নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Click This Link
(১) কাকসভা
আজ বিকেলে, ঢাকার শাহজাহানপুরস্থ শহীদবাগে হয়ে গেল এলাকার "কাক" সম্মেলন ! তবে আশপাশের কিছু কাক-ও এ সভায় যোগ দেয়।
"শহরের লোকজনের মাছ-গোস্তের কাটাকুটি, পচা-বাসি রুটি-বিস্কুট ও অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে ময়লার গাড়ীতে দিয়ে দেয়ায় কাক'দের খাদ্য সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে লোকেরা মাছ-গোস্ত খাওয়া কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে ও আশেপাশে এসব উচ্ছিষ্টের নিদারুণ অভাব এবং এ এলাকায় কুকুরের সংখ্যা অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দালান-কোঠা থেকে এদিক ওদিক ছুড়ে ফেলা নানান উচ্ছিষ্টও কুকুরেরাই খেয়ে নেয়ায়-কাকদের বঞ্চিত হওয়া; এছাড়া তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা-ও অল্প কিছু গাছ-পালা এলাকায় ছিল সেগুলো কেটে উঁচু দালান নির্মাণের কারনে কাক'দের ক্রমবর্ধমান আবাসিক সমস্যা আরও প্রকট হওয়া এবং সবশেষে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঋতু বৈচিত্র বিনষ্ট হয়ে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে বিরূপ প্রভাব" ইত্যাদি সমস্যার ব্যাপারে কাক'দের করনীয় বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়।
সভায়; কাক'দের এদিক ওদিক মাথা ঘোরানো, খানিক নিরবতা, মাঝে মাঝে স্বল্প স্বরে ডাকা কা-কা শব্দ-ই শোনা যায়। তবে তাদের চাহনিতে; প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুর-মূর্খ আচরনের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃনা ও চরম ক্রোধ প্রকাশ পাচ্ছিল !!
"ভোরে অন্য কোন পাখিকে ডাকাডাকির দায়িত্ব দিয়ে এ এলাকা ছেড়ে, গাছ-গাছালি পূর্ণ এলাকায় চলে যাওয়ার প্রস্তুতির জন্য; কাক'দের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়"।।
সন্ধার কিছু পূর্বে কাকদল সভা ভেঙ্গে চলে যায়।
(২) সংবাদ সম্পাদনা
একটি জামা অথবা প্যান্ট বা অন্য কোন কাপড়। কোন ব্যক্তিকে পরাতেই হবে। কিন্তু তা এতই টাইট; যে কিছুতেই গায়ে গলানো/পড়ানো যাচ্ছেনা। শরীরের তুলনায় ছোট। অন্য কোনও অপশন নেই, এ কাপড়ই পরাতে হবে। অগত্যা সে ব্যক্তির গা থেকে গোস্ত কেটে-ছেটে-চেছে ফেলে কাপড়ের মাপ মতো করা হলো। কাপড় এখন দিব্যি গায়ে ফিট !! ব্যক্তির কি হলো, বোঝাই যায়। তাতে কিছুই যায় আসেনা।
এমন কি কখনো হয় নাকি ??!!
জ্বী হা; হয়। বিশেষতঃ "সংবাদ সম্পাদনা"র ক্ষেত্রে। সম্পাদক-মালিকের পছন্দসই না হলে, রিপোর্টারের প্রতিবেদনকে এভাবেই কাটা-চাছা করে প্রকৃত ঘটনা/তথ্য/ 'সংবাদ' এর মৃত্যু ঘটানো হয়।
আর রূপকার্থে, মানুষের জীবনেও কী হরহামেশা এমনটি ঘটছে না !!?? অনুক্ষণ আমরা কি এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি না ??
