নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কিছুই না।বুদবুদ।
বাড়িটা ছিল নদীর ধার ঘেঁষে।
স্বচ্ছ জলের নদী।শান্ত।নীল।অপরপাড়ে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।ঠাঠা রোদে হাসে পাকা ধান।ঘনসবুজ মটরশুটির ক্ষেত।সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন।
দূরে গুচ্ছ গুচ্ছ গ্রাম।নদী বয়ে গেছে আঁকাবাঁকা।দূরত্বের সাথে সাথে নদী ক্রমশ সরু । দূরে আকাশের কাছাকাছি ধূসর গ্রামগুলি যেন একটা নীল ছাতার আচ্ছাদনে ঢাকা।
নদীর পাড়ে সিক্ত কাদায় ঘনতৃণ।নদীতীর থেকে উপরের দিকে গ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন একটা উঁচু মতন জায়গা।একটা কড়ই গাছ মহীরুহ আকৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে।রোদে কাজ করে ক্লান্তি এলে রাখাল হালিয়ারা গাছের গায়ে ঠেস দিয়ে বসে।দু'পা সামনে ছড়িয়ে।কেউ বাঁশি বাজায়।কেউ ডাংগুলি।কেউ পালা গায়।কেউ কেউ ষোলগুটির চাল দিতে গিয়ে মাথা চুলকায়।
নদী দিয়ে দিনরাত অজানা দেশের নাইয়ারা কেউ স্রোতের টানে চলে আবার কেউ স্রোতের উজানে।ছোট ।বড়।মাঝারী।নাও।নাও গুলো দূরে যেতে যেতে একসময় দৃষ্টির সীমার বাইরে গিয়ে বাতাসে মিশে যায়।বেদেনিরা নদী তীর ধরে এগিয়ে যায়।পিছিয়ে আসে।নদীতে রাঁধে,নদীতে খায়।বাচ্চা বিয়োয়।
জেলেরা মাছ ধরে।সিদলের ঝাল ভর্তা মেখে আয়েশ করে ভাত খায়।
বাড়িটা চুনসুরকীর।গাম্ভীর্যময় বাড়ির এককোণে একটি সুউচ্চ মঠ।মঠের মাথায় কাসার কলস।।কলস ভর্তি সোনার মোহর। বাড়ি থেকে সানবাঁধানো ঘাট স্তরে স্তরে নিচে নেমে গিয়ে নদীর জল ছুঁয়েছে।গ্রীষ্মের রাতে ঘাটে নদীধোয়া বাতাস ধেয়ে আসে।আর শীতে রূপকথার কুয়াশা।
বাড়িতে একরূপবতী মেয়ের বাস ।নাম তার রানী।তার ঘন কালো চুল কোমর ছাড়িয়ে পা ছোঁয় ছোঁয়।চোখের দৃষ্টি নদীর গভীরতাকে হার মানায়।শরীর জুড়ে উপচে পড়া যৌবন। ঘন ভ্রূ।সুগঠিত শরীরে পৌরাণিক বিভঙ্গ।
একদিন তাকে নদীর ঘাটে আরাম কেদারায় বসে নদীমুখী উদাস দৃষ্টিতে চুল ছড়িয়ে বসে থাকতে দেখি। নদীর সাথে আনমনে কথা বলে।সে কি নদীর প্রেমের কথা বলে,তার বিরহের কথা?না নদীকে সতীন ভেবে হিংসেয় জ্বলে মরে? ।আমার জানা হয়নি।আমি শুধু একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়েছিলাম ।বাতাস মৌ মৌ করে তার শরীর থেকে উড়ে আসছিলো কস্তুরীর সুগন্ধী।লোকের মুখ থেকে জেনে নিই এ অপরূপ মেয়েটির নাম রাণী।
