নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

সত্যপথিক শাইয়্যান

আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে

সত্যপথিক শাইয়্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের মুসলিম স্বৈরশাসকরা কখনোই মেনে নেয় নাই

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩



বিবি ফাতেমা (আ) এবং মওলা আলী (আ)-এর উপর অত্যাচারের কাহিনী জানা আমাদের জন্যে কেন প্রয়োজন? কেন এতো দিন পরেও আমাদেরকে এই নিয়ে লিখতে হবে? কেন জাতিকে ভুলিয়ে দেওয়া সত্য কাহিনী জানাতে হবে? এর কিছু উত্তর আমি আজ দিতে চাই। যারা খোদার সৃষ্ট এই ভূমিতে ধর্মের নামে অরাজকতা করে এবং আগেও করেছেন, তাদেরকে খুব সাবধানে আমাদেরকে এড়িয়ে চলা শিখতে হবে। আর, তাদেরকে পরাজিত করতে বারে বারে আমাদেরকে এমন ইতিহাস থেকে চলতে হবে। মনে রাখবেন, দাজ্জাল একজন ধার্মিক মানুষের রূপ ধরে আমাদের কাছে আসবে।

মৃত্যু আমাদের নিয়তি। এটা যে কোন সময়ই আসতে পারে। কিন্তু, সেই মৃত্যুর ক্ষণকে যখন নিজেরাই ঠিক করে নিই, অন্য কোন মানুষকে নিজ হাতে যখন মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দেই, তখন ব্যাপারটি কেমন দাঁড়ায়? খুব জানতে ইচ্ছে করে, কোন ধরণের মানসিকতার কারণে এতোগুলো মানুষকে হত্যা করেছিলো পাকিস্তানী স্বৈরশাসকেরা। তারা কি তোষামোদ এবং বিবেক বিক্রয়ের মূল্য বাজারে বৃদ্ধি করতে আর সত্যপ্রীতি ও ন্যায়নীতি’র মূল্য হ্রাস করতে এমন করেছিলো? তারা কি বুঝেনি এরকম নীতি অবলম্বনে বিপদ মাথায় নিয়ে সত্য কথা বলার লোক হ্রাস পেতে থাকলে তা জনগণকে ভীরু এবং সুবিধাবাদী করে তুলে?

এসব অবশ্য নতুন কিছু নয় আধুনিক মুসলিম শাসকদের ক্ষেত্রে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, বিরুদ্ধবাদীদের উপর সব সময়ই খড়্গহস্ত ছিলেন এই ধরণের ক্ষমতালোভীরা। এই রকম কিছু ঘটনা আমি আজ তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

ইরাকের একটি শহর কুফা। তার গভর্নর যিয়াদ ছিলেন খুবই অত্যাচারী। একবার কোন তার অন্যায় আচরণের প্রতিবাদকালে ১২জন সঙ্গীসহ গ্রেপ্তার করা হয় হযরত হুজর (রাঃ)-কে। শুধু তাই নয়, মহানবী (সাঃ)-এর এই সঙ্গীকে হত্যা করা হয়। তাঁর এক সঙ্গী আবদুর রহমান ইবনে হাসসানকে জীবন্ত পুতে ফেলা হয়েছিলো।

জুলুম-নিপীড়নের এ ধারা পরবর্তীতে আরো প্রকট আকারে দেখা গিয়েছে মুসলিম শাসকদের মাঝে। জনগণের কন্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চলেছে অন্যায়ের স্টিম রুলার। মদীনার গভর্নর মারওয়ান ইবনুল হাকামের একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করে হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাঃ) বলেছিলেন- ‘আপনি অন্যায় কথা বলছেন’। ফলাফল? মারওয়ান হযরত মিসওয়ারকে লাথি মারেন।

আরেকবার জুমার খুতবাকে অস্বাভাবিক দীর্ঘ করায় মসজিদে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি এর প্রতিবাদ করেন। সাথে সাথে শাসনকর্তা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালেকের রাজকীয় দেহরক্ষী তাঁকে হত্যা করে।



মুসলিম শাসকরা প্রায়শই জনগণের উপর শাস্তির ক্ষেত্রে বাড়াবড়ি করে ফেলতেন। বসরার গভর্নর আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে গাইলান একবার মসজিদের ভিতর মিম্বারে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় একজন ব্যক্তি প্রতিবাদ স্বরূপ তাঁর দিকে পাথরের টুকরা ছুড়ে মারে। আবদুল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হাত কেটে ফেলেন। একই কারণে কূফার গভর্নর যিয়াদ ৩০ থেকে ৮০ জনের হাত কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ, ইসলামী আইনে এরকম কোন বিধান নেই।

ইয়ামানের গভর্নর বুসর ইবনে আরতাত যখন হামাদান দখল করে, তখন পূর্ববর্তী গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর দুই শিশুকে হত্যা করে। শুধু তা-ই নয়, সে ঐ নগরের গ্রেফতারকৃত মহিলাদের দাসীতে পরিণত করে। মুসলিমদের আরেক শাসক মিসর আক্রমণ করে দখল করে নেওয়ার পর সেখানের গভর্নর মুহাম্মাদ ইবনে আবু বকর (রা)-কে হত্যা করে মৃত গাধার চামড়ায় জড়িয়ে তাঁর লাশ পুড়িয়ে ফেলে।