(৩) সরে থাকি
ইংরেজি "sorry " ( দু:খিত) এর আসল অর্থ "I kick myself " (আমি আমাকে লাথি মারি)..!! হা: হা: হা: হা: হা:... বেশী ভুলচুক না করে যত কম sorry বলা যায়, ততই মংগল।
(৪) কে গায়; কেন গায়। কে শোনে; কেন শোনে।
খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির পাশে রতনদের বাড়ীর সামনে আমার 'গান জানা' নিয়ে বন্ধুদের সাথে তুমুল বিতর্ক। এর মাঝে এক বন্ধু মামুন আমাকে বল্লো ; ঠিক আছে তুই ৩০ মিনিটের মধ্যে ৫০ টা নজরুলগীতির প্রথম লাইন লিখে দিতে পারলে ৩০ টাকা দিবো। বল্লাম ওকে, খাতা-কলম আন্। মনে আছে, মাত্র ১৪ মিনিটে লিখে দিয়েছিলাম !! হা: হা: হা: দুষ্টু বন্ধুরা ৩০ টাকা কিন্তু দেয়নি।।
বাংলা, হিন্দী, উর্দু ভাষার অনেক গান, গানের সুর জানি। এ নিয়ে অহংবোধ নেই। বিসিআইসি স্কুল, বিআইএসএফ এ বহু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত প্রতিযোগিতায় রিহার্সাল, বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছি। মনে আছে, একবার বিআইএসএফ এমপ্লয়ীজ ক্লাবের সংগীত প্রতিযোগীতা শেষে বিচারক হিসেবে গান গাওয়ার পর তা শুনে এক অচেনা দর্শক ৫০০ টাকা সম্মানী দিয়েছিল।
তবে ইদানীং গান শোনা-গাওয়া একেবারেই হয়না।
আশ্চর্যকথা, গান মানুষ কেন শোনে বা গায় !!?? এর অনেক ব্যাখ্যা অনেকেই দিবেন; তা শোনার দরকার নেই। যার যার ভেদ তার কাছেই গোপন থাকুক। কিন্তু পেরে বা না পেরেও মানুষ গান গাইতে চায় কেন ??!! এ কি শুধুই বিখ্যাত হওয়ার আশায় নাকি সুরের প্রতি কোন ভালো বাসায় ?? কাউকে দেখে-শুনে তেমনটি অনুকরন করতে হবে, গানের বেলায় শিল্পীদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটি ৯০% হয়ে থাকে। মূল শিল্পীর সুরকে অনুসরন করতে গিয়ে কেউবা নিজ কন্ঠকেও বদলে নেয়। এটা সুরের প্রতি শিল্পীর এক প্রকার বিসর্জন। গানের জগতে সে হয়তোবা বিখ্যাত কিছু একটা হয়ে যায়। তবে স্থায়িত্ব পায় কতকাল, সে-ও দেখেছি। আবার কেউ কেউ মুল সুরের কাছে যেতে না পারলেও সংগীতের প্রতি তাদের দরদ যেন তাদেরই বেশী !! বাস্তবেও দেখা গিয়েছে, এরাই সংগীতকে অপরিমেয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতায় ভরিয়ে দিয়েছে।
যাহোক্ চাকরী জীবনে শিশু-কিশোর-যুবা-বয়স্কদের নিয়ে আয়োজিত সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথমেই অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা গুনতাম। কেন ?? সবার জন্য পুরস্কার কেনার উদ্দেশ্যে !! প্রতিযোগিতায় না টিকুক; গিফট দিয়ে উৎসাহিত করার জন্য !!! কে জানে, সাধনা কাকে কোথায় পৌছে দেয় !!!
(৫) "পিছন থেকে কলকাঠি নাড়া"
যানবাহনের 'চালক' কিংবা কোন 'কর্মীবাহিনী'র চেয়ে; তাদের পিছনে থেকে তত্ত্বাবধান/আদেশ প্রদানকারী ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ এবং কোন ঘটনার ভালো-মন্দ ফলাফলের জন্য দায়ী। কারন তারা 'পরিচালক'। কোন মন্দ ফলাফলের দায়-ও নিঃসন্দেহে পরিচালকদের উপরই বর্তায়।
কিন্তু ন্যায় সচেতনতার অনুপস্থিতি এবং উঁচু পদে বসে থাকা কিছু ব্যক্তির সংঘবদ্ধ নীচু মানসিকতা ও প্রভাব; সর্বতই তাদের দায় আড়ালে রাখে এবং 'চালক' বা 'কর্মী'দের উপর মন্দ ফলাফলের দোষ চাপিয়ে দেয়।
"পিছন থেকে কলকাঠি নাড়া" - এসব মানবিক বোধহীন, শঠ ও ধূর্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিনই যেন বাড়ছে !!