আমি নদীর টানে ছুটে যেতাম।তারপর থেকে আমি নারীরও টানে ছুটে যেতে থাকি।নদী যত টানে নারী টানে তারও বেশি।সে নারীর নাম রানী।আমার রাণী।
গাছগাছালি ঘেরা বাড়ির পাশে আমার আনাগোণা বাড়তে থাকে।রাতে ভাল ঘুম হয়না।ভাবনা জুড়ে শুধুই রানী।একটু দেখতে পেলে,এক দণ্ড সময়ের জন্য আমার হৃদয়ে ডালপালা মেলতে থাকে।ভাললাগার এক পরম আবেশে মন ভরে যায়।আমি অনেক করে হৃদয়ের গভীর থেকে চাইছিলাম রানী আমাকেও দেখুক।নদীদ্রষ্টা গভীর দৃষ্টিতে সে আমার চোখে তাকিয়ে পড়ে নিক মনের কথা।কিন্ত্ত একটি বারের জন্য তার চোখে চোখ পড়ে না।দৈবের নিষ্ঠুর খেলা আমাকে দগ্ধ করে করে ভস্ম করে ।
একদিন নদীর ঘাট বরাবর যেতেই বাতাসে ভেসে আসা মিষ্টি গন্ধটা তীব্র ভাবে নাকে লাগলো।আলতো পায়ে এগিয়ে যেতে থাকি।দেখি ঘাটের আড়াল মত জায়গায় রানী স্নান করছে।তার ব্যবহৃত সুগন্ধী আমাকে হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য করে ফেলে।মাতালের মত পা ফেলে আমি সামনে আরো সামনে এগিয়ে যাই।রানীর শারীরিক গোপন রৌদ্রে আমার চোখ বিস্ফোরন্মুখ
একজোড়া মেছো চোখ হয়ে যায়।রানী নদীর আদুরে দুলালী।সর্বাঙ্গে যৌবন ঠাসা নদীর অধিক।শরীরের পিছনে ,কোমরের ভাজে মোহনীয় যাদুতে আমি যন্ত্র হয়ে যাই।
রানী তার ভেজা চুল শুকনো কাপড়ে মুছতে মুছতে পাশ ফিরে তাকাতেই চোখে চোখ পড়ে যায়।হঠাৎ কম্পনে তার বুক থেকে জড়ানো আব্রুর কাপড় খসে পড়ে।উন্মুক্ত বক্ষদেশ দেখে আমি চোখে সর্ষে দেখি।প্রগাঢ় ঈশ্বর নেমে গেছের তার বক্ষদেশ বেয়ে আরো নিচে।নাভীমূলে।সেখানে একটু বিশ্রামের জায়গার রেখে আরো নিচে।
রানী কি ইশ্বরী?
বাজপড়া মানুষের মত আমরা দু;জন দুজনের চোখে চোখ রেখে তাকিয়েছিলাম।কয়েক দণ্ড সময়।তারপর রানী নিজেকে সামলে নিয়ে তড়িৎ কাপড় টেনে লজ্জা নিবারণ করে।শরীরে কাপড় জড়িয়ে ঘাটের উপরের দিকে আসতে থাকে আমার হাত আত্বসমর্থণের ভঙ্গিতে উপরে উঠে যায়।তারপর সামনের দিকে এমন ভাবে এগিয়ে আসে কুর্ণিশ ভঙ্গিতে।করজোড় কপালে এসে ঠেকে।
ততক্ষণে রানী সিঁড়ি বেয়ে আমাকে কাটিয়ে চলে যেতে থাকে।তার শরীর দোলে।বাতাসে রাগ-নাগিনীর সুর মূর্ছনা অনুভুত হয়।
রানীর নিতম্বদেশ কাঁপে।স্বরবৃত্তে।মাত্রাবৃত্বে।অক্ষরবৃত্বে।তারপর যেন সবমিলেমিষে একাকার হযে বিষমমাত্রিক তান।
রানী কিছুটা এগিয়ে সামান্য পিছু ফিরে তাকায়।স্মিতহাস্যে।তারপর শরীরে এক অপার্থিব দোলা দিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায়।
