নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
এই পোষ্টের পুরো বক্তব্যই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বিখ্যাত গল্প থেকে নেওয়া। এই গল্পটির মাধ্যমে সে সময়কার সমাজ ব্যবস্থার একটি সুন্দর চিত্র পাওয়া যায়।
বর্তমানে বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু ধরা হয়। বাংলা সাহিত্যের অসংখ্য কবি ও গীতিকারগণ মেয়েদের ১৬ বছর বয়সটাকে অসাধারণ একটা কাব্যিক বয়স হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
প্রথমে জেনে নিই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত গল্পে ১৬ বছর বয়সটাকে কিভাবে উপস্থাপন করেছিলেন।
" রাস-উপলক্ষে দেশের কুটুম্বরা আমাদের কলিকাতার বাড়িতে আসিয়া জমা হইলেন। কন্যাকে দেখিয়া তাঁহাদের মধ্যে একটা কানাকানি পড়িয়া গেল। কানাকানি ক্রমে অস্ফুট হইতে স্ফুট হইয়া উঠিল। দূর সম্পর্কের কোনো-এক দিদিমা বলিয়া উঠিলেন, “পোড়া কপাল আমার! নাতবউ যে বয়সে আমাকেও হার মানাইল। ”
আর-এক দিদিমাশ্রেণীয়া বলিলেন, “ আমাদেরই যদি হার না মানাইবে তবে অপু বাহির হইতে বউ আনিতে যাইবে কেন। ”
আমার মা খুব জোরের সঙ্গে বলিয়া উঠিলেন, “ ওমা, সে কি কথা। বউমার বয়স সবে এগারো বৈ তো নয়, এই আসছে ফাল্গুনে বারোয় পা দিবে। খোট্টার দেশে ডালরুটি খাইয়া মানুষ, তাই অমন বাড়ন্ত হইয়া উঠিয়াছে। ”
দিদিমারা বলিলেন, “ বাছা, এখনো চোখে এত কম তো দেখি না। কন্যাপক্ষ নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে বয়স ভাঁড়াইয়াছে।”
মা বলিলেন, “ আমরা যে কুষ্ঠি দেখিলাম। ”
কথাটা সত্য। কিন্তু কোষ্ঠীতেই প্রমাণ আছে, মেয়ের বয়স সতেরো।
প্রবীণারা বলিলেন, “ কুষ্ঠিতে কি আর ফাঁকি চলে না। ”
এই লইয়া ঘোর তর্ক, এমন-কি বিবাদ হইয়া গেল।
এমন সময়ে সেখানে হৈম আসিয়া উপস্থিত। কোনো-এক দিদিমা জিজ্ঞাসা করিলেন, “ নাতবউ, তোমার বয়স কত বলো তো। ”
মা তাহাকে চোখ টিপিয়া ইশারা করিলেন। হৈম তাহার অর্থ বুঝিল না ; বলিল, “ সতেরো। ”
মা ব্যস্ত হইয়া বলিয়া উঠিলেন, “ তুমি জান না। ”
হৈম কহিল, “ আমি জানি, আমার বয়স সতেরো। ”
দিদিমারা পরস্পর গা-টেপাটেপি করিলেন।
বধূর নির্বুদ্ধিতায় রাগিয়া উঠিয়া মা বলিলেন, “ তুমি তো সব জান! তোমার বাবা যে বলিলেন, তোমার বয়স এগারো। ”
হৈম চমকিয়া কহিল, “ বাবা বলিয়াছেন? কখনো না। ”
মা কহিলেন, “ অবাক করিল। বেহাই আমার সামনে নিজের মুখে বলিলেন, আর মেয়ে বলে ‘ কখনো না '! ” এই বলিয়া আর-একবার চোখ টিপিলেন।
এবার হৈম ইশারার মানে বুঝিল; স্বর আরো দৃঢ় করিয়া বলিল, “ বাবা এমন কথা কখনোই বলিতে পারেন না। ”
মা গলা চড়াইয়া বলিলেন, “ তুই আমাকে মিথ্যাবাদী বলিতে চাস? ”
হৈম বলিল, “ আমার বাবা তো কখনোই মিথ্যা বলেন না। ”
ইহার পরে মা যতই গালি দিতে লাগিলেন কথাটার কালি ততই গড়াইয়া ছড়াইয়া চারি দিকে লেপিয়া গেল।
মা রাগ করিয়া বাবার কাছে তাঁহার বধূর মূঢ়তা এবং ততোধিক একগুঁয়েমির কথা বলিয়া দিলেন। বাবা হৈমকে ডাকিয়া বলিলেন, “ আইবড় মেয়ের বয়স সতেরো, এটা কি খুব একটা গৌরবের কথা, তাই ঢাক পিটিয়া বেড়াইতে হইবে? আমাদের এখানে এ-সব চলিবে না, বলিয়া রাখিতেছি। ”
২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: তাহলে কি তাদের কোন বয়স নেই। মানে তারা কি জন্মগ্রহণ করেনি?
২| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সামাজিক নিয়ম পরিবর্তনশীল ও আপেক্ষিক। ঐ যুগের জন্য হয়ত ঠিক ছিল।
৩| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৪০
জুন বলেছেন: হৈমন্তী গল্পটা পড়লে এখনো আমার চোখ আদ্র হয়ে আসে। কি নিষ্ঠুর সমাজ!
২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: খুবই সুন্দর একটি ছোট গল্প । গল্পটি আমি মাঝে মাঝে পড়ি। গতকাল ও একবার পড়লাম।
৪| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ নারীকে নারী নয় বরং মানুষ হিসাবে দেখতে চেয়েছেন।
২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি কি নারীকে নারী হিসেবে দেখতে চান না? নারীকে যদি নারী হিসাবে নাই দেখলেন তাহলে তাদের জীবনের সার্থকতা কোথায়?
৫| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৯
লাবনী আক্তার বলেছেন: শিরোনাম দেখে ছোট বেলার শাবনাজ নাঈমের একটা গান মনে পড়ছিল।
২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ঠিক ধরেছেন । ভারতীয় একটি ছবির অনূসরণ করে সেই সময়ে একটি সিনেমা তৈরি করা হয়েছিল। যার নায়ক নায়িকা ছিলেন কিশোর-কিশোরী।
৬| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমাদের দেশে এখনো প্রচুর মেয়ের বিয়ে ১৮ বছর হওয়ার আগেই হয়। তবে গোপন থাকে ।
৭| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১:১৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: ষোল সতেরো বছর বয়সের মেয়েদের প্রতি বোধহয় কবি সাহিত্যিকদের একটা দুর্বলতা আছে।খারাপ অর্থে নয়।ঐ বয়সটার যে নিজস্ব লাবণ্যতা আছে সেটাই বোধহয় তাদেরকে আকর্ষণ করে।
২১ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:০৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বর্তমানের আইনগত দিক টা বাদ দিলে বাকি সব কথা আপনার ঠিকই আছে।
৮| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই।
এটাও রবী ঠাকুরের একটি গল্পের একটি লাইন।
গল্পটির নাম জানেন কি?
২১ শে জুন, ২০২০ সকাল ৮:০২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বিখ্যাত সেই গল্পটির নাম " ছুটি"।
গল্পের চরিত্র ফটিক শেষ পর্যন্ত মারা যায় বলেই আমার মনে হয়েছিল।
৯| ২১ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:৫৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: হৈমন্তীর কথাই তো বললেন, আপনার কথা কই?
ইংরেজি সাহিত্যে সুইট সিক্সটিন যত রোমান্টিক, বাংলায় মনে হয় তার যায়গা নিয়েছে অষ্টাদশী।
২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এখানে আমার নিজের কোনো বক্তব্য নেই। পুরোটাই গুরুদেবের।
১০| ২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫২
পদ্মপুকুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: এখানে আমার নিজের কোনো বক্তব্য নেই। পুরোটাই গুরুদেবের।
এই গুরুদেব বাংলাকে এমনভাবেই ধরেছেন যে কোনো কিছু না বলে শুধূ তাঁর বলা কথা বলেও চালিয়ে যাওয়া যাবে বছরের পর বছর। মাঝে মধ্যে খুব অবাক হই, এমন কোনো অনুভূতি উনি বাকি রাখেননি, যেটা আমরা লিখতে পারি।
২১ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: উনি হলেন বাংলা সাহিত্যের গুরুদেব । জমিদারের জমিদার। অর্থাৎ রাজাও রাজা।
১১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
বাংলার সমাজে এখনো হৈমন্তি বিদ্যমান। এখনো ১৩-১৬ বছরের মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
২২ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:৫৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বায়োলজিক্যালি তারা হয়তো এডাল্ট।
কিন্তু এই বয়সে বিয়ে দেওয়াটা সঠিক কাজ নয়।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:২৫
বিজন রয় বলেছেন: মেয়েদের বয়স জিজ্ঞেস করতে নেই।