নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পড়তে ও চিন্তা করতে ভালবাসি। ছোট গল্পের সাথে সাথে ব্লগ লিখি।
‘তাহলে আপনার সমস্যাটি হচ্ছে—আপনার প্রেমিকাকে নিয়ে বেড়ানোর পরে আপনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। আচ্ছা তুহিন সাহেব, আপনি যে তাবিজটা গলায় ঝুলিয়েছেন, এটা কি নিজের আগ্রহে নাকি...?
‘মানে, এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আমার সবই জানে... ও-ই এক হুজুরের কাছে জোর করেই অনেকটা...’
‘আচ্ছা, আচ্ছা, তাই বলুন, আর একজন শিক্ষিত লোক হয়ে ডায়রিয়ার জন্যে তাবিজ ঝোলালেন গলায়!’
‘না ঠিক তা নয়, ভেবেছিলাম বদ-নজর জাতীয় কিছু হলেও হতে পারে।’
কথাগুলো হচ্ছিল সদ্য প্রেমে পড়া যুবক তুহিন ও ডাক্তার আশরাফের মধ্যে, তার চেম্বারে। ডাক্তার সাহেব চেয়ারে শরীরটা এলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন—‘একটু ভেবে বলুন তো আপনারা যেদিনই বেড়াতে বেরিয়েছেন সেদিনই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে, না কি দু-একদিন ব্যতিক্রমও হয়েছে?’
তুহিন বলল ‘না সব সময় ব্যাপারটা ঘটেনি। তবে বেশিরভাগ সময়েই ঘটে।’
‘সেই দু-একদিনের কথা বলুন।’
‘এইতো গত শুক্রবার নাটক দেখলাম—কোনও অসুবিধা হয়নি।’
‘আর অন্যদিন অর্থাৎ যেদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন?’
‘এক দিনের কথা মনে পড়ছে, গিয়ছিলাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে।’
বোটানিকাল গার্ডেন, মানে জনচলাচল কম, মনে মনে হিসেব কষে নিয়ে ডাক্তার সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী খেযেছিলেন সেদিন?’
‘না সেদিন কিছু খাইনি।’
‘কিছু খেলেন না তবু বদ-নজর লাগল?’
তুহিন কিছুটা আড়ষ্ট হয়ে গেল। ডাক্তার সাহেব বললেন, ‘আপনার প্রেমিকার পোশাক-আশাক সম্পর্কে এবারে কিছু বলুন।’
‘মানে?’
‘আমি জানতে চাচ্ছি তিনি কেমন সাজুগুজু করেন, বেশি কম ব্যাপারটা।’
‘এমনিতে খুব একটা সাজগোজ করে না, তবে কোথাও বেড়াতে গেলে করাটা তো স্বাভাবিক।’
‘আচ্ছা, উনি কি টিপ পরেন?’
‘তুহিন কিছুটা ভড়কে গেল। মনে মনে বলল – টিপের কথা আসছে কেন, আমাকে টিপ পরাবে না কি? ছোট বাচ্চাদের কপালের একপাশে কাজলের টিপ পরিয়ে দেয় মায়েরা, যাতে বদ-নজর, বালাইষাট দূরে থাকে। আমাকেও যদি... ধুর কী সব ভাবছি, উনিতো আর তাবিজওয়ালা হুজুর নন—ডাক্তার ।
‘কী হল? বলুন...’
‘ও হ্যাঁ টিপ পরে।’
‘কী রঙের?’
‘বেশিরভাগ চকলেট...’
‘লিপস্টিকও নিশ্চয়ই একই রঙের...’
‘ঠিক তাই।’
‘আচ্ছা আন্য রঙের টিপ পরে না কেন?’
‘আসলে ওই রঙটা আমার খুব প্রিয়।’
‘চকলেট খেতেও নিশ্চযই...’
‘হ্যাঁ বেশ পছন্দ করি।’
‘ঠিক আছে, এবার বলুন, আপনার প্রেমিকা আপনার উপস্থিতিতেও তার সাজগোজ নিয়ে সচেতন থাকে কি না?’
এবারে রেগে গেল তুহিন। বিরক্ত হয়ে বলল—‘রোগের কথা না বলে আবোলতাবোল কীসব প্রশ্ন করে যাচ্ছেন?’
‘প্লিজ রাগবেন না। আমাদের অনেক কিছুই জানতে হয় যা সাধারনত মনে হতে পারে ফালতু।
‘আমার প্রশ্নের জবাব কিন্তু পাইনি?’
অতি কষ্টে রাগ চেপে তুহিন বলল, ‘হ্যাঁ আমার সামনেও সাজগোজ করে।’
‘কী ধরনের?’
‘যেমন ধরুন, কিছুক্ষণ পরপর ওর ছোট আয়নাতে চোখের কাজলটা, লিপস্টিকটা ঠিক করে নেয়।’
ডাক্তার সাহেব আর কোনও প্রশ্ন না করে খসখস করে কী সব লিখে গেলেন। কাগজটা হাতে দিয়ে বললেন, ‘আপাতত চারটে ওরাল স্যালাইন নিয়ে যান, ঠিক হয়ে যাবে। আর নির্দেশ মতো চলার চেষ্টা করবেন, কাগজে লেখা আছে।’
তুহিন কাগজটা পড়তে লাগল, ‘চকলেটের মতো দেখালেই সবকিছু চকলেট ভেবে খেয়ে ফেলবেন না। আর আপনার বান্ধবীকে বলবেন, লিপস্টিকটা বদলিয়ে ফেলতে।’
‘তুহিন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মিনমিন করে বলল—কিছুই তো বুঝলাম না।’
‘আসলে লিপস্টিকটা আপনার পেটে ঠিক হজম হচ্ছে না।’ ডাক্তার সাহেব মিটিমিটি হাসতে লাগলেন। তুহিন ব্যাপারটা এতক্ষণে বুঝতে পারল। কানের মধ্যে ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকতে শুরু করল এবং তুহিনের মুখটা হঠাৎ টমেটো হয়ে গোল।
আহা রুবন
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১২
আহা রুবন বলেছেন: যাক চেষ্টা তবে একেবারে বিফলে যায়নি। অ---নে---ক --- ধন্যবাদ ভুত ভা্ই।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৩৭
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: ব্যাপক আকারের বিনোদন পেলাম।