আমি সামান্য সময় পেয়েছিলাম রানীকে দেখার কিন্ত্ত আমার কাছে সে সময়টি মনে হল কয়েক যুগ।মন ও শরীর জুড়ে স্বর্গীয় অণুরণন।তার সেই হাসির তুলনা কিংবা প্রতিতুলনা নেই।
তারপর থেকে প্রতিদিন আমাদের দেখা হত।সন্ধার আগে।কথা হত না।শুধু চোখে চোখ রাখা।
চোখের ভাষায় আমাদের কত কথা হত।চোখ মুখের ভাষাই কেড়ে নিয়েছিলো।একদিন রানী অপূর্ব নকশা আঁকা একটা রুমাল কম্পিত হাতে বাড়িয়ে দেয়।সে রুমালে কস্ত্তরীর সুগন্ধি।মাঝখানে নকশা করে লেখা 'রানী'।
আমি ভিখীরি ।কী দিই তাকে?সাধ্য কি আছে ।বুকের রক্ত দিয়ে লিখি একটি চিঠি।দু'টো লাইন।
আমি কী দেব তোমায়
দাস করে রেখ আজীবন তব পদতলে।
-ভিখীরি কবিয়াল।
রানী সে চিঠি পড়ে আমাকে দু'ফোঁটা চোখের জল উপহার দিলো।আমার ইচ্ছে করছিলো নিজ হাতে আমি সেই চোখ মুছে দিই কিন্ত্ত সাহস হয়নি তাকে ছোঁয়ার।
আমি নদী ভালবাসি।নদী,রানীর আর আমার যোগসূত্র।রানী আমার ঈশ্বরী।
যে নদীকে ভালবেসে রানীর পূর্বপুরুষেরা নদীর ধার ঘেঁষে তাদের বসত বানিয়েছিলো সে নদীই একদিন রানীর সর্বনাশ করে।নদী সর্বনাশী।
যাওয়া-আসার পথে বণিক দস্যুদল আমার পরমাসুন্দরী রানীর কথা জেনে যায়।তারা রানীর বাড়িতে হানা দেয়।সেদিন ছিলো অন্ধকার রাত।হাত মেললে হাত দেখা যায় না।তারা রানীর সর্বস্ব লুটে নিয়ে যায়।মঠের মাথায় সোনার মোহর ।কাসার কলস।সব।
সাথে রানীকেও।
রানীদের বাড়ির প্রাসাদে কতগুলো মুতদেহ পড়ে থাকে।মাছি ভনভন করে উড়ে।আসবাবপত্র এলোমেলো।ছড়ানো ছিটানো।প্রতিটি জায়গা-নদীরঘাট,মঠের ভেতর-প্রার্থণাগৃহ-মৃতদেহগুলোর মাঝে আমি- রানীর মুখটি খুঁজি।খুঁজতে থাকি।বাতাসের চারদিকে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস টেনে টেনে আমি অসাড় হয়ে পড়ি।রানীর সেই সুগন্ধি কোন দিক থেকে আমার নাকে এসে লাগে না।
অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই তান্ডবের কথা।শুরু হয় আমার ভবঘুরে জীবন।
রানীর কথা কেউ বলতে পারেনা।আমিও আমার রানীর মুখটি একটিবার দেখার তৃষ্ণায় অধির হয়ে যাই।তৃষ্ণায় আমার কণ্ঠনালী শুকিয়ে কাঠ।রানীকে একটিবার দেখার তৃষ্ণা।শুধু একটিবার!
তৃষ্ণা মেটাতে কত মানুষের মুখ দেখি ।কত পথের দিকে মেছোচোখে তাকিয়ে থাকি।হাঁটি।
কোথাও রানীর মুখটি দেখি না।রানীর মতোও কাউকে দেখিনা। তৃষ্ণার জ্বালায়,তৃষ্ণার কষ্টে দ্রক্ষারস আকণ্ঠ পান করে পড়ে থাকি।গলা বেয়ে সেই তরল নেমে যায়।তরল নয় যেন জ্বলন্ত আগুন।তবুও তৃষ্ণা মিটে না।
রানী! কোথায় আমার রানী!