এইসব শাসকেরা এতোটাই বাড়াবাড়ি করতো যে প্রতিবাদকারীদের শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হতো না, তাঁদের লাশকেও অবমাননা করতো। মহানবী (সাঃ)-এর নাতী হযরত হুসাইন (রাঃ)-এর মাথা দেহ থেকে ছিন্ন করে শহরে শহরে ঘুরানো হয়। শুধু তা-ই নয়, তাঁর লাশের উপর দিয়ে ঘোড়া পর্যন্ত চালিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) এবং তাঁর দুই সাথীরও একই পরিণত বরণ করতে হয়। তাঁদের কাটা মাথা মক্কা থেকে মদীনা, মদীনা থেকে দামেশকে নিয়ে স্থানে স্থানে প্রদর্শনী করা হয়। আর অবশিষ্ট দেহগুলোকে পচে-গলে যাওয়া পর্যন্ত শূলে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো।

উমাইয়াদের অত্যাচারী শাসক মারওয়ান তাঁর বিরুদ্ধবাদীদের সমর্থন করায় হযরত নুমান ইবনে যুবায়েরকে হত্যা করেই শান্ত হোননি, তাঁর মাথা দেহ থেকে কেটে ফেলে হযরত নুমানের স্ত্রী’র কোলে ছুড়ে ফেলেন।

ইয়াযীদের আমলে তাকে দুষ্কৃতকারী ও অত্যাচারী আখ্যা দিয়ে মদীনাবাসীরা একবার বিদ্রোহ করেছিলেন। ইয়াযীদ ১২ হাজার সৈন্য প্রেরণ করে মদীনা দখল করে শহরের অধিবাসীদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার চালানোর নির্দেশ দেয়। তার সৈন্যবাহিনী মদীনাতে ৭০০ সম্মানিত এবং ১০ হাজার সাধারণ নাগরিককে হত্যা করে। শুধু তা-ই নয়, তাদের অত্যাচারে মদীনার ১০০০ মহিলা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই সেই মদীনা যার সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) সাবধান করে বলেছেন যে, কেউ যদি মদীনার বিরুদ্ধে মন্দ কাজের ইচ্ছাও পোষন করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুনে শিশার মত গলিয়ে দেবেন। আর এই একই বাহিনীই কা’বা শরীফে পাথর নিক্ষেপ করে আগুন লাগিয়ে দেয়।



মুসলমানদের হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ বলে এমন এক শাসক ছিলো যার কুকীর্তি এতোটাই ব্যাপক ছিলো যে দুনিয়ার তাবৎ জাতি যদি তাদের কুকীর্তি নিয়ে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়, হাজ্জাজের কুকর্মের কাছে সেগুলো কিছুই না। প্রতিবাদ করায় দুই বুযর্গ ব্যক্তি’র ঘাড়ে মোহর অংকন করে দেয় এই অত্যাচারী। তার আমলে বিনা বিচারে আটক ১ লক্ষ ২০ হাজার ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। তার শাসনামলের শেষ দিকে ৮০ হাজার নাগরিককে বিনা বিচারে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিলো।

উমাইয়া গোত্রের এই অত্যাচারের পরিণতি ভালো ছিলো না। তাদেরকে শাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করা আরেক ভাওতাবাজ মুসলিম শাসকশ্রেণী আব্বাসীয়রা সিরিয়ার শহরে শহরে অত্যাচার চালায়। এক দামেশকেই ৫০ হাজার লোক নিহত হয় তাদের হাতে। মসজিদকে ঘোড়ার আস্তাবলে পরিণত করে এই শাসকগোষ্ঠী। মৃতদের কবরকে উপড়ে ফেলে দেহ আগুনে পুড়িয়ে ছাই ঊড়িয়ে দেওয়া হয়। শিশুদের হত্যা করে তাদের মৃতদেহের উপর কার্পেট বিছিয়ে খাদ্য গ্রহণ করতো আব্বাসী সৈন্যবাহিনী। মসজিদে ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় মুসলের হাজার হাজার মানুষকে। মেয়েদের করা হয় ধর্ষন।

দুঃশাসনের প্রতিবাদকারীদের ঠিকানা না বলে দেওয়ার কারণে এক আব্বাসী শাসক প্রতিবাদকারীদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের গ্রেফতার করে সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলামে তুলে। মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম ইবনুল হাসানকে দেয়ালে পিষে হত্যা করে। ইবরাহীম ইবনে আবদুল্লাহ’র শ্বশুরকে উলঙ্গ করে ১৫০ বার চাবুক মারা হয়। পরবর্তীতে প্রতিবাদকারী নফসে যাকিয়্যা ধরা পড়লে তাঁর শিরোচ্ছেদ করে মাথা শহরে শহরে প্রদর্শনী করা হয়। এমনকি বিখ্যাত বাদশাহ হারুন-অর-রশীদের স্ত্রী’র কাছের জনের বিরুদ্ধে একজন বিচারক রায় দিলে তাঁকে চাকরী পর্যন্ত হারাতে হয়।

এরকম ঘটনা আরও আছে! সময়াভাবে আজ লিখতে পারলাম না। পরিশেষে এটাই বলতে চাই,, ইসলামে স্বৈরাচারী এবং সামরিক সরকার নিষিদ্ধ হলেও যুগে যুগে এই ধরণের শাসকরাই বেশির ভাগ সময় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ভূমিগুলোতে শাসন করে এসেছে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীরাও এর ব্যতিক্রম ছিলো না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৫

