নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
কয়েক দিন আগে আমার নিজের রাজনৈতিক ইশতেহার লেখার সময় থেকেই মনে মনে একটা প্রশ্ন এসেছিলো যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে ইশতেহার দেয়, তা কিভাবে দেয়? সেগুলো কি বাস্তবায়ন করেন তাঁরা? নাকি শুধুই কথার ফুলঝুরি? এরপরে থেকে খুঁজতে থাকলাম উত্তর। পেয়ে গেলাম আওয়ামী লিগের ভিশন ২০২১-এ দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো।
২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ 'দিনবদলের সনদ' নামের একটি ইশতেহার দেয়। সেই সময়ে এই দলটি ২০২১ সালের জন্যে বেশ কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। আসুন দেখি সেই লক্ষমাত্রা আওয়ামী লীগ সরকার তাদের সুদীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনকালে কতটা পূরণ করলো-
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০১ঃ
২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ২০-হাজার মেগাওয়াট ধরে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে
======================
আসল অবস্থাঃ বিদ্যুতের উৎপাদনের এই প্রতিশ্রুতি কি পূরণ হয়েছে? ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে- 'বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সক্ষমতা থাকলেও গড় উৎপাদন হচ্ছে নয় হাজার মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৭৯২ মেগাওয়াট।' অথচ, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০২৩ সালে এসে ২২ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট দাঁড়িয়েছে।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০২ঃ
২০২১ সালে বেকারত্বের হার ৪০% থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে।
======================
আসল অবস্থাঃ এক্ষেত্রে, আওয়ামী লীগ সরকার চরম ভাবে ব্যর্থ। ২০০০ সালে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৪.৩ শতাংশ। গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের বেকারত্বের হার সর্বকালের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে ৬.৯১ শতাংশ হয়।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৩ঃ
দেশের কৃষি খাতে শ্রমশক্তি ৪৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ শতাংশে।
======================
২০২২ সালে, দেশে মোট শ্রমশক্তির ৪২.৬২% কৃষি খাতে নিয়োজিত ছিলো।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৪ঃ
২০২১ সাল নাগাদ বর্তমান দারিদ্র্যের হার ৪৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নামবে
======================
২০২১ সালে দেশের দারিদ্র্যের হার ৪২ শতাংশে এসে দাঁড়ায়।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৫ঃ
২০২১ সালের মাঝে ৮৫ শতাংশ নাগরিকের মানসম্পন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত হবে।
======================
জুন ২৪, ২০২৩ সালে বণিক বার্তায় এম,ডি মুসা লিখেছেন-
দেশে অপুষ্টিজনিত কৃশকায় শিশুর হার ২০১৭ সালে ছিল ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা বেড়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে খর্বকায় শিশুর হার ওই বছর ছিল ২৮ শতাংশ। উচ্চতা অনুযায়ী তীব্রতম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর হার ২ শতাংশ।
বাংলাদেশে এখনো ২ কোটি ১০ লাখ (১৩ শতাংশ) মানুষ পুষ্টিকর খাবার খেতে পায় না। এ হিসাবে প্রতি আটজনের একজন পুষ্টির অভাবে ভুগছে। খাবার যে নেই একেবারে তাও বলা যাবে না। মূলত অসচেতনতার কারণে অসংখ্য মানুষ খাবার খেয়েও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। পুষ্টিকর খাবার খেতে না পেয়ে এখনো ৩৩ শতাংশ শিশুর শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে না। ফলে উচ্চতার তুলনায় কম ওজন এবং ওজনের তুলনায় উচ্চতা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
বাংলাদেশের শিশুদের পুষ্টি পরিস্থিতির এমন তথ্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) যৌথ সমীক্ষায় বলা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে যেখানে দেশে ৬০ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতির ছিল, ২০১৮ সালে তা কমে ৩১ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে খর্বাকৃতির শিশুর সংখ্যা এখনো বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে অনেক বেশি।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৬ঃ