কোথায় আছিস !
কেমন আছিস!
পৃথুবীতে বুকের ভেতর বাতাস টেনে নেবার, বাতাস কমতি পড়ে ।আমার ণিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
অনেক সময় পেরিয়ে যায।
পথে পথে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে অনেককাল পরে একবার আবার ফিরে গিয়েছিলাম সেই নদীর ধারে।নদী আছে।তার গতিপথ বদলেছে।যৌবনে ভাটা পড়েছে।রানীদের সেই বাড়িটা নেই।নদী খেয়ে নিয়েছে।লোকদের জিজ্ঞেস করতেই নদীর ঠিক মাঝখানটায় দেখিয়ে দিলো।রানীদের বাড়ির ইতিহাস প্রবীণেরা আমাকে আয়েশ করে শোনায়।তাদের চোখ ছলছল করে।আমি অনেক আশা নিয়ে রানীর কথা জিজ্ঞেস করি।রানীতে এতদঞ্চলে কেউ আর দেখেছে কিনা।
-বাজান লুটের জিনিস কেউ ফিরায়ে দেয়?
আমি নদীর অপর পাড়ে তাকাই।ফসলের মাঠে আগের রূপ নেই।মহীরুহ গাছটার চিহ্ন মাত্র নেই।
আকাশের রঙ বৃদ্ধের ঘোলাটে চোখের মত।
আমি আবার আমার ভবঘুরে জীবনে ফিরে আসি।
সময়গুলো এলোমেলো কাটতে থাকে।নেশার ঘুরে।লোকে বলে নেশা, নেশা কাটায়।কিন্ত্ত রানীর নেশা আমার কিছুতেই কাটে না।
মানুষ আমায় তাচ্ছিল্য করে।সমাজ আমায় দূর-দূর করে তাড়ায়।লুকোবার পথ দেখি না।
কেবল নিষিদ্ধ পল্লীর পথই আমার জন্য খোলা থাকে।বারনারীদের ঘর।আমি তাদের উদারতা দেখে মুগ্ধ হই।কত বড় মন তাদের ।পর কে আপন করার শক্তি তাদের অসীম।
মাঝে মাঝেই শরীর হীম হয়ে আসে।এক হাত দিয়ে অন্য হাতকে স্পর্শ করি।আশ্চর্য্য ওরা কেউ কাউকে চেনে না।
আমি অবশেষে রানীর দেখা পাই।
সেদিন গরম মাড়ে পোড়া কুকুরের মত ছটফট করছিলাম।কষ্টে।তৃষ্ণায়।
চোখ বন্ধ করে বোতল বোতল নিষিদ্ধ তরল গিলি।বুকটা জ্বালিয়ে নিচে নেমে যায়।চোখে জল টলমল করে।
সর্দার বেটি আমাকে নতুন একটা ঘরে নিয়ে যায়।নতুন এসেছে এ পাড়ায়।নেশা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছিলো কিনা পা ঠিকমত ফেলতে পারছিলাম না।
ঘরে প্রবেশমাত্রই সিটিকিনটা তুলে দিই কাঁপা হাতে।রাতসঙ্গিনী মেয়েটি শরীর নিরাবরণ করে।পেছনে হাত দিয়ে ঠেস দিয়ে বসে।একটি পা সামান্য গোটানো,অন্যটি সম্পূর্ণ মেলা।আলতো করে শরীর দুলছে।আকাকে কায়দা করে হাতের ইশারায় ডাকে।
এসো নাগর!
