নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবতে ভালবাসি, সেই ভাবনা যদি কোনো ঘটনায় মিলে যায় তবে তাকে লিখতে ভালবাসি! সেই লেখায় যদি কেউ বিন্দুমাত্র উপকৃত হয় তবে তাতেই আমার খুশি, আমি লেখাকে ভালবাসি।

দর্পণের প্রতিবিম্ব

প্রেমিকার চিরশত্রু

দর্পণের প্রতিবিম্ব › বিস্তারিত পোস্টঃ

CLOSE CALL

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫২




তৃতীয় পর্ব.


"কুমিল্লা ট্রাজেডির এক বছর পূর্ণ হলেও এর কোনো সঠিক তদন্ত আজ পর্যন্ত হয় নি! কেউই সঠিকভাবে বলতে পারছে প্রকৃতপক্ষে কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত। এক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল ওসমান বলেছেন যেই হোক না কেন তাকে আমরা খুঁজে বের করবো।"
নিউজ চ্যানেল গুলোর শুধু একটাই প্রশ্ন কে এই ঘটনার সাথে জড়িত?
- ধুর বাল টিভি বন্ধ করেন, রিপোর্টার গুলা কিছু জানে না, না জেনেই শুধু প্যাক প্যাক করে। পিটারের বিরক্তভরা আকুতি।
এমন সময় কর্ণেল হাকীম এসে বললেন, "আরও একটা অভিযানে যেতে হবে তোমাদের। জেনারেল ওসমান মিটিংয়ে আছেন। সবাই এসো, প্লানিং করতে হবে।"
কর্ণেলের কথায় এলেক্স বললো, "চলুন যাই, অনেকদিন পর আবারও সময় এল।"


"ক্যাপ্টেন নাজিমের ছবি দেশের সমস্ত থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও তার কোনো হদিস খুজে পাওয়া যাচ্ছে না!" জেনারেল ওসমান বললেন।
"ক্যাপ্টেন নাজিম এবং নাসির সম্পর্কে আপনারা যথেষ্ট জানলেন। এবার আসি আসল কথায়, যে লোকেশনে আমরা যাবো এটা বেশ গভীর জংগল! সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। তিন চারটা জরাজীর্ণ ক্যাম্পের মত ঘর আছে। সবখানে তল্লাশি করবেন। জরুরী কিছু পাওয়া গেলেও যেতে পারে। কারও কোনো প্রশ্ন?"
আমরা সবাই যে যার যার দায়িত্ব বুঝে নিলাম।


