নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানভির জুমার

সব সময় সব জায়গায় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে।

তানভির জুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশের প্রথম এবং প্রধান সমস্যা ভোটহীন সংসদ, দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি করে উপর্যুপরি ৩ বার ক্ষমতায়।

০১ লা জুলাই, ২০২৪ সকাল ৮:৪৪

মেগা দুর্নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও প্রধানতম কারণটি কম আলোচিত, কিংবা অনালোচিত। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে যদি সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি করে উপর্যুপরি ২বার ক্ষমতায় আসা যায়, তাইলে প্রজাতন্ত্রের অধঃনস্ত সকল পদ জবাবদিহির বাইরে চলে যায়। আজকের পুলিশ প্রশাসনে এবং আমলাতন্ত্রে মেগা দুর্নীতির হেতু এটাই। এটাকে অস্বীকার করে বেনজীরদের 'মেগা দুর্নীতি'র আলাপ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

বাংলাদেশের পুলিশ এবং আমলাতন্ত্রে দুর্নীতি সবসময়ই ছিল, কিন্তু সেটা টেবিলের নিচে ছিল। ২০১৪ সালে একদলীয় জোরপূর্বক নির্বাচনে ভোটের আগেই জিতে যাওয়া এবং ২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচন দুটির পরে, বাংলাদেশের সব দুর্নীতি টেবিলের উপরে উঠে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে শুধু টেবিলের উপরে নয়, বরং ছাদও ছুঁয়েছে। এটা ভোটহীন সংসদ ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সাথে সরাসরি জড়িত। চোখের সামনে দুর্নীতি দেখেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, দেশের বিচারালয়, বিভিন্ন সংস্থার বিভাগীয় দুর্নীতি দমন মেকানিজম কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশন- কেউই এই দৃশ্যমান দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফাংশন করতে পারেনি। কারণ তাদের ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর একচেটিয়া ক্ষমতায়নের স্বার্থকে, এমপি-মন্ত্রীর স্বার্থকে দেখভাল করতে হয়েছে, ক্ষমতা প্রটেক্ট করতে দুর্নীতি প্রশ্নে ট্রেড অফ মানতে হয়েছে প্রতিষ্ঠান গুলোর।
অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী পদ জবাবদিহীর বাইরে যেতে রাষ্ট্রের সকল মেকানিজম ব্যবহার করেছে, সংস্থাগুলো এই কাজে নিজ নিজ কর্মকর্তাদের নিয়জিত করেছে। ফলে কর্তার অধীনস্থরা রাতের ভোট এবং লয়ালিটি প্রশ্নে পরীক্ষায় পাশ করে নিজেরাও জবাবদিহির বাইরে এসেছে। এই সরল কথা না বললে, দুর্নীতি নিয়ে বলা সকল কথা বৃথা।
পুলিশের শীর্ষ কর্তা বেনজীর দিনের ভোট রাতে করার সর্বোচ্চ কুশিলব। ফলে বেনজীরের রাষ্ট্রের কোন সংস্থা তো দুরের কথা, বরং রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও জবাবদিহিতা করার বাধ্যবাধকতা ছিল না। ব্যক্তি বেনজির কিংবা তার উচ্চপদস্থ সহকর্মীরা মধ্য এবং নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করে সর্বোচ্চ দুর্নীতি করেছে। এবং এখানে বসের দুর্নীতির অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে অধিনস্তরাও কামিয়েছে। দুর্নীতির প্রশ্নে এটা একটা উইন উইন সিচুয়েশন যেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্ব পেয়েছে ক্ষমতা পুলিশ এবং প্রশাসনের লোকজন পেয়েছে অর্থ বিত্ত সম্পদ। সরকারের শীর্ষ এক্সিকিউটিভ থেকে বটমের কর্মচারী- কেউ কাউকে জবাবদিহি করার মত ভূমিকায় ছিল না, এমন ভূমিকা ছিল অসম্ভব। এখন আমাদের যা শুনানো হচ্ছে, এগুলা স্রেফ গল্প মাত্র।

