুপ করিয়েছেন কিন্ত মন্দিরা ভেবে পায়নি ভাবী কেন এত বেমানান জায়গাতে তাকে তুলে দিতে চাইছে,সে তো ভাবীর সাথে খারাপ আচরন করেনা।এত শত্রুতার কারন কি তার রূপ?সে ভেবে পায় না।মন্দিরাদের বাড়ির শান্তিও যেন আগের মত নেই।

এই ঘটনার তিন চার মাস পর সে সবে শেষবর্ষে পা দিয়েছে মন্দিরার বাবা হঠাত করে মারা গেল।মন্দিরার সমস্ত পৃথিবী এলমেলো হয়ে গেল সাথেসাথেই।বাবা ছিল তার সবচে বড় সাপোর্ট।তার অবর্তমানে মন্দিরা খুব অসহায় বোধ করে।ভাবী সম্পর্কে তার ধারনা ঠিক ছিল একশ ভাগ।বাবার মৃত্যুর পর যখন ভায়ের হাতে সংসার গেল ভাবীও তার খোলশ ঝেড়ে ফেলল।বাড়িতে সর্বক্ষন অশান্তি।মা ভীষন কাঁদে।মন্দিরার কিছু ভাললাগেনা।ভাইয়া ভীষন বদলে গেছে তার সাথে ভালমত কথা বলেনা।ছোট ভাইটা কোথায় কোথায় সারাদিন ঘুরে বেড়ায়।মন্দিরা চেষ্টা করে পড়ালেখায় মন দেবার যাতে বাবার ইচ্ছাটা অন্তত পুরন হয়।কিন্ত এর মাঝেই তার জীবন আরেক ঝড় আসে।ভাইয়া তার বিয়ে ঠিক করে হঠাত করেই।বিয়েটা ঝটপট হয়েও যায়।সবকিছু এত দ্রুত হয় যে মন্দিরা জানতেও পারেনা কার সাথে তার বিয়ে হচ্ছে।বিয়ের পর ধীরে ধীরে বোঝে যে এই বিয়ে ভাবীর ঠিক করা এবং তার বর ভাবীর সেই আত্মীয়।বাবার মৃত্যুর পর মনে হয়েছিল তার মাত্থা থেকে আকাশ উধাউ হয়ে গেছে,বিয়ের পর তার মনে হয় পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে।যে মেয়ের জন্য বড়বড় চাকুরে বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের প্রস্তাব আসত সে কিনা বধু হলো আধাশিক্ষিত এক গ্রাম্য লোকের।যে কিনা তার থেকে ১৭বছরের বড়।শুভ দৃষ্টির সময় সে একবার বরের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিল।তার চোখে ভেসে উঠেছিল সেই ছেলেটির মুখ যে তাকে ফুল দিয়ে যেত।আহা কত আশা ছিল মনে,কিছুই মিটল না।মন্দিরার মা সারাদিন বাবাকে দোষারোপ করে যে যদি তিনি অমত না করতেন তবে মন্দিরার অনেক ভাল ঘরে বিয়ে হতে পারত।মন্দিরার কিছুই ভাল লাগেনা।তার বর খুবই গম্ভির প্রকৃতির মানুষ।মন্দিরার মনে হয় কোনদিন তার স্বামীর সাথে সত্যিকারের মনের মিলন হওয়া সম্ভব না কারন তারা দুজনে দুই মেরুর বাসিন্দা তাছাড়া বয়সটাও একটা বড় বাধা।এই পুর্নবয়স্ক পুরুষটি কি বুঝবে তার তরুনী বধুর মনের কথা?তার সাধ আর আশাগুলো কি মুল্য পাবে তার কাছে?মন্দিরার সব কিছুর উপর খুব অভিমান হয়।তার ভাবী নাহয় পরের মেয়ে,আপন ভাই কিভাবে পারলো এমন একটা অসম বিয়ে দিতে।