নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
প্রতিদিন আমাদের সবার দ্বারাই্ কিছু না কিছু ময়লা উৎপাদিত হয়। এই সব ময়লা আবর্জনা কোথায় ফেলতে হবে সেটা একটা ভাবনা। তবে এই সব ফালতু বিষয় নিয়ে কেউ ভাবে না। ময়লা কোথায় ফেলতে হবে এটা নিয়ে আর ভাবনার কি আছে। যে কোন এক জায়গায় ফেলে দিলেই ব্যাস হয়ে গেল।
কেউ কেউ ময়লা ফেলেন রাস্তায়। কেউবা ফেলেন পথচারীরা যেখানে বেশী অসুবিধায় পড়েন এমন জায়গায়। রাস্তায় যেহেতু সবার ব্যবহারের জন্য তাই ময়লা ফেলার জন্য রাস্তা ব্যবহার করাই তো মনে হয় উত্তম।
আমি প্রায়ই লক্ষ্য করে দেখি, ঢাকার অনেক জায়গায় বড় রাস্তার ডিভাইডারের উপর এলাকাবাসী ময়লা ফেলছেন। এই সব ময়লা আবার ব্যাপক পরিমাণ দুর্গন্ধ বহন করে। এই সব ময়লার পাশ দিয়ে বাস বা রিক্সা যাত্রীরা যাবার সময় অনেকেই বমি করে দেন।
কিছু মানুষ আছেন যারা সকালে দোকান খোলার আগে দোকান ঘরটি ঝাট দিয়ে পরিস্কার করেন। ঝাট দেয়ার পর প্রাপ্ত ময়লা তিনি কোথায় ফেলবেন। সেটা তিনি তার দোকানের সামনেই ফেলেন। মাঝে মাঝে পথচারীদেরকেও লক্ষ্য করে তাদের গায়ে ছুড়ে মারেন।
বাংলাদেশে দেখার জিনিসের কোন অভাব নেই। যতই দেখি শেষ হয না। দেখার আনন্দ ।
আজ আরো একটি জিনিস দেখে খুবই আনন্দ পেলাম। ঝাড়ু দেয়া। ঝাড়ু দেয়া দেখার মাঝেও যে অনেক মজার বিষয় আছে আগে জানতাম না।
অফিসে আসতে বাস ধরার জন্য আমি অনেকটা পথ হেটে আসি। উদ্দেশ্য রিক্সা ভাড়া বাচানো। আমার আবার অত টাকা নেই যে বার বার রিক্সায় চড়তে পারি। সকাল বেলা। দোকানীরা সবে মাত্র দোকান খুলছেন। অনেক দোকানে তখনো তালা মারা। মজার যে জিনিসটি দেখলাম তা হল এক দোকানী তার দোকানটাকে বেশ পরিস্কার করে ঝাড়ু দিচ্ছেন। ঝাড়ু দেয়া শেষ হবার পর সবগুলো ময়লা ঝাড়ু দিয়ে রাস্তার মাঝখানে ঠেলে দিলেন। ময়লা গুলো হয়তো ডাস্টবিনে ফেলার নিয়ম। কিন্ত কার অত সময় আছে! তার চেয়ে গণ ডাস্টবিন রাজপথ আর রাস্তায় ময়লা ফেলাই বেশী বুদ্ধিমানের কাজ। দৃশ্যটা দেখে আমার এতো ভাল লাগল! ঝড়ু দেয়ার সময় তিনি যখন দোকানের একেবারে সামনে চলে এলেন তখন আমিও তার প্রায় মুখোমুখি। ভদ্রলোক হলে তো তিনি থেমে যেতেন। তিনি থাকলেন না। আমার শরীর লক্ষ্য করে ময়লাগুলো ছুড়তে লাগলেন। আমি ধন্য হলাম। কেননা, সেগুলো শুকনো ময়লা। ভেজা ময়লা হলে তো আমি জামা কাপড় ঝেড়ে পস্কিার হতে পারতাম না।
বাংলাদেশের ( বিশেষত ঢাকা শহরের) পথ ঘাট খুবই নোংরা। ধুলা-বালি গিজ গিজ করছে। বৃষ্টি নামলে এই ধুলা আবার কাদা হয়ে পথচারীদেরকে নোংরা করে। শুষ্ক দিনে ধুলা মানুষের নাকমুখে ঢুকে। জামা-কাপড় ময়লা করে। আমার মনে হয় না যে দেশে কোন মানুষ আছে যার ধুলা কিংবা কাদায় মাখামাখি হতে ভাল লাগবে।
