নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
কলম্বো নগরীর WTC ( World Trade Centre) Building. এটা একটি Twin Towers.
অক্টোবরের এক অলস দুপুরে এক ভদ্র লোক অফিসে এসে আমাকে খোঁজ করছেন? বলেছেন, বেশ দূর থেকে এসেছেন। একটি জটিল সমস্যার সমাধানের জন্য।
আমি তো অবাক। কেননা এই শ্রীলংকাতে এমনকি এই কলম্বো শহরে আমার পরিচিত জনের গন্ডী অনেক অনেক সীমিত। যাদের সাথে কাজ করি তারা মানে সহকর্মীরা ছাড়া আমার পরিচিত গন্ডী নেই বললেই চলে। কে আমাকে খোঁজতে আসবে। তা ছাড়া আমি তেমন কোন বড় চাকরিও করি না যে আমার দ্বারা কোন মানুষের উপকার হতে পারে।
আমি দ্রুত আমার রুম থেকে নীচে নেমে গেলাম ওয়েটিং রুমে। গিয়ে দেখি বয়স্ক এক জন ভদ্র লোক। চুল পাকা ধবধবে সাদা। পরনে হাফ হাতা শার্ট। হাতে কিছু খাতাপত্র। চোখে একটা মোটা ফ্রেমের চশমা। দেখেই মনে হয় পড়াশোনার প্রতি তার খুব ঝোঁক রয়েছে। ভদ্রলোক শ্রীলংকান। কিন্তু আমাকে কেন খোঁজ করবেন? আমি কারো সাতেও থাকি না। পঁচেও নয়। তার উপর আবার শ্রীলংকান ভদ্রলোক। তবে কি কোন জটিল সমস্যা?
দুই হাত জোর করে অভিবাদন জানালেন- Ayubowan! (এর বাংলা অনেকটা এই রকম- আপনি দীর্ঘ জীবি হোন/ ( wish you live long life) (আপনার আয়ু বৃদ্ধি হোক )।
আমিও প্রত্যুত্তরে বললাম- Ayubowan! How can I help you?) আমি কি ভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?
তারপর তিনি যা বললেন তা খুবই মজার। তিনি এক জন শ্রীলংকান হলেও তার বাংলার প্রতি আগ্রহ জন্মেছে। খুব শখ হয়েছে বাংলা ভাষা শেখার। তাই বাংলা যার মাতৃভাষা এমন লোক খুঁজছিলেন। আর পেয়েও গেলেন আমাকে। কেউ এক জন হয়তো আমার কথা তাকে বলেছিলেন। তারই সূত্র ধরে আমার কাছে তার আগমন।
মি: তিলকাসেনার বয়স ৬০/৬৫ পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবে অনেক বেশী বয়স হলেও হাঁটাচলা করতে পারেন পরিপূর্ণ মানুষের মতোই। এই দেশে খাবার-দাবারে ভেজাল না থাকাই তার এই ভাল স্বাস্থ্যের কারণ বলে এক সময় জানতে পেরেছি। এখানে বিক্রেতারা অসৎ নন। তাই দাম বেশী নিলেও ভেজাল দেয়া হয় না। বৌদ্ধের আদর্শ ছিল অহিংসার । সেই আদর্শের কারণে মানুষ খুব বেশী অসৎ নয়। ২৬০০ বছর পরও এরা বৌদ্ধের আদর্শ ধরে রেখেছে।
মিঃ তিলকাসেনা থাকেন কলম্বো শহরের খুব কাছেই। এক সময় শ্রীলংকার সরকারী শিক্ষা বিভাগে চাকরি করতেন। অনেক ব্যস্ত সময় আর বাঁধাধরা কাজের ঝামেলা পেরিয়ে এখন অবসরে আছেন। হাতে অনেক অনেক সময়। তার শখ লেখালেখি করা। সৃষ্টিশীল লেখালেখি (তার নিজের কথায় - Creative Writings ) তার অনেক প্রিয় একটি বিষয়। কার কাছে যেন খবর পেয়েেেছন আমি বাংলাদেশের মানুষ। বাংলা আমার ভাষা। তাই ? ঠিকানা যোগাড় করে ছুটে এসেছেন আমার কাছে। বাংলা ভাষা বিষযক কিছু সমস্যার সমাধান তার অনেক জরুরী । আমি পড়লাম মহা ঝামেলায়। ছাত্র হিসেবে আমি খুব একটা ভাল ছিলাম না কখনোই। নিজেই যেখানে তেমন কিছুই জানি না , তাই অন্যকে শেখানো আমার জন্য একটু কষ্টকর তো বটেই।
প্রাথমিক আলাপচারিতার পর জানালেন যে বাংলা ভাষা নিয়ে তার অনেক আগ্রহ আছে। এই ভাষা তিনি শিখতে চান।
আমি বললাম, আমার তো মনে হচ্ছে আপনি কিঞ্চিত বাংলা জানেন। আমার ধারণা কি ? ঠিক?