২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্যে প্রতিদিন নূন্যতম ২১২২ কিলো ক্যালোরির উর্ধে খাদ্য নিশ্চিত করা হবে।
======================
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৭ঃ
২০২১ সালের মাঝে সকল রকম সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মুল করা হবে।
======================
এই লক্ষ্য এখনো পূর্ণ হয়নি।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৮ঃ
২০২১ সালের মধ্যে গড় আয়ুষ্কাল ৭০-এর কোঠায় উন্নীত করা হবে।
======================
এই ক্ষেত্রে আওয়ামী সরকার পুরোপুরি সফল।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ০৯ঃ
২০২১ সালে শিশু মৃত্যু হার বর্তমান হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা হবে।
======================
২০২২ সালে প্রতি হাজারে ২৩.৫৫-জন শিশু আমাদের দেশে মৃত্যুবরণ করে। ২০২১ সালে তা ১৭.৭১।
[সূত্রঃ প্রথম আলো, ২৪ জুন ২০২৩]
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ১০ঃ
২০২১ সালে মাতৃ মৃত্যু হার ৩.৮ থেকে কমে হবে ১.৫ শতাংশে
======================
এক্ষেত্রে আওয়ামী সরকার লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে।
======================
আওয়ামী প্রতিশ্রুতি ১১ঃ
২০২১ সালে প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
======================
এই লক্ষমাত্রা এখনো পূরণ হয়নি। ২০২১ সালে এটা ছিলো প্রায় ৫৫%
এই হল আওয়মী সরকারের অবস্থা। পরবর্তী পর্বে লিখবো, বি,এন,পি'র ইশতেহারের একটি বিশ্লেষণ।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫০
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
বাংলাদেশের আপামর জনগণ এসবের খোঁজ-খবর রাখে না।
ফাঁক তালে রাজনৈতিক দলগুলো মজা মারে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১১:১৩
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। দারিদ্র্যের হার এখন ৪২% নয়। ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
সুত্র প্রথম আলো ২৪ জুন ২০২৩।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি সূত্র উল্লেখ করে দিয়ে বলেছি ২০২১ সালে দারিদ্র্যের হার কত ছিলো।
প্রশ্ন হচ্ছে, ২০২১ সালের মাঝে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিলো, সেটা পূরণ হলো না কেন?
ধন্যবাদ।
৩| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:১১
রানার ব্লগ বলেছেন: আমার মনে হয় প্রত্যেক রাজনৈতিক সংগোঠনের ইশতেহারে দলীয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম, দখল, চাদাবাজীর বিরুদ্ধে তাদের কর্মকান্ডের বিবরণ বা শপথ উল্লেখ থাকা উচিৎ । বাংলাদেশের বর্তমানে সব থেকে বড় সমস্যা দলের নামে চাদাবাজী, সন্ত্রাস, দখল কর্মকান্ড। ছ্যাচড়া চোর থেকে শুরু করে ক্ষমতার উচ্চ শিখরে থাকা ব্যাক্তিবর্গ এইসব কাজে লিপ্ত।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
নিজেদের কালো অধ্যায়গুলো ইশতেহারে লিখে দিলে জনগণ কি ভোট দিবে?
ধন্যবাদ।
৪| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: ইশতিহার হলো জনগনের সাথে প্রতারণা করা। জনগন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১:০৩
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
কেউ কোন কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে তা না করাটা অন্যায়।
শুছেচ্ছা নিরন্তর।
৫| ২৪ শে জুন, ২০২৩ রাত ৯:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: রাজনীতিবিদরা চোখ পাল্টি দেওয়াতে ওস্তাদ।
২৫ শে জুন, ২০২৩ রাত ১২:৫৭
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
সব রাজনীতিবিদ হয়তো সমান নয়।
অন্তত আমি তেমন রাজনীতিবিদ নই।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
৬| ২৫ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১০:১৫
নূর আলম হিরণ বলেছেন: দেশের গৃহবধুদের বেকার ধরলে বেকারত্বের হার কেমন হবে?
২৫ শে জুন, ২০২৩ বিকাল ৩:৪০
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
হিসাব করে বলতে হবে।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: নির্বাচন পার হয়ে গেলে, এসব ইশতেহারের কথা রাজনৈতিক দলগুলো মনেই রাখেনা, বাস্তবায়ন তো দূরের কথা।