আহামরি কিছু না হোক বোনের শিক্ষা বয়স আর মানসিকতার সাথে সাথে মিল হয় এমন কোন ছেলে কি পাওয়া যেত না।বোন এত বড় বোঝা হয়ে গেল যে যেভাবে হোক ঘাড় থেকে নামাতে ব্যাস্ত হতে হল।তার পড়াশোনাও বন্ধ হবে কারন তাকে যেতে হবে স্বামীর সাথে তার ঘরে।আর কিছুদিন সময় পেলে হয়ত সে পড়াটা শেষ করতে পারত।তার মা রাত দিন তাকে বোঝায় যা হয়েছে তা মানে নিতে। সেও সেটা বোঝে যে যতটা মেনে নিতে পারবে তত শান্তি থাকবে জীবনে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় মন্দিরাদের বাসাতেই। তার বর গ্রামের বাড়ি চলে যায় কিছুদিন পরেই। তড়িঘড়ি করে বিয়ে হয়েছে তাই বাড়িঘর প্রস্তুত করতে পারেনি।সব ঠিক করে এক্ মাসের মধ্যই নতুন বউকে বাড়িতে তুলবে।মন্দিরার অবশ্য এই বাড়িতে এক মুহুর্ত থাকার ইচ্ছা ছিল না।তার ভাই ভাবির চেহারা দেখতে তার একেবারেই ভাল লাগেনা।মায়ের হতাশ চেহারাও অসহ্য লাগে আজকাল।এখন সে সারাদিন ঘরেই বন্দি থাকে চেষ্টা করে নিজের নতুন সংসার নতুন জীবন নিয়ে ভাবতে,নিজের মনে স্থিরতা নিয়ে আসতে।কিছু কিছু সুখ স্বপ্ন যে তার মনে আসেনা তা নয় কিন্ত স্বামীর গম্ভির চেহারা এই স্বপ্নগুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।এইকয় দিনে যা বুঝেছে তার স্বামী মানুষ খুব খারাপ না।তবে আর দশটা বিশেষত্বহীন সাধারন মানুষের মতই সাধারন।বুদ্ধিও সাধারন,চিন্তা ভাবনা স্বপ্ন ও সাধারন।এমন একটা মানুষ নিয়ে মন্দিরার মত মেয়ের মন ভরবে কিভাবে।বউয়ের কাছে মানুষটির চাওয়াও আর দশটি লোকের মত- একটা শয্যাসঙ্গিনী, একজন ভাল গৃহিনী, একজন ভাল মা।কিন্ত মন্দিরার কাছে এর চেয়েও অনেক বেশি সম্পদ আছে দেবার মত সে খবর কি লোকটা জানে।কিন্ত এ সম্পদ সবাইকে দেয়া যায়না,এ সম্পদ ধারন করা আর কদর করার জন্য উপযুক্ত পাত্র দরকার হয়।লোকটি ভেবেও দেখেনি হয়ত যে তার বউ তার চেয়ে অনেক বিষয়েই অনেক বেশি উপরে।তার একটা বউ দরকার ছিল সেটা পেয়েছে আর কিছু ভাবার প্রয়োজন সে মনে করেনি।সে একবার তার বর কে জিগাসা করেছে যে লোকটি মন্দিরা কে কেন বিয়ে করল।সে কিছুক্ষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বললো বিয়ের জন্য মেয়ে খুজছিল মেয়ে পছন্দ হয়েছে পরিবারের লোক রাজি ছিল তাই বিয়ে করেছে।মন্দিরা হতাশ মনে ভেবেছে লোকটা কি!মেয়ে পেলেই বিয়ে করতে হবে, অন্যসব মেলে কিনা দেখতে হবে না?

