নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
অনেক ধনী ব্যক্তিই নিজের সাফল্যের পিছনের কাহিনী গোপন রেখে দেন। অন্য কোন মানুষকে নিজের সাফল্যের সূত্রটি শোনাতে চান না। তাঁরা বলেন- 'এদেরকে গরীব রেখে দাও!'
আমি জীবনে অনেক ধাক্কা খেয়েছি। জীবনে অনেকবার অর্থনৈতিক ভাবে দূর্দশাগ্রস্থ হয়েছি। আমাকে একবার শুধু আলু খেয়ে থাকতে হয়েছিলো। বন্ধু সেজে কাছে এসে পিছনে ছুরি মেরেছে, এমন ঘটনাও আমার জীবনে ঘটেছে। কিন্তু, কখনো সেইসব মানুষ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পর্যন্ত করিনি। কারণ, আমি এরকমই! মানুষকে বিশ্বাস করা আমার জন্মগত স্বভাব।
বেশির ভাগ মানুষই জীবনে সব সময় ভালো থাকতে চান। অথচ, এটা হওয়া সম্ভব নয়। অন্য অনেকের মতোই আমিও এরকম চিন্তার ফাঁদে পড়েছিলাম। সব সময়ই ভালো থাকতে চাইতাম। আমি জানতাম না- আধ্যাতিকতা অর্থ মানে শুধু ভালো হবে তা নয়, জীবনে মাঝে মাঝে মন্দের দেখা পাওয়াও আধ্যাত্মিকতার অংশ। সাফল্য লাভ বা অসাফল্যের মুখোমুখি হওয়াও এর বাইরে নয়।
বেশির ভাগ দরিদ্র মানুষই টাকা-পয়সার অভাবে দারিদ্রতার মুখোমুখি হয়। কিন্তু, আমি এমন একটি বংশে জন্মে নিয়েছি, যারা সত্যিকার অর্থে, মানসিক ভাবে দরিদ্র। আপনি কি বুঝতে পারছেন আমি আসলে কি বলতে চাচ্ছি?
ধনী-গরীব, উচু-নিচু শ্রেণীর ভেদা-ভেদ এইসব কিছুই মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। কারা মধ্যম আয়ের লোক আর তাঁদেরকে কেমন ভাবে চলতে হবে, তা আমি আমার পরিবার থেকেই শিক্ষা প্রাপ্ত হয়েছি।
যেসব তরুণ-যুবক ঘরে বসে রয়েছেন, জীবনে কি করতে হবে বুঝতে পারছেন না, বা টাকার অভাবে কোন কিছু করতে পারছি না- এমন চিন্তাধারায় আক্রান্ত-----তরুণদের বলছি, এগুলো আপনাদের শিখানো হয়েছে। চাকরী পেতে কঠোর পরিশ্রম করো বা ধনী ব্যক্তিরা ভালো লোক নয় - একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, এমন চিন্তার সূতিকাগার আপনার পরিবার।
আমাদের স্কুলগুলো কখনোই কিভাবে টাকা আয় করতে হবে তা শেখায় না। আমাদের শিক্ষালয়গুলোতে কিভাবে একজন কর্মচারী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা আইনজীবি হতে হয়, তা শিক্ষা দেওয়া হয়। এটা যদিও আমাদের জীবনের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু, এই শিক্ষার অসারতার দিকটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। কারণ, আমাদের স্কুলগুলোতে কিভাবে টাকা আয় করতে হয় তা শিক্ষা দেয় না! আমি অন্ততঃ সেই শিক্ষা পাইনি।
আমাকে হয়তো জিজ্ঞাসা করা হবে, আপনি যে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বলছেন, আপনার বাবাও তো এই একই শিক্ষা ব্যবস্থাতে বড় হয়ে ধনী হয়েছেন। আসলে, আমার বাবা আমার দাদা'র ১৩ ছেলে-মেয়ের পরিবারে পড়া-লেখার ক্ষেত্রে খুব একটা সহযোগিতা পাননি। জীবনে নিজের বৃত্তির টাকা জমিয়েই পড়া-লেখা করেছেন। পড়া-লেখা করতে কষ্ট করতে হয়, সেই ভাবনা তাঁর মনে এমন ভাবে গেড়ে গিয়েছিলো যে, আমার ছোট ভাইকে একবার নাইট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন।