২৮শে জুলাই, ২০১১
ভোর ৪.৫৫ মিনিট,
হিল ট্র‍্যাক, রাঙামাটি


আমি, ক্যাপ্টেন রাফি এবং সার্জেন্ট পিটার এগিয়ে যাচ্ছি। শরীর এবং অস্ত্রতে লতাপাতা জড়িয়ে মাটি ঘেঁষে চলছি। চারপাশে শুধু জঙ্গল। খুব ধীরে ধীরে পা ফেলে যাচ্ছি। কিছুদুর আগাতেই একটা নদী পাওয়া গেল। ছোট নদী যার ফলে পানি কম। হঠাৎ দেখলাম পানিতে হালকা রক্ত মিশে আছে! ক্যাপ্টেন রাফি সবাইকে কভার খুঁজতে বললেন। ধীরে ধীরে রক্তের পরিমাণ বাড়তে লাগলো। পিটার বললো, "স্যার, ফুটপ্রিন্ট পাওয়া গেছে।"
ক্যাপ্টেন রাফি বললেন, "এত রাস্তা আসলাম অথচ একটা প্রাণীরও ফুটপ্রিন্ট পেলাম না আর এখানে এসে দেখি রক্ত!!"
"স্কয়াড, ফাইন্ড এ প্লেস টু হাইড।।"
ক্যাপ্টেনের কমান্ডে আমরা ঝোপঝাড়ে মিশে গেলাম। হঠাৎ দেখলাম দশ বার লোক যাচ্ছে! ক্যাপ্টেন রাফি বললেন তারা সম্ভবত ডাকাত হবে। কিছুদুর যাক আমরা তাদের ফলো করবো। দেখা যাক তারা আমাদের কোথাকার পথ দেখায়।
একটুপর আবারও রওনা হলাম, একটা নিরাপদ দুরত্বে একেবারে নিঃশব্দে তাদের পিছু পিছু যাচ্ছি।
- থামো সবাই। ক্যাপ্টেন রাফি বললেন।
আমরা দেখলাম দুরে তিনচারটা কুঁড়েঘর এবং কিছুলোক অস্ত্র নিয়ে দারিয়ে আছে।
- এটাই আমাদের দরকার ছিল। লোকগুলো আলাদা হয়ে যাক, অপেক্ষা করি। এত্তগুলোকে একসাথে মেরে নিজেরাও মরতে চাই না।
- আমরা আপনাকে দক্ষিণদিক থেকে সাপোর্ট দেব। পিটার বললো।
- গুড, টেক ইউর পজিশন। টিম টু, আপনারা কোথায়?
- কপি দ্যাট ক্যাপ্টেন রাফি, আমরা আপনাদের লোকেশন পেয়েছি। সঠিক সময় স্নাইপার সাপোর্ট পেয়ে যাবেন। স্নাইপার টিমের ক্যাপ্টেন ইউনুস বললেন।
পিটার পানিতে নামলো। নৌকা বা স্টিমার নোঙর করানোর জন্য ছোট খাটো ডক করেছে তারা। সেখানে দুইজন আছে। পিটার এবং করিম (স্নাইপার টিমের) দুইপাশে গিয়ে পানির নিচ থেকে হাত উচা করলো। সাথে সাথে স্নাইপার টিম থেকে দুটি বুলেট এসে লাগলো তাদের মাথায়। মুহূর্তেই ঢলে পরে গেল করিম এবং পিটারের হাতের উপরে। খুবই সতর্কতার সাথে তাদের পানির নিচে নেয়া হল। এরপর খুব সাবধানতার সাথে আমরা নদী পার হলাম। স্নাইপার টিম বাহিরের যেকোনো মুভমেন্টকে থামিয়ে দিতে পারবে। ঘাঁটির ভিতরে সবাই বিভক্ত হয়ে গেলাম। খুঁজতে লাগলাম নাসিরকে। হঠাৎ ওর শত্রুপক্ষের একজন আমাদের দেখে ফেলে আমাদের দিকে গুলি চালায়। এতে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। আমরাও পাল্টা জবাব দিলাম।
- টিম টু, মেশিন গান কি আপনাদের রেঞ্জের মধ্যে পরে? ক্যাপ্টেন রাফি বললেন।
- উম নেগেটিভ স্যার
- স্কয়াড, আমার পিছনে আসুন সবাই।
আমরা ক্যাপ্টেন রাফিকে অনুসরণ করতে লাগলাম। কোনরকমভাবে মেশিনগানের কাছাকাছি আসলাম।
- পিটার, গ্রেনেড মার এখনই।
গ্রেনেড মারার সাথে সাথে মেশিনগান কিছুক্ষণের জন্য থেমে গেল। গ্রেনেডের ভয়ে গানম্যান একটু দুরে চলে গেল কিন্তু তাকে ফিরে আসতে দিলাম না। স্নাইপার টিম তাকে টার্গেট করে মেরে দিয়েছে। আবারও অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করলাম। এমন সময় একটু বুলেট আমার হাতে এসে লাগলো! আমার রাইফেল হাত থেকে পরে গেল।
-বাবুল!! বাবুল!! ঠিক আছো তুমি??
ক্যাপ্টেন রাফি এগিয়ে এলেন। তিনি আবার বললেন, "ভিতরেই থাক এটা, আমরা পারবো।" এই বলে তিনি আমার রাইফেল এগিয়ে দিলেন। যতটুকু সম্ভব আমি গুলি চালিয়ে যাচ্ছি।
- ওকে লেটস গো।
আবারও ক্যাপ্টেন রাফিকে অনুসরণ করে চলা শুরু করলাম। ক্যাম্পের মোটামুটি সবাইকে সাফ করা হয়েছে। দুই তিনজন জান বাঁচানোর ভয়ে পালিয়ে গেছে। শুরু করলাম নাসিরকে খোঁজা।
এক ডালপালার ঘরের ভিতরে ঢুকতেই দেখি নাসির ঘুমিয়ে আছে! আস্তে আস্তে কাছে গেলাম। মাটিতে তাকিয়ে দেখি রক্ত ভেসে গেছে পুরা জায়গা!! নাসিরের হাতে ছোট একটা কাগজ পেলাম। কাগজটা ক্যাপ্টেন রাফিকে দিলাম। স্বল্প কথায় লেখা আছে "Too late mate!!! You should be more faster!!
Your.... Let it be, you know who I am.."
রাগে ক্যাপ্টেন রাফি "নাজিইইইম...." বলে চিৎকার করে উঠলেন!
- Big Bird, this is Captain Rafi, do you have our location?
- Good Copy Lions, we got your location, we are heading towards you, over.
- Roger that...
আর্মি বেজের সাথে যোগাযোগ করে নিলেন ক্যাপ্টেন রাফি। আমি বললাম, "স্যার আপনি কি নাজিমকে চিনেন?"
ক্যাপ্টেন রাফি কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। পরে মাথা নারলেন। আমাদের কৌতুহলী মন ক্যাপ্টেন নাজিম সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চাচ্ছিল।
একটু পরে ক্যাপ্টেন রাফি বললেন, "ক্যাপ্টেন নাজিম, আমার সিনিয়র ছিলেন। আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে, আমি ক্যাপ্টেন নাজিমের স্পেশাল টিমে ছিলাম, তার অধীনে আমার সবকাজ করতে হতো। আমি, ক্যাপ্টেন নাজিম, ক্যাপ্টেন হারিস এবং ক্যাপ্টেন রুহুল। তাদের মধ্য আমি সবচেয়ে জুনিয়র ছিলাম। আমার ট্রেইনার ছিলেন ক্যাপ্টেন নাজিম এবং ক্যাপ্টেন হারিস। অন্যান্য টিমের চেয়ে আমাদের টিম ছিল সবচেয়ে বেশি সক্রিয় এবং সব স্পেশাল ট্রেনিং আর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্যারা কমান্ডের কমান্ডার। জেনারেল ওসমান তখন মেজর ছিলেন। সাতটাm মিশনে আমাদের একসাথে ডিপ্লয় করা হয়েছিল। সবসময় আমরা অক্ষত এবং কোনো আঘাত ব্যতীত মিশন শেষ করেছিলাম। শেষ মিশনটা ছিল সুইজারল্যান্ডে। তুষার বরফ ঢাকা পাহাড় পর্বত এবং কনকনে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সময় ছিল তখন। আন্তর্জাতিক তেল চুক্তিতে সুইজারল্যান্ডে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নমুনা এবং আমাদের দেশের কিছু জরুরী ডকুমেন্টস ছিল।