মালয়েশিয়াতে আমি প্রতি দিনই দেখি- লাল রঙের গেঞ্জি গায়ে অনেক কর্মী রাস্তা পরিস্কার করছেন। ড্রেন থেকে ধুলাবালি বের করে এনে পলিথিনের ব্যাগে ভরে রাখছেন। নিখুত ভাবে পরিস্কার কাজ শেষ হবার পর বড় ট্রাক এসে এই সব ময়লা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে দূরে কোথাও।
রাস্তার জমে যাওয়া ধুলাই বৃষ্টির সময় ভিজে রাস্তায় কাদা উৎপাদন করে। বৃষ্টির দিনে পচা কাদা পথচারীদেরকে খুবই বিরক্ত করে। অথচ এই সব আমাদের নিজেদেরই সৃষ্টি।
উন্নত ও সভ্য দেশে মানুষ যত্রতত্র ময়লা ফেলে না। সব খানেই ময়লা ফেলার জন্য ডাস্ট বিন থাকে। আরো থাকে রিসাইকেল বিন। কোথায় ধারে কাছে ডাস্ট বিন না পেলে মানুষ ছোটখাট ময়লা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তারপরও যেখানে সেখানে ফেলে না।
আমার এক বন্ধু বিদেশে থাকে। দেশে বেড়াতে গিয়ে সে বিদেশে অর্জন করা অভ্যাসটি ছাড়তে পারেনি। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে সে ময়লা ফেলার জায়গা খুজছিল। তা দেখে অনেকেই তাকে টিটকারি মেরেছে। আফসোস।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ কবি বলেছেন, “আমার দেশের পথের ধুলা খাটি সোনার চাইতেও খাটি” । যারা নিজের আবাস ঝাড়ু দিয়ে ময়লা রাস্তায় ফেলেন কিংবা যারা ময়লা রাস্তায় ফেলাটাই নাগরিক দায়িত্ব মনে করেন তারা মনে হয় কবি মহাশয়ের কবিতাটি জানেন। তাই হয়তোবা তারা দেশের রাজপথ-ঘাট খাটি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিতে চান। তাদের এই মহতী প্রচেষ্টাকে আসুন অভিনন্দন জানানো্র চেষ্টা করি।
পুরোন ঢাকার এক শাশুড়ী তার পুত্রবধুকে বলল- রান্না ঘরের মাছ, মুরগী আর তরিতরকারি কাটার পর যে ময়লা গুলো হবে সেগুলো যেন সে মানুষ জন দেখে রাস্তায় ফেলে। তাদের বাসাটি দোতলায়। বারান্দার ঠিক নিচেই বাসা। নতুন বউ। শাশুড়ীর কথা অমান্য করে কি ভাবে। সে ময়লার ভান্ডটি নিয়ে বারান্দায় এসে দাড়ালো। কোন কারণে সেই সময় রাস্তায় লোক চলাচল কম ছিল। তাই সে ঠায় দাড়িয়ে রইল। অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পর এক মুরুব্বী বেশ সাজসজ্জা করে বের হচ্চিলেন। তিনি বারান্দার নিচে আসার পরপরই বউমা তার ময়লার ভান্ডের সব ময়লা লোকটার মাথার উপর ফেলে দিল।
- আমার মাথার উপর ময়লা ফেলল ক্যাঠায়। আমি কি ডাস্টবিন নি??
চিৎকার শুনে শাশুড়ী দৌড়ে এলেন।
- মুরুব্বী মানুছটার উপর ময়লা ফেলছ ক্যালা?
- আপনি তো আম্মা কইলেন মানুষ জন দেইখা ময়লা ফেলাইতে।
আমার মনে হয়, সকল বাংলাদেশী, বিশেষ করে ঢাকা শহর বাসী উক্ত গল্পটি জানেন। তাই তারা ডাস্ট বিন কেনেন না। ব্যবহার করেন না। নগর কর্তৃপক্ষ কিনলে চুরি করান চোরকে দিয়ে। তাই তারা পথের মাঝে, মানুষের মাথায় ময়লা ফেলতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ময়লা ফেললে মানুষর মাথায় ফেলার চেয়ে উত্তম স্থান আর কি হতে পারে?