নতুন বলেছেন: ধর্মীয় ঘটনা গুলি নিয়ে এমন কাহিনি অনেক আছে, কাহিনি আর সত্য ঐতিহাসিক ঘটনার মাঝে পার্থক্য আছে।

এই গুলি কি সত্য ঘটনা না কি কাহিনি।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৯

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


আপনি যদি বিখ্যাত ঐতিহাসিকদের লেখাগুলোকে অস্বীকার করতে চান, তাহলে আমার কিছু বলার নেই।

আমার লেখা এই ঘটনাগুলো আমি ক্রস চেক করে দেখতে পারেন।

ধন্যবাদ নিরন্তর।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ধর্মীয় পুরোনো কাহিনী নিয়ে পড়ে থাকব কেন?
উন্নত বিশ্বে কি এসব কাহিনী ছাত্রছাত্রীদের পড়ায়?

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:১৮

সোনাগাজী বলেছেন:




আমরা কেন আরব সাম্রাজ্যের সৃষ্টি, উহার সমস্যা, উহার সংস্কৃতি, উহার পতন নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছি? আমরা তো আরব জাতি নই। আমাদের জাতির ইতিহাস আছে, সংস্কৃতি আছে, আমাদের জাতির সমস্যা আছে, এগুলো নিয়ে আমাদের জীবন; অন্যদের ঝামেলা নিয়ে কেন আমরা ব্যস্ত হচ্ছি।

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:১০

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: এরকম অনেক কথাই অনেকে বলে। সব কথায় কান দিতে নেই। আর শিয়াদের কোন কথাতেই আমার কোন বিশ্বাস নেই। এ মিথ্যাবাদী চক্র যেকোন রকমের মিথ্যা কথা বলতে পারে। হযরত ওসমান (রা) কোরআনে গড়বড় করেছেন তারা এমন কথাও বলে। অথচ আল্লাহ নিজে কোরআনের হেফাজত কারী। তবে কি তারা বলতে চায় আল্লাহ কোরআনের হেফাজত কারী নন? এরা মিথ্যা কথা বলে মুসলিম গূণিজনকে হেয় করতে পারবে না, উল্টো জনগণ এদেরকে মিথ্যাবাদী বলে।

৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৮

সোবুজ বলেছেন: যে সাশক অন্যায় করে সে কখনো অন্যায়ের প্রতিবাদ মেনে নেয় না।
কে সত্যি কথা বলছে এটা নির্নয় করবে কে ।প্রত্যেকেই তার বিশ্বাস কে সত্যি বলছে।

৬| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১১

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: শৈশব থেকে সাহাবা কাহিনী পড়ে উত্তেজিত আছি। তাঁরা আমাদের অনুপ্রেরণা। সুতরাং সাহাবা বিরোধী মোনাফেকদের কথা বিশ্বাস করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। মুসলিম বিজয়ে মোনাফেকদের মনে অনেক কষ্ট ছিল। সেজন্য তারা মুসলিমদেরকে কষ্ট দিতে আহলে বায়াতের অতি পক্ষ নিয়ে সাহাবা বিদ্বেষে লিপ্ত হয় মুসলিমদের উত্তেজনা মাটি করতে। মাথামোটা ইরানীরা বিষয়টা না বুঝলেও বুদ্ধিমান বাঙ্গালী বিষয়টা বেশ বুঝে। সেজন্য তারা সাহাবা বিরোধী মোনাফেক দলে যোগদান করতে পারে না।

৭| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৪৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী কোরআন ও হানাফী মাযহাব ছাড়া ইসলামে আর কিছুই সহিহ নয়

সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।

সহিহ মুসলিম, ৪৬১৪ নং হাদিসের (কিতাবুল ইমারাহ) অনুবাদ-
৪৬১৪। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবি করিম (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্যতা করল সে আল্লাহর অবাধ্যতা করল। যে ব্যক্তি আমিরের আনুগত্য করে সে আমারই আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমিরের অবাধ্যতা করল সে আমারই অবাধ্যতা করল।

মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।

* সুতরাং ইসলামে কোন কিছু সহিহ হতে হলে তা’ আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক সংকলিত হতে হবে।

# কোরআন সংকলন করেছেন আমিরুল মুমিনিন হযরত ওসমান (রা.) এবং হানাফী মাযহাব সংকলন করেছেন আমিরুল মুমিনিন আল মাহদী, আল হাদী ও হারুনুর রশিদের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ইমাম আবু ইউসুফ (র.) ও তাঁর পরিষদ।আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক সংকলিত নয় বিধায় অন্য কোন মাযহাব বা হাদিসের কিতাব সহিহ নয়।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১১২ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১১২। হযরত আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন হে ওসমান (রা.)! আল্লাহ তা’আলা একদিন তোমাকে এ কাজের (খিলাফতের) দায়িত্ব অর্পণ করবেন। তখন মুনাফিকরা ষড়যন্ত্র করবে, যেন আল্লাহ প্রদত্ত জামা (খিলাফতের দায়িত্ব) তোমার থেকে খুলে ফেলতে পারে, যা আল্লাহ তোমাকে পরিয়েছেন। তুমি কখনো তা’ খুলে দেবে না। তিনি এ বাক্যটি তিন বার বললেন।

