নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
সাত সকালে অফিসে আসার পথে ভয়াবহ একটা দৃশ্য দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল কবির সাহেবের। গেটের সামনে থেকে সামান্য একটু দূরে একটি চটের উপরে ছোট একটি বাচ্চাকে শুইয়ে সামনে বসে আছে কম বয়সী একটা মহিলা। মুখ তার মলিন। ছিন্ন বস্ত্র গায়ে।
শিশুটির বয়স আন্দাজ করার চেষ্টা করলেন কবির সাহেব। দেড় কি বড় জোর পৌনে দুই বছর হবে। মহিলাটির বয়স ২৪/২৫ এর বেশী হবে না। বাচ্চাটিকে একটি চটের ব্যাগে শুইয়ে সে সামনে বসে আছে। মনে আশা, মানুষ টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করবে। কোন কিছুর আশা ছাড়া কেউ কি আর এমনি এমনি বসে থাকে।
অনেক মানুষ আছে যাদের সরাসরি ভিক্ষা চাইতে পারেনা। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ছাপানো লিফলেট হাতে নিয়ে বাসে উঠে পড়ে। যাত্রীদের হাতে হাতে সেই লিফলেট বিলি করে। কেউ নিতে না চাইলেও তার কোলের উপর রাখে। সবার মাঝে বিলি হয়ে গেলে ঝোলা থেকে বের করে লজেন্স। এই লজেন্স জিনিসটা তো সবার পছন্দ নাও হতে পারে। দেখা যায় যে বেশীর ভাগ লোকই তা কিনে না। কেউ কেউ না কিনলেও টাকা দিয়ে দেয়। কবির সাহেব মনে করেন, এই বিষয়টি একেবারে ভিক্ষা নয়। যদিও মানুষ বিরক্ত হয়। কার ঠেকা অপ্রয়োজনে লজেন্স কেনার। কবির সাহেব ভাবেন, এর মধ্যে ভালো একটি দিক আছে। তা কেউ লক্ষ্য করে না। লিফলেট আর লজেন্স না নিয়ে এই লোকের হাতে তো চাকুও থাকতে পারত। মানুষের বুকে চাকু ঢুকিয়ে দিয়ে টাকা আদায় করে নিতে পারত।
হয়তো এই মহিলাটিরও সরাসরি ভিক্ষা চাইতে শরম লাগে। তবে সে কোন লিফলেট ছাপায়নি। মেয়েটির চেহারায় অসহায়ত্বের ছাপ আছে। কোন সুখে থাকা রমনী তো আর রাস্তায় এভাবে বসে থাকবেন না। কবির সাহেব জানেন, সন্তান সব মায়েরই অনেক প্রিয়। তাকে যেখানে সেখানে ফেলে রাখা যায় না। তাকে রাখতে হয় যতটা সম্ভব তারও চেয়ে বেশী আদর-যতেœ। কি এমন হলো যে আতœজাকে পথে ফেলে বসে থাকতে হবে। ব্যাপারটা কবির সাহেবের মতো সামান্য চাকুরের মাথায় ঢুকে না।
কবির সাহেব রাজধানীর শহরের একটি সরকারী অফিসে চাকরি করেন। মর্যাদার বিচারে খুব সামান্যই একটি চাকরি। বর্তমান বাজারে পরিচয় দেয়ার মতো কোন চাকরি নয়। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, তিনি যে একটি সরকারী অফিসে চাকরি করেন এটা জেনে অনেকেই তার কাছে নানা ধরনের তদ্বির নিয়ে হাজির হন। তিনি যতই বোঝাতে চেষ্টা করেন তিনি অফিসের সব চেয়ে নীচের পদে আছেন। তার চেয়ে নীচে যারা আছেন তারাও তারই সমান। তার নিজের চাকরিই দিনের মধ্যে ৫০ বার যায় আর আসে। তিনি কোন তদ্বিরের সমাধান করতে পারেন না। তারপরও অনেকে তাকে ধরে- কবির সাহেব, আপনি যদি একটা উপায় করেন--