আমার বাবা'র সেই শিক্ষা হয়তো আমাদের জন্যে আশির্বাদ হয়েই দেখা দিয়েছিলো। আসলে, মাঝে মাঝে, আমাদের মধ্যে এমনসব জিনিস আশির্বাদ বয়ে নিয়ে আসে, যা বাইরে থেকে দেখলে সেইসব জিনিসকে আশির্বাদ হিসেবে মনে হয় না। আমার নাইট স্কুলে পড়া ভাইটা এখন যুক্তরাজ্যের একটি আই,টি কোম্পানী'র চিফ টেকনোলোজি অফিসার। ঢাকার একটি অখ্যাত কলেজে পড়া আমি এখন একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানী'র বাংলাদেশ পার্টনার হিসেবে ব্যবসা করছি। ঢাকার একটি অখ্যাত স্কুলে পড়া আমার আরেক ছোট ভাই একজন চিকিৎসক।
আমার বাবা শিক্ষক হিসেবে তাঁর বাবার আর্থিক কষ্টকে পেয়েছিলেন। তাই, তাঁর ছেলেরা এভাবে বড় হয়েছে। আর, আমি শিক্ষক হিসেবে
স্কুলে যাদের পেয়েছি, তাঁরা ছিলেন একেকজন শিক্ষক নামের কলংক। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, আমি একবার আমার শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেছিলাম- ''এই যে ক্যালকুলাস শিখছি, এটা আমার কি কাজে লাগবে?''
আমার শিক্ষক চোখ লাল করে তাঁর সামনের টেবিলকে দেখিয়ে বললেন- ''এইটার নিচে মাথা নিচে মাথা দিয়ে বল, গতকালকে পড়ানো 'এ প্লাস বি হোল স্কোয়ার'-এর সূত্র মুখস্থ করেছিস কি না?''
আমি টেবিলে মাথা ঢুকিয়ে আবারো প্রশ্ন করলাম- ''স্যার, এটা কি আমার কোন কাজে লাগবে?''
তিনি বলেছিলেন- ''না।''
''তাহলে, আমাদেরকে এটা পড়াচ্ছেন কেন!''
তাঁর উত্তর ছিলো- ''কারণ, আমি এটা পড়ানোর জন্যেই বেতন পাই।''
আপনার জীবনে অনেক ধরণের শিক্ষক পাবেন। আপনাকেই খুঁজে নিতে হবে- তাদের মাঝে কে নকল আর কে আসল। নকল শিক্ষকেরা যা বলেন তা নিজে করেন না। একজন আসল শিক্ষক সেটাই করেন যা তিনি অন্য মানুষকে করতে বলেন।
আমি প্রতিটি দিন আমার কাজ করে যাচ্ছি। আমার যেমন একাউন্টেন্ট আছেন, ঠিক তেমনি আছেন একজন আইনজীবি। সর্বোপরি, আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আমরা একটি দলের মতো কাজ করে যাচ্ছি।
কিন্তু, সবাই আপনাকে এটা বলবে না। অনেক ধনী এই কথাগুলো লুকিয়ে রাখবেন। দরিদ্রতা আসলে মানসিক সমস্যা। আমাদের মানসিকতাই আমাদের দরিদ্র করে রাখে।
আমরা যা চিন্তা করি তা পরবর্তীতে আমাদের রক্ত-মাংসে মানুষে পরিণত করে। 'আমি গরীব', 'আমার এটা করার সাধ্য নেই'- এই শব্দগুলোর দিকে একবার দৃষ্টি দিয়ে দেখুন। আমার বাবা যদি নিজের কষ্টের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকতেন, তাহলে নিজের ছেলেদের ধনী বানিয়ে যেতে পারতেন না।
দরিদ্র মানুষেরা বলে- 'আমি এই কাজ করতে পারবো না', 'এটা করার মতো এতো টাকা আমার নেই' ----এটা আসলে এক ধরণের আত্ম-সমর্পন, জীবনের সকল বাধা দেখে পালিয়ে যাওয়া। 'এটা করার মতো সাধ্য আমার নেই'- বলাটা আসলে খুব সোজা বলেই দরিদ্র মানুষেরা তা করে।
আসলে, আমার বাবা যদি তাঁর জীবনের প্রথম দিকের ধাক্কার কাছে আত্ম-সমর্পন করে আমাদের ঘরে বসিয়ে রাখতেন, তাহলে কি হতো? আমাদেরকে যদি উচ্চ শিক্ষার জন্যে বিদেশ না পাঠাতেন, তাহলে আমাদের কি হতো?