পুনশ্চঃ
'ড্রাইভার' তখনই 'ভালো' হয়; যখন তার পিছনের সীটে বসা ব্যক্তিটি 'সুস্থ্য' থাকে।
(৬) দর্শন
১। চামচামি করে কিছু ইনকাম করা ছাড়া; পুরোনো দর্শনবাদীদের পৃথিবীর কোথাও আর জায়গা নেই।
২। সাধারন মানুষ তো বটেই, ডিগ্রী লাভের উদ্দেশ্যে দর্শনের বই-পুস্তক একালে যারা পড়ে; মনে মনে তাদের প্রত্যেকেই একেকজন নতুন নতুন দার্শনিক।
৩। নানা "পেশী শক্তিই" সময়ে সময়ে বিশ্বজুড়ে নতুন নতুন দর্শনের জন্ম দেয় এবং তাদের অন্ধ ভক্তরা তা মানে ও অনুসরন করে।
৪। ভালো কিংবা মন্দ; রাজনীতিবিদরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দার্শনিক।
(৭) জ্ঞান বটিকা
"হাবল" এবং "জেমস ওয়েব" প্রমাণ করলো; দৃষ্টিশক্তি ও জ্ঞানের ভিন্নতা, পদার্থের রূপ-পরিচয়ে পরিবর্তন এনে দেয়। আইনস্টাইন তার 'থিওরি অব কোয়ান্টা' এ সবচেয়ে গুরুত্ববহ যে কথাটি বলেছেন তা হলো; "কোন একটি বস্তু কি তা নির্ভর করে বস্তুটি কে দেখছে এবং কিভাবে দেখছে তার উপর"। এর ব্যাখ্যায় হাবল ও জেমস ওয়েব দিয়ে উদাহরন টানলেই যথেষ্ট। অন্যদিকে মানুষের ক্ষেত্রেও দৃষ্টিশক্তির প্রখরতার হ্রাস-বৃদ্ধির উপর বস্তু বা বিষয়ের ভিন্নতা/ফলাফল প্রাপ্তি নির্ভর করে। আর এর মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে শুধুমাত্রই পরিশুদ্ধ জ্ঞান। এ জ্ঞান বিনা মানুষের দেখার সাধারন যে দৃষ্টি, তা অন্ধত্বের নামান্তর।
(৮) "সোনার মানুষ"
সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা "রানার" কবিতা নিয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া "রানার চলেছে তাই ঝুম ঝুম ঘন্টা বাজছে হাতে"- ডাকপিয়নদের জীবন নিয়ে অনন্য এক সৃষ্টি !! তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের লেখা "ডাক হরকরা"- ডাকপিয়ন নিয়ে অনবদ্য এক লেখা !!
হালফিল ওসব গান-গল্প শোনার মত মন মানসিকতা কারও নেই। তবে ওই সে 'রানার' বা 'ডাকপিয়ন'- উভয়ের সাথে বর্তমান বাংলাদেশের "পাঠাও বাইকারদের" যেন অদ্ভুত এক মিল রয়েছে !! আমি বলি, এরাই সোনার বাংলার প্রকৃত "সোনার মানুষ"। ডাকপিয়নেরা চিঠি পৌছায় আর এ বাইকার'রা এদেশেরই বহু বহু মানুষকে তাদের গন্তব্যে পৌছে দিচ্ছে। অনলাইনের যুগে, এ পদ্ধতিতে দ্রত মানুষ আনা-নেয়ার এ কৃতিত্ব; কেবলই ঐ সব "সোনার ছেলেদের" "সোনার মানুষদের"!! এদেশের দায়িত্বশীলেরা যখন বিশাল বেকারত্বের বিপরীতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যর্থ, তখন এরা নিজেরাই খুঁজে নিয়েছে উপার্জনের পথ। আজ কত কত পরিবার-পরিজন এ আয়ের উপর নির্ভরশীল !! তাদের খাওয়া, পড়া, চিকিৎসা এতে চলে।
রোদ-বৃষ্টিতে রাস্তায় যখন এসব বাইকারদের চলাচল দেখি, বুকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ জন্মে। এদের বেশীরভাগই উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চ বংশীয়। অথচ কতই না নীরবে, রাস্তাঘাটে কত শত রকমের জবাবদিহি আর যন্ত্রণা সয়ে টাকা উপার্জন করে স্ত্রী-সন্তান-মা-বাবার মুখে অন্ন যোগাচ্ছে !! অথচ এসব নির্লোভ শ্রমজীবী মানুষদের আমরা ধনিক-বনিক শ্রেণী কোন ভাবেই মেনে নিতে পারিনা। সিএনজি, বাসওয়ালাদের পক্ষ নেই।
সবচেয়ে দূঃখজনক বিষয় হলো- আমরা নিজেরা মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে পারিনা, কিন্তু কেউ ভালো কিছু করলে বা করতে চাইলে মুখ বাকাই; ওতে নিজের কৃতিত্ব জাহির করি, তারপর ও থেকে ইনকামের ধান্ধা খুঁজি। তারপর চাটুকারদের প্ররোচনায় এমন কিছু প্রতিবন্ধক আইন বানাই, যাতে খেটে খাওয়া মানুষদের বেচে থাকা দায় হয়ে যায়।
(৯) গুলশান-বনানী-ধানমন্ডি-উত্তরা-বারিধারা-নিকুঞ্জ-নিউ'ওল্ড ডিওএইচএস
ঠিকানা হয়তোবা মানুষের
"শ্রেণী" প্রকাশ করে;
কিন্তু "আভিজাত্য" প্রমান করে না।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৩৩
সামছুল আলম কচি বলেছেন: এক টন ধন্যবাদ...হা হা হা !!
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখা পড়ে আরাম পাওয়া গেলো না।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:০২
সামছুল আলম কচি বলেছেন: শীত কমে যাওয়ার লক্ষ্মণ!!
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৮
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: একেবারেই তেলমুক্ত চমৎকার একটা ব্লগ উপহার দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।