শরীরের আলহেল্লা খুলে নারীর কাছে যাই।আমার পা টলে।তার চোখে চোখ রাখি।সেও আমার দিকে।আমি ঠিকমত মত কিছু দেখতেই পাইনা।তবে বুঝতে আমাকে দেখে প্রথম তার যে হাসির থমক ছিলো আস্তে সেটা ঔৎসুক্যে পরিণত হয়।
চোখ বুঝেই তার শরীর হাতরাতে থাকি।
ঘোলা চোখে তাকাই।চোখ হাত দিয়ে কচলিয়ে দেখি।
অসাধারণ দেহাবয়ব।
'তুইতো মনে হচ্ছে অনেক সুন্দরীই।জানিস আমার রানীও অনেক সুন্দরী ছিলো।তাকে দস্যুরা ডাকাতি করে নিয়ে গেছে।অনেক খুঁজেছি-অনেক।জীবনটা শালার বরবাদ হয়ে গেল।পেলাম না।'
নেশার ঘোরে এমনই বকছিলাম।
অভ্যস্ত হাত শরীর মর্দন করে চলছিল।পেট-নাভীমূল।দু'হাতে স্তন দুটো আলতো করে ধরি বৃন্ত দুটোতে আঙুল দিয়ে চাপ দিতে গিয়েই চোখ আমার বিস্ফোরিত হয়ে উঠে।তার স্তনবৃন্তের দিকে তাকিয়ে দেখি একটি নেই।কাটা। তৎক্ষনাৎ সারা শরীরে চোখ বুলিয়ে দেখি।
শরীর জুড়ে দাঁত নখের আচর।জঘন্য অনাচারের চিণ্হ।উরুতে ধারালো আচরে আচরে উল্কি আঁকা হয়ে আছে।
তার চোখে তাকাতেই দেখি সে কাঁদছে।
'ওই মাগী তোর শরীরে এমন হাল চাষ করলো কারা কোন জানুয়ার হালিয়া?
আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সে উঠে দাঁড়ায়।
-আমাকে ছুয়ো না!
'এ শরীরে বিষ আছে।আমার জরায়ৃ ভর্তি রোগের বাসা ।আমাকে ছুঁয়ো না তোমার অসুখ হবে।
তার কাতর মিনতি।
'আমার ক্ষতি হলে তোর কি?
আমি চোখ তুলে তার দিকে তাকাই।অপলক।সে অঝরে কাঁদছে।নেশার চোখ নিয়ে কাছে এগিয়ে যাই।যত কাছে যাই তাকে ততই আমার রানীর মত মনে হতে থাকে।
-ঐ মাগী তুই কে বল তোকে যে আমার রানির মতন দেখায়।যাকে একটি মুহূর্ত ভুলে থাকতে পারি না।কে তুই বল, কি তোর পরিচয়?
গলার স্বর উচ্চ থেকে উচ্চতর হচ্ছিলো।
রানীকে ধরতে যাবো এমন সময় একদল গুণ্ডা জোর করে ঘরের কেওয়ার খুলে ঢুকে।পিছনে সর্দারনি।
'এই মাতালকে নিয়ে যা।এইখানে চেনা নাগরের কোন ঠায় নাই।
আমাকে যখন ওরা টেনে হিচড়ে বের করে আনছিলো তখন রানীর কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম।
'আমিই তোমার রানী -আমাকে বাঁচাও আমাকে উদ্ধার করো'।
সর্দারনি চেচায়।
'বাঁচাও !ঐ খানকির আবার সত্যিকারের নাগর থাকে ?
'ওই তোরা তার হাত পা ভেঙ্গে দে।আর কোনদিন যেন এমুখ না আসতে পারে।মাগী লইয়া রঙ্গরস করবি ভাল কথা। আমার ব্যবসার উপর হাত!
