নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমান্তরাল ও নিরপেক্ষ ভাবে সরকার পরিচালনায় দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে ‘জনতার কক্ষ’
(একটি প্রস্তাবনা)
-মজিবুর রহমান_01772564270
_______________________________
সরকার পরিচালনায় জনগনের সবসময় একটি ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে দেশের সকল জনগনের অংশ গ্রহণ করা একটি জটিল ও কঠিন কাজ। একদিকে দেশের সকল জনগন সব সময় দেশপরিচালনার এই সব জটিল বিষয়ে মতামত দেওয়ার যেমন যোগ্যতা রাখেন না, অন্যদিকে এই জটিল বিষয়ে অংশ গ্রহনে আগ্রহীও হবেন না। সেই ক্ষেত্রে দেশ পরিচালনায় নিজের মতামত দিতে আগ্রহী একটি যোগ্যতম জনগোষ্ঠি নির্বাচন করে সংসদের সমান্তরাল একটি কক্ষ নির্বাচন করলে তারা দেশর ক্রান্তি কালে সঠিক সমাধান দিতে সহায়তা করতে পারেন।
জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যখন দেশের ১৭ কোটি মানুষের মতামত গ্রহনের যেমন কোন সুযোগ নেই, তেমনি সকল জনগনের সব বিষয়ে মতামত দানের সক্ষমতাও নেই। সে ক্ষেত্রে সকলের মতামত গ্রহনের প্রয়োজন নেই। আবার সকলকে মতামত দানের জন্য বাধ্য করারও প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন এক দল নাগরিক নির্বাচন করা প্রয়োজন, যারা স্বপ্রনোদিত হয়ে জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত দিতে পারেন। জনমত যাচাইয়ের জন্য তেমনই একটি সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি ‘জনতার কক্ষ’ উপস্থাপন করা হল। এটি একটি ধারনা মাত্র, এর আরো পরিবর্তন, পরিবর্ধন হতে পারে, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
দ্বি কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে সচেতন নাগরিকদের অংশ গ্রহনের মাধ্যমে ‘জনতার কক্ষ’ সমান্তরাল ও নিরপেক্ষ মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা নীতি নির্ধারন প্রস্তাবিত পদ্ধতিঃ
পরিচিতিঃ বর্তমান সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রেখে দেশের ভোটারদের মধ্য একটি নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনির্দষ্ট সংখ্যক সচেতন নাগরিক নির্বাচন করে, তাঁদের সমন্বয়ে ‘জনতার কক্ষ’ নামে সংবিধান একটি পৃথক কক্ষ সৃষ্টি করতে হবে। যখন সংবিধান পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে, জাতীয় সংসদের কোন বিল অথবা অন্য কোন জাতীয় ইস্যুতে যখনই জনমত যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে অথবা সাংবিধানিক পদসমূহের প্রধান এবং সদস্য নির্বাচনের প্রয়োজন হবে অথবা অন্য কোন জাতীয় ইস্যুতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইলেকট্রেনিক ভোটিং পদ্ধতিতে ‘জনতার কক্ষ’ তাদের মতামত তথা ভোট প্রদান করবেন।
নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ‘জনতার কক্ষ’ সদস্য নির্বাচন করা হবে। বাংলাদেশের ভোটারগণ ‘জনতার কক্ষ’ সদস্য হিসাবে নিজের যোগ্যতা যাচাঁইয়ের জন্য যোগ্য হবেন। নির্বাচন কমিশন বছরে একবার জনতার কক্ষ সদস্য নির্বাচনের জন্য এম সি কিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহন করবেন। পরীক্ষার বিষয়বস্তুর মধ্যে থাকবে- বাংলাদেশ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রশাসনিক আইন এবং সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি।
উপরোক্ত বিষয়গুলির উপর একটি প্রশ্ন ব্যংক থাকবে এবং পরীক্ষায় অংশ গ্রহনে আগ্রহীগণ অনলাইনে রেজিষ্ট্রি করবেন। রেজিষ্ট্রেশনের সময় প্রার্থির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিলে তাঁর সকল তথ্য সয়ংক্রীয়ভাবে পাওয়াযাবে। ১০০টি প্রশ্নের এম সি কিউ পদ্ধতির পরীক্ষা গ্রহন করতে হবে। অনলাইনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থি মোবাইল মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবেন। পরীক্ষা শুরুর পর পার্থী পরীক্ষা সাইটে অংশ গ্রহণ করলে ‘ওটিপি’ মাধ্যমে প্রকৃত প্রার্থির অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া পরীক্ষা চলা অবস্থায় সময় সময় সয়ংক্রীয়ভাবে প্রার্থীর ছবি ক্যপচার করা হবে। পরীক্ষা শুরুর প্রাক্কালে প্রশ্ন ব্যাংক হতে ১০০টি প্রশ্ন ‘র্যানডম’ পদ্ধতিতে সয়ংক্রীয়ভাবে সেট হয়ে যাবে। পরীক্ষার ফলাফল তাতক্ষনিকভাবে প্রকাশিত হয়ে যাবে। যারা এই পরীক্ষায় কমপক্ষে ৬০ নম্বর পাবেন তারা ‘জনতার কক্ষ’ সদস্য নির্বাচিত হবেন। জনতার কক্ষ সদস্য সংখ্যা অনির্দিষ্ট হবে। জনতার কক্ষ সদস্য একবার নির্বাচিত হলে তিনি আজীবনের জন্য নির্বাচিত হবেন।