* হযরত ওসমানকে (রা.) একাজের দায়িত্ব দিয়েছেন আল্লাহ, একথা বলেছেন রাসূল (সা.), একথা বর্ণনা করেছেন উম্মুল মুমিনিন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।

রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ- মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।

* আব্বাসীয় খলিফা আল মাহদী, আল হাদী ও হারুনুর রশীদ এ দায়িত্ব পেয়েছেন রাসূলের (সা.) দোয়ায়। কথাটা বলেছেন, আমিরুত তাফসির রাসূলের (সা.) চাচাত ভাই হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)।আব্বাসীয় খলিফা আল মাহদী, আল হাদী ও হারুনুর রশীদ তাঁর বংশধর।

সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।

# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।

# সহিহ আল-বোখারী

সহিহ আল বোখারী, ৪৫৩২ নং ৪৫৩৩ নং হাদিসের (তাফসীর অধ্যায় – ৬২. সূরা আল জুমুআ) অনুবাদ
৪৫৩২। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুআ অবতীর্ণ হল – যাতে এও আছে ‘আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’। তিনি বলেন, তারা কারা হে আল্লাহর রাসূল! তিনবার একথা জিজ্ঞেস করার পরও তিনি এ কথার কোন জবাবই দিলেন না। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) হাজির ছিলেন। নবি করিম (সা.) তার উপর হাত রেখে বললেন, ঈমান ছূরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও অনেক ব্যক্তিই কিংবা যে কোন একজন তা’ পেয়ে যাবে।
৪৫৩৩। আবু হুরায়রা (রা.) নবি (সা.) হতে বর্ণনা করে বলেন, এদের কিছু লোক তা’অবশ্যই পেয়ে যাবে।

# সহিহ মুসলিম

সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।

সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।

# সহিহ তিরমিযী

সহিহ তিরমিযী, ৩৮৬৮ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৮৬৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন সূরা আল-জুমুআ অবতীর্ণ হয় এবং তিনি তা’ তেলাওয়াত করেন। তিনি ‘ওয়া আখারিনা মিসহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম- আর তাদের অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি’ পর্যন্ত পৌঁছলে এক ব্যক্তি তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এসমস্ত লোক কারা, যারা এখনো আমাদের সাথে মিলিত হয়নি? তিনি তাকে কিছুই বললেন না। সালমান আল –ফারসী আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের হাতখানা সালমানের (রা.) উপর রেখে বললেন সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! ঈমান সুরাইয়া তারকায় থাকলেও এদের কিছু লোক তা’ নিয়ে আসবে।

সহিহ তিরমিযী, ৩২৪৮ নং হাদিসের (তাফসীরুল কোরআন – সূরা আল-জুমুয়া) অনুবাদ-
৩২৪৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সূরা আল-জুমুয়া অবতীর্ণ হওয়াকালে আমরা রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকটেই ছিলাম।তিনি তা’ তেলাওয়াত করেন।তিনি ‘আর তাদের অন্যান্যদের জন্যও যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি’ (৬২,৩) পর্যন্ত পৌঁছলে এক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা এখনো আমাদের সাথে মিলিত হয়নি তারা কারা? নবি করিম (সা.) তার কথায় চুপ রইলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন সালমান (রা.) আমাদের সাথেই ছিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) সালমানের (রা.) উপর হাত রেখে বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন! ঈমান যদি সুরাইয়্যা নক্ষত্রেও থাকে তবুও তাদের মধ্য হতে কিছু লোক তা’ নিয়ে আসবে।

# হযরত সালমান আল ফারসি (রা.)

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৪৯ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৪৯। হযরত কাঈসামা ইবনে সাবরা (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদীনায় এসে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন। অতএব তিনি আবু হোরায়রাকে (রা.) আমার ভাগ্যে ঝুটিয়ে দিলেন। তাঁর পাশে বসে আমি তাঁকে বললাম, আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে ছিলাম, তিনি যেন আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দেন।অতএব আপনি আমার জন্য সহজলভ্য হয়েছেন।তিনি (আমাকে) জিজ্ঞাস করেন তুমি কোথা হতে এসেছ? আমি বললাম, আমি কুফার অধিবাসী। আমি ভালোর খোঁজে এসেছি এবং তাই খুঁজছি। তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে কি সাদ ইবনে মালেক (রা.) যার দোয়া কবুল হয়, রাসূলুল্লাহর (সা.) অযুর পানি ও জুতা বহনকারী ইবনে মাসউদ (রা.), রাসূলুল্লাহর (সা.) গোপন তথ্যের খাজাঞ্চী হোযায়ফা (রা.), আমারা যাকে আল্লাহর নবির (সা.) ভাষায় আল্লাহ শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং দুই কিতাবধারী সালমান (রা.) প্রমুখ সাহাবীগণ বিদ্যমাণ নেই? কাতাদা বলেন দুই কিতাব হলো, ইঞ্জিল ও কোরআন।

সহিহ তিরমিযী, ৩৭৩৪ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭৩৪। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জান্নাত তিনজন লোকের জন্য আগ্রাহান্বিত, আলী, আম্মার ও সালমান (রা.)।

সহিহ বোখারী ৪৯৯ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৯৯। হযরত যুহুরী (র.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দামেশকে আনাস ইবনে মালেকের (রা.) নিকট গিয়ে দেখতে পেলাম, তিনি কাঁদছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমি যা যা দেখেছি তার মধ্যে এ নামাযই আজ পর্যন্ত অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু এখন নামাজও নষ্ট হতে চলেছে।