আসলে, তিনি জীবন যুদ্ধে আত্ম-সমর্পন করেননি। 'এটা করার মতো এতো টাকা আমার নেই'- এই কথাটি জীবনে বলেননি। বরং, বলেছেন- 'আমি কিভাবে আমার সীমিত আয়ের মাঝেও তোমাদের সাহায্য করতে পারি'।
জীবনের এই কোলাহলে, কিছু কিছু চিন্তা আমাদের স্বত্বাকে প্রসারিত হতে দেয় না। আমাদের চিন্তাকে জট পাকিয়ে ফেলে। 'আমার কিছু নেই', 'আমি কিছু করতে পারবো না'----এমন চিন্তা আমাদেরকে বুদ্ধিহীন জড় পদার্থে পরিণত করে। কিছু প্রশ্ন, আমাদের চিন্তাকে প্রসারিত করে, আবার কোন কোনটি চিন্তার গতিকে থামিয়ে দেয়।
ফুটবল একটি টিম গেইম। ক্রিকেটও তা-ই। কিন্তু, খেলা দু'টোর নিয়ম ভিন্ন। প্রতিটি খেলাই ভিন্ন ভিন্ন। মানুষের ক্ষেত্রেও বলতে হবে, তারা একই রকম রক্ত-মাংসে গড়া হলেও, একেকজন চলে একেক রকমের।
আমি তরুণ-যুবাদের বলবো, আপনারা আপনাদের নিজের জীবনের খেলাটি বেছে নিন।
=========
রবার্ট কিওসাকি'র একটি সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা
=======================================
০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনি আসলে আমার কথার তাৎপর্য বুঝেননি।
এলজাব্রা, জ্যামিতি, ত্রিগোনোমিত্রি, ক্যালকুলাস, সেট থিওরি এসব সবাইকেই জানতে হবে কেন! এটা সবার জন্যে কম্পালসারী করার কি দরকার!!! যে ব্যবসা করতে চায়, তাঁকে প্রথমেই ব্যবসা সাবজেক্টগুলো ধরিয়ে দিলে কি হয়? যে আর্টিস্ট হতে চায়, তাকে সে সম্পর্কে প্রথম থেকেই পড়া-লেখা করানও উচিৎ নয়?
আর, হাতে টাকা-পয়সা না থাকলে মানুষকে সাহায্য করবেন কি করে? হাত পেতে কত দিন চলবে বলুন?
২| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ধনী হবার কৌশল নাশিখে ভালো মানুষ হবার কৌশল শিখতে হবে।আমরা যাদের ধনী দেশবলি তাদের সকলে ধনী না,তবে বেশির ভাগ মানুষ ভালো।
০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩০
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
ধনী হওয়াটা ভালো নয় বলছেন?
৩| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৩
মীর আবুল আল হাসিব বলেছেন: পড়তে পড়তে "রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড" নামক বইয়ের গন্ধ পাচ্ছিলাম। শেষে এসে দেখি বইয়ের লেখকের নাম উল্লেখ করেছেন।
পড়ে ভালো লাগলো; আগের কিছু পোস্টও পড়েছি। আপনি ভনিতা না করে সরাসরী লেখেন।
চাাঁদগাজী সাহেবের কথায় কিছু মনে করবেননা। উনি হয়তো রবার্ট কিওসাকিকে পছন্দ করেননা।
০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি রবার্ট কিওসাকি'র একটি সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে লিখেছি। উনার জীবন মতের সাথে মিলটা খুঁজে পেয়েই এই অনুপ্রেরণা।
আমি ব্লগার চাঁদগাজী'র কিছু কিছু মন্তব্য মুছে দেওয়ার পক্ষে। তবে, মাঝে মাঝে বিবেকে বাধে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
৪| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার লেখা সবার বেলায় সত্য নাও হতে পারে
০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৫
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
তরুণদের নিজের গেইমটি বেঁছে নিতে বলেছি এই কারণেই।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
৫| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৭
নতুন বলেছেন: ব্যাবসা প্রতিষ্টানে চাকুরী করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত করা হয় বত`মানের শিক্ষায়।
ব্যবসা শেখার জন্য, কৃষি শেখার জন্য পরাশুনার কিছু থাকা উচিত।
দেশে এতো এম এ পাশ বেকারের দরকার নাই। দেশের মানুষকে আরো বেশি ব্যবসা এবং কারিগরি শিক্ষায় আসতে হবে।
০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা হাজার হাজার ধনী ব্যবসায়ী তৈরী করতে পারছে না। অথচ, এটা আমাদের দরকার।
একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনসব শিক্ষক ব্যবসায় শিক্ষা পড়ান যারা নিজেরা ভালো ব্যবসায়ী নন। তাহলে, মানুষ ব্যবসা শিখবে কোথা থেকে!!! এই অবস্থা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা তো দেশের টাকা মেরে খাবেই!
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
৬| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:২৪
নতুন বলেছেন: আরেকটা জিনিস আমি বিশ্বাস করি সেটা হলো ...
কোন কিছু শিখলে সেটা বিফলে যায় না। জীবনে কোন না কোন সময়ে তা কাজে লাগেতেই পারে।
আমি জীবনে ব্যবসা করেছি কিছুদিন। ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম। কম্পিউটারের বিভিন্ন সফটওয়ার/হাডওয়ারে ভালো জানি। অনেক বিষয়ে বই পড়তাম।
প্রতিটি জিনিসই কিন্তু বত`মানে কাজে সাহাজ্য করছে। ইংরেজী ভাষা, কম্পিউটারের জ্ঞান, ব্যবসার অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন বিষয়ে জানাটা অনেক সমস্যা সমাধানে কাজে লাগে।
এই জন্যই আমি নতুনদের উপদেশ দেই '' চটি সাহিত্য থেকে ধম` গ্রন্হ সব কিছুই পড়া উচিত, জীবনে কোন না কোন সময়ে কাজে লাগে''
১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৮
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
পৃথিবীতে শেখার আছে অনেক কিছু। কোনটা কোন সময় শিখতে হবে, তা কিন্তু জানা দরকার।
আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো জীবনমুখী হতে হবে।
ধন্যবাদ নিরন্তর।
৭| ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী যা্ বলেছেন তার উপরে আর কোনো কথা নাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমার মনে হয়, আপনার হাতে টাকা পয়সা এসেছে, এজন্য আবোল তাবোল বকছেন।
অংক: এলজাব্রা, জ্যামিতি, ত্রিগোনোমিত্রি, ক্যালকুলাস, সেট থিওরি শেখানো হয় সুক্ষ্মভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা দেয়ার জন্য।