কবির সাহেবের একটি গুণ আছে। তিনি মিথ্যা বলেন না। তিনি যা বিশ্বাস করেন তাই বলেন। তিনি এমনিতে রাগ করেন না। কিন্তু কখনো রেগে গেলে বলেই বসেন- আমি কেরানীর চাকরি করি বলে কি আমার একটু শখও থাকবে না। কেরানী হয়ে কি এমন মহা অন্যায় করলাম বাবা। কেরানীরা কি মানুষ নন। নাকি তাদের মানুষ ভাবতে নেই। দুনিয়ার সব মানুষ তো আর জজ ব্যারিস্টার হয় না। কেউ কেউ তো কেরানীও হবে। কেউ হবে মুচি। কেউবা ঝাড়–দার। পৃথিবীটাকে পরিষ্কার রাখার জন্যও তো এই সব মানুষ দরকার। সবাই লাট সাহেব হলে তো আর জগৎ চলবে না। জগৎ চালানোর জন্য বিধাতা কাজ ভাগ করে দিয়েছেন। তাই তো কেউ ঝাড়–দার, কেউবা কেরানী। আবার কেউবা বড় বড় হর্তা-কর্তা। এই সবই বিধাতার খেলা। কবির সাহেব এটা বিশ্বাস করেন।
কবির সাহেব জানেন, সব মানুষেরই মর্যাদা আছে। রাজার যেমন মর্যদা আছে তেমনি প্রজাও মর্যাদাহীন নয়। যার যার স্থানে দু’জনেই মর্যাদাবান। কবির সাহেব মনে করেন, সততার সাথে কাজ করার মাঝেই মানুষের মর্যাদা।
কবির সাহেব খুবই নিরীহ, গোবেচারা ধরনের মানুষ । কারো সাতে নেই। পাঁচেও নেই। তার ধারণা, তার বুদ্ধি বিবেচনা কম বলেই তাকে বার বার কথা শুনতে হয় স্ত্রীর কাছে। পরিচিত সবাই তাকে বলদ বলে জানে। নইলে তার মতো পড়ালেখা জানা লোক কত বড় হোমরা চোমরা কিছু একটা হতে পারত। সে কোন বড় চাকরি বাকরি পেল না। কবির সাহেব মাঝে মাঝে বলেন- আমার বাবার যদি অনেক জমি-জমা থাকত তবে কি আর আমি চাকরি করি। চাকরি মানে চাকরের কাজ। নামেই এর পরিচয় নিহিত। উপায় নেই বলেই আজ তিনি কেরানী।
অফিসে তার যিনি বস তিনি প্রায়ই রেগে গিয়ে বলেন- বাংলা বুঝেন না কবির সাহেব? নাকি অন্য কোন ভাষায় বলতে হবে?
শুনে কবির সাহেবের খুব মন খারাপ হয়। তিনি অফিসের কাজ যে খারাপ জানেন এটা তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে বসদের এই ভাষার জটিল প্রয়োগ তাকে আহত করে।
কবির সাহেব একদিন বসের যিনি বস তার রমে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে শুনেন- বড় বস তার বলছেন- বাংলা বুঝ না মিয়া, নাকি অন্য ভাষায় কথা বলতে হবে। আমি কিন্তু বাংলা ছাড়াও আরো কয়েকটি ভাষা জানি।
কবির সাহেবকে দেখে বস খুব লজ্জা পেলেন বলে মনে হলো।
তার স্ত্রী আলেয়া বেগম মাঝে মাঝে বলেন- মনটাকে আরো একটু বড় কর। অফিসে তুমি কেরানী হতে পার। কিন্তু যখনই তুমি অফিসের বাইরে বের হয়ে আস তখন তো আর তুমি কেরানী নও। তখন তুমি নিজেকে রাজা ভাবনা কেন? অফিসের বাইরেও তোমার একটা জগত আছে। তোমার সেই জগতের তুমিই তো রাজা। অফিসে পদবীতে তুমি হয়তো ছোট হতে পার । কিন্তু মানুষ হিসাবে তুমি অনেক বসদেরকেই ছাড়িয়ে যেতে পার। সেখানে কেউ তোমার কাছে হালে পানি নাও পেতে পারে। তাই অফিসের বাইরে বের হবা মাত্র তোমার মনটাকে প্যারাসুটের মতো ছড়িয়ে বড় করে দাও। মনে রাখতে পার, তুমি যদি ইনফেরিয়র জটিলতায় ভুগ তোমার বসরা অনেকেই দেখতে সুপিরিয়র জটিলতায় ভুগবে। তখন তুমি অনেক মজা পাবে। জগতের এই সব মজা সবাই বুঝে না। যারা বুঝে তারা খুব সুখী মানুষ হয়। তুমি সুখী হবার চেষ্ট কর।