১১ অক্টোবর, ২০০১
বিকাল ৫.৩৮ মিনিট
সুইজারল্যান্ড,

"একটু বেশিই ঠাণ্ডা, সুর্য ঢলে পরার সাথে তাল মিলিয়ে ঠাণ্ডা বাড়ছে!" ক্যাপ্টেন হারিস বললেন। এই মুহূর্তে পাহাড়ের এক ছোট খাজে ক্যাম্প বানিয়ে আমরা আছি। সিগনাল পেলেই রওনা দেব। ক্যাপ্টেন হারিস এবং ক্যাপ্টেন নাজিম একটা প্ল্যান নিয়ে ভাবছেন। বেশ উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে তাদের। ক্যাপ্টেন হারিস বললেন,
- আমাদের যে ম্যাপটা দেখানো হয়েছে এবং যে রাস্তায় ফিরে আসতে বলেছে সেটা মনে হচ্ছে না পজিটিভ হবে। আমরা কাউকে ব্যাক আপ দিচ্ছি না এবং বাকি টিমগুলো যদি একসাথে রিগ্রুপ হয় তবে আমাদের বাদ দেয়া হচ্ছে কেন??
ক্যাপ্টেন নাজিম তার সাথে সুর মিলালেন, একটু পর বললেন, "তাহলে আরেকটা প্ল্যান করি যাতে আমরা ঠিক সময়েই বাকি ফোর্সগুলোর সাথে একত্রিত হতে পারি?"
তারপর শুরু করলাম প্ল্যানিং। প্রায় ৪৫ মিনিট প্ল্যান করার পর আমরা সেখান থেকে বের হলাম। ব্যাটেল গিয়ার নিয়ে এতটা কখনও কষ্ট হয় নি যতটা এই আবহাওয়ায় কষ্ট হচ্ছে।
- Tiger four, where are you? আমেরিকান আলফা টিমের চিফ ক্যাপ্টেন স্ট্যান বললেন।
- Alfa Six, we are in main highway, waiting for your signal. Over! ক্যাপ্টেন হারিস বললেন।
- Good job, now listen, a Civilian truck is coming, it will be at your location in five minutes. Do not engage. Set a beacon & get in.
- Rozar that
ক্যাপ্টেন স্ট্যান এর কথা মত আমরা দারালাম। কিছুক্ষণ পর দুটো লাইট দেখতে পেলাম।
- এটাই সম্ভবত সেই ট্রাক। ক্যাপ্টেন হারিস বললেন।
ট্রাকটা সামনে আসতেই সেটাকে থামিয়ে দিই। তারপর ট্রাকে বিকন সেটা করে দিলাম।
- Overlord, we set a beacon, confirm us that you see this via visual.
- Confirmed.
আমরা ট্রাক নিয়ে আগাতে থাকলাম। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা বরফের রাস্তা দিয়ে উপরে উঠছি। ড্রাইভিং আমি আছি। এক সময় ক্যাম্পে পৌছালাম। ক্যাপ্টেন স্ট্যান এর সাথে ক্যাপ্টেন হারিস এবং ক্যাপ্টেন নাজিম কথা বলছেন। ক্যাপ্টেন রহুল এবং আমি দারিয়ে দারিয়ে সিগারেট টানছিলাম। এমন সময় ক্যাম্পে এলার্ম বেজে উঠলো। আমরা সবাই বিভিন্ন টিমে বিভক্ত হয়ে চপারে উঠলাম। তেল পাম্প থেকে প্রায় কিলো দুই দুরে একটা পয়েন্টে নামিয়ে দিল। আমি, ক্যাপ্টেন হারিস, ক্যাপ্টেন নাজিম এবং ক্যাপ্টেন রুহুল একটি টিম হয়ে ধীরে ধীরে তেল পাম্পের দিকে আগাচ্ছি। আমাদের প্রত্যেকেরই সাইলেন্স ওয়েপন। ক্যাপ্টেন রুহুল এবং ক্যাপ্টেন নাজিম ৫০ ক্যালিভার এর সাইলেন্স স্নাইপার এবং রিভলভার রয়েছে। আমি এবং ক্যাপ্টেন হারিস M4A1 কার্বাইন নিয়েছি।
"Petrol coming from the west, find a cover...... Easy, they have dogs, no quick movements. Let them pass.
ক্যাপ্টেন হারিস বললেন। পেট্রোল চলে যেতেই আমরা আবারও চলতে শুরু করলাম। এবার আমাদের সামনে যা পরল তাতে আমরা একদমই প্রস্তুত ছিলাম না। কোথা থেকে একটা BTR আমাদের দেখে ফেলে এবং অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে আমাদের গোপনীয়তা প্রকাশ হয়ে যায়। ক্যাপ্টেন হারিসের একটা ভুল পদক্ষেপে আমাদের সকল টিমের আগমণ সম্পর্কে তারা জেনে যায়।
- All squad, this is overlord, we are engaging all moving vehicle. Move your ass asap from the danger zone. Over.
- সবাই সরে যাও, দৌড়াও দৌড়াও, তাড়াতাড়ি, তাড়াতাড়ি!!
ক্যাপ্টেন হারিস চিৎকার দিয়ে আমাদের বললেন। আমরাও দৌড়ানো শুরু করলাম। ক্ষাণিকপর আকাশ থেকে একের পর এক বোমা পরা শুরু হল!
- Don't stop, Keep Running...
ক্যাপ্টেন নাজিম চিল্লাতে শুরু করলেন।
আমি কিছুক্ষণের জন্য পিছনে তাকালাম, দেখি সাদা বরফের পাহাড়ের বিভিন্ন অংশ থেকে ধোয়া উঠা শুরু হল! একসময় আমরা থামলাম।
- That was close!! ক্যাপ্টেন হারিসের কথা
- Looks like we don't need to run anymore Sir.
ক্যাপ্টেন হারিসকে বললেন ক্যাপ্টেন নাজিম। একটা গাছের নিচে বসে আছি আমরা। আলফা টিমের চিফ আবারও সামনে আগানোর নির্দেশ দিলেন। তার কথামত আবারও হাটা শুরু করলাম। কিছুদুর যেতেই ধ্বংসাবশেষ পেলাম। উভয়পক্ষে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে। পাম্পের ভিতরে ঢুকেই দেখি একপাল সেনা আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে! আমরা কোনরকম লুকিয়ে গেলাম মৃত বডির আশেপাশে। সেনারা চলে যেতেই আমরা আবারও আগাতে শুরু করলাম। তেলপাম্পের বিভিন্ন সেক্টরের রুমগুলো খোজা শুরু করলাম।