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:১৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সবারই উচিত পরিস্কার থাকা। পরিস্কার রাখা। পরিস্কার থাকলে মন ভালো থাকে। মেজাজ থাকে ফুরফুরে।
২| ০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ৭:০৫
সৈয়দ তাজুল বলেছেন: কাওসার ভাইয়ের কথা হয়তো ঠিক, তবে পুরোটা না।
লেখাটা নির্বাচিত পাতায় শুভা পাক। খুব গুরুত্বপূর্ণ লেখা। ধন্যবাদ সাজ্জাদ ভাই।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:১৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি পড়েছেন সেটাই আমার জন্য আনন্দের। আপনি ভালো থাকুন।
৩| ০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ৭:৪৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
এগুলোকে নিয়মে পরিণত করার জন্য অনেক লোকবল দরকার।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:১৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: নগর ভবনে এই সব কাজের জন্য বিভাগ আছে, লোকবল আছে, বাজেট আছে। কেবল নেই কাজ। আমরা কাজ চাই। আমরা কাজ করতে চাই।
৪| ০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমি কোনো দিন যেখানে সেখানে ময়লা গেলি না। যারা ফেলে তারা নির্বোধ শ্রেণির।
রাস্তা ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন দেখতেও তো ভালো লাগে।
সরকারের উচিত কঠিন আইন করা। এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকতে হবে।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:২১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অনেকেই আছেন যারা নির্ধারিত জায়গায় ময়লা ফেলাকে বোকামী মনে করেন। মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের পাশে ( গুলিস্তান সিনেমার ঠিক উলটা পাশে) আপনি যদি নাক-মুখ খুলে হেটে যেতে পারেন তবে আপনি বীর পুরুষ। কেননা, জায়গাটা সব সময়ই প্রসাবে ভাসানো থাকে। জানি না কারা এটা করে। ( আমি যখন দেশে ছিলাম তখন দেখতাম। এখনকার খবর জানি না। বদলালে ভালো। )
৫| ০৩ রা মে, ২০১৮ সকাল ৯:২৪
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: কিছুদিন আগে ৫ কোটি টাকা খরচ করে ঢাকা সিটি করপোরেশন থেকে সব রাস্তায় রাস্তায় ডাস্টবিন বসানো হয়েছিল, কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে মাত্র এক মাসের মাথায় সব ডাস্টবিন চুরি হয়ে যায়। হায়রে বাংলাদেশে যেখানে ময়লার ডাস্টবিনও নিরাপদ নয়।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:২২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এগুলোর দাম ৫ কোটি টাকা জানতে পারলে আরো আগেই চুরি হয়ে যেত। যাক চোরদের তো ৫ কোটি টাকা ইনকাম হল। এটাই বা কম কিসে।
৬| ০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২
খালেদা শাম্মী বলেছেন: খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। জনসচেতনতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:২৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জনগন সচেতন। কিন্তু ব্যাবস্থাপনা মনে হয় খারাপ। নইলে কেই বা ময়লা পরিবেশে থাকতে চায়। ভালো পরিবেশ সব সময় আনন্দময়।
৭| ০৩ রা মে, ২০১৮ দুপুর ১:৪২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:২৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি নিরাপদ ব্লগার খেতাব পেয়েছেন আজ। আপনাকে অভিনন্দন জানাই। প্রচুর লিখুন। কেউ না কেউ এক দিন জাতির জন্য ভালো কাজ করতে এগিয়ে আসবে।
৮| ০৪ ঠা মে, ২০১৮ রাত ১০:৫৩
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার মধ্যে যেন জনগণের এলার্জি আছে। তাই তারা ডাস্টবিনে ময়লা ফেলবেই না। যত্রতত্র ফেলবে। প্রয়াত মেয়র ফুটপাথে ফুটপাথে একটু পর পর ময়লার ড্রাম ঝুলিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কয়জনে সেটায় ময়লা ফেলে? ময়লা ফেলার জায়গা মনে হয় রাস্তা, ফুটপাথ আর ড্রেন। তাইতো বৃষ্টি পড়লে রাস্তায় জমে পানি। আমরা জনগণ মহানন্দে (!) সেই রাস্তায় পঁচা পানিতে সাতার কেটে পথ চলি।
০৫ ই মে, ২০১৮ সকাল ৭:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি সঠিক বলেছেন। আমাদের জনতা সচেতন হতে চায় না। একটু সচেতন হলেই সুন্দর নগর পাওয়া সম্ভব। আগামীতে মানুষ সচেতন হবে। সুন্দর একটা দেশ হবে আমাদের।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মে, ২০১৮ ভোর ৬:২৮
কাওসার চৌধুরী বলেছেন: সময়োপযোগী সুন্দর পোস্ট। কিন্তু এস লেখা যারা ঢাকাকে প্রতিনিয়ত ডাস্টবিন বানায় তারা পড়ে না। আর যারা পড়বে ঘন্টা খানেক পর ভুলে যাবে। এটা আমাদের অনেকগুলো ট্রেডমার্ক ঐতিহ্যের মধ্যে একটি।