শুনে কবির সাহেব হাসেন। এই সব কথা শুনলে তার মন ভালো হয়ে যায় ।
আলেয়া বেগম মানুষটি অনেক ভালো। তিনি ভাবেন, তার বউটা অনেক জ্ঞান বুদ্ধি রাখে। আহা, বেচারী অনেকবার বিসিএস পরীক্ষা দিতে চেয়েছে। কিন্তু সরকারী চাকরি পেলে কোন অজপাড়া গাঁয়ে পোস্টিং কোথায় হবে সেই আশংকায় আর পরীক্ষাই দেয়া হয়নি। তার ভাব দেখে মনে হয় যেন বিসি এস পরীক্ষা দিলেই চাকরি খাড়া। আর বিসিএস কি এতোই সোজা। কত পড়ালেখা । তারপর আছে নানা কোটা। আছে নেতাদের দলীয় তদ্বির। এখানে টিকে নির্বাচিত হওয়া কি যার তার কাজ। তাই বেচারী শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবেই কর্মজীবন শুরু করল। সামান্যই চাকরি। ছোট ছোট শিশুদের পড়াতে তার খুব ভালো লাগে। তার মুখে লেগে থাকে সহজ সরল হাসি। সরল সেই হাসি নিয়েই তো চলছে তাদের সংসার। তাদের সংসারে ২ টি ছেলে-মেয়ে। তাদের বড় করে তোলার কাজটিই দু‘জনে করতে চান অত্যন্ত সুচারুভাবে।
কবির সাহেবের অফিসটি ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। এই প্রেস ক্লাব জায়গাটি কবির সাহেবের অনেক অপ্রিয় একটি জায়গা।
প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতি দিনই সমানে ব্যানার হাতে নিয়ে আর মাইক লাগিয়ে দেদারসে চলতে থাকে ভাষণ! যেন ভাষণের মহোৎসব। যেন কে কত জোরে চিৎকার করতে পারে তার প্রতিযোগিতা। তাদের ভাষণের কথাগুলো যে খুব মার্জিত তাও নয়। যা ইচ্ছে তাই বলে যায়। কেউ কেউ বলে তাদের মুখে লাগাম দেয়া দরকার। মাইকগুলো তাক করা থাকে তাদের অফিসের দিকে। ফলে সব দাবী দাওয়া সারাদিন তাদেরকেই শুনতে হচ্ছে। যাকে উদ্দেশ্য করে দাবি পেশ তারা থাকেন অনেক দূরে। তারা হয়তো পত্রিকায় পড়বেন যদি এগুলো ভাগ্রক্রমে ছাপা হয় ।
আজকাল খবর ছাপানো হয় তদ্বির করে। প্রতি দিনই কোন না কোন সভা এখানে হবেই। এতো খবর ছাপার মতো জায়গা হয়তো পত্রিকাওয়ালাদের নাই। খবরের চেয়ে বিজ্ঞাপন ছাপলে পত্রিকার ব্যবসা হয়। লাভজনক ব্যবসা বাদ দিয়ে এই সব শত শত সমাবেশের খবর ছাপাবে পত্রিকাওয়ালার এতোটা বোকা নন।
নীরব প্রতিবাদ জাতীয় কিছু হলে এত কষ্ট লাগত না। এক সময় মৌন মিছিল নামে এক ধরনের বিষয় ছিল। ঢাকা হলো বিচিত্র শব্দ আর চিৎকারের শহর । এখন আর নীরব প্রতিবাদ চলে না। তাই তো সারা দিন চলে বেজায় চেঁচামেচি।
এখন মনে হচ্ছে- প্রেসক্লাবটাই হয়তো যত নষ্টের মূল! এটা ঢাকায না হয়ে সাভার কিংবা জয়দেবপুরে হলে এই সব ভাষণ আর দাবী-দাওয়ার চিতকার চেচামেচি আমাদেরকে বিরক্ত করত না। কবির সাহেব শুনেন তার ভাবেন।
কবির সাহেব মনে মনে ভাবেন- আজকাল মানুষ সব জায়গায়ই ব্যবসা খোঁজে। তার বাল্যবন্ধু রহমান সাহেব এক জন শিক্ষক। কলেজে চাকরি করেন। তিনি বলেন- সব চেয়ে বড় ব্যবসা কি জানো বন্ধু?
