নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পড়তে ও চিন্তা করতে ভালবাসি। ছোট গল্পের সাথে সাথে ব্লগ লিখি।
কোন বাজারে নির্দিষ্ট পণ্যের ঘাটতি হলে ব্র্যান্ডপছন্দ ক্রেতা পাঁচ দোকান ঘোরে। শেষে না পেয়ে অন্য ব্র্যান্ডের দিকে হাত বাড়ায়। তিন জন ক্রেতা যদি এমন করে, তবে বাজারটিতে পণ্যের চাহিদা পনেরোগুণ অনুভূত হবে, যদিও আসলে তিনগুণ চাহিদাই বাজারটিতে রয়েছে।
এই তালগোলের হিসেবটাই ঘটে জামাত-শিবিরের বেলাতে। দেশে এদের যে সংখক সমর্থক আছে, মনে হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। অন্য রাজনীতিক দলের সমর্থক যারা আছে, তারা সব সময় নিজের অবস্থান জানাতে চান না। কিন্তু খেয়াল করলেই দেখা যায়— রাস্তা-ঘাট, বাস, ট্রেন, হাসপাতাল, স্টেশন, মসজিদ যে কোনও স্থানে একটু সুযোগ পেলেই (অবশ্য পরিবেশ প্রতিকূলে বুঝতে পারলে ঘাপটি মেরে থাকে।) জামাতীরা নানা মন্তব্য করা শুরু করে। সামনে যারা আছে বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠিয়ে তাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এটা তাদের প্রচার কৌশল। একটি সাধারণ মন্তব্য বা প্রশ্ন করে— স্বাধীনতার পরে যাদের জন্ম তারা রাজাকার হয় কীভাবে? ভাবটা তাদের এমন যে, তাদেরকে রাজাকার বলা হচ্ছে এবং তাদের বিচার করা হচ্ছে। আমরা চুপ করে শুনি বা বিরক্ত হয়ে দূরে তাকিয়ে থাকি, কেউ কেউ মাথা নেড়ে সায় দেই। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই কোনও প্রতিবাদ করি না। আর এই সুযোগটাই তারা গ্রহণ করে। কাজে কাজেই সে সময় মনে হয়, জামাতীদের সংখ্যা কম নয়। অসচেতন মানুষ তাদের সমীহ করা শুরু করে।
জামাত-শিবির এমনভাবে ছক কষে এগোয় যে, খুব সচেতন না থাকলে ওদের বোঝা মুশকিল। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে নতুন ছাত্রদের নানা মিষ্টি কথা বলে বন্ধুত্ব করে তাদের দলে ভেড়ায়। গরিব ছাত্রদের আর্থিকভাবে সয়ায়তা করে। নিজেদের মধ্যে সবসময় যোগাযোগ রাখে, যা অন্য কোনও দলের সমর্থকদের ভেতরে দেখা যায় না। দীর্ঘ দিন ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় এরা ঢুকে বসে আছে— সুবিধা মতো কাজ সারে। গান-ভিডিও লোডের দোকানে যান দেখবেন শিবির কত রকম কৌশলে তাদের মতবাদ ওয়াজ, কবিতা, মিথ্যা সংবাদের আবরণে প্রচার করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা কি সেসব কিছু করেছে? জামাতীদের এমন জালে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই আটকা পড়ে। সবাই যে সমর্থক হয়ে যায় তা কিন্তু নয়, তবে এদের প্রতি অনেকেই একটু নরম হয়ে যায়। আসলে আপাতত এটাই তাদের চাওয়া। নুরানী লেবাস ধরে থাকে, কোণঠাসা এমন ভাব ধরে সহানুভূতি জাগাতে চেষ্টা করে। যখন সুযোগ পায় নিজের চেহারার ফেরে, দাঁত-নখ বের করে।
বিগত কয়েকটি নির্বাচন এবং বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা যায় জামাতের সমর্থক আছে তিন বা চার শতাংশের মতো। অর্থাৎ জনসমর্থনের হিসাব বিবেচনায় নিলে, মোট জনসংখ্যার মধ্যে তা একেবারেই নগণ্য। এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলে কোনও কথা ছিল না। কিন্তু এদের সমর্থন যাই থাকুক না কেন, এদের প্রভাব-প্রতিপত্তি মোটেই সামান্য নয়। আর্থিক দিক থেকে এরা খুবই শক্তিশালী। কেবল জনসমর্থনের কথা বিবেচনা করলে তা হবে চরম বোকামি। স্বাধীনতার পর থেকেই ব্যাংক-বীমা,ব্যবসায়-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জাকাত, সাহায্য পেয়ে অঢেল ধন-সম্পদে এরা ফুলেফেঁপে উঠেছে। দেশে, দেশের বাইরে অপপ্রচার চালানোর মতো অর্থ এবং সামর্থ দুই-ই তাদের আছে। দেখতে পাচ্ছি আমরা— মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে কীভাবে এরা মাঠে নেমেছে! কীভাবে বারবার এরা সরকারকে বিব্রত করে চলেছে।
সারাদেশে দাবি উঠেছে জামাত-শিবির নিষিদ্ধের। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক নিরাপত্তা বিষয়ক থিঙ্কট্যাংক আইএইচএস জেনস প্রকাশ করেছে সারা বিশ্বের সবচেয়ে সহিংস সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় শিবির আছে তিন নম্বরে, থাইল্যান্ডের বারিসান রেভুলুসি ন্যাশনাল ও আফগানিস্তানের তালিবানের পরেই যাদের অবস্থান।
আল্লাহর আইন আর সৎ লোকের কথা বলে যারা রাজনীতি করে, এরাই আবার অশিক্ষিত নারীদের মিথ্যা বুঝিয়েছে জামাতকে ভোট দিলে সাঈদী জেল থেকে ছাড়া পাবে।
শুরু করেছিলাম বাজার দিয়ে শেষ করি বাজার দিয়েই। দোকানি একই চাল বিভিন্ন বস্তায় ভরে মূল্য একটু কমবেশি করে রেখে দেয়। ক্রেতা যাতে ছুটে না যেতে পারে তাই এই ব্যবস্থা। জামাত খুব ভাল করেই জানে তাদের গায়ে রাজাকারের সীল আছে। তাই এরা বিভিন্ন দল গঠন করে ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধন্দে ফেলে দেয়, ঐ দোকানির মতো। কেউ কেউ জামাতের সমালোচনা করলেও, আদতে এরা রসুনের কোয়া। জেএমবি,হজি,হেফজত,আনসারউল্লাহ সব এক। একই ব্যক্তির বিভিন্ন রূপ। এই সব দলগুলো শেষ পর্যন্ত জামাতকেই ভোট দেয়, তাদের জন্যই কাজ করে।
জামাতীদের কৌশলের বিপরীতে প্রতিরোধী কোন কৌশল গ্রহণ না করলে এক সময় তাদের কালো থাবা সমস্ত দেশটাকে গ্রাস করে বসবে। তা তাদের সংখ্যা যত কমই হোক আর সমর্থক অল্প হলেও।
আহা রুবন
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৫
আহা রুবন বলেছেন: ভাই ভুলের ওপর নয়, ধান্দবাজীর ওপর প্রতিস্ঠিত।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
জামাত শুরু থেকেই ভুলের উপর প্রতিস্ঠিত; সব আমিরের ফাঁসী কিংবা জেল হয়েছে, ভবিষ্যত তাই।