হ্যাঁ। আমি কিছু বাংলা জানি । অনেকটা নিজের চেষ্টাতেই শিখেছি।
কি ভাবে শিখলেন?
বলতে পার নিজের চেষ্টাতেই। তবে বলার মতো কাউকে না পাওয়াতে অনূশীলনটা ? ঠিক হচ্ছে না। অনূশীলন ছাড়া তো ভাষা চর্চা পূর্ণাঙ্গ হয় না।
আপনি সঠিক বলেছেন। এই আমাকেই ধরুন। এতো বছর ধরে শ্রীলংকাতে আছি আজ পর্যন্ত সিনহালা ভাষাটা মোটেও শিখতে পারলাম না।
আপনাদের সিনহালা ভাষায় স্বরবর্ণ ১৬ টি আর ব্যাঞ্জণ বর্ণ ৪২ টি? আমি কি সঠিক?
হ্যাঁ। তবে বর্ণগুলো যুক্ত করলে আরো বাড়বে। তাই সরাসরি আমরা বলি না যে আমাদের ভাষায় ৫৬ কিংবা ৫৮ টি বর্ণ আছে। এটা অনেকটা একটি অমিমাংসিত বিষয়।
আমাদের বাংলা ভাষারও ঠিক একই অবস্থা। ১১ টি স্বরবর্ণ আর ৩৯ টি ব্যাঞ্জণ বর্ণ নিয়ে কি যে কান্ড আমাদের! তবে বর্ণগুলো যুক্ত করলে যে চিত্র টা আসে তার সাথে মূল অক্ষরগুলোর তেমন কোন মিল পাবেন না আপনি।
আসলে আমাদের উভয় ভাষারই উৎপত্তি মূলত ব্রাহ্মী লিপি থেকে। তাই কিছুটা মিল তো থাকবেই। তবে তোমাদের বাংলা ভাষাটা মাঝে মাঝে আমার কাছে একটু জটিল বলে মনে হয়। বিশেষ করে কাল ( টেন্স) এর ব্যাপারগুলো। আমি বুঝতে পারছি না নীচের কথাগুলোর বাংলা কি হবে? তুমি কি আমাকে এব্যাপারে একটু সাহায্য করতে পার?
.I go
. I went
. I shall go
. I eat
. I ate
. I shall eat.
আমি বললাম, মিঃ তিলকাসেনা, প্রত্যেকটি ভাষারই কিছু নিজস্ব রীতি আছে। যেমন আপনাদের সিংহালা ভাষার নিয়ম আমার কাছে খুব কঠিন লাগে। তেমনি আমার বাংলা ভাষার কিছু নিয়মও আপনার কাছে কঠিন মনে হতে পারে। তবে আপনি যদি মাঝে মাঝে আমার কাছে আসেন আমি আপনাকে বেশ কিছু জিনিস শিখিয়ে দিতে পারব। যদিও আমার পডাশোনা বাংলা সাহিত্য নিয়ে নয়। আমি পড়াশোনা করেছি কৃষি বিজ্ঞান নিয়ে। আমি কৃষিতে স্নাত ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছি।
তিলকাসেনা বললেন – মিঃ হোসেন, তোমাদের ভাষায় তো সাধু ভাষা আর চলিত ভাষা বলে একটা জিনিস আছে। এটা কি ঠিক?
আমি আশ্চর্য হলাম। এরই মাঝে তিনি সাধু আর চলিত ভাষার ব্যাপারটিও জেনে গেছেন।
বললাম, হ্যাঁ, বাংলা ভাষায় সাধু ভাষা আর চলিত ভাষার একটি ব্যাপার আছে। তবে এটি নিয়ে ভাবনার কিছু নেই।
তিনি বললেন - আমি ভাত খাই এর সাধু ভাষা কি হবে?