সহমত বুদ্ধিজীবি এবং 'মাম্মা মিডিয়ার' একাংশ একটা বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে যে, ব্যক্তির দুর্নীতিকে হাইলাইট করার কি আছে, এটা তো আগেও ছিল। কিন্তু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী যদি ক্ষমতাকেই দুর্নীতির মাধ্যমে রিনিউ করেন, তখন দুর্নীতি ব্যক্তি পর্যায়ে থাকে না, প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বিস্তৃত করা লাগে তা করতে। বরং দিনের ভোট রাতে করে দেয়া পরে প্রশাসনের চোর কর্মকর্তাদের কাছে জবাবদিহি চাওয়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য সীমাহীন লজ্জার ব্যাপার।
তাই যেসব দুর্নীতিবাজ শীর্ষ কর্মকর্তা নির্বাচনহীন ক্ষমতাকে বাস্তব রুপ দেয়, তাদের ব্যক্তি প্রভাব অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকেও সুপারসিড করে ফেলে। অন্তত চক্ষু লজ্জার ভয় হলেও প্রধানমন্ত্রী তাদের কাছ থেকে জবাবদিহি আশা করতে পারেন না। এটা তারা জানে বলেই বছরেই হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ আয় করে ফেলেন।

আজ থেকে এক দশক আগে টিআইবির সেবাখাত দুর্নীতি প্রতিবেদনে পুলিশ শীর্ষস্থানে ছিল না, পাঁচে, বা শীর্ষ পাঁচের বাইরে ছিল। কিন্তু সর্বশেষ টিয়াইবি রিপোর্ট মতে, অন্তত ৭৪% শতাংশ মানুষ বলছেন- পুলিশি সেবা নিতে গেলে নাগরিকরা দুর্নীতির শিকার হন।
পুলিশের আয় শুধুমাত্র প্রকল্পের মেয়াদবৃদ্ধি, খরচ বাড়ানো, অপখরচ কিংবা সীমান্তে নারী-শিশু-স্বর্ণ-মাদক পাচার-হুন্ডি-চোরাচালান কিংবা সড়কে চাঁদাবাজি বা ঘুষ থেকে আসেনি।

এখানে আছে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তার বাণিজ্য যা রাজনৈতিক বিবেচনায় হয়েছে। সরকারের চাপে যখন একজন শীর্ষ নেতাকে ধরা হয়েছে, তখন পুলিশ নিজেদের আয় বাড়াতে হাজার কর্মীকে ধরে মুক্তি/জেল/মামলা/রিমান্ড বাণিজ্য করেছে। এর সাথে ছিল জামিন বাণিজ্য, আদালতে হাজিরা বাণিজ্য সহ আরো কয়েক স্তরের মুক্তিপণ। সাথে ছিল বিরোধী নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরের টাকা স্বর্ণ লুট, কিংবা মাঠের জমি ইত্যাদি হাতিয়ে নেওয়ার সুবিশাল চক্র। তাদের নির্মাণাধীন প্রকল্পের ফ্ল্যাট বা কর্মাশিয়াল স্পেইস দখল। কিংবা ভাড়া থাকা ফ্ল্যাট জোর করে দখল করে নেওয়ার ঘটনা। প্রকল্পের অপখরচ, চাঁদাবাজি কিংবা চোরাচালানের সাথে সরাসরি পুলিশকে বা আমলাদের এককভাবে দায়ী করা যায় না, সেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্ব সরাসরি সংশ্লিষ্ট থাকে। কিন্তু আমরা দেখি গুম খুন গ্রেপ্তার জেল হয়রানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেছে এককভাবে পুলিশ।