* ইসলাম সাহাবা যুগেই বিনষ্ট হয়েছে। বিনষ্ট ইসলাম পৃথিবীতে থেকে প্রকৃত ইসলাম সুরাইয়্যা নক্ষত্রের নিকট চলেগেছে। সেখান থেকে প্রকৃত ইসলাম পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনেন হযরত সালমান ফারসির (রা.) কুফা এলাকার তাঁরমত অনারব ও পারসিক সন্তান ইমাম আবু হানিফা (র.)। এ তালিকায় আর কারো নাম উপস্থাপিত হয়নি। সুতরাং হানাফী মাযহাব প্রাপ্তির উৎস এবং এর সংকলক ও নির্দেশ দাতা সবাই সহিহ।

অন্যান্ন মাযহাব ও হাদিসের কিতাবের উৎস বিনষ্ট ইসলাম বিধায় সেগুলো সহিহ হওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে ইজমা থাকলেও সেই ইজমা কোরআন ও হাদিস বাতিল করে দিয়েছে। আর কোরআন ও হাদিস বাতিল করলে কোন ইজমা বিধান হিসাবে বিদ্যমান থাকে না।সেই ইজমা তখন বাতিল হয়ে যায়।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৫ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৫। হযরত এমরান ইবনে হুছাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো আমার যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা।এমরান বলেন রাছুলুল্লাহ (সা.) তাঁর যামানার পর দু’ যামানার উল্লেখ করেছেন, না তিন যামানার উল্লেখ করেছেন ত’ আমার সঠিকভাবে মনে নেই।এরপর তোমাদের পর এমন কিছু লোকের আবির্ভাব যারা সাক্ষ্য দান করবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা বিশ্বাস ঘাতকতা করবে। সুতরাং তাদেরকে কখনও বিশ্বাস করা যাবে না। তারা খুবই মোটা সোটা ও হৃষ্টপুষ্ট দেহের অধিকারী হবে।

সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।

* যে সব হাদিসের কিতাবকে সহিহ দাবী করে গাধার মত চিৎকার দেওয়া হয়। সেসব হাদিসের কিতাব বিশ্বাস ঘাতক যুগে বিশ্বাস ঘাতক থেকে হাদিস শুনে বিশ্বাস ঘাতক সংকলন করেছে। কোরআন সেসব কিতাবকে সহিহ নয় সাব্যস্ত করে।

সূরাঃ ৬ আনআম, আয়াত নং ১৫৩ এর অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।

* কোরআন বিভিন্ন পথ অনুসরন করতে নিষেধ করেছে। হাদিসের কিতাব সমূহ বিভিন্ন পথ দেখায় বিধায় এগুলো সহিহ নয়।

# বোখারী

* আছরের নামাজের পর নামাজ পড়া

সহিহ বোখারী ৫৫৩ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৫৩। হযরত আবু হুরাইরা (রা.)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) দু’টি নামাজ থেকে নিষেধ করেছেন, ফজরের নামাজের পর সূর্য উঠার পূর্বে এবং আছরের নামাজের পর সূর্য অস্তমিত হওয়ার পূর্বে।

সহিহ বোখারী ৫৫৭ নং হাদিসের (সালাতের ওয়াক্ত সমূহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৫৭।হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন রূপেই রাসূলুল্লাহ (সা.) দু’ রাকা’আত নামাজ পড়া ছাড়তেন না। আর তা’ হল, ফজরের নামাজের পূর্বে দু’ রাক’আত এবং আছরের পরে দু’ রাক’আত।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# মুসলিম

* জুমুয়ার নামাজের পরের নামাজ

সহিহ মুসলিম, ১৯০৮ নং হাদিসের (জুম’আর নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯০৮। হযরত আবু হুরায়রা কর্তৃক বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন জুম’আর নামাজ আদায় করে, তখন সে যেন তার পরে চার রাক’আত নামাজ আদায় করে।

সহিহ মুসলিম, ১৯১৭ নং হাদিসের (জুম’আর নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯১৭। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত।নবি করিম (সা.) জুম’আর পর দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# আবুদাউদ

* নামাজির সামনে দিয়ে কোন কিছু অতিক্রম করা

সহিহ আবুদাউদ, ৭০৪ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৭০৪। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ সুতরা ছাড়া নামাজ পড়ে এবং তখন তার সামনে দিয়ে কুকুর, গাধা, শূকর, ইহুদী, অগ্নি উপাসক, এবং মহিলা যাতায়াত করলে তার নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায়। অপর দিকে পাথর নিক্ষেপের সীমার বাইরে দিয়ে গমন করলে তাতে মুসল্লীর নামাজের কোন ক্ষতি হবে না।

সহিহ আবুদাউদ, ৭১৯ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৭১৯। হযরত আবু সাঈদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোন কিছু নামাজের সামনে দিয়ে গমনের কারণে নামাজের কোন ক্ষতি হয় না, তবে তোমরা যথাসম্ভব এরূপ করতে বাধা দিবে। কেননা অতিক্রমকারী একটা শয়তান।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# ইবনে মাজাহ

* যোহরের নামাজ বিলম্বে পড়া

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৬৭৬ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
৬৭৬। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট প্রচন্ড গরমের অভিযোগ পেশ করলাম। অথচ তিনি আমাদের আবেদন গ্রহণ করেননি।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৬৮১ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
৬৮১। হযরত ইবনে ওমর (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন তোমরা যোহরের নামাজ বিলম্বে আদায় করবে।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# নাসাঈ