এরা আমাকে মেরে পা দুটো ভেঙ্গে অন্ধকার মত একটা জায়গায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।বেঁচে থাকার আকুতি জানিয়ে পথচারীদের অনুরোধ করেছি।বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করেছি।কেউ এগিয়ে আসেনি।
সেই অন্ধকারে দাঁড়ানো ছিলো কতিপয় বেশ্যা যারা পল্লীতে তাদের চাহিদা ফুরিয়ে এসেছিলো বলে সদ্য পল্লী থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তায় নেমেছে ।নাম লিখিয়েছে ভাসমানের খাতায়।তারা আমার প্রতি দয়া করেছে।তুলে নিয়ে গেছে হাসপাতালে।পা দু'টো সম্পূর্ণ ভাল হয়নি।হাসপাতাল ছাড়ার সময় বগলের নিচে একজোড়া স্কেচ ধরিয়ে দিলো হৃদয়বান ডাক্তার।আমি এরকমভাবেই বেঁচে থাকি।
কিন্ত্ত আমার রানী?
ওদিকে যাবার মত আমার সাধ্য ছিলো না।মনটা ছটফট করতে থাকে।
আমি সামান্য রক্ত মাংশের মানুষ।দৈবক্ষমতা নেই।একদিন আমাকে যারা বাঁচিয়েছিলো সেই নিষিদ্ধ নারী,যারা এখন ভাসমান ,তাদের কাছে আমার রানী বৃত্তান্ত খুলে বলি।রানীর একটু খোঁজ এনে দিতে বলি।তারা সেই পল্লী থেকে ঘুরে এসে জানায় রানী আর ওখানে নেই।সে বদ্ধ উস্মাদ হওয়ায় নিষিদ্ধ পল্লী থেকেও তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
অনেক খোঁজেছি।যদিও খোড়ার গতির চেয়ে পাগলদের গতি বেশি হয়।কোথাও রানীর মত কাউকে পাই না।পাগলদের সে এক ভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেরিয়েছি রোদ- ঝড়- বৃষ্টিতে।ক্লান্তিহীন।রানীর দেখা যদি পাই সে আশায়।জনমের তরে ।একটিবার।
সেদিন,
খুঁড়িয়ে রাস্তা পার হচ্ছি।দেখি পথচারি সবার দৃষ্টি একদিকে নিবিষ্ট।যারা সহজে দেখতে পাচ্ছিলো না তারা দেখার জন্য মাথা বের করে দিয়েছে।আমিও তাদের উদ্দিষ্ট দিকে তাকাই।
সম্পূর্ণ নগ্ন এক নারী রাস্তার ঠিক মাঝ দিয়ে পেছন থেকে হেঁটে আসছে।আলো থালো হাঁটে আর এক হাতে এলোচুল আরো এলো মেলো করে।চুলকায়।শারীরিক ঔজ্জ্বল্যে সকলের চোখ ঝলসে যাবার তাকিদ।সূর্যের আলো যেন ম্লান হয়ে এসেছে।সকল আলো এসে পড়েছে নগ্ন নারীটির উপর।সুঢৌল স্তন ডানে বামে দুলছে।উরুসন্ধিতে ঘনতৃণ।দূর থেকেও বুঝা যায় নগ্ননারীটি পোয়াটি। লজ্জাভূষণ মানুষেরা একবার ছি! বলে এস্তেগ পাঠ করে আবার চোখ আড় করে তাকায়।তাদের চোখে মিটমিট হাসি।
কাছাকাছি আসতেই আমার চোখ ছানাবড়া।সে আমার রানী।আমার দিকে তাকাবার তার কোন ফুসরত নেই।রানীর স্ফীত শরীর নিয়ে চলতে বড় কষ্ট হয়।তার হাঁটার ভঙ্গিতে কোন ছন্দ নেই।না স্বরবৃত্ত।না মাত্রাবৃত্ত।না অক্ষরবৃত্ত।সে হাঁটছে।পথের মধ্যেই প্রসব করবে কারো টগবগে গরম বীর্যপাতের ফসল ।সে হাঁটছে।একটি সন্তান প্রসব করবে।এই রাস্তাতেই।এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের ভেতরে কোথাও।এই নদীক্ষরা দেশে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
সোমহেপি বলেছেন: ধন্যবাদ
আলাউদ্দিন আহমেদ সরকার
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: আগে থেকেই থিমটা জানায় বিশেষ আগ্রহ ছিলো গল্পটা পড়ার জন্যে। আখ্যানপর্বের সূচনা খুব ভালো লেগেছে। মাঝখানে পতিতালয়ে দেখা হওয়াটা অনুমেয় এবং ক্লিশে। ফিনিশিংটা অসাধারণ। তবে আমি গল্পটা যেভাবে কল্পনা করেছিলাম সেভাবে লেখো নাই। আমি ভাবসিলাম তার হেঁটে যাওয়াকে ঘিরেই পুরো গল্পটা আবর্তিত হবে। আমি লিখলে এভাবেই লিখতাম আর কী। তবে চিন্তার ভিন্নরকম অনুবাদ দেখাটাও আনন্দের।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩১
সোমহেপি বলেছেন: আমিও স্বীকার করছি।যেখানটাই টাচ করছে চেয়েছি তা হয়নি।
পতিতালয়ের ব্যাপারটা নদীবতীর ঐতিহাসিক সত্য।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
মিঠেল রোদ বলেছেন: অসাধারণ গল্প।গল্পের থিমটা চমৎকার।তবে প্রকৃতির আরো ব্যাপক
বর্ণনা থাকলে ভাল লাগত।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
সোমহেপি বলেছেন: এটা লিখে নিজেই কিছুটা ক্ষুব্ধ লেখার উপর।
ধন্যবাদ
৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪২
রাজসোহান বলেছেন: কঠিন!
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২
সোমহেপি বলেছেন: এত সহজ ভাষায় লেখার পরও কঠিন?
দেখা যাক বাচ্চাদের মত করে লেখতে পারি কিনা!
৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০০
shfikul বলেছেন: শুভ সন্ধ্যা. . . . . . . .
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮
সোমহেপি বলেছেন: good evening
৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৪
রোমেন রুমি বলেছেন: গল্পটার নাম
মায়াবতী যে নদীবতী
হলে খারাপ হত না ।
একদিন হঠাৎ নদীবতী রানীর জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটায় বেশী তাড়াহুড়া হয়ে গেছে ।
রানীকে বাঁচানোর আর্তনাদ ভাল লাগেনি ;
কারণ তাকে বাঁচানোর কিছুই অবশিষ্ট ছিলনা ।
এখানে বোধহয় কিছুটা গভির মৌন নাটকীয়তা থাকলে ভাল লাগত ।
আরও গভীর আবেগ এবং প্রকৃতির জিবন্ত ছবি আশা করে ছিলাম।
পড়তে পড়তে একটা ঘোর একটা গভীর তন্ময় অথবা ক্ষণে ক্ষণে বুকের ভেতর একটা তোলপাড় একটা কাঁপন একটা চাপা কান্না অনুভবের উপকরণের অভাব ছিল।
রানীর দুঃখে কথকের অবস্থা অথবা পরিনতি অন্য দশটা হাল্কা চরিত্র মনে হয়েছে।
গল্পের প্লট, থিম চমৎকার ............
এই থিমে আরও গভির
আরও অন্যরকম
আরও ..................
আশা করেছিলাম।
শেষটা আসলেই ভীষণ সুন্দর হয়েছে ।
লেখাটায় তোর যে তৃপ্তি হয়নি শেতা সেটা স্পষ্ট ।
গল্প বলার ঢঙটা আমার খারাপ লাগেনি।
সবকিছু মিলিয়ে খুব খারাপ হয়নি।
ভাল লাগার মত।
ভাল থাকিস ।
শুভ রাত্রি।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০
সোমহেপি বলেছেন: শুভ
সন্ধা
৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩৭
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: শেষের দিকটা বেশ ভাল লাগছে
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
সোমহেপি বলেছেন: শুভ
সন্ধা
৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার। অসাধারণ।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
সোমহেপি বলেছেন: শুভ
সন্ধা
৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৯
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ৯ম ভালোলাগা +++++++++
অসাধারণ
কেমন আছেন ?