কবির সাহেব না জানার ভাব করেন।
জানি না তো। তবে শুনেছি গার্মেন্টস নাকি সব চেয়ে বড়।
আরে ওটা তো সব চেয়ে বড় রপ্তানীমুখী শিল্প। জেনে রাখ, সব চেয়ে বড় ব্যবসা হলো রাজনীতি। অনেক লাভের ব্যবসা এটা। দেখনা, লোকজন কেমন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে এই ব্যবসায়ে।
অন্য সবাই মাইন্ড করতে পারেন। কিন্তু যারা প্রেসক্লাবের সামনের ভবনগুলোতে কাজ করেন তারা নিশ্চয়ই তার কথায় এক মত হবেন। প্রেস ক্লাবটা সরিয়ে নিলে এই মুহূর্তে কবির সাহেব খুব খুশী হতেন।
প্রতি দিন কিল বিল করে মানুষ ছুটে চলে তোপখানা রোডের উপর দিয়ে। গায়ে গা লেগে যায়। পায়ে পায়ে ঠোকাঠুকি হয়ে যায়। পথে এত টুকু জায়গা ফাঁকা ন্ইে। খালি মানুষ আর মানুষ। সময়ের সাথেধ পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে মানুষ। আর কমে যাচ্ছে মানবতা। মানুষের মনে এখন আর মায়া-মমতা নেই। সবাই যেন পাথর হয়ে গেছে। পাথরের বুকেও মাঝে মাঝে পানি দেখা যায়। মানুষের মায়ার কোন আভাস পাওয়া আজ কাল কঠিনতর হয়ে যাচ্ছে।
আজ অফিসে প্রবেশ করার সময় দেখল- মহিলাটি বাচ্চাটিকে শুইয়ে দিয়ে পাশে বসে আছে। কয়েকটি মাঝি ভন ভন করছে। বাচ্চাটিকে দেখলেই মনে হয় খুবই দুর্বল। বোধ হয় ঠিক মতো খাবার দেয় না। আর খাবার দেবেই বা কিভাবে? সারা দিনে কয় টাকা পায় সে।
আজ কাল মানুষ খুব একটা দান খয়রাত করে না। আর যদিও করে তারা তো আর এই অফিসরে গেটে এসে দান করবে না। এই অফিসে যারা বড় বড় পোস্টে আছেন তারা কেউই পায়ে হেটে পথ চলেন না। তারা গাড়ী হাঁকিয়ে অফিসে আসেন। পথের পাশে কে বাচ্চা নিয়ে বসে আছেন তা কেউ দেখেন না।
যারা তার মতো মাছি মারা কেরানী তারাই কেবল পায়ে হেঁটে যাতায়াত করেন। ১০ টাকার রিক্সার পথ অনায়াসে পায়ে হেঁটে মেরে দেন। দান-খয়রাত করার মতো এতো টাকা তারা পাবেন কই। যাদের দান করার সামর্থ্য আছেন দরিদ্র ব্যক্তিরা তাদের ধারে কাছেও যেতে পারে ন॥ পথে তাঁরা থাকেন গাড়ীর ভেতর। আর তারা যখন বাড়িতে থাকেন তখন বাড়িতে বিশাল গেট। সেই গেটে আবার দারোয়ান পাহারা থাকে। আর থাকে বিদেশী কুকুর।
তাদের অফিসের গেটের বাইরে শুধু মহিলাটি নয়। আরো অনেকেই বসে আছে। কেউ বসে আছে ফলের ঝুড়ি নিয়ে । এখানে দোকান ভাড়া দেবার ব্যাপার নেই বলে তারা একটু কম দামে বিক্রি করতে পারে। অফিসের চাকুরেরা এটা জানে। তবে অফিসের গেটে পাহারারত পুলিশরা মনে হয় মাঝে মাঝে দোকানীদের কাছ থেকে অন্য ধরনের সুবিধাও নেয়া। কবির সাহেব নিজে দেখেছেন। দেখেও না দেখার ভান করেছেন। ঢাকা শহরের ফুটপাতের প্রতি ইঞ্চি জায়গার জন্য ভাড়া দিতে হয় । এই ভাড়া সরকারী কোন খাতে যায় না। যাদের ট্যাকে যায় তারা অনেক শক্তিশালী। তারা কাউকে পরোয়া করেন না। কে জানে হয়তো এই মহিলাটিকেও কর দিতে হয় এখানে বসার জন্য । প্রতিদিন ১০০ টাকা। কিংবা প্রতিদিন যা কামাই হবে তার অর্ধেক।
এখানে অনেক ফলের বিক্রেতা, জামা-কাপড়েরর পসারীরাও বসেছে। একটা ভালো দিক হলো এখানে দাম তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তবে ঠকতে হয়। কবির সাহেব বেশীর ভাগ সময়ই ঠকেন। এই তো সেদিন এক দোকানীর কাছ থেকে লিচু কিনলেন। দেখতে ভালোই মনে হলো। দোকানী ২২০ টাকা ১ শ দরে বিক্রি করতে রাজী হয়ে গেল। কবির সাহেব মনে মনে খুব খুশী হলেন। কেননা, অন্য জায়গায় এই সময় এই লিচু এই দামে কেনার আশা করা যায় না। দোকানী বললো- স্যার, গোনা, আছে ১০০ টা। তারপরও ৫ টা বেশী দিয়ে দিলাম।
অনেক খুশী মনে কবির সাহেব বাসায় এলেন। কৌতুহল বশতঃ লিচু গুণতে বসলেন। গোণার পর সত্যি সত্যি তার মন খুব খারাপ হয়ে গেল। দেখলেন সেখানে ৯৩ টি লিচু আছে। ৫ টা বেশী দেয়ার পরও ৭ টি লিচু কম হয়ে গেল। মন খারাপ হবার মতো কথাই।
আলেয়া বেগম বললেন- তোমার কি ধারনা দোকানীরা গুণে গুণে লিচুর আটি বাঁধে? তারা মুঠো করে ধরে আন্দাজ মতো আটি বানায়। তারা এমন করে আটি বাঁধে যাতে ১ শ’র কম লিচু হয় । বেশী তো হবেই না। কারণ ২/১ টা খসেও পড়ে যায়।
আরেকবার এক দোকানী আম কেটে খাইয়ে ৫ কেজি আম তাকে গছিয়ে দিল। বাসায় এনে দেখে ভয়ানক টক। এতো টক যে দুধে দিলে তা জমে যাবে।
কবির সাহেব বার বার ঠকেন। যেন ঠকাটাই তার প্রাপ্য।
এই এলাকায় দোকানী, ভিক্ষুক কিংবা পুলিশ থাকার পরও প্রায়ই ছিনতাই হয়। সেই দিন আলম সাহেব সামনের ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অফিসে ফিরছিলেন । মূল গেটে আসার আগেই ২ যুবক এসে অস্ত্র দেখিয়ে নিয়ে নিল। অস্ত্র থাকলে কিছু করার থাকে না। জানের ভয় সবারই আছে। তাই সারা মাসের বেতনের টাকা এক মিনিটের আগেই খরচ হয়ে যায়। ঘটনা ঘটে যাবার পর নানা জনে নানা পরামর্শ দেয়। তাদের পরামর্শ আগে পেলে ছিনতাইকারী তো ধারে কাছেই আসতে পারত না।
অফিসের পেছনে কম খরচে খাওয়ার জন্য একটি ভাতের দোকান আছে। সেখানে কম খরচে ভাত খাবার ব্যবস্থা আছে। দোকানের সামনে একটি হাতে লেখা সাইন বোর্ড ঝুলছে। সোহাগ মিয়ার ভাতের হোটেল। ডাল ফ্রি। তার মতো কম আয়ের লোকেরা এখানে এসে আয়েস করে দুপুরের খাবার খায়। ভাতের সাথে এরা যে জিনিসটা বানায় তা হলো চা। সোহাগ মিয়ার চায়ের কোন তুলনা হয়না। একবার সচিবালয় থেকে বড় সচিব সাহেব ফ্লাস্ক পাঠিয়ে চা নিয়ে গেছেন। ভাতের চেয়ে চাই বেশী চলে । তবে দুপুরে ভাত খাবার জন্য অন্যান্য অফিস থেকেও অনেক লোক জন চলে আসে। সবাই কি ভাবে যেন জেনে গেছে সোহাগ মিয়ার হোটেলে কম খরচে আরাম করে ভাত খাওয়া যায়। সাথে পান আর বিড়ির বিক্রিও কম নয়।
একটা জিনিস সোহাগ মিয়া করে তা হলো এই অফিসে যারা ছোট ছোট চাকরি করে তাদের অনেকেকে বাকিতে খাবার দেয়। কথায় বলে বাকির কাম ফাঁকি। কিন্তু সে বেশ কয়েক জনকে জানে। তারা ফাঁকিবাজ নয়। মাস শেষে বেতন পেয়ে প্রথমেই তারা তার টাকা দিয়ে দেয় এবং বেশ বিনয় সহকারে এটা করে । এই জিনিসটা দেখতে তার খুব ভালো লাগে। এই তৃপ্তি তো আর নগদ বিক্রি করে পেত না। এই জগতে মানুষ নানান ধরনের তৃপ্তি পেতে চায়। তার তৃপ্তি অন্য রকম। বাকি কারো সাথে তা মেলে না।
তবে কারো হাতে টাকা পয়সা বেশী থাকলে চলে যায় তোপখানা রোডের বড় বড় হোটেলে। সেখানকার খাবার ছাড়া তখন আর আসর জমে না।
সে দিন দুপরে ভাত খেতে গেছেন । পাশে আছেন তারই কলিগ খয়ের সাহেব। খাবার শেষে চা নিয়ে তিনি খয়ের সাহেবকে বললেন- খয়ের ভাই একটা জিনিস লক্ষ্য করেছেন।
কি জিনিস?