আমি বললাম, ব্যাপারটি কিছু টা জটিল । ক্রিয়া পদে তৎসম শব্দের ব্যবহার হলেই সাধু ভাষার রূপটা প্রকাশ পায় । যেমন - আমি খাই এটার সাধুরূপও যা চলিত রূপও তা। আমি যদি তৎসম শব্দ প্রয়োগ করি তাহলে এটার ভাল একটা সাধু রূপ হতে পারে।
যেমন আমি খাই > আমি ভক্ষণ করি।
আমি দেখি > আমি দর্শন করি।
আমি শুনি > আমি শ্রবণ করি।
মিঃ তিলকাসেনা কিছুটা হতাশ হলেন। আমি বললাম, হতাশ হবার কোন কারণ নেই। সাধু ভাষা ছিল অনেক আগের দিনের অভিজাত শ্রেণীর ভাষা। বঙ্কিম, ঈশ্বরচন্দ্র , শরৎচন্দ্র এরা এই ভাষায় সাহিত্য চর্চা করতেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ভাষায় সাহিত্য চর্চা করলেও প্রমথ চৌধুরীর আহবানে তিনিও চলিত ভাষায় সাহিত্য চর্চা করেছিলেন। তবে এখনো বাংলাদেশে কিছু কিছু অফিসের চিঠিপত্রে এবং জমির দলিলে সাধু ভাষার প্রয়োগ দেখা যায়। এ ছাড়া সাধু ভাষার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। ২০০১ সালের পর অনেক পুরাতন দৈনিক পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাকও এখন আর সাধু ভাষা ব্যবহার করে না। ইত্তেফাকের কেবল সম্পাদকীয় কলামটি এখন সাধু ভাষায় রচিত হয়।
--------
মিঃ তিলকা সেনা বললেন, তাহলে সাধু ভাষা আলাদা করে শেখার কোন দরকার নেই।
আমি বললাম, কোন প্রয়োজনই নেই। আপনি বাংলা যদি ভাল শিখতে পারেন এক সময় নিজেই সাধু ভাষা বুঝতে পারবেন।
মিঃ তিলকাসেনা মনে হয় খুব খুশী হলেন।
বললেন, তাহলে আমাকে নিচের বাক্যগুলোর বাংলা শেখাও।
মি: তিলকাসেনা যে বাক্যগুলো আমার কাছে শিখতে চেয়েছিলেন তা হলঃ
১। আমি ভাত খাই । (এটা দিয়ে তিনি আরো ১০০টি বাক্য বানাতে পারবেন- আমি মাছ খাই, আমি রুটি খাই ইত্যাদি )
২। আমি ভাত খেয়েছিলাম।
৩। আমি ভাত খাব।
৪। আমি বিদ্যালয়ে যাই।
৫। আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম।
৬। আমি বিদ্যালয়ে যাব।
এরই ফাকে মিঃ তিলকাসেনা জিজ্ঞেস করলেন - আমি ভাত খাব এর সাধু রূপ কি হবে? আমি বুঝতে পারলাম না অবসরপ্রাপ্ত এই শ্রীলংকান ভদ্রলোক সাধু আর চলিত ভাষার প্রয়োগ নিয়ে কেন এতো আগ্রহ দেখাচ্ছেন? আসলেই তো আমি ভাত খাব এর সাধু ভাষার রূপটা কি হবে---- আমি ভাত খাইব > আমি অন্ন ধ্বংস করিব > আমি অন্ন আহার করিব। বুঝলাম, আমি বাংলা ভাষার মানুষ হয়েও বাংলা খুব একটা পারি না। কিন্তু এ কথা তো আর তাকে বলতে পারি না।
তাকে বাংলা শেখানোর ব্যাপারে আমার আগ্রহ দেখে তিনি খুব খুশী হলেন। যাবার সময়ে আমার মোবাইল নম্বর নিয়ে গেলেন। আমি বললাম আপনার নম্বরটা আমার কাছে থাকলে আমিও মাঝে মাঝে আপনার খোঁজ নিতে পারতাম। কত দূর বাংলা শিখতে পারলেন বুঝতে পারতাম।
মিঃ তিলকাসেনা বললেন- আমি মোবাইল পছন্দ করি না। মোবাইল জীবনকে কৃত্রিম করে । আমি সব ধরনের কৃত্রিমতা থেকে দূরে থাকতে চাই। তাই আমি কখনো মোবাইল ব্যবহার করিনি। কখনো ব্যবহার করতেও চাই না।
প্রাকৃতিক পরিবেশ আর প্রাকৃতিক জীবন তার অনেক পছন্দ। কৃত্রিমতা থেকে যত দূরে থাকা যাবে ততই শান্তি। সব মানুষই শান্তি চায়। মিঃ তিলকাসেনা শান্তি চান।
যাবার আগে আবারো দুই হাত জোর করে অভিবাদন জানালেন- Ayubowan!
আগামী সোমবার আবার আসব। অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করা দরকার।
আগামী সোমবার মিঃ তিলকাসেনা আবার আসবেন। বাংলা শিখবেন। সাধু আর চলিত ভাষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। মিঃ তিলকাসেনা কিভাবে যেন বুঝতে পেরেছেন, বাংলা অনেক সুন্দর একটি ভাষা।
আমি অপেক্ষায় ছিলাম সোম বারের জন্য । আবার এসে তিনি ভাষার কোন সমস্যা নিয়ে আসেন। আমার বাংলা ভাষা জ্ঞান খুব বেশী নয়। যদিও আমার মাতৃভাষা বাংলা। ইংরেজি ভাষাও যে খুব বুঝি তাও নয়। যে ভাষায় সেই বাল্যকাল থেকে কথা বলছি সেই ভাষাই ভাল করে শিখতে পারলাম না আজ পর্যন্ত। সেই আমাকেই ভাষার শেখার শিক্ষক মনে করছেন মিঃ তিলকা সেনা।
সোম বার এলেন না। এমন কি পরের সোমবারও না। এক সময় আমি হয়তো ভুলেও যেতাম। হঠৎ একদিন দেখি এসে হাজির। তার এবারকার সমস্যা কতিপয় নাম নিয়ে।
Vishwa- wek¦
Apu- Acy
Opu- Acy
Vimal – বিমল
সহজ কথায় বলতে গেলে বিমলকে কেন কেন ইংরেজিতে ভিমল লেখা হল। অপুর উচ্চারণ কি হবে এই সব।
যৌবনে একবার ভারত ভ্রমণ করেছিলেন। পড়াশোনা করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কলেজে। ১৯৫৪থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত।
বললেন- সেই সময় তুমি জন্মগ্রহণও করোনি।
কলকাতার এক ভদ্রলোকের কাছে পথের পাঁচালী ছবির নাম শুনে সেটি দেখেও ছিলেন। সেই দেখে অপু আর দুর্গা র ব্যাপারে তার আগ্রহ জন্মে। পথের পাঁচালী একটি অসাধারণ ছবি। মূল বই টি না জানি কত আকর্ষণীয়! তবে ভাষা জানা না থাকাতে মূল বইটি তার পড়া হয়নি। তবে ইংরেজি অনুবাদ পড়েছেন। সত্যজিত রায়ের আরো ছবি তিনি উপভোগ করেছেন।
বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক Arthur C. Clarke তার নিজ দেশ ইংল্যান্ড ছেড়ে শ্রীলংকাতে বসবাস করতেন। ১৯ মার্চ ২০০৮ এ ৯০ বছর বয়সে তিনি কলম্বোতে মৃত্যুবরণ করেন। অসাধারণ একটি দেশের আকর্ষণে তিনি এদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। সেই দেশের নাগরিক তিলকাসেনা । তার মধ্যে একটু বৈচিত্র থাকা তো বিচিত্র কিছু নয়।
জুলাই মাস এসে যাচ্ছে। এখনো বাজারে রাম্বুটান আসছে না।
আমার আড়াই বছরের মেয়ে প্রায়ই বলে – বাবা, রাম্বুটান এনো।
আমি সব সময় দোকানে দোকানে চোখ রাখি। যদি কখনো কোথাও রাম্বুটান পাই । ২০১০ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর পেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা রাজপথের সব দোকান উঠিয়ে দিয়েছেন। ফলে যেখানে সেখানে দোকান আর নেই। তাই আমার কাঙ্ক্ষিত রাম্বুটান খোঁজতে হচ্ছে অনেক কষ্টে।
গুলিস্তানের মতো এদেশে একটি জায়গা রয়েছে তার নাম পেটা। একে আবার ফোর্ট বলেও ডাকা হয়। সেখানে হকারদের জন্য শেড নির্মাণ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে গিয়ে এক দিন দেখি বেশ কয়েকজন দোকানী রাম্বুটানের পসরা সাজিয়ে বসেছে। দেখে কি যে ভাল লাগল। কাছে এগিয়ে গেলাম। দেখতে খারাপ নয়। তবে দাম গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশী। হঠাৎ তাকিয়ে দেখি – তিলকাসেনা! চমকে উ?লাম আমি।
কাছে এগিয়ে গেলাম। না , । দেখতে একরকম হলেও ইনি তিলকাসেনা নন। ? মন খারাপ হয়ে গেল। ঠিক করলাম – যে ফোন নম্বরটি আমার কাছে আছে তাতে ফোন করব।