যেহেতু এর সাথে বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোকে স্থায়ীভাবে দমন পরিকল্পনার সরাসরি সংশ্লিষ্টতা আছে, সেজন্য মন্ত্রীসভা এসব ক্ষেত্রে জ্ঞাতসারে চুপ ছিল। আজকের যে দুর্নীতি, সেটা অনন্য উচ্চতায় উঠেছে রাজনৈতিক ইচ্ছায়। এটা সর্বোচ্চ স্তর দিয়ে ক্ষমতায়িত ব্যক্তির, প্রতিষ্ঠানিক এবং একই সাথে ক্ষমতাসীন দলে রাজনৈতিক প্রকল্প। পুলিশের আজকের 'মেগা দুর্নীতি' অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল এবং ক্ষামতা রিনিউ করার রাজনৈতিক চর্চার সর্বোচ্চ স্তরের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।



courtesy: ফাইজ় তাইয়েব আহমেদ

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: এত সাহসী ও সত্যানুসন্ধানী পোস্টের জন্য। ধন্যবাদ। দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বাক স্বাধীনতাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটাই হচ্ছে বাকশাল। ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত এটার আগের ভার্সন ছিল।

২| ০১ লা জুলাই, ২০২৪ সকাল ১১:০০

এম ডি মুসা বলেছেন: েএটা্ একটা নিজস্ব কথা বলছেন। কিন্তু সরকার কে আসুক যাক সেটা জনগণের দেখার বিষয় না ,সেটা দেখবে বিরোধী দল বা ক্ষমতা লোভী দল। আমাদের জনগণের অধিকার সঠিক মত কতটুকু পাই সেটার দাবি করতে পারি? কিছুদিন আগে চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতি , আরো নানা ক্ষেত্রে দুর্নতি িএগুলো বন্ধ করা এটা আমাদের দাবি। এটা সঠিক ভাবে পালন না করতে পারলে সে সরকার ব্যর্থ। আর একটি কথা আমাদের ছাত্র ছাত্রীর বেশির ভাগ ভোটে সরকার গঠন হয়। আমাদের তরুণেরা ভোট দেয়
সবার আগে কিন্তু আমাদের চাকরি জন্য ৩৫ বছর দাবি সরকার মানে নাই। সরকার তারপর আমাদের কোটা নিয়ে সমস্যা সেটাও মানেনা।আসলে সরকার আমাদের দাবি মানছে না আমি সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে গেছে আামি মনে করি বঙ্গবন্ধু হলে তিনিআমাদের সমস্যা সমাধান করতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কতটুকু্ আছে সেটা দেখার বিষয়? বঙ্গবন্ধু ১৯৭১-১৯৭৫ সালে বেকার জন্য টেনশন করছেন তিনি। িএদেশে সবদিকে বেকার মুক্ত করার অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে বাকশাল করতে চাইছেন সেটাছিলকল্যাণকর । বর্তমানে বেকারদের নিয়ে বেদনা দায়ক তামশা করছে

৩| ০১ লা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:০৬

নতুন বলেছেন: দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা ভন্ডামী।

৯৯.৯৯৯% রাজনিতিক ভন্ড এবং দূনিতিবাজ।

প্রতিটা শহরের রাজনিতিকরা একে অপরকে চেনেন এবং জানে কে কি কি দূনিতি করে।

আয়ামীলীগের দূনিতি বিএনপির নেতারা জানে, কিন্তু সেটা কি বিএনপি/জামানের নেতারা জনগনের সামনে প্রকাশ করছে?

এক দূনিতিবাজ অন্য দূনিতিবাজের পেটে লাথী মারেনা।

বিএনপি/জামাত দূনিতির কথা বলে কিন্তু প্রমান সহ হাতে নাতে ধরার মতন তথ্য নিয়ে সবার সামনে প্রচার করেনা।

দেশের নেতারাও সত হবেনা আর আয়ামীলীগ গেলে অন্য দলও কম দূনিতি করবেনা। :|

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.