মেইন গেটে প্রবেশ করার সময় দেখবেন একটা মহিলা একটা বাচ্চা নিয়ে বসে থাকে।
হা হা আমি দেখেছি। এরকম তো কতই দেখি।
আমার কাছে দৃশ্যটা কষ্টদায়ক মনে হয়।
কেন বলেন তো।
একবার ভাবুন তো। ছোট্ট একটা বাচ্চা। রাস্তায় পড়ে থাকে থাকে। অথচ এখন তার কত যতœ পাবার কথা। দাদা-দাদী, নানা-নানী, খালা-ফুপুর আদর যতেœ থাকার কথা। অথচ সে কিনা পড়ে থাকে পতের ধুলাবালিতে।
বাদ দেন তো। এই সব ভেবে লাভ কি? যার যার সংসার তার তার। সে কেন বাচ্চা নিয়ে পথে বসে থাকে । বাড়িতে থাকতে পারে না।
হয়তো বাড়ি নেই। ঘরও হয়তো নেই। এই পৃথিবীতে সবার ঘর হয় না। সবার ঘর থাকতে নেই।
ঘর না থাকুক। মহিলাটির কি স্বামীও নেই। স্বামী না থাকলে বাচ্চা এলো কি করে।
হয়তো বা দেখা যাবে যে তার স্বামীও নেই। আর বাচ্চা হবার জন্য স্বামী থাকা কি খুব জরুরী। হয়তো বিয়ে হয়েছিল । যৌতুক দিতে পারে নাই। তালাক দিয়ে স্বামী ভেগেছে। মহিলাটি বাচ্চা নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
কবির সাহেব ভাবেন। মাঝে মাঝে তার মনে হয় সংসারের এই বিষয়টাতে অনেক পুরুষই দেখা যায় চরম পাষান। আরে ব্যাটা, বাচ্চাটাকে দেখবি না। জন্ম দিয়েই দায়িত্ব শেষ। তাকে পেলে পুষে বড় করতে হবে না।
কেন যেন তার মনটা উস খুস করতে থাকে। সারা দিনই যেন ঐ ছবি তার চোখে ভাসতে থাকে। হাজার হাজার পথচারী হেটে চলেছে। তারই মাঝে একটি নারী তার বাচ্চাকে শুইয়ে দিয়ে বসে আছে। দেখতে খুবই খারাপ লাগে। এখন তার ভাবতেই খারাপ লাগে।
এক বার ঠিক করল অফিস ছুটির সময় কথা বলবে মহিলাটির সাথে। সামান্য খোঁজ নেবে। বাড়ি কই, কোথায় থাকে। বিশেষ করে বাচ্চাটির বাবা কোথায় এই সব। একটি শিশু যার আদরে আদরে বেড়ে উঠার কথা সে কেন পথে অবহেলায় পড়ে থাকবে। এটা তো তার একার নয় সবারই জানার কথা। সমাজের সবার। রাষ্ট্রের সবার। একটি শিশু তো আর পথে পড়ে থাকার জন্য পৃথিবীতে আসেনি। সে পৃথিবীর অতিথি। তাকে যথাযোগ্য সমাদের রাখতে হবে। তাকে কেন কষ্ট দেয়া হবে। তার মনটা কেন যেন বিদ্রোহী হয়ে যেতে চায়। বিকেল চারটায় অফিস ছুটি হলেও তার বের হতে হতে ৫টা পার হয়ে গেল। সে ঠিক করে রাখল যাবার সময় একবার মহিলাটির সাথে কথা বলে যাবেই। জানতেই হবে সব রহস্য। কিন্তু মেইন গেটের বাইরে এসে দেখল মহিলাটি নেই। অন্য দিন সে না থাকলেও দেখা যেত বাচ্চাটি শুয়ে আছে। আজ দু’জনের এক জনও নেই।
মসজিদ থেকে ফিরে আর তিনি ঘুমালেন না। ঘরের মধ্যেই হাঁটাহাটি করলেন। চারি দিকে আলো ফুটতেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। রাস্তায় হাটতে বেরুলেন। তাদের এলাকায় কোন পার্ক নেই। তাই রাস্তায় হাটা ছাড়া উপায় নেই। তিনি খেয়াল করে দেখলেন অনেকেই তার মতো হাঁটতে বের হয়েছেন। ডায়াবেটিক আর প্রেসারের জন্য হাঁটাহাটি না করে আর উপায় নেই।
শুক্রবারের অফিস তাদের অন্যরকম। কারণ অনেকেই যারা গ্রামের মানুষ তারা ছুটি নিয়ে বাড়ী চলে যান। তাই দেখা যায় ১২ টার পর অনেক সহকর্মীই আর অফিসে থাকেন না। সকাল সকাল বাস ধরতে পারলে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাওয়া যাবে। ফলে অফিস ফাঁকা থাকায় যারা থাকে তাদের উপর দিয়ে চাপ যায়। বসরা কারণে অকারেণ তাদের ডাকে। এই কর, সেই কর।