‘জনতার কক্ষ’ সদস্যরা যে বিষয় বা অবস্থায় ভোট প্রদান করবেন তারমধ্যে রয়েছে- (১) জাতীয় সংসদে কোন বিষয়ে জনমত জরিপের দাবি উত্থাপন করা হলে সে বিষয়ের উপর ‘জনতার কক্ষ’ সদস্যরা ভোট প্রদান করবেন; (২) বাংলাদেশের সংবিধান পরিবর্তনের সময় জনতার কক্ষ সদস্যরা ভোট প্রদান করবেন; (৩) বাংলাদেশের সাংবিধানিক পদ সমুহের প্রধান ও সদস্যদের নির্বাচনের জন্য জনতার কক্ষ সদস্যরা ভোট প্রদান করবেন। নির্বাচন কমিশন সদস্য, অডিটর জেনারেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন সদস্য ইত্যাদি সাংবিধানিক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘জনতার কক্ষ’ সদস্যগণ ভোটে নির্বাচন করা হবে; (৪) রাষ্ট্রের স্পর্শকতর বিষয়ে, কোন দেশের সাথে চুক্তির বিষয়ে, কোন কোম্পানীর সাথে চুক্তি (যেমন- গ্যাস, কয়লা চুক্তি) সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য জনতার কক্ষ সদস্যরা ভোট প্রদান করবেন।
ভোট দান পদ্ধতির মধ্যে যেসকল বিষয় অনুসরণ করা হবে তার মধ্যে রয়েছে- (১) যোগ্যতা অর্জনের পর প্রত্যক সদস্যকে একটি আইডি নম্বর সম্মলিত কার্ড দেওয়া হবে; (২) তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে করে ভোট প্রদান করা হবে; (৩) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভোট প্রদান করা যাবে; (৪) যে বিষয়ে উপর ভোট গ্রহন করা হবে প্রথমে সে বিষয়টি নির্বাচন করা হবে; (৬) বিষয়টি উপর সকল মিডিয়ার উম্মুক্ত আলোচনা হবে; (৭) যেই বিষয়ের উপর ভোট হবে সে বিষয়ে কতগুলি অপশন পরপর সাজানো থাকবে, যেমন- ‘‘নির্বাচন কমিশনার, পাবলিক সার্ভিস কশিনের প্রধান’’ ইত্যাদি পদে নিয়োগের জন্য ব্যক্তি নির্বাচনের ক্ষেত্রে পর পর মনোনীত ব্যক্তি নাম, সংবিধানে কোন অনুচ্ছেদ পরিবর্তন হবে কি হবেনা ইত্যাদি অপশন। ভোটার তার ইচ্ছামত অপশনে টিক মার্ক প্রদান করে তা প্রেরন করবেন এবং (৮) এই ভাবে জাতীয় সংসদের সাইটে ভোট কাষ্ট এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ফলাফল প্রত্যক্ষ করা হবে।
এই পদ্ধতি প্রচলনের মূল করান হলো রাষ্ট্র পরিচালনায় সংসদ যখন ব্যর্থ হবে তখন প্রভাবমুক্ত ভাবে যোগ্যতম নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য এ পদ্ধতি করা যেতে পারে। রাষ্ট্রের কঠিন সংকট উত্তরনে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। বর্তমান সংসদীয় সরকার পদ্ধতি বলবৎ রেখে প্রস্তাবিত পদ্ধতি সংবিধানের অন্তর্ভূক্ত দ্বি কক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় পদ্ধতির সরকারে ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।
এই পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী সুফলের মধ্যে রয়েছে- (১) ‘জনতার কক্ষ’ সদস্যগণ নিজ যোগ্যতায় নিজের তাগিদে নির্বাচিত হবেন, এক্ষেত্রে কোন প্রভাবে বা অন্য কোন পিছনের পথে কেউ নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকবেনা; (২) জনতার কক্ষ সদস্যরা শুধু দেশের প্রয়োজনে তাদের মতামত প্রয়োগ করবেন। এতে কোন দলগত প্রভাব থাকবে না; (৩) মতামত দেওয়া ছাড়া জনতার কক্ষ সদস্যদের আর কোন ক্ষমতা থাকবেনা; (৪) জনতার কক্ষ সদস্যরা নিজ যোগ্যতায় নির্বাচিত হবেন, সুতরাং যে কোন মতামত প্রদানে তারা গড্ডলিকা প্রবাহে ভেসে যাবেন না; (৫) জনতার কক্ষ সদস্যরা সংখ্যায় অগনিত হবেন এবং দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকবেন, ফলে তাদেরকে কোন রকম প্রভাবিত করা যাবেনা; (৬) দেশে রাজনীতি সচেতন জনসংখ্যা বাড়বে; (৭) বিবেক বুদ্ধিমান লোকের মতামতের প্রতিফলন হবে; (৮) প্রকৃত জনমত পাওয়া যাবে; (৯) সাংবিধানিক পদ সমূহের প্রধান নির্বাচনে সরকারে হাত থাকেনা; (১০) দেশে শিক্ষিত লোকের সংখ্যা বাড়বে; (১১) ভোট গ্রহনে কোন কারচুপি হওয়ার সুযোগ থাকবেনা; (১২) এ পদ্ধতিতে প্রয়োজন অনুযায়ী যখন তখন ভোট গ্রহন করা যাবে; (১৩) এ পদ্ধতি অতি সহজ এবং ভোট গ্রহনে তেমন কোন খরচ হবে না; (১৪) এ পদ্ধতি প্রয়োগ করলে রাজনৈতিক দলগুলোর রাজপথে আন্দলনের প্রয়োজন হবে না; (১৫) অযোগ্য ব্যক্তিদের রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ কম থাকবেএবং (১৬) দেশে স্থিতিশীলতা আসবে।
Source: https://www.bhorerkagoj.com/tp-editorial/741656
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬
রবিন.হুড বলেছেন: সুন্দর প্রস্তাব