আজ মন্দিরা শশুর বাড়ি যাচ্ছে পাকাপাকিভাবে।এই একমাস ধরে সে নতুন সংসারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে।মার কাছে থেকে কিছু নতুন রান্না শিখেছে। গৃহের অন্যসব কাজ শিখেছে।সেখানে সবার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হবে সেটা বলে বলে তার মা কান ঝালাপালা করে দিয়েছে।সবচে বড় কথা সে যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার জন্য তার মনকে প্রস্তুত করেছে।তার সাথে অনেক জিনিসপত্র,সবই বিয়ের উপহার আর তার বিয়ের জন্য মায়ের অনেকদিনের জমানো সংসারের জিনিস।সবার কাছে থেকে বিদায় নিয়ে মন্দিরা তার স্বামীর সাথে বাসে উঠে।তিন চার ঘন্টা বাসে গিয়ে তারপর ভ্যান। ছায়া ছায়া গ্রাম্য রাস্তা দিয়ে ভ্যানে পা ঝুলিয়ে বসে লাল শাড়িটার ঘোমটার ফাঁক দিয়ে সবকিছু দেখতে মন্দিরার খুব ভাল লাগছিল।নতুন বউ দেখে মা্নুষগুল কাজ ফেলে এদিকে তাকিয়ে থাকে।গ্রামে পৌছানোর পর পরিচত লোকজন তার স্বামীকে জিগাসা করে বউ নিয়ে আসলো বুঝি।স্বামী সকলকে বউ দেখে যাওয়ার আমন্ত্রন জানায়।বয়ষ্কদের কাছে আশির্বাদ চায়।এভাবে সকলের আন্তরিকতার পরিচয় পেয়ে মন্দিরার মন খুশি হয়ে ওঠে।তার শশুরবাড়ির সামনে ভ্যান থামে।তাদের ভ্যানের পিছু পিছু অনেকগুলো ছেলে মেয়ে বাড়ি পর্যন্ত এসেছিল।এদের চিতকারে আসেপাশের বাড়ি থেকে মানুষজন বের হয়ে আসে।মেয়েরা এগিয়ে এসে মন্দিরাকে ঘিরে ধরে।মুহুর্তেই পরিবেশটা উতসব মুখর হয়ে যায়।একজন বয়ষ্ক মহিলা মন্দিরা কে বরন করে নেয়।মন্দিরা বোঝে ইনিই মন্দিরার শাশুরি।মন্দিরা পা ছুয়ে প্রনাম করে।নতুন বউকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।মন্দিরা অবাক চোখে দেখে চালে ঝকঝকে নতুন টিন দেয়া,দেয়ালে সদ্য চুনকাম করা আধাপাকা বাড়িটিকে।এটাই তার স্বামীর বাড়ি,তার নতুন ঠিকানা,তার সংসার।গাছপালা আর বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা ঝকঝকে উঠানের ছিমছাম বাড়িটিকে তার খুব ভাল লেগে যায়।মন্দিরা এমনিতেই সুন্দর,সেই পড়ন্ত বিকেলের রোদে তার স্নিগ্ধ রূপ দেখে সকলেই মুগ্ধ হয়।তার স্বামীরা চার ভাই তিন বোন।সকলেই বিবাহিত,যার যার সংসার নিয়ে ব্যাস্ত।সবারই আলাদা সংসার বাড়ির আসেপাশেই।তার সংসারে শুধু তার স্বামী আর শাশুরি।শশুর অনেক আগেই মারা গিয়েছে।তার স্বামীর কাধেই ছিল সমস্ত সংসার।ভাইবোনদের উপযুক্ত করে বিয়ে দিতে দিতেই দিন চলে গিয়েছে বেচারা নিজের সংসার আর গরে তুলতে পারেনি।তাই এত বয়স করে বিয়ে করতে হলো।ছোট বোনটিকে পাত্রস্থ করে তবেই নিজের দিকে নজর দিয়েছে বেচারা। জিনিসপত্র গুছিয়ে,সাথে আনা পিঠা আর মিষ্টি সকলকে পরিবেশন করে সবাইকে বিদায় করতে করতে রাত নেমে আসে।বাড়িটিতে চারটি ঘর।এক কোনের বড় একটা ঘরে তার স্বামী থাকে।সারাদিনের ক্লান্তি আর ধকলের পর রাতে তার স্বামী ঘরে এসে যখন তার হাতে বাড়ির আলমারির চাবি তার হাতে দিয়ে বলল এটা এখন তুমি রাখ,আমার ঘরবাড়ির সবকিছুর দায়ীত্ব এখন থেকে তোমার তখন মন্দিরার মনের আকাশ বাতাস সবকিছু যেন গান গেয়ে ওঠে।একটা সুন্দর সংসারের সুন্দর সুচনা হয়।