তবে আজ তার ভাগ্য ভালো বলতে হবে। কারণ, বস আজ ছুটি নিয়ে গেছেন। তাই সে খুবই খুশী। চিন্তা করল- লাঞ্জের সময় বেশ খানিকটা সময় নিয়ে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করবেন। গুলিস্তানে যাবেন। ফুটপাতের জিনিসপত্র নেড়ে চেড়ে দেখবে। তাই তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে পড়লেন। ঢাকার রাস্তায় দেখার মতো জিনিসের আকাল নেই। কেবল দেখার মতো মন থাকতে হয়। তিনি সারাটা সময় শহরের আজব জিনিস দেখে কাটালেন।
কবির সাহেব বাসায় ফেরার অনেক আগেই গৃহিনী বাসায় ফেরেন। বাসায় এসে সব কাজ কর্ম গুছিয়ে গৃহকর্তার জন্য অপেক্ষা করেন। বাসায় আসার পর দু’জনের সারা দিনে জমানো সব কথা বিনিময়। আজ কবির সাহেব ঠিক করলেন- মহিলাটি আর তার বাচ্চাটির কথা তাকে বলবেন। আবার চিন্তা করলেন- এই গল্প শুনে গিন্নি যদি আবার রেগে যায়। তাহলে সামলাবেন কি করে।
তার আশংকাই সত্য হলো। গৃহিনী রেগে গেলেন। কেবল রাগ নয় অনেক বেশী রাগই করলেন।
তোমার কান্ড দেখে আমি সত্যি সত্যি অবাক হলাম। এই সব আজে বাজে জিনিস নিয়ে তুমি কেন ভাববে?
ভাবলে কি এমন দোষ?
দোষ নাই?
না , দোষ নাই। একটি অসহায় মানুষ । রাস্তায় তার সন্তানকে নিয়ে বসে থাকে সাহায্যের আশায় এটা নিয়ে ভাবা যাবে না। ভাবলে কি এমন ক্ষতি।
তুমি এটা নিয়ে কেন ভাববে? এটা নিয়ে ভাবার জন্য অনেক মানুষ আছে। এমপি আছে, মন্ত্রী আছে, সমাজ সেবক আছেন। তারা ভাববেন। তোমার এটা নিয়ে ভাবার কোন দরকার নেই। তোমার কাজ তুমি কর। তুমি তো আর সেই যুগের হাজী মোঃ মোহসীন হয়ে যাওনি।
ভালো কাজ করতে চাইলে হাজী মোহসীন হওয়া লাগে না। আমার রোজ রোজ বিষয়টা দেখতে খারাপ লাগছিল। তাই তোমাকে বললাম।
না, এধরনের কথা আমি তোমার কাছ থেকে শুনতে চাই না। পথের এই সব মহিলারা ভাল হয় না। তাদের নিয়ে তুমি ভাববে এটা আমি চাই না। তাদের দিকে তাকাবেও না। মহিলাটির চেহারা কেমন?
ঠিক আছে । আর ভাববো না। আর মহিলাটির চেহারা আমি লক্ষ্য করে দেখিনি।
কখনোই লক্ষ্য করবে না। কোন দরকার নেই। অন্য কোন নারীর প্রতি তোমার কোন দুর্বলতা আসুক এটা আমি পছন্দ করতে পারি না।
অন্য কোন নারীর প্রতি আমার কখনো কোন দুর্বলতা ছিলো না। এখনো নাই। আমার যদি কোন নারীর প্রতি দুর্বলতা বা সবলতা যাই থাকে সেটা হলো তুমি।
কিন্তু গৃহিনীর আচরনে মনে হলো তার রাগ কমেনি।
অনেকটা মন খারাপ নিয়ে রাতে ঘুমোতে গেলেন কবির সাহেব। তবে গভীর রাত পর্যন্ত শুয়ে শুয়ে ব্যাপারটি নিয়ে অনেক ভাবলেন। কিন্তু ভেবে কোন কুল-কিনারা করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত ঠিক করলেন এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আর ভাববেন না। সত্যিই তো। তিনি কেন এটা নিয়ে ভাববেন। এই সব বিষয় নিয়ে ভাবার মতো লোক তো সমাজে অনেক আছেন। তিনি অফিসের সামান্য একটি কেরানী। এই সব নিয়ে ভাবনা তাকে কি মানায়?
অহেতুক টেনশনে ঘুম আসতে চাইছিলো না। এপাশ ও পাশ করে যেন রাত পার হয়ে যেতে বসেছে। তবে শেষ রাতে কবির সাহেবের ভাল ঘুম হলো। তিনি এতো আরাম করে শেষ কবে ঘুমিয়ে ছিলেন মনে করতে পারলেন না। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে তিনি একটি যেন একটি দৃশ্য দেখতে পেলেন। সম্ভবতঃ স্বপ্নই হবে।
কবির সাহেব দেখলেন তাদের অফিস ভবনটা যেন একটি রাজবাড়ি। বিশাল এক রাজপুরী। সেই বাড়ির সদর গেটে মহামহিম রানী বসে আছেন। তাঁর সামনে একটি সোনার দোলনা। সেই দোলনায় ছোট্ট রাজকুমারী ঘুমিয়ে আছে। দোল দিচ্ছেন রানী। কবির সাহেব রাজবাড়ির সামনে দিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। চারিদিকে সৈন্য সামন্ত। হাতে তাদের নানা রকম তরবারি। বাগানে ফুলের গাছ । নানা ধরনের পাখি ডাকাডাকি করছে। এই সব পেরিয়ে কবির সাহেবের চোখ ঠিকই রাজকন্যার দিকে চলে গেল।
অবাক হয়ে কবির সাহেব দেখলেন- রাজ কন্যা নয়। রাজকীয় খাটে শুয়ে আছে পথের পাশের সেই মেয়েটি। কি যে সুন্দর আর মায়াময় লাগছে তাকে।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে তিনি শুনতে পেলেন আজান হচ্ছে মসজিদে। ধরমর করে উঠে পড়লেন তিনি। আজ আর ঘুমাবেন না । পাশের মসজিদে যাবেন নামাজ পড়তে। মনটা শান্ত করা দরকার। বড় জামাতে গিয়ে নামাজ পড়লে তার মন শান্ত হয়।
কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া
১৭ জানুয়ারি ২০১৬
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে আমার এতো ভালো লাগলো বার বার পড়ালাম। অনেক ধন্যবাদ আপানকে। অনেক অনেক ভালো থাকুন।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫০
প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার গল্প। সাবলীল বর্ননা। ধন্যবাদ
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:১২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি অনেক বেশী ভালো লেখেন। জানি না, কবে আপনার মতো লিখতে পারবো।
পোস্ট পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সব সময়।
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
আজকাল মানুষ সব জায়গায়ই ব্যবসা খোঁজে -বৃত্তেবন্ধী ৷
ভাবার কথা যাদের চাপিয়ে দেয় আমজনতায়, যাদের আবার সাধ্য নাই ৷শুধু ইচ্ছা ও দীর্ঘশ্বাস ৷স্বপ্নের মাঝে ঘুমসম জীবন ৷একরৈখিক বর্ণনায় পূনর্বিবেচনা করতে পারেন ৷
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনার মন্তব্য সাদরে গ্রহণ করলাম। অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সব সময়।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৮
আমি তুমি আমরা বলেছেন: কবির সাহেবের স্বপন সত্য হোক। ছোট্ট সেই শিশুটি হোক কারো রাজকন্যা।
গল্পে ভাল লাগা রইল
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অগণিত ধন্যবাদ রইল। ভাল থাকুন সব সময়।
৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩
জুন বলেছেন: গল্পটি খুবই ভালোলাগলো সাজ্জাদ হোসাইন । অপর্নার মত বলতে হয় গরীব দুখীদের প্রতি দয়াশীল এক মানব চরিত্র।
+
কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি। আপনি প্রতিটি লাইনে বার বার আপনার গল্পের নায়কের নাম উল্লেখ করছেন । যার ফলে পড়তে গিয়ে বার বার বাধাগ্রস্ত হচ্ছিলাম ।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। বয়স বেশী হলেও আমি নবীন লেখক। তাই নানান রকম ভুল পাবেন।
তবে ১৯৮৯ সাল থেকে ধরে রাখতে পারলে হয়তো এতো বেশী ভুল পেতেন না। জাবেদ আলী স্যার থাকলে হয়তো এতো ভুল করতাম না।
সেই যাই হোক। আপনার পরামর্শ আমার মনে থাকবে।
ভাল থাকুন সব সময়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ছিমছাম ভাবে আপনার বলে যাওয়া গল্পটি খুব ভালো লাগলো।
প্রেস ক্লাবের সামনে মাইকিং, দাবী দাওয়ার যে বিষয়টি বললেন আসলেই সেটা পীড়াদায়ক। কবির সাহেবের মানসিক গঠনটি খুবই নরম স্বভাবের যারা অন্যের দুঃখে দুঃখী হবে কিন্তু কিছু করতে না পারার অক্ষমতায় পুড়বে ।
ভালো থাকুন