- Weapons free. ক্যাপ্টেন হারিস বললেন।
আমরা একটা রুমে ঢুকলাম। তেলপাম্প আপাতত ফাকা আছে কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ থাকবে না। সিকিউরড এবং প্রটেক্টেড এলাকায় আমরা আছি, যেকোনো সময় শত্রুপক্ষের লোকজন আক্রমণ করতে পারে। অবশেষে অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমরা সেই ডকুমেন্টটা পেলাম। ক্যাপ্টেন হারিস সেটাকে ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলেন।
- Sir, enemy reinforcement coming from south east side of the pump. We must get out Asap.
ক্যাপ্টেন রুহুল জানালা দিয়ে দেখে আমাদের সতর্ক করে দিলেন।
- Overlord, this is Capt Haris, a large number of reinforcement coming towards us, request to engage them.
- Copy that Tiger but we can not engage them because they are too close of you. Over,
শেষ পর্যন্ত এই কথা শুনালো বোমারু বিমান! আমরা অনেকের সাথেই যোগাযোগ করলাম কিন্তু প্রয়োজনীয় সাহায্য পেলাম না। ক্যাপ্টেন হারিস বললেন,
- Capt Stan, provide us some sniper support.
- Roger that..
শেষ পর্যন্ত স্নাইপার সাপোর্ট পেলাম আমরা। কিছুটা বোঝা ঘাড় থেকে নামলো। তারপরও আমরা গুলি চালাতে লাগলাম। ক্যাপ্টেন নাজিম ও ক্যাপ্টেন রুহুল পশ্চিম দিকটা সামলাচ্ছেন। আমি বললাম,
- Sir, this is too heavy, I'm getting empty!!
এমনসময় একটা বুলেট এসে আমার ডান হাতে বিঁধল! আমার পজিশন থেকে একটু ছিটকে এলাম। ক্যাপ্টেন রুহুল আমার দিকে এলেন। হঠাৎ রেডিওতে ক্যাপ্টেন স্ট্যান বললেন,
- Tiger four, your helicopter will reach at the extraction point in 8 minutes. Move towards north corner of filling sites. Then head towards the landing zone now..
- Copy that Alfa..
আমরা আগাতে লাগলাম। আমার ডানহাত রক্তে মাখামাখি হয়ে আছে! এরপরও যতটুকু সম্ভব গুলি চালিয়েছি। একসময় পাম্পের উত্তর দিকে আমরা পৌঁছে যাই কিন্তু চপারের দেখা পেলাম না। শত্রুপক্ষ আমাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই অবস্থায়ও গুলি করে যাচ্ছি কিন্তু তাদের দমিয়ে রাখতে পারছিলাম না। কিছুক্ষণ পরই হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনতে পেলাম। মনে তখন শান্তি আসতে শুরু করলো। গাছের আড়ালে লুকিয়ে আর সম্ভব হচ্ছে না। চপার আসার সাথে সাথে আমরা দৌড়ানো শুরু করলাম।
- Capt Haris, the LZ is too hot, run & grab the ladder.
পাইলটের কথা অনুযায়ী আমরা দৌড়ে লাফ দিয়ে ল্যাডার ধরার জন্য ছুটলাম। এমন সময় ক্যাপ্টেন নাজিম সেই ডকুমেন্টটা ছুড়ে দেয়ার জন্য বের করলো!
- স্যার, আপনি এটা করতে পারেন না, এতে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। আমি বললাম।
- রাফি আমাকে শিখাতে এসো না কি করলে ভাল হবে!
- আমি এটা হতে দেব না স্যার।
এই বলে উনার হাত থেকে আমি ফাইলটা কেড়ে নিলাম। তাড়াতাড়ি করে লাফ দিয়ে ল্যাডারে উঠলাম। ক্যাপ্টেন নাজিম এবং ক্যাপ্টেন হারিস আমার নিচে! ক্যাপ্টেন রুহুল লাফ দিবেন এমন সময় তার হাতে এবং পায়ে বুলেট লাগলো!! সাথে সাথে মাটিতে পরে গেলেন তিনি! উঠতে পারলেন না আর। আমি অনেক চিৎকার করলাম ক্যাপ্টেন রুহুলের মানসিক শক্তি বারানোর জন্য কিন্তু কিছুই হল না! শেষ মুহূর্তে তিনি যতটূকূ পারেন ততটুকু গুলি চালাতে লাগলেন। আমি উপর থেকে দেখে গেলাম ক্যাপ্টেন রুহুলের মৃত্যু!!
- রাফি, ফাইল আমাকে দাও বলছি। ক্যাপ্টেন নাজিমের হুকুম
- রাফি তোমার সিনিয়র তোমাকে আদেশ করেছে, এতে দেশের মত মঙ্গল হবে। ক্যাপ্টেন হারিসও তাল মিলালো নাজিমের সাথে! কিন্তু আমি আমার কথায় অটুট।
- Go to hell my Seniors...
এই বলে রিভলভার বের করে নিচে ল্যাডারের দুই প্রান্তে দুটো গুলি করলাম!
- রাফিইইই!!!
ছিড়ে গেল ল্যাডার এবং ক্যাপ্টেন হারিস ও ক্যাপ্টেন নাজিম সুইজারল্যান্ডের ঘন জঙ্গলে পরে গেলেন!! দেশের জন্য এই ফাইলটা আমার কাছে খুবই দামি। আস্তে আস্তে উপরে উঠলাম। তারপর চপারে উঠে বাকি সদস্যরা আমাকে ফার্স্ট এইড দিতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। ধীরে ধীরে আমার চোখটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল যেন কত বছর ঘুমাইনি!!

তারপর যখন চোখ খুললাম, খুলেই দেখি চপারের অন্যান্য সদস্যরা আমার আশেপাশে আছে। মাস খানেকের বিশ্রাম দরকার। মেজর ওসমান সেই ফাইল পেয়ে অঢেল খুশি হয়েছিল সেদিন। একমাস পর আমার দেশে ফেরা হয়। বীরত্ব ও দেশপ্রেম এবং দেশের প্রতি দায়িত্ব দেখে পরবর্তীতে আমি পুরস্কৃত হই এবং লেফটেন্যান্ট থেকে ক্যাপ্টেনে পদোন্নতি হয়। এরপর থেকে আমি নতুন জীবন পাই। আমার ইচ্ছা বাকি জীবনটাও দেশের স্বার্থে কাজে লাগাবো।


২৮শে জুলাই, ২০১১
সকাল ৭টা

- তারমানে, নাজিম এই কারণে আপনার উপর ক্ষিপ্ত এবং প্রতিশোধ নিতে চায়?
- হতে পারে বাবুল।
- যদি তাই হয় তবে সে নাসিরকে মারবে কেন? পিটার কৌতূহলী প্রশ্ন।
- মতামতে তারতম্য হলে কেউ আর আপন থাকে না পিটার। নাসিরের সাথেও এমনটা হয়েছে।
একটু থেমে ক্যাপ্টেন রাফি আবারও বললেন,
- দুইটা কারণ হতে পারে নাসিরের মার্ডামের পিছনে,

১.
নাজিমের সাথে কোন ডিলে সমস্যা হওয়ায় নাসিরের মার্ডার হয়েছে..

২.
আমাদের হাতে ধরা পরে সকল তথ্য ফাঁস করার চেয়ে মেরে ফেলাই ভাল হবে।
"ক্যাপ্টেন নাজিম, আমিই আপনাকে মারবো, যেখানেই দেখা হোক!!" ক্যাপ্টেন রাফির তেজি গলার প্রতিশ্রুতি!


চলবে


লেখা: Dorponer Protibimbo

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.