আট মাস কেটে গেছে এরপর।মন্দিরা এখন পুরোপুরি গৃহিনী।এ কয়দিনে ভালই শিখে গেছে সবকাজ। বাড়িতে তেমন ঝামেলা নেই মন্দিরার।স্বামী,শাশুরি আর সে।প্রথমে সে ভেবেছিল দেবর ননদেরা যেহেতু আশপাশেই থাকে লোকের অভাব হবেনা কখনো তার কিন্ত কিছুদিন পরেই সে বুঝতে পেরেছে আসলে এরা যারযার সংসার নিয়ে বেশি ব্যস্ত।একে অন্যের সাথে বেশি সুসম্পর্ক নেই বা মাথা ব্যাথাও নেই।স্বামী খেয়েদেয়ে কাজে চলে যাওয়ার পর বাড়ির কাজ করেও অঢেল সময় হাতে থাকে তার।সময় আর কাটেনা সহজে।অলস দুপুরগুলোতে তাই তার পুরনো স্মৃতিরা মনে ভীড় জমায়।সময় কাটাতে তাই চুপিচুপি তার পড়ার বইগুলো খুলে দেখে।জানে লাভ নেই তাও কিসের টানে সে জানেনা বইগুলো মন দিয়ে পড়ে যেভাবে পরীক্ষার জন্য পড়ত।শাশুরির সাথে তার সম্পর্ক ভালোই বলা যায়।তবুও তার ইচ্ছে হয়না একথা কেউ জানুক।আজকাল তার সবকিছুই যেন অন্যরকম লাগে।প্রচুর ক্লান্তি,শরীরটাও ঝিমঝিম করে।হ্যা, সে মা হতে যাচ্ছে।আর মাত্র ছয়টা মাসের অপেক্ষার পর সে তার প্রথম সন্তানের মুখ দেখবে।সে ভাবে সবকিছু কত দ্রুতই না বদলে যায়।

মন্দিরা ভাবেনি এমন সুযোগ আসবে তার জীবনে।তার স্বামী শাশুরিকে নিয়ে তিন মাসের জন্য ইন্ডিয়া যাবে।সেখানে তার বড় বোনের শুশুর বাড়ি।কিসব সমস্যার জন্য সে ভাইকে ডেকে পাঠিয়েছে,মাকেও দেখতে চেয়েছে।এই শরীরে মন্দিরার কোথাও যাওয়া য্বেমন সম্ভব না তেমন বাড়িতে একা থাকাও সম্ভব না তাই ঠিক হয়েছে সে এইকয়দিন বাবার বাড়িতে থাকবে।মন্দিরা খুব খুশি।কতদিন পর মাকে দেখবে।তখন সবার উপর অনেক অভিমান ছিল কিন্ত এখন সবাইকে দেখতে খুব ইচ্ছে হয়।বাবার বাড়িতে পৌঁছে মাকে দেখে তার চোখের জল বাঁধ মানেনা।তবে সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তখন যখন সে জানতে পারে তার ভাবিও সন্তান সম্ভবা এবং দীর্ঘদিনের জন্য সে বাবার বাড়ি গিয়েছে এবং সন্তান জন্মের পরই ফিরবে।নিজের পুরোনো আবাস সে ঘুরেফিরে দেখে কিন্ত তার মনে হয় এত অল্পদিনেই যেন তার ছায়া,তার গায়ের গন্ধ এই বাড়ি থেকে উঠে গিয়েছে।কিছুদিন কাটে তারপর যেন তার আর এখানে ভাল লাগেনা। এখানে করার মত কোনো কাজ নেই তার যে সময় কাটবে।তারপর এক বান্ধবীর কাছে থেকে সে জানতে পারে প্রায় একমাস পরেই তাদের পরীক্ষা।মন্দিরার মাথায় হঠাত এক ঝোঁক চাপে পরীক্ষা দেওয়ার।তার মনে হয় সে পারবে প্রস্তুতি নিতে।নিজের বইগুলো তো সাথে নেই তাই কিছু পুরোনো বইপত্র কিনে পড়ালেখা শুরু করে।

