নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবতে ভালবাসি, সেই ভাবনা যদি কোনো ঘটনায় মিলে যায় তবে তাকে লিখতে ভালবাসি! সেই লেখায় যদি কেউ বিন্দুমাত্র উপকৃত হয় তবে তাতেই আমার খুশি, আমি লেখাকে ভালবাসি।

দর্পণের প্রতিবিম্ব

প্রেমিকার চিরশত্রু

দর্পণের প্রতিবিম্ব › বিস্তারিত পোস্টঃ

"CLOSE CALL"

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪১




১ম পর্ব


আর্ম ফোর্স হাসপাতালে বসে আছি। ক্যাপ্টেন রাফির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। করিডোরে হাটছি আর ভাবছি শত্রুপক্ষ কতটা ভয়ানক ছিল যে ক্যাপ্টেন রাফির মত একজন দক্ষ আর স্পেশাল অফিসারকে নিশানা লাগানোর সাহস পায়! এমন সময় কর্তব্যরত ডাক্তার জন এসে বললেন, "লেফটেন্যান্ট বাবুল, ক্যাপ্টেন রাফি আপনার সাথে দেখা করতে চান।" আমি দৌড়ে উনার কেবিনে চলে গেলাম,
- এখন কেমন আছেন স্যার?
- গত তিনদিনের চেয়ে ভাল আছি বাবুল। নিউজ দেখেছো? জার্নালিস্টরা তো আমাদের টিমের নাম ধুয়ে দিচ্ছে!
- স্যার, দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, সবই তার ইচ্ছা।
- না বাবুল সবই তার ইচ্ছা না। প্রথমত উপরের কেউ আমাদের সাপোর্টে নেই তারপর দুইজন আন্ডারকভার এজেন্ট আততায়ীর হাতে নির্মম ভাবে মারা যেতে পারে! এজেন্টদের সাথে সপ্তাহের বেশি হয়ে যাচ্ছে কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না। ওরা টের না পেলেই ভাল। তারা যেখানেই থাক আল্লাহ যেন তাকে সুরক্ষিত রাখে।
- ইনশাআল্লাহ স্যার, সব ঠিক হবে।


১লা জুন, ২০১০
দুপুর ১টা,
পঞ্চগড়..

চোখ খুলেই গৌতম দেখতে পায় অন্ধকার একটা রুমে সে চেয়ারের সাথে বাধা অবস্থায় বসে আছে! মাথার ওপরে ৩০ ওয়াটের একটা বাতি ঝুলছে। রুমটা তার কাছে বেশ পরিচিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখানে সে অনেকবার এসেছে। ডানদিকে তাকিয়ে দেখে তার পাশে আরেকজন আছে কিন্তু আলো তার মুখ পর্যন্ত যাচ্ছে না! তারা দুজন একই অবস্থায় বাধা আছে! তার বুঝতে বাকি রইলো না যে তার পরিচয় ফাঁস হয়ে গেছে! হঠাৎ কেউ একজন টিউবলাইট গুলো জালালো। দরজা খুলে মুখোশ পড়া দুইজন লোক ঢুকে চেয়ারে বসলো। গৌতম তাদের কোনভাবেই চিনতে পারছে না। তাদের সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা। গৌতম বুঝতে পেরেছে তার সাথে এখন কি ঘটবে!

১০ ঘন্টা আগে,
কুমিল্লা,

প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে, এরমধ্যে মামুন এবং তার সঙ্গীরা বসে সিগারেট টানছিলেন। রাত তখন প্রায় ৪টার মত, সিকিউরিটি ইন চার্জ এসে বললেন ছয়জনের একটি সেনাদল আমাদের ঘাটিতে প্রবেশ করেছে এবং সবাই সাইলেন্সার অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছে! কথাটা শুনেই লিডার জামশেদ সবাইকে সবার পজিশনে যাওয়ার আদেশ দিলেন। মামুনের সাথে তিনজনকে পাঠালেন। নাসির ও রাসেল। নাসির সবসময় মামুনের সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এদিকে এমনিতেই বৃষ্টি হচ্ছে যার ফলে কিছুই দেখা যাচ্ছে না! মামুন তার টিমকে আদেশ দিলেন সামনে আগানোর জন্য। রাসেল সামনে আগাতেই একটা বুলেট এসে বিধে যায় তার বুকে! সাথে সাথে ছিটকে মামুনের সামনে পরে যায়! মামুনