নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা ইদানীং এতটাই বৈশ্বিক আর আধুনিক হয়ে উঠেছি যে, আমরা ধর্ম এবং নৈতিকতাকে আলাদা করে ভাবতে শুরু করেছি। মূলত ধর্ম ও নৈতিকতা একে অন্যের পরিপূরক। ধর্ম শিক্ষা ছাড়া নৈতিকতার চর্চা করা বাতুলতারই নামান্তর। আমরা আমাদের শিশুদেরকে ধর্মহীন শিক্ষার দিকে ধাবিত করছি আবার তাদের কাছ থেকে নৈতিকতার প্রমান চাচ্ছি। এটা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়। ভাল ফল পাওয়ার জন্য আপনাকে ভাল বীজ বপন করতে হবে। সুষ্ঠু পরিচর্যা ছাড়া আপনি ভাল ফসল আশা করতে পারেন না। যদি আপনি বুদ্ধিমান হন। আর পাগল হলে ভিন্ন কথা। সমাজের অবক্ষয়ের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। আপনার ছেলে একজন ইভটিজার, একজন খুনী, একজন ধর্ষক অথবা একজন মাদকাসক্ত। এজন্য আপনিই দায়ী। আপনিই আপনার সন্তানকে এ অন্যায়ের পথে ঠেলে দিয়েছেন। আপনি সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর দায় আপনাকে বহন করতেই হবে। আপনি যতই ভালো মানুষ হন না কেন। আমরা ছোটবেলা থেকেই আমাদের সন্তানদেরকে ডিস এ্যান্টেনার প্রতি আকৃষ্ট করে ফেলেছি। বিদেশী চ্যানেলের কার্টুন না দেখলে শিশুরা আজ আর খাবার খেতে চায়না। জাপানী ভাষার কার্টুন সিরিজ হিন্দী ভাষায় ডাবিংকৃত ডরিমন সিরিজ এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরন। খবরে প্রকাশ একুশে বইমেলায় অভিভাবকদের হন্যে হয়ে ডরিমন সিরিজ খুজতে দেখা গেছে। টিভি চ্যানেলেও এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। ডরিমন সিরিজ দেখে দেখে শিশুরা চমৎকার হিন্দিতে কথা বলছে। বাহ আমাদের শিশুদের প্রতিভা আছে বটে। এটা অবশ্যই আশার কথা। কিন্তু সমস্যা হল অন্যখানে। একজন মুসলিম শিশু হিসাবে সে ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী শিখেছে কিনা? অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। এ প্রশ্ন করা অবান্তর। কারন শিশুদের চব্বিশ ঘন্টাই ব্যয় হয় প্রাইভেট টিউটর, গানের মাষ্টার, ড্যান্স মাষ্টার, আর ড্রয়িং টিচারের কাছে । কিন্তু আমি নিশ্চিত ধর্মীয় শিক্ষকের কাছে কোরআন হাদীস শেখার মতো সময় তাদের ৯৫% এর থাকেনা। বিষয়টা আসলেই দুঃখজনক। আমরা অনেকেই মনে করি স্কুল কলেজেই আমাদের সন্তানেরা নৈতিকতার চর্চার যথেষ্ট সুযোগ পায়। তারা প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে সমাজের ও দেশের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। কিন্তু বিষয়টা একটু জটিল এবং প্রশ্ন সাপেক্ষ। দেশের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্টানেই আমরা এর বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাই। ছাত্ররা কি নৈতিকতা শিখেছে সে বিষয়ে দৈনিক সংবাদপত্রের পাতায় চোখ বুলালেই বিষয়টা পরিস্কার হবে। চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, খুন-জখম, ধর্ষন এমন কোন (নৈতিক!) কাজ বাকী নাই যাতে আমাদের সোনার ছেলেরা অংশ নিচ্ছে। এরাতো আমাদেরই সন্তান, আমাদেরই আপনজন। এমন কেউ কি আছেন যে চাইবেন, আমার সন্তান দেশের উচ্চতর বিদ্যাপীঠে নৈতিক শিক্ষা অর্জন করে চাঁদাবাজী-টেন্ডারবাজী খুনোখুনীতে জড়াক। উত্তরটা সহজ। কেউই তা চাইবেন না। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে আমরা কেন একথা স্বীকার করছি না আমাদের সোনার ছেলেদের যাবতীয় অপকর্মের নেপথ্যে আমরা গার্জেনরাই। আমরা স্বীকার করব না কারন আমরা আমাদের ব্যর্থতার দায় আমরা অন্যের উপর চাপাতে চাই। এটা চিরায়ত এবং সার্বজনীন গুনাবলী।
্হনংঢ়;
পৃথিবীর যাবতীয় ধর্মগ্রন্থই নীতিকথায় ভরপুর। আর জীবন সম্পর্কেও রয়েছে কিছু নীতিমালা। পৃথিবীর সব ধর্মেই চুরি, হত্যা, ধর্ষন অবৈধ ও মানবতা বিরোধী কাজ। আর আমরা সবাই ই কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাসী। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল -কোরআনে এসব মানবতা বিরোধী গর্হিত কাজের ব্যাপারে সুস্পষ্ট সতর্কবার্তা রয়েছে। খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেষ্টামেন্ট বা নিউ টেষ্টামেন্ট কোথাও মানুষ হত্যা কিংবা চুরি ডাকাতি রাহাজানি বৈধ নয়। সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম কিংবা ইহুদী ধর্মেও এমন কোন দৃষ্টান্ত নাই। তাহলে আমরা কেন এসব মানবতা বিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ছি? এর কারন একটাই আর তা হল, আমাদের ধর্ম বিশ্বাসে ভেজাল ঢুকে গেছে। আমরা প্রকৃত ধর্মীয় ও নৈতিকতার শিক্ষা পাচ্ছি না। ছোটবেলা থেকেই আমাদের শিশুরা অতিমাত্রায় বৈশ্বিক হয়ে উঠছে। তাদেরকে রিলিজন বোঝার আগেই সেকুলারিজম শেখানো হচ্ছে। আমি এটাও বিশ্বাস করি যে, একজন প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তির পক্ষেই শুধুমাত্র সেকুলার হওয়া সম্ভব। কারন সব ধর্মই সহমত ও সহিষ্ণুতার আধার। আমরা যারা ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত তাদের পক্ষে এমন সহমত ও সহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা অসম্ভব। প্রকৃত ধর্ম শিক্ষা ছাড়া আমরা যতই নিজেকে নৈতিকতার আধার মনে করি না কেন তা হবে কেবল ই ফাকির নামান্তর। কারন ধর্ম ছাড়া নৈতিকতার কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। সুতরাং একথা নিদ্বিধায় বলা যায় যে, আমাদের সমাজের সার্বিক কল্যানের জন্য আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ অতি জরুরি। আর নৈতিক শিক্ষার জন্য ধর্ম শিক্ষা জরুরি। ধর্ম শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ আমাদের সন্তানরা যেন পরিবারেই পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানুষের জীবনকে যদি একটা কম্পিউটার প্রোগ্রামের সাথে তুলনা করি তাহলে বিষয়টা আর একটু কিয়ার হবে। কম্পিউটারে কিছু বেসিক প্রোগ্রাম আছে যা কম্পিউটারকে স্মুথলি রান করায়। পরবর্তীতে সংযোজিত প্রোগ্রামগুলো বেসিক প্রোগ্রামের স্থান দখল করতে পারে না। বরং সহাবস্থানই করতে পারে। এমনি ভাবে আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ছোটবেলাই ধর্ম ও নৈতিকতার প্রকৃত শিক্ষা বেসিক প্রোগ্রামের মতই ইনস্টল করে দেই তাহলে পরবর্তীতে সংযোজিত খারাপ প্রোগ্রামগুলো বেসিক প্রোগ্রামের খুব একটা ক্ষতি করতে পারবে না। বড়জোড় সহাবস্থান করতে পারে। কিংবা ইরর ইন ইনস্টলিং দেখাতে পারে। সুতরাং আমাদের এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা আসলে আমাদের সন্তানদের কাছ থেকে কি ধরনের ফলাফল পেতে চাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২০
আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: মূলত ধর্ম ও নৈতিকতা একে অন্যের পরিপূরক। ধর্ম শিক্ষা ছাড়া নৈতিকতার চর্চা করা বাতুলতারই নামান্তর। ভন্ডামী ছাড়া আর কিছুই নয়।