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৮
সোমহেপি বলেছেন: ভাল আছি।
আপনিও ভাল আছেন আশা করি।
১০| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩
শায়মা বলেছেন: এই পদ্মা এই মেঘনা এই হাজার নদীর অববাহিকায়
এখানে রমণীগুলো নদীর মত নদীও নারীর মত কথা কয়!!!!
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯
সোমহেপি বলেছেন:
১১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০
নেক্সাস বলেছেন: গল্পের শুরুটা অদ্ভুত সুন্দর। একদম পাকা লেখকের মত। আমি পড়ছিলাম আর বিভূতিভুষন কিংবা বঙ্কিমের মত দৃশ্যকল্পে হারিয়ে যাচ্ছিলাম।
ফিনিংশাটা খুব সুন্দর। ভাল লেগেছে।
তবে প্রিয় ব্লগার হিসেবে সাহস নিয়ে বলবো।
গল্পের পতিতা পল্লীর অংশটুকু একটু দলছুট হয়ে গেছে। কেমন যেন গোছালো ভাবটা পাইনি। আরেকটু নাটকীয়তা কিংবা শব্দ চয়ন ও দৃশ্যকল্প রচনায় গভীর মুন্সিয়ানার পরিচয় দিলে গল্পটা আরো অনবদ্য হয়ে উঠতো।
গল্পে বেশ কিছু টাইপো আছে। খেয়াল করে নিবেন।
কাসার, পৌরাণিক,ইশ্বরি, সন্ধার, দ্রক্ষা
কেউ ডাংগুলি= কেউ ডাংগুলি খেলে
ছোট ।বড়।মাঝারী।নাও। = বার বার দাঁড়ি না হলে মনে হয় ভাল হত।
লোকের মুখ থেকে জেনে নিই= লোকমুখে জানি
বাতাসে রাগ-নাগিনীর সুর মূর্ছনা = রাগীনির
তবে বুঝতে আমাকে দেখে প্রথম তার যে হাসির থমক ছিলো আস্তে সেটা = লাইনটা ক্লিয়ার না।
শুভকামনা সোমহেপি।
ভাললাগা নিরন্তর
১২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২২
সোমহেপি বলেছেন: এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ নেক্সাস।
পতিতা পল্লির অংশটা সময় করে একটু নাড়া চাড়া দেব।
তবে বুঝতে আমাকে দেখে প্রথম তার যে হাসির থমক ছিলো আস্তে সেটা = লাইনটা ক্লিয়ার না।
এখানে রাণী প্রথমে একজন পাকা পতিতার মতই ছিলো।হাসি হাসি।তারপর যখন আমার দিকে তাকায় তখন তার ভাবান্তর ঘটে।চেনা চেনা লাগে তার।এজন্য ঔৎসুক্য।
এটাই ----
আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ।
১৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
নেক্সাস বলেছেন: থমক না চমক ?
বুঝতে পারলাম হবে মনে হয়
ধন্যবাদ পজেটিভ রেসপন্স করার জন্য
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩
সোমহেপি বলেছেন: থমক কিংবা চমক কোনটাই না
শব্দটা হবে দমক'
অনেক শুভকামনা জানবেন
১৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮
ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন: ভাল লাগলো খুব। খুব বাস্তব, উপস্থাপনাও খুব ভাল হয়েছে। আপনার লেখনীর প্রশংসা করতেই হয়। বিশেষ করে শুরু আর শেষ অসাধারণ।
মধ্যে কোথায় যেন একটু সুরটা কেটে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আরেকটু ঘষামাজা করা যায়।
অন্যরকম গল্প। আবারো ভাললাগা।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫
সোমহেপি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকুন
১৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২০
ইনকগনিটো বলেছেন: লেখাটা চমৎকার লাগলো।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০১
সোমহেপি বলেছেন: ধন্যবাদ
কবি
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৩
আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ভালো লাগলো।