আজ মন্দিরার অনেক খুশির দিন কারন খবর এসেছে যে সে পরীক্ষায় পাশ করেছে।শুধু পাশ করেছে তাই না অনেক ভাল একটা রেজাল্ট করেছে।ফিরে আসার পর মন্দিরা তার স্বামীকে নিজ মুখেই পরীক্ষার কথা জানিয়েছিল।এটা শুনে সে শুধু বলেছিল তোমার এসব করতে খুব কষ্ট হয়নি তো।সে তার চেহারা দেখে মোটেই বুঝতে পারেনি লোকটা রাগ করলো না খুশি হলো।কিন্ত আজ সে বাজার থেকে আসার সময় কিছু মিষ্টি কিনে এনে মন্দিরার হাতে দেয়।মন্দিরার অবাক ভাব দেখে মৃদু হেসে সুখবরটা জানায়।আজ লোকটাকে খুব ভাল লাগে মন্দিরার।আজকের দিনে ঘুরেফিরে শুধু বাবার কথা মনে পরে তার।কি খুশিই না হতো মানুষটি এই খবর পেয়ে।সন্তান ভুমিষ্ঠ হতে আর বেশিদিন বাকি নেই।মন্দিরার শরীরটাও খুব খারাপ যাচ্ছে আজকাল।

আজ মন্দিরা প্রানপনে প্রার্থনা করছে।খুব বেশি বিপদের দিন আজ।ছয় দিন হয় তার প্রথম সন্তানটি ভুমিষ্ট হয়েছে।মিষ্টি মেয়েটির মুখে যেন বাবার চেহারার ছাপ খুব বেশি।মুখটি দেখার পর থেকে সেটি মন্দিরার সমস্ত হৃদয়টা যেন দখল করে নিয়েছে।কিন্ত এত্তটুকু শিশুর কোমরের কাছে অনেক বড় একটি ফোঁড়ার মত মাংসপিন্ড।মেয়ের জন্মের কয়এক মাস আগে মন্দিরা খুব খারাপ ধরনের জ্বরে ভুগেছিল ডাক্তার বলেছে এ তারই ফল এবং যত দ্রুত সম্ভব এটা কেটে ফেলতে হবে।আজ সেই দিন।ডাক্তাররা বাচ্চাটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেছে।মন্দিরা ভেবে পায়না তুলতুলে নরম এত্তটুকু শরীরে কিভাবে ডাক্তার ছুরি চালাবে।তার মেয়েটা বাঁচবে তো?আজ কোনোভাবেই সে তার চোখের জল ধরে রাখতে পারেনা।