ফোন পেয়ে মহাখুশী হলেন। অনেক আলাপের পর বললেন- বাংলা ভাষার আরো কটি সমস্যার সমাধান পেতে খুব তাড়াতাড়ি আবার আসবেন। ততে এই বার একটি চমক থাকবে। তার নিজের লেখা বইয়ের ইংরেজি সংস্করণের একটি কপি নিয়ে আসবেন আমাকে উপহার দেবার জন্য।
৯ম দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাংলা প্রথম পত্রে ৫০ নম্বর পেতে জান বেরিয়ে যেত। স্যারেরা বলতেন, বাংলায় কেউ কখনোই লেটার (মানে ৮০% নম্বর) পায় না। সেই থেকে বাংলা ১ম পত্রের উপর ভয় না অবজ্ঞা ঢুকে গিয়েছিল বুঝতে পারিনি । অথচ বাংলা ভাষা একটি অসাধারণ ভাষা।
আমি এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি এই বয়স্ক অথচ মনে প্রাণে তরুণ এই শ্রীলংকান ভদ্রলোকের জন্য । তিনি আমার জন্য একটি বই নিয়ে আসবেন। আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে কি আছে সেই বইয়ে।
আগামী সোমবার মিঃ তিলকাসেনা আবার আসবেন। বাংলা শিখবেন। সাধু আর চলিত ভাষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। মিঃ তিলকাসেনা কি ভাবে যেন বুঝতে পেরেছেন, বাংলা অনেক সুন্দর আর অসাধারণ একটি ভাষা। যেই ভাষার জন্য মানুষ জীবন দিতে পারে সেই ভাষা অনেক সুন্দর মিঃ তিলকাসেনা সেটি ? ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন।
০৫ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: একটা মাত্র উল্লেখযোগ্য নদী আছে। তাই মিঠা পানির মাছ নেই বললেই চলে। উনাদের মাছ সামুদ্রিক। চা আছে। তবে বাংলাদেশের চায়ের চেয়ে বেশী ভালো নয়। গরীব দেশে জিনিসপত্রের দাম কমই হয়। কোন কোন জিনিসের দাম বাংলাদেশের তুলনায় খুবই্ কম।
২| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:০৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: সাজ্জাদ ভাই, জানতাম না আপনি শ্রীলঙ্কায় থাকেন। আর লেখাটি সত্যি চমৎকার হয়েছে। চায়ের সাথে, টাটকা মাছ আর নারিকেলের নাড়ুল চলুক আজ ছুটির দিনটিতে। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
০৭ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:১৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: শ্রীলঙ্কায় থাকতাম ২০০৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত। এখন আছি মালয়েশিয়াতে। শ্রীলঙ্কানরা নারকেলের নাড়ু খায় না। তারা নারিকেলের তেল দিয়ে রান্না করে, তরকারিতে প্রচুর মরিচ আর নারিকেল ব্যবহার করে।
আর চা? তাদের চায়ের চেয়ে বাংলাদেশের চা অনেক ভালো। তবে তারা স্মার্ট। তাদের পড়শোনা ভালো। সবাই ভালো ইংরেজে বলতে পারে।
আপনার জন্য শুভ কামনা প্রিয় কাওসার ভাই।
৩| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: তিলকাসেনার জন্য শ্রদ্ধা।
তাকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন।
০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এতো দিন তিনি বেঁচে আছেন কিনা কে জানে। তবে গুগলে সার্চ দিয়ে তার নামে এক জন শ্রীলংকান লোক পেলাম। তিনি লেখালেখি করেন। চেহারাও প্রায় তার মতো। তার সাথে আর দেখা হবার সম্ভাবনা নেই । ২০১২ সালে আমি শ্রীলংকা থেকে চলে এসেছি।
৪| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৫
গরল বলেছেন: আপনার ব্লগ পাঠ করিয়া বড়ই প্রীত হইলাম, বিশেষ করিয়া একজন শ্রীলংকান ভদ্রলোকের বাঙলা প্রীতি দেখিয়া আশ্চর্যাম্বিত হইলাম।
