নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে
প্রাচীন চীনের অধিবাসীরা মনে করতেন, ৫০০ বছর বাঁচার পর একটি সাধারণ বাঘ ‘সাদা বাঘ’-এ পরিণত হয়। এরপর সেটা ১০০০ বছর ধরে বেঁচে থাকে। তাঁরা এটাও মনে করতেন যে, একটি বাঘের মৃত্যুর পরে সেটার আত্মা মাটির নিচে চলে গিয়ে ‘অম্বর’-এর রুপ ধরে। এই প্রাচীন বিশ্বাস থেকেই আধুনিক চীনে ‘অম্বর’-এর অর্থ ধরা হয় ‘বাঘের আত্মা’ হিসেবে।
পৃথিবী থেকে বাকি সব বাঘ কি বিলুপ্ত হয়ে যাবে?
বাঘকে এখন পাথুরে শক্ত খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়। এশিয়া মহাদেশের অনেক ধর্মীয় বিশ্বাস এখনো আগের কালের অবৈজ্ঞানিক, অন্ধকারময় কুসংস্কারে ছেয়ে আছে। এসব ধর্মীয় বিশ্বাসের যেগুলো বাঘের সাথে সম্প্রর্কিত, সেগুলো'র অবস্থা আরো করুণ। বৌদ্ধ ধর্মের অনেক শাখা এখনো কুসংস্কারাচ্ছন্ন রয়ে গিয়েছে। আগে যেখানে এই ধর্মের মানুষের সংখ্যা খুব বেশি হলে হাজারও পেরুতো না, সেইখানে প্রায় ৩৭.৬ কোটি মানুষ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। এটা প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাঘের জন্যে কোন সমস্যা হতো না যদি এরকম অতিপ্রাকৃত বিশ্বাসে তারা আচ্ছন্ন না থাকতো।
২০১৮ সালে দ্যা জাকার্তা পোস্টে একটি সুমাত্রার বাঘের নাড়ি-ভূড়ি বের করা ছবি ছাপানো হয়। খবরে বলা হয় যে, উত্তর সুমাত্রার অধিবাসীরা বাঘটাকে ধরে টাঙ্গিয়ে রাখে এ কারণে যে তারা বুঝতে চেষ্টা করছিলো এটা কোন আধিভৌতিক প্রাণী কি না। পরবর্তীতে বল্লমের খোঁচায় বাঘটিকে হত্যা করা হয়। শুধু তা-ই নয়, খবর পেয়ে সরকারী অফিসাররা যখন সেখানে পৌঁছে বাঘের দেহটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন, তখন দেখতে পান যে নোখ, থাবা, চামড়ার কিছু অংশসহ ওটার শরীরের ভিতরের বিভিন্ন অংশ কেটে কারা যেন নিয়ে গিয়েছে।
এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঘের বিভিন্ন অংশ ট্র্যাডিশনাল চীনা চিকিৎসাবিদ্যা'র অবিচ্ছেদ্য অংশ। চীনের প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্র দাবী করে যে, বাঘের হাড় থেকে পাওয়া ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন জালা-পোড়া করে এমন ক্ষত নিরাময়ে কাজে দেয়। সে দেশে অনেকে এটাও বিশ্বাস করে যে, বাঘের ক্ষমতা আর পৌরাণিক শক্তি মানুষের দেহের কর্মশক্তিকে পুনর্জীবিত করে, রোগকে ভালো করে আর দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার লক্ষণ থেকে বাঁচায়।
যদিও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা প্রাচীন চীনের এইসব দাবীর সবগুলোকে মেনে না নিলেও, হংকং, চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামের সাথে সাথে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা'র চীনা অধ্যু্যষিত এলাকাগুলোতে টাইগার ওয়াইন, টাইগার মলম, পাউডার, টাইগার পিল হরদম বিক্রি হচ্ছে। TigersInCrisis.com নামক ওয়েবসাইটের মতে, বাঘের ১২ ইঞ্চি লম্বা জননেন্দ্রিয় দিয়ে বানানো সুপ কামোত্তেজনা বাড়াতে, দাঁত জ্বর কমাতে, নোখ অনিদ্রা রোগ সারাতে আর ১২ ইঞ্চি লম্বা গোঁফ দাঁতের ব্যথা দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
লন্ডনের প্রাণিবিদ্যা সমিতি'র তথ্যমতে, শুধু ১৯৯০ সালেই ১৯০০ কেজি বাঘের হাড় তাইওয়ান থেকে জাপানে রপ্তানী হয়। এই পরিমাণ হাড়ের জন্যে ৪০০-৫০০ বাঘকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো। দক্ষিণ কোরিয়ার অভিবাসন পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, ১৯৭০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত, ৩৯৯৪ কেজি বাঘের হাড় ইন্দোনেশিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়াতে আমাদানী হয়েছিলো। এখানে উল্লেখ্য যে, একেকটি বাঘ থেকে প্রায় ১০ কেজি পরিমাণ হাড় পাওয়া যায়।
