নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
বশির সাহেব প্রতি দিন দুই বেলা রিকশায় চড়ে থানার মোড় এর রেস্টুরেন্টে যান চা খাওয়ার জন্য আর আড্ডা দেওয়ার জন্য।
রেস্টুরেন্টে দেয়ালে প্রকান্ড একটি টেলিভিশন সেট ঝুঁলানো আছে। তাতে আবার ডিশ কানেকশন দেওয়া। ডিশ কানেকশন ছাড়া আজকাল আর কেউ টেলিভিশন দেখে না
বেশীর ভাগ সময় যখন খবর আর টকশো জাতীয় জিনিসগুলি চলে রেস্টুরেন্টে তখন চায়ের বিক্রি বাট্টা বেড়ে যায়। বয়স্ক মুরুব্বী শ্রেণীর লোকেরা তখন এসে এক কাপ চা নিয়ে বসে যান। তারা টিভিতে খবর শুনেন আর টকশোতে আলোচনা শুনেন।
বশির সাহেবের বাড়িতেও টেলিভিশন সেট আছে। কিন্তু ডিশের সংযোগ ছিল না। তাঁর দুই ছেলে থাকে সৌদি। ঘটনা জানতে পেরে তারা ডিশ সংযোগ দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। তারপরেও বশির সাহেব বাড়িতে টিভি দেখে ঠিক মজা পান না। অনেক মানুষের মাঝখানে বসে চা খাওয়া , গল্পগুজব, আলোচনা শোনা এভাবে টিভি দেখার মজাই আলাদা ।
এই আলোচনায় অনেক রাজা-উজির মারা হয়। মাঝে মাঝে এলাকার ছোটখাটো মাঝারী ধরনের নেতা ও পাতি নেতারা এসে আলোচনায় অংশ নেন। তখন আসর সত্যিই জমজমাট হয়ে ওঠে। চায়ের কাপে ঝড় তোলেন নেতারা। খুবই মজা লাগে বশির সাহেবের। নেতারা যখন আসে তখন চা পানির সাথে সাথে পান বিড়ির বিক্রিও খুব বেড়ে যায়। এই মজার জন্যই বশির সাহেব প্রতি দিন দুই বেলা থানার মোড়ে আসেন।
সকালে এক বার আর সন্ধ্যায় এক বার। সন্ধ্যায় বাংলা খবর প্রচারের সময় রেস্টুরেন্টে তিল ধারনের জায়গা থাকে না। তাঁর বাড়ি থেকে থানার মোড় খুব বেশি দূর নয়। হাঁটা দিলে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা নয়। তারপরেও তিনি কখনো হাঁটেন না। এই টুকু পথের রিকশাভাড়া আর কত। টাকা তাঁর জন্য কোন সমস্যা নয়।
তাঁর দুই ছেলে থাকে মধ্যপ্রাচ্য। তারা নিয়মিত টাকা পাঠায়। সেই টাকা খরচ করতে হবে তো।
কিছু দিন আগে তিনি ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। ডাক্তার বলেছেন রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। আগে রক্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকায় যেতে হতো। এখন এলাকাতেই অনেকগুলো ক্লিনিক হয়েছে। কিন্তু আলসেমি করে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন না। ডাক্তার ধারণা করেছে তাঁর ডায়াবেটিস হতে পারে। তাঁর প্রচুর হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করা দরকার। কিন্তু হাঁটতে ইচ্ছা করে না। শুধু তিনিই নন তার এলাকায় কেউই হাঁটেন না। এমনকি কলেজে যায় যে ছোকরাগুলো তারাও হাঁটে না। হাঁটলে মান- ইজ্জত থাকে না। মান- ইজ্জত রক্ষা করা খুবই দরকার।
এই অঞ্চলে্য প্রতিটি বাড়িতেই কেউ না কেউ সৌদি থাকে। কেউ থাকে ওমান। কেউ থাকে কুয়েত। কেউ থাকে বাহারাইন। আবার কেউ থাকে মালয়েশিয়া। টাকার কোন চিন্তা নেই। তাই মানুষ পায়ে হাঁটা ভুলে গেছে।
আফসোস।
১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সব সময়।
২| ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ১০:২৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
গার্মেন্টস'এর মেয়েরা হাঁটে
১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:২৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: উহারা গ্রামে থাকে না। ঢাকায় থাকে। ঢাকায় থাকারই জায়গা নাই।
৩| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমি নিজেই তো গলির মোড়ে চা খেতে যাই রিকশা দিয়ে। হেঁটে গেলে এক মিনিট লাগে। অবশ্য সব সময় না রিকশা নিই না। আসলে লোকদের অবাক করে দেওয়ার জন্য এই কাজ টা করি।
১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনার তো টাকা পয়সার কোনো চিন্তা নেই। তাই আপনি বিলাসিতা করে বেড়াচ্ছে না।
৪| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: টাকা থাকলে মানুষ আরাম প্রিয় হয়। টকশো দেখে বশির মিয়া ভোট করবে । চাল তেল চুরি করা যাবে
১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৫৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: টাকা খরচ করতে হবে সুন্দর পরিকল্পনা করে। আজেবাজে জায়গায় টাকা খরচ করলে সেই টাকা খরচ অর্থহীন। টাকা খরচ করলে সেই খরচ থেকে কল্যাণ পেতে হবে। প্রতিটি টাকাযই অত্যন্ত মূল্যবান। অথচ অনেক মানুষেরা টাকা অপচয় করে চলেছে। আফসোস!
৫| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:০৯
সোহানাজোহা বলেছেন: যেই পরিবারে অন্তত একজন প্রবাসে থাকেন সেই পরিবারের বাকি সদস্য কাজকর্মে বরবাদ হয়ে গেছেন। তাদের একমাত্র কাজ স্মার্ট ফোন হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো।
আর যিনি প্রবাসে আছেন তিনি গাধার খাটনি খেটে যান পরিবারের জন্য।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি নিদারুণ বাস্তব একটি বিষয় তুলে ধরেছেন।
আসলেই অনেক সত্য একটি বিষয় । যারা প্রবাসে কাজ করে তারা সারা জীবন খেটে মরে। কখনোই ভোগ করতে পারে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ৮:৪৯
ভুয়া মফিজ বলেছেন: দেশের এই এক সমস্যা। যাদের একটু টাকা আছে, তারা কেউই কায়িক পরিশ্রম করে না। অনেকে এটাকে ইজ্জতের ব্যাপার বলেও মনে করে। যার কারনে এরা প্রচুর অসুখ-বিসুখেও ভোগে। আপনি যেমন ১০ মিনিট বলেছেন, আমি পাচ মিনিটের হাটাপথেও রিকশায় চড়তে দেখি। খুবই বাজে ব্যাপার।
দেশে যদিও হাটার মতো তেমন পরিবেশ নাই, তারপরেও দেশে গেলেও আমি প্রচুর হাটি। মনে করেন, হাটতে হাটতে মোহাম্মদপুর থেকে ইস্কাটন চলে যাই।
যদিও বেশ কিছু টাইপো আছে লেখাতে, তবুও বলতেই হয়......ভালো বিষয় নিয়ে লিখেছেন