০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আমি নিজেও আশ্চর্যান্বিত ছিলাম। কিন্তু তাকে খুব বেশী সময় দিতে পারিনি। আমার নিজের কোন গাড়ি ছিল না। তাছাড়া সেই সময় গৃহযুদ্ধ কবলিত লঙ্কায় চলাচল করাও ছিল মোটামুটি ঝুকিপূর্ণ। এখনকার সময় হলে তাকে নিয়ে ভালো কোন প্রকল্প নেয়া যেত।
৫| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৯
গরল বলেছেন: ওহ আর একটি বিষয় যদি নিশ্চিত করিতেন তবে কৃতজ্ঞ থাকিতাম, শ্রীলংকার আদি অধিবাসীরা নাকি বাংলাদেশ হইতে গমন করিয়াছিল, মানে যাহারা তামিল নয়। উহাদের ইতিহাসেও নাকি এমনটাই লিখিত আছে?
০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ঠিক ধরেছেন। একথাটি সে দেশের পড়াশোনা জানা সমাজও জানে এবং মানে। চন্দ্রদ্বীপের রাজ কুমার লংকা দ্বীপ জয় করেছিলেন। তবে তার আগেই সিংহলীরা ওখানে বসবাস করিত।
ইতিহাসে উহা লিখিত আছে।
৬| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
শাহজাহান মুনির বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন জনাব। বাংলা নিয়ে মিঃ তিলকাসেনার আগ্রহ ভালো লেগেছে।
০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি পাঠ করিয়াছেন জ্ঞাত হইয়া যথেষ্ট প্রীত হইলাম। আপনার কল্যাণ হোক।
৭| ০৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:০৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সাজ্জাদভাই জমিয়ে দিয়েছেন দেখছি।আপনি ওখানে একটি বাংলা স্কুল খুলন, দেখবেন বেশ চলবে। আমরা আরো কিছু এমন পোষ্ট পেতে চাই।
আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা।
০৭ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৩২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ভাইয়া, আমি ২০১২ সালে লংকা বিদায় গ্রহণ করিয়াছি। তবে দেশটি ভালো। বাংলাদেশের মানুষ শ্রীলংকা ভ্রমণ করলে উপকৃত হতে পারে।
৮| ০৫ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭
শামচুল হক বলেছেন: কাহিনী পড়ে খুব ভালো লাগল, আরো ভালো লাগল তিলকাসেনার আগ্রহের কারণে।
০৮ ই মে, ২০১৮ ভোর ৫:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ। তারে সাথে আমার আবার দেখা করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু হয়নি। জানি না এতদিন তিনি বেঁচে আছেন কিনা।
৯| ০৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:৪৪
প্রামানিক বলেছেন: পুরো কাহিনীটিই পড়লাম, তিলকাসেনার বাংলা শেখার আগ্রহ দেখে খুব ভালো লাগল। বুড়ো বয়সে মানুষের এমন আগ্রহ দেখে মুগ্ধ হলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
০৯ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ভাইয়া, আমি ৫ বছর আগেই লংকা থেকে চলে এসেছি। তাই আর তাকে নিয়ে নতুন কিছু লেখা সম্ভব হচ্ছে না। তার কোন খোজ নেয়া সম্ভব না।
১০| ০৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১:১৪
মাআইপা বলেছেন: খুব আবেগী লেখা। ভাল লাগলো। আগামীতে তিলকাসেনার ছবি সহ একটা পোস্ট আশা করছি।
রাম্বুটান কি লিচুর মতো ?
শুভ কামনা রইল
০৯ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: তার কোন ছবি আমার কাছে নেই। রাম্বুটান নিয়ে আলাদা একটি পোস্ট দিলাম। পড়ে দেখতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৮:৫৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
ইন্টারেষ্টিং কাহিনী।
ওখানে অনেক মাছ আর চা খাচ্ছেন?