নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পড়তে ও চিন্তা করতে ভালবাসি। ছোট গল্পের সাথে সাথে ব্লগ লিখি।
আর কয়েক দিন পরেই স্কুলের সব পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। নতুন ক্লাসে ওঠার আগ পর্যন্ত ছুটি। এই ফাঁকে কেউ দাদা বাড়ি বা মামা বাড়ি বেড়ানোর পরিকল্পনা করে ফেলেছে। শিশুদের বায়না রাখতে চেষ্টা করবেন সবাই। যদিও আজকাল শহুরে লোকজন তেমন একটা গ্রাম মুখী হন না, তবু অনেকেই আছেন শীতের পিঠে, পায়েসের স্বাদ নিতে গ্রামে যাবেন।
শীতের অনেক মজাদার খাবারের মধ্যে খেজুর রস অন্যতম। অনেকেই এই রসের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে চাইবে না। আজকের লেখা এই খেজুর রস নিয়ে।
বিগত ক-বছর হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতে নতুন এক জীবাণুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। নিপাহ ভাইরাসের কথা বলছি। এই ভাইরাসের প্রথম দেখা মেলে মালয়েশিয়ার পেনিনসুলায় ১৯৯৮ সালে। ধারণা করা হয় শুকরের শরীর থেকে এর উদ্ভব ঘটেছে আরও আগে সম্ভবত ১৯৯৪ সালে। তবে পরবর্তীতে সিংগাপুর ও ভারতেও রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় ২০০১ সালে। নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে।
নিপাহ ভাইরাস রোগটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে। যে পরিবারে একজন নিপাহ ভাইরাস রোগী পাওয়া যায়, ওই পরিবারে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ার খুব আশঙ্কা থাকে। অসতর্কতার কারণে কয়েক বছর আগে ইন্টার্নি চিকিৎসকও নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
নিপাহ ভাইরাস কী?
এটি একটি Emerging zoonotic ভাইরাস অর্থাৎ জন্তু থেকে মানুষে ছড়ানো ভাইরাস। ভাইরাসটি মস্তিষ্ক বা শ্বসনতন্ত্রে প্রদাহ তৈরির মাধ্যমে মারাত্মক অসুস্থতার সৃষ্টি করে। এটি Henipavirus জেনাস এর অন্তর্গত একটি ভাইরাস।
নিপাহ ভাইরাস সম্পর্কে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকা খুবই প্রয়োজন।
নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ:
নিপাহ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের ৮ থেকে ১২ দিন পর সাধারণতঃ রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। আবার লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও ভাইরাসটি ৪ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে।
১ আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমত জ্বরে আক্রান্ত হয়। এরপর মস্তিষ্কে ভয়াবহ প্রদাহ দেখা দেয় এবং সে মানসিকভাবে অস্থিরতায় ভোগে।
২ মন-মেজাজ সব সময় উত্তেজিত থাকে। মাঝে মাঝে খিচুনিও হতে পারে।
৩ বমি বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা, আলো সহ্য করতে না হওয়া।
৪ ঘুম ঘুম ভাব, মাথা ঝিমঝিম করা, জাগ্রত/সচেতন অবস্থার পরিবর্তনসহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা হতে পারে।
৫ প্রচণ্ড মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। এক পর্যায়ে রোগী প্রলাপ বকতে শুরু করে এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
নিপাহ ভাইরাসের বাহকঃ
নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এই সময়টাতেই খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়। আর বাদুড় গাছে বাঁধা হাড়ি থেকে রস খাওয়ার চেষ্টা করে বলে ওই রসের সঙ্গে তাদের লালা মিশে যায়। সেই বাদুড় নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকলে এবং সেই রস খেলে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এ ভাইরাস।
সাবধানতাঃ
যেহেতু নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শতকরা প্রায় ৭৫ জনই মারা যায় তাই একে সাবধানতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে। শরীরে প্রবেশের ৮ থেকে ১২ দিন পর রোগের লক্ষণ প্রকাশিত হয়। তাই নিকট সময়ে বা কমপক্ষে গত একমাসে যারা খেজুরের রস খেয়েছেন, তাদের সবাইকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। আক্রান্ত মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াতে পারে এ রোগ। তাই যারা রোগীদের সেবা দিয়েছেন এবং মৃতদের সৎকার করেছেন, তাদের দিকেও লক্ষ রাখতে হবে। নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে খেজুরের রস, আধা খাওয়া পেঁপে, পেয়ারা, বরইয়ের মতো ফল না খাওয়াই ভালো। এ রোগে আক্রান্তদের পরিচর্যা করতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত কাপড় ও অন্যান্য সামগ্রী ভালোভাবে পরিষ্কার না করে আবার ব্যবহার করা যাবে না। রোগীর পরিচর্যা করার পর হাত ভালোভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। রোগীর কফ ও থুতু যেখানে সেখানে না ফেলে, একটি পাত্রে রেখে পরে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগীর সঙ্গে একই পাত্র খাওয়া বা একই বিছানায় ঘুমানো যাবে না। রোগীর শুশ্রূষা করার সময় মুখে কাপড়ের মাস্ক পরে নিতে হবে। খেজুরের রস পান করতে চাইলে অবশ্যই রস গরম করে স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে পান করতে হবে। ৭০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রাতেই নিপাহ ভাইরাসের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। গাছে হাঁড়ি বাঁধার পরে বাঁশের তৈরি বিশেষ পর্দা দ্বারা ভালভাবে ঢেকে দিতে হবে যেন কোনও ক্রমেই হাঁড়ির রস বা রস চোয়ানোর চোঙ বাদুড়ের সংস্পর্শে না আসতে পারে। বাদুড়ের বসত গাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা বাদুরের মল থেকে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। যে এলাকা নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় সে এলাকায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ হওয়ার পর আরও অন্তত ২১ দিন পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে।