অনেক ধকল গেল আজ সারাদিন।হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের খালি বেডে শুয়ে গভীর এই রাতে ক্লান্ত মন্দিরার মনে পরে অতীতের বছরগুলোর স্মৃতি।পাশে ঘুমন্ত শিশুকন্যার মাথায় সে হাত বুলিয়ে দেয় অসীম মমতায়।পাশের বেডে তার ঘুমন্ত বড় মেয়ের দিকে তাকায়।সেই ছয়দিন বয়েসের অপারেশন্ এর পর তার প্রথম সন্তান বেঁচে গিয়েছে কিন্ত কপালে জুটেছে আজন্মের দুর্ভাগ্য।মেয়েটির পায়ের দুই পাতায় কোনো অনুভুতি নেই আর নিয়ন্ত্রন নেই মলমুত্রের বেলায়।প্রায় সবসময়ই ফোটায় ফোটায় মুত্র ঝরে।মেয়েটি এমনিতে দেখতে শুনতে সম্পূর্ন স্বাভাবিক।তখন ডাক্তারদের অপারেশনের কোনো ত্রুটির ফলেই এমনটা হয়েছে।অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিন্ত এই সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।তার ইচ্ছা একবার ইন্ডিয়াতে নিয়ে চিকিতসা করানোর।কিন্ত মেয়ের বাবা রাজি হয়না।মন্দিরার ভীষন রাগ লাগে।তার স্বামীর ব্যবসা আরো বড় হয়েছে।তার সামর্থ ও আছে বাইরে চিকিতসা করানোর শুধু গোঁড়ামী করেই লোকটা আগায় না।কত কষ্ট করে যে সে মেয়েটাকে এতবড় করেছে শুধু সেই জানে।লোকটা তো বাইরে বাইরেই কাটায়।বড় মেয়ের জন্য অনেক দিন সে সন্তান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে।তাই ছোট মেয়েটির বয়স মাত্র তিন বছর।এই দুজন আর সংসার সামলাতেই সে হিমশিম খেয়ে যায়।বড় মেয়ে জন্মের পর তার চাকরি করার ইচ্ছাকে চিরতরে বিদায় দিতে হয়েছে।আজ তার মনে হয় ইশ যদি সে চাকরি করতো তাহলে যেভাবেই হোক নিজের টাকায় মেয়েকে ইন্ডিয়া নিয়ে গিয়ে চিকিতসা করাতো।মেয়েটার যে কষ্ট জীবনে সে গভীর ভাবে তা অনুভব করে কিন্ত তার বাবা হয়ত বোঝেনা।কোনোভাবে যদি সে মেয়েকে সাধারন মানুষের জীবন দিতে পারতো।এই যে আজ তাকে কতদুর থেকে ঢাকা এসেছে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করতে।পায়ের পাতায় ব্যাথার অনুভুতি না থাকায় তার মেয়ে খালি পায়ে খেলে বেড়ায়,তার শাসন মানেনা।সেই থেকে পায়ের তলায় ইনফেকশন হয়েছে।মেয়ের বাবার গাফিলতির কারনে সঠিক চিকিতসা হয়নি।এখন পায়ে বড় গর্ত হয়ে গেছে যা দিন দিন বাড়ছে।শেষ পর্যন্ত মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় আসতে বাধ্য হতে হয়েছে।এখানে এসে একদিনেই অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে।ভিন্ন এলাকার, ভিন্ন ধর্মের মানুষের সাথে এক ছাদের নিচে মন্দিরা কখনো থাকেনি।তার ভালই লাগে অন্য রোগীদের আত্মীয়দের সাথে আলাপ করতে।ডাক্তার বলেছে অনেকদিন এখানে থাকতে হবে।মন্দিরা অবাক বিস্ময়ে বাইরের জগতটা দেখে নেয়, তার জগতের বাইরের মানুষদের দেখে নেয়।সে জানে এমন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ দেখার সুযোগ সে সবসময় পাবে না।