চাহিদা অনুযায়ী বাঘের বিভিন্ন অংশের জোগান কমে যাওয়ায়, পশুটি'র বিভিন্ন অংশের দাম এখন আকাশচুম্বী। দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রতি কেজি বাঘের হাড়ের বর্তমান মূল্য ১৪০ - ৩৭০ মার্কিন ডলার। তাইওয়ানে বাঘের জননেন্দ্রিয় দিয়ে তৈরী স্যুপের মূল্য ৩২০ মার্কিন ডলার, এক জোড়া চোখের মূল্য ১৭০ মার্কিন ডলার। আর, সিউলে, বাঘের হাড় থেকে বানানো এক পাউন্ড পাউডারের মূল্য ১,৪৫০ মার্কিন ডলার। আর, এভাবেই বাঘ থেকে বানানো ঔষধের বাজার বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
এরকম চলতে থাকলে পৃথিবীতে বাকি ৭০০০ বাঘ শেষ করতে কত দিন লাগবে, তা অংক কষে বের করতে খুব একটা সময় লাগার কথা না।
তথ্যসূত্রঃ
CNArtGallery. 2013. "Chinese Tiger in Painting and Its Symbolic Meaning". Artisoo Paintings – Bring Chinese culture to the world. Available at: Click This Link
Meyer, A. 2013. "Tigers In Culture And Folklore". Tigers – The most majestic cats in the world. Available at: Click This Link
=================
এটি কোন মৌলিক লেখা নয়
=================
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: আমার মনে হয়, আপনি যে আলোচনা করতে চাইছেন, তা এই পোস্টের স্কোপের বাইরে।
এখানে, বাঘ সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। কোন বিশেষ ধর্মকে দোষারোপ করা হয়নি।
ধন্যবাদ।
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাঘ নিয়ে লিখতে গিয়ে, "বৌদ্ধ ধর্মের অনেক শাখা এখনো কুসংস্কারচ্ছন্ন", বাক্যটা কি আপনার লেখা, নাকি আমার লেখা? এই বাক্য যদি পোষ্টে থাকে, ইহার আলোকে ধর্ম নিয়ে কথা আসতে পারে! আপনি নিজের লেখার পরিধি বুঝেন না; আপনি অবশ্যই প্রশ্নফাঁস জেনারেশনের কৃতিছাত্র।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি এই জন্যেই এটা লিখেছি যে, শাখা-প্রশাখা থেকে যে কুসংস্কার আসে, তা মূল ধর্মের অঙ্গ নয়।
আর, এই পোস্ট শুধুই বাঘ এবং তার প্রতি হুমকি যেসব কিছু আছে, সেগুলোর উপর আলোকপাতের উদ্দেশ্যে লেখা। তাই, স্কোপ বা পরিধি'র মাঝে আপনার আলোচনা পড়ে না।
আপনি অনেক সিনিয়র ব্লগার। পোস্টের স্কোপ আপনার বুঝার কথা।
দেখুন তো, আমাকে আবার সেটা বুঝিয়ে বলতে গিয়ে প্রতি-উত্তরের কলেবরটা বৃদ্ধি করতে হলো যার কোন প্রয়োজন ছিলো না।
৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।
শুধু বাঘ নয় সমস্ত প্রকৃিতই আজ বিপন্ন। সভ্যতাই আজ ঝুঁকির মূখে।
মানুষের নিরন্তর লোভ আর পূজির নেশায় মানুষ আত্মঘাতি হয়ে পড়ছে।
এর পরিণতি এই মানুষকেই ভুগতে হবে যদিনা সময় মতো থামে।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: জী, ভাইয়া। প্রকৃতি যে মানুষের অন্যায় হস্তক্ষেপে বিপন্ন সেটা বলতেই হবে। এটা এই লেখার একটা মিশন।
মানুষ খাদ্য সাইকেলকে ভেঙ্গে ফেলছে। এটা সবাইকে ভুক্তভুগী করছে।
কমেন্টের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ।
৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলেছেন, "মানুষ খাদ্য সাইকেলকে ভেঙ্গে ফেলছে। এটা সবাইকে ভুক্তভুগী করছে। "
-মানুষের খাদ্য সাইকেলটা ভাংগার আগে কি ছিল, ভাংগার ফলে, কি কি যোগ বিয়োগ হলো?
০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: আগে ডেঙ্গু মশা ছিলো না। এখন আছে। আপনার মতো।
৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: যতদিন পৃথিবী থাকবে তত দিন বাঘ থাকবে। তবে বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৫
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: হয়তো। ধন্যবাদ নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলেছেন, "বৌদ্ধ ধর্মের অনেক শাখা এখনো কুসংস্কারচ্ছন্ন"
-আসলে, প্রতিটি ধর্মই ভুল ধরণার উপর গড়ে উঠা একটা বিশাল সংস্কৃতি ও ট্রেডিশন; প্রতিটি ধর্মের পেছনে ছিল একটি বড় মিথ্যা: সৃষ্টিকর্তা মানুষকে ধর্ম পালন করতে বলেছেন; সৃষ্টিকর্তার সাথে যাদের দেখা হয়েছে বলেছে, তারা সত্য বলেনি।