চিকিৎসা:
এ ভাইরাস প্রতিরোধে বা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য কোন সরাসরি টিকা বা ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে উপসর্গ অনুযায়ী আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়। উপসর্গগুলি দেখা গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করালে অনেক সময় রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
আমরা যারা সচেতন তারা আরও সতর্ক হব। আমাদের গ্রামের যারা বিষয়টা সম্পর্কে এখনও পরিষ্কার মতো জানে না, তাদের সচেতন করতে হবে। এই শীতে একটা ভাল কাজ আমরা করতে পারি। সবার শীতের ভ্রমণটা হয়ে উঠুক আনন্দময়।
(তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট)
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৭
আহা রুবন বলেছেন: আমরা সবাই যদি পাশের জনকে সচেতন করি, তবেই পোস্টের সার্থকতা। ধন্যবাদ দাদা।
২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
মেকানিক্যাল ব্যবস্হা নিলে বাদুর রসের নাগাল পাওয়ার কথা নয়।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
আহা রুবন বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। ছোট বেলায় বাড়িতে দেখতাম বাঁশের পাটি (ওটার কী যেন নাম একটা আছে) দিয়ে হাঁড়িটা ঘিরে দেয়া হত। তখনও নিপাহ ভাইরাস আসেনি। সেটা করা হত এই করণে যে পাখি বা বাদুড় রস খেতে এসে যেন মল মিশিয়ে না দেয়। কিন্তু যারা রস বিক্রি করে বা অসচেতন তারা তেমন কোনও পদক্ষেপ নেয় না।
৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯
ধ্রুবক আলো বলেছেন: এই সচেতনতামূলক পোষ্টের জন্য ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ.,,,,
বিষয়টা খুবই গুরুত্বপুর্ন।
আমিই তো ভয়েই খেজুড়ের রস খাওয়া ছেড়ে দিছি!
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫০
আহা রুবন বলেছেন: ভাই খেজুরের রস আমার ভীষণ প্রিয়। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আরও সতর্কতা স্বরূপ ফুটিয়ে রস পান করতেই পারি।
৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৮
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
সবাইকে এ বিষয় সর্তক থাকতে হবে ।
সচেতনতামূলক পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫০
আহা রুবন বলেছেন: ধন্যবাদ শাহরিয়ার কবীর ভাই।
৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩২
প্রামানিক বলেছেন: সচেতনতামূলক পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮
আহা রুবন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮
আখেনাটেন বলেছেন: গ্রামের লোকজন এখনও অনেকেই এই ভাইরাস সম্পর্কে কিছুই জানে না। কয়েক বছর অাগেও পঞ্চগড়ের-নীলফামারীর দিকে বেশ কিছু লোক অাক্রান্ত হয়েছিল। সামান্য সচেতনায় পারে এই মরণঘাতী রোগ থেকে দূরে রাখতে সাধারণ জনগণকে। ধন্যবাদ এই বিষয়ে লেখার জন্য।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯
আহা রুবন বলেছেন: রোগটি ছড়ানোর পূর্বেই সতর্ক হওয়া উচিত। আর হ্যাঁ সত্যি গ্রামের লোকেরা এখনও অনেকে এই মরণঘাতী রোগ সম্পর্কে কিছুই জানে না। তারা বলে বদ-বাতাস, বদ-নজর বা ভূতে ধরা।
৭| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩
সুমন কর বলেছেন: নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শতকরা প্রায় ৭৫ জনই মারা যায় --- ভয়ানক ব্যাপার।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। গুড পোস্ট।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬
আহা রুবন বলেছেন: দাদা আপনাকেও ধন্যবাদ।
৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৪
কালীদাস বলেছেন: ভাল পোস্ট। এই সমস্যা এখনও আছে?
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২৯
আহা রুবন বলেছেন: দাদা প্রত্যেক বৎসরই কম-বেশি হয়। শিশুরাই আক্রান্ত হয় বেশি।
৯| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: এই সতর্কতামূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে বছর কয়েক আগে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছিল। বেশ কিছু শিশু ও যুবা তখন এই প্রাণঘাতী রগে মারা যায়।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১১
আহা রুবন বলেছেন: আমি নিজেও উত্তরবঙ্গের মানুষ। সবাইকে সচেতন করা কর্তব্য। আমরা ঘটনা শুরু হলে তারপর হৈ চৈ শুরু করি, আগে না। অনেক ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৯
বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট। সচেতনমুলক।