আজ আমার সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরার দিন।হাসপাতালে সকলেই দুর্ভাগ্য নিয়ে আসে কিন্ত মন্দিরা দিদির মত দুর্ভাগ্য কয়জনের হয়।বিয়েটাই তার এক দুর্ভাগ্য তার উপর এমন একজন অসুস্থ সন্তান যাকে সারাটি জীবন ধরে সেবা করে যেতে হবে।তার জীবনের গল্পটি আমাকে ভীষনভাবে নাড়া দিয়েছে।কারন যে যত যাই বলুক মানুষের ভাগ্যের বা জীবনের নিয়ন্ত্রনকর্তা সবসময় মানুষ নিজে নয়।মাঝে মাঝেই আমাদের ঈশ্বরের তৈরী পথে চলতে হয়।সে পথে কাঁটা থাকলে আঘাত সহ্য করে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়,কাঁটা সরানোর কোনো সুযোগ থাকে না।মানুষ এখানে নিরুপায় সে শুধু পারে এই আঘাতের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে।মানুষের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনও হঠাত করে কোনো অসাধারন মোড় নিতে পারে যা সবকিছু সম্পূর্ন বদলে দেয়।তবে যদি এই লম্বা পথের শেষে ফুলে ফুলে ভরা কোনো বাগান থাকে তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি একবুক অভিমান নিয়ে শেষ সময়ের অপেক্ষা করতে হয়না।সকলে হয়ত সেই সুখের দিনের অপেক্ষাই করে।তাদের কাছে বিদায় নিয়ে আসার সময় মেয়েটির জন্য খুব মায়া হচ্ছিল।ভাবছিলাম যদি কখনো জানতে পারি মেয়েটি সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে গিয়েছে, অন্য মেয়েদের মত স্কুলে যেতে পারে, তার মা যে পথে চলতে চেয়েছিল সে পথে চলতে পারে,মনে মনে এক সুদর্শন যুবক কে সঙ্গী করে পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে তবে কত ভালই না হত।পৃথিবীতে কত অদ্ভুত জিনিসই তো হয়, হোক না এমনটা।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: বাস্তবানুগ জীবনের গল্প.........

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৯

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: মাঝে মাঝে জীবনটাও গল্পের মতই অদ্ভুত। :)

২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পৃথিবীতে কত অদ্ভুত জিনিসই তো হয়, হোক না এমনটা।

++

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: হোক না!!!!!!!!

৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৬

খেয়া ঘাট বলেছেন: লেখক বলেছেন: মাঝে মাঝে জীবনটাও গল্পের মতই অদ্ভুত ।

একথাটাই বলতে চেয়েছিলাম।

অনেক ভালো লাগলো।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০০

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবা্দ

৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: গল্পটা ভালো লাগল। তবে একটু প্যারাগ্রাফ বা স্পেসিং হলে পাঠক হিসেবে পড়ে আরাম পেতাম।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ।কথাটা অবশ্যই মনে থাকবে।

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আপনি ভালো লেখেন, কারণ গল্প দারুণ লেগেছে!

অনুসরণে নিলাম।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

তুহিন আল মামুন বলেছেন: আপনার গল্পটা ভাল লেগেছে। সত্যি মানুষের জীবনটা অদ্ভুত। সবার জীবনের সকল চাওয়া সবসময়ই পরণ হয় না। আমার দৃষ্টিতে মন্দিরা তার বিধাতার পরিহাসের শিকার। তার জীবন হয়তো ব্যতিক্রম হতে পারত, কিন্তু একটি ঘটানা তার জীবনের সকল কিছুই পরিবর্তন করে দিয়েছে। তার বাবা হয়তো বেচে থাকলে তার জীবন অন্যরকম হতে পারতো।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১০

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন।তবে মন্দিরা কিন্ত নিজের জীবনের ভয়াবহ মুহূর্তগুলোর সাথে মানিয়ে চলতে শিখেছে।সে কিন্ত কখনো হাল ছেড়ে দেয়নি।জীবনে কষ্টের মাঝেও হাসিমুখে বেচে থাকা যায় সেটা তাকে দেখলেই বোঝা যায়।

৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৮

নেক্সাস বলেছেন: ভাল লাগলো গল্প পড়ে

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.