* রফেউল ইয়াদাইন

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ১০৫৮ নং হাদিসের (নামাজ আরম্ভ করা অধ্যায়) অনুবাদ-
১০৫৮। হযরত ওয়ায়িল ইবনে হুজর (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি রাছুলুল্লাহর (সা.) পিছনে নামাজ আদায় করেছি। আমি তাঁকে দেখেছি তিনি হাত উঠাতেন যখন নামাজ আরম্ভ করতেন, আর যখন রুকু করতেন, এবং যখন ‘সামিয়াল্লাহুলিমান হামিদাহ’ বলতেন। এরূপে কায়স উভয় কানের দিকে ইঙ্গিত করলেন।

সহিহ সুনানে নাসাঈ, ১০৬১ নং হাদিসের (নামাজ আরম্ভ করা অধ্যায়) অনুবাদ-
১০৬১। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের নিয়ে রাসূলুল্লাহর (সা.) ন্যায় নামাজ আদায় করব না? এরপর তিনি নামাজ আদায় করলেন, তখন তিনি একবারের অধিক হাত উঠাননি।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# তিরমিযী

* আজান ও ইকামতের বাক্য সংখ্যা

সহিহ তিরমিযী, ১৮৫ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৮৫। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণিত। তিনি বলেন, বিলালকে (রা.) আযানের শব্দগুলো দু’বার এবং ইকামতের শব্দগুলো এক একবার বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সহিহ তিরমিযী, ১৮৬ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৮৬। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর আযান ও ইকামতের বাক্যগুলো জোড়ায় জোড়ায় ছিল।

* এখানে বিভিন্ন পথ দেখানো হয়েছে। এটা কোরআনের পরিপন্থি। আর কোরআনের পরিপন্থি কোন কিতাব সহিহ হতে পারে না।

# হাদীসের কিতাব সমূহে এমন কোরআন পরিপন্থি বিভিন্ন পথ দেখানো হাদিস আছে হাজারে হাজারে। তাহলে এগুলো আর সহিহ হয় কেমন করে? এসব কিতাবের সেসব হাদিস সহিহ যে গুলো কোরআন এবং হানাফী মাযহাবের গরমিল নয়। তারমানে হানাফী মাযহাবের সাথে গরমিল কোন হাদিস সহিহ হওয়া সম্ভব নয়।

সূরাঃ ৪৯ হুজরাত, ৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। হে মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা নিয়ে আসে, তোমরা তা’ পরীক্ষা করে দেখবে, পাছে অজ্ঞতা বশত তোমরা কোন সম্প্রদায়েকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করে বস এবং তোমাদের কৃতকর্মের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্ত হতে হয়।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* আল্লাহ বলেছেন বার্তা পরীক্ষা করতে হবে। রাসূল (সা.) বলেছেন বার্তা পরীক্ষা করতে হবে উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের মতের সাথে মিল করে। সুতরাং ফিকাহ বা হাদিসের বার্তা উম্মতের সর্ববৃহৎ দলের মতের সাথে মিল না হলে সহিহ সাব্যস্ত হবে না। সুতরাং অহানাফী মাযহাব ও হাদিসের কিতাব সমূহের যা হানাফী মাযহাবের সাথে গরমিল তা’ সহিহ নয়। এখন কথা হলো হানাফী মাযহাব কোথায় পাবেন? এর উত্তর হলো তা’ ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের আমলে পাবেন। আর তাদেরকেও কোরআন ও হাদিস সহিহ সাব্যস্ত করে।

# ইমাম

সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।

সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।

সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।

সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।

* অনুসরনের জন্য মুত্তাকীদের দীনের যামিনদার ইমাম নিযুক্ত করা হয়। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই উম্মত এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। তাঁরা হানাফী বিধায় হানাফী ইমামগণের সর্ববৃহৎ দলের অনুসারী হওয়া সকল মুসলিম ও মুছল্লীর জন্য ফরজ। বর্তমান ইসলামী ব্যাংকিং ও বীমায় তাঁদের আপত্তি না থাকায় সেটাও হানাফী মাযহাব এবং সহিহ। সুতরাং প্রকৃত ইসলাম হলো কোরআন ও হানাফী মাযহাবের অনুসরন আর সেজন্যই ৮০% মুসলিম কোরআন ও হানাফী মাযহাবের অনুসারী। জনসংখ্যায় দ্বিতীয় বৃহত্তম হানাফী মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান প্রথম। আয়াতনে সর্ববৃহৎ হানাফী মুসলিম দেশ হলো কাজাখস্তান এবং এরপর সুদান। কিন্তু সৌদি আরব একমাত্র সালাফী মুসলিম রাষ্ট্র। তারা সঠিক নাকি আমরা সঠিক? হুজুরগণ বলতেন তারা তাদের মতে সঠিক আমরা আমরা আমাদের মতে সঠিক। আমাদের মত কতটা সঠিক? যাচাই করে দেখলাম আমাদের মত ১০০% সঠিক।সুতরাং আমাদের মতের সাথে তাদের গরমিল মত ১০০% বেঠিক।

সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।

# সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের তাফসির - তাফসিরে ইবনে কাছির
১০৫। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে যে, মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) হজ্জের উদ্দেশ্যে মক্কায় আসেন। যোহরের নামাজের পর তিনি দাঁড়িয়ে বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আহলে কিতাব তাদের ধর্মের ব্যাপারে মতানৈক্য সৃষ্টি করে ৭২ দল হয়ে গেছে। আর আমার এ উম্মতের ৭৩ দল হয়ে যাবে।অর্থাৎ সবাই প্রবৃত্তির অধীন হয়ে পড়বে।কিন্তু আরো একটি দল রয়েছে এবং আমার উম্মতের মাঝে এমন লোকও হবে যাদের শিরায় শিরায় কূপ্রবৃত্তি এমনভাবে প্রবেশ করবে যেমন কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শিরায় শিরায় বিষক্রিয়া পৌঁছে যায়। হে আরববাসী! তোমরাই যদি তোমাদের নবি (সা.) কর্তৃক আনিত জিনিসের উপর প্রতিষ্ঠিত না থাক, তবে অন্যান্য লোক তো আরও অনেক দূরে সরে পড়বে।

* কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে আরববাসী তাদের নবি (সা.) কর্তৃক আনিত জিনিসের উপর প্রতিষ্ঠিত নেই, সেজন্য তারা হানাফী রাষ্ট্র ছেড়ে সালাফী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। নতুবা তাদের রাষ্ট্রও হাজার বছরের বেশী সময় হানাফী রাষ্ট্রই ছিল। এরপর সৌদি রাজ বংশ তাদেরকে সঠিক পথ থেকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করছে।

সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪০৮৪ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৪০৮৪। হযরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট তিনজন নিহত হবেন। তাদের প্রত্যেকেই হবেন খলিফার পুত্র। এরপর সেই ধনাগার তাদের কেউ পাবেন না। প্রাচ্য দেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হবে । তারা তোমাদের এমনভাবে হত্যা করবে, যেমনটি ইতিপূর্বে কোন জাতি করেনি। অতঃপর তিনি আরো কিছু উল্লেখ করেছিলেন, যা আমার মনে নেই। আর তিনি এও বললেন, যখন তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে, তখন তাঁর হাতে বায়াত গ্রহণ করবে, যদিও তোমাদের বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে অতিক্রম করতে হয়। কেননা তিনি আল্লাহর খলিফা মাহদী।

সহিহ তিরমিযী, ২২১৫ নং হাদিসের (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়) অনুবাদ-
২২১৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীগণ বের হবে (মাহদীর সমর্থনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস) এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা’প্রতিহত করতে পারবে না।

* পাইকারী হত্যার মাধ্যমে আরববাসীকে আবার পরিশুদ্ধ করবেন খোরাসানের বরফ পড়া দেশের ইমাম মাহদী। খোরাসানের দেশ আফগানিস্তান থেকে তাজিকিস্তানে বরফ বেশী পড়ে বিধায় আমার মনে হয় ইমাম মাহদী তাজিকও হতে পারেন।তবে খোরাসানের সব দেশ হানাফী। ইরান এর কিছু অংশ পেয়েছে। কিন্তু ইরানে তেমন বরফ পড়ে বলে মনে হয় না।বরফ পড়া সেরা দশ দেশের একদেশ কাজাখস্তান রয়েছে তাজিকিস্তানের নিকটে। সেটাও হানাফী রাষ্ট্র। তবে সেটা খোরাসান অঞ্চলের দেশ নয়। খেরাসানের উজবেকরাও হানাফী।

# আমি অন্তত ১০০০ আয়াত ও দুইহাজার হাদিস দিয়ে হানাফী মাযহাব সহিহ প্রমাণ করতে পারি –ইনশাআল্লাহ।

সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-
১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।

* হাজার হাজার আয়াত ও হাদিস দ্বারা হানাফী মাযহাব এখন মুমিনদের পথ হিসাবে প্রমাণিত। সুতরাং যারা সেপথ ছেড়ে অন্য পথের অনুসারী আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামে দগ্ধ করবেন। সুতরাং কেউ জান্নাতে যেতে চাইলে তাদেরকে হানাফীদের পথে আসতেই হবে। এছাড়া জান্নাতের বিকল্প কোন রাস্তা নেই।হানাফী নিয়ম ছাড়া অন্য নিয়মে ইবাদত করলে তা’ আল্লাহর দরবারে গৃহিত হবে না। তাও আমি কোরআন ও হাদিস দ্বারা সহিহ প্রমাণ করতে পারি -ইনশাআল্লাহ।

৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১:০৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: অমুসলিম শাসনে কি হয় আমরা ভারতে সেটা দেখছি। ৭৬ জন মুসলিম শাসক আমাদেরকে বহুকাল মুসলিম শাসন উপহার দিয়েছেন এটাও তো অনেক কিছু। রুশরা মুসলিম দেশগুলো নিয়ে কি করেছে সেটা আমরা জানি, এখনো চীন-রাশিয়া মুসলিম অঞ্চল নিয়ে কি করে আমার সেটা জানি। মিয়ানমার রহিঙ্গা নিয়ে কি করেছে বা করছে সেটাও আমাদের অজানা নয়। আর রাজনীতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আন্ত কোন্দল হয় সেটাও আমরা জানি। সুতরাং সবার আগে আমরা চাই মুসলিম শাসন। আর শাসন ক্ষমতা কোন কালেই কেউ কারো মুখে তুলে দেয়নি। তো যোগ্যতার অভাবে আহলে বায়াত শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিতে না পারলে তাতে কার কি করার থাকে?

৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৮

অগ্নিবেশ বলেছেন: সনেট চাচা, সুতরাং সবার আগে আমরা চাই মুসলিম শাসন। এই মুসলিম শাসন জিনিসষটা কি? একটু বিবরন দিবেন?

১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: @ অগ্নিবেশ- মুসলিম শাসন মানে মুসলিম শাসকদের শাসন। যেমন ভারতে খ্রিস্টান শাসন, হিন্দু শাসন ও মুসলিম শাসনের মধ্যে মুসলিমরা মুসলিম শাসনেই ভাল ছিল। সুতরাং মুসলিম শাসনই মুসলিমদের জন্য উপকারি। কিন্তু শিয়ারা চায় নবি (সা) পরিবারের লোকদের শাসন। এটা আবার হয় নাকি? শেখ হাসিনা অনেক কষ্ট করে ক্ষমতা পাওয়ার পর নবি (সা) পরিবারের লোক ডেকে তাদেরকে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিবে নাকি? এখন নবি (সা) পরিবারের লোক এসে শেখ হাসিনার ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইলে শেখ হাসিনা তাদেরকে আদর করবে নাকি? নবিকে (সা) তো শেখ হাসিনাও নবি মানে। অতীতেও এমনটাই ঘটেছে যে ক্ষমতা কব্জা করতে পেরেছে সে’ই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকতে চেয়েছে। যে সেটা কেড়ে নিতে এসেছে তাকেই তারা ঘাড় মটকে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে এরা নবি (সা) পরিবারের সদস্য এটা কেউ বিবেচনা করেনি। যদি নবি (সা) পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতা না চাইতো তবে শাসকরা তাদেরকে আদরে সমাদরেই রাখতো। এ সহজ কথাটা শিয়ারা না বুঝেই পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। একমতা এমন জিনিস যে মহা বুড়া হাফিজ্জী হুজুর পর্যন্ত ভোটে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি তাঁর সভায় গিয়ে দেখলাম, বেচারা নিজে মোটে দাঁড়াতেই পারছে না। কয়েক জনে মিলে তাঁকে দাঁড় করাচ্ছে। এখন জনগণ যদি হুজুরদেরকে ক্ষমতার যোগ্য মনে না করে তাহলে কি আর করা যায়? আহলে বায়াতের ক্ষেত্রেও তেমটাই ঘটেছে। জনগণ তাঁদেরকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে ক্ষমতার অধিক যোগ্য মনে করেছে। ইয়াজিদের সৈন্যরা তো পক্ষ ত্যাগ করে আমাম হোসেনের (রা) দলে আসতে পারতো। কই তারাতো নবির (সা) সাতির প্রতি সেঈ সৌজন্য দেখাতে পারেনি। তারা উল্টা স্বর্থের জন্য তীর মেরে তাঁকে রক্তাক্ত করেছে। ইরানী শিয়ারা কষ্ট করেছ্ েএখন তারা ক্ষমতা পেয়েছে। আসলে ক্ষমা এমনই এটা কোন অক্ষমের পক্ষে থাকে না। এটা যে ছিনিয়ে নিতে পারে এটা চিরকাল তাদের কথাই বলে।

১১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৫

বিটপি বলেছেন: ইয়াজীদ ইবনে মুয়াবিয়া এবং হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ - এদেরকে যদি মুসলিম বলা হয়, তাহলে তাবৎ মুসলিমদের সাথে অন্যায় করা হবে। মুসলিমের কোন ডেফিনিশন এরা কোয়ালিফাই করেনা। এর নামাজ রোজার ধার ধারতোনা, সব সময় মদ নিয়ে পড়ে থাকত। সবচেয়ে বড় কথা এই দুজন রাসূল (স) এর ওয়ালিদানের শানে সীমাহীন বেয়াদবী করত। তবে এই দুজনের কাছে সামান্য হলেও ইসলামী দুনিয়া ঋণী। ইয়াজীদের নেতৃত্বে কন্সটান্টিনোপল অভিযানের কারণেই বিশাল তুরস্ক এবং তার আশপাশের অঞ্চল মুসলিম নিয়ত্রাণাধীনে আসে। হাজ্জাজ বিন ইউসুফের আদেশে তার জামাতা মুহাম্মদ বিন কাসিম সিন্ধু অভিযানের মধ্য দিয়ে ভূ ভারতে ইসলামের সূর্যোদয় ঘটে। কিন্তু এইগুলো তাদের কূকীর্তি ঢাকার জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রা) কে কোলে নিয়ে রাসূল (স) তার কপালে চুমু দিয়ে বলেছিলেন, যে আবদুল্লাহকে কষ্ট দেব, সে আমাকে কষ্ট দেবে। হাজ্জাজের অপশাসনের প্রতিবাদ করায় পাষন্ড হাজ্জাজ তাকে হত্যা করে লাশ কাবা চত্বরে সাত দিন পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখেছিল।

আপনি যদি মুসলিম শাসক হিসেবে এদের দেখাতে চান, তাহলে মুদ্রার বিপরীত পাশটাও দেখাতে হবে। খলিফা হিসেবে উমর ইবনে আবদুল আজীজ, হারুনুর রশীদ, মামুনুর রশীদ, জুবাইদা - এরা কেমন ছিল - সে সম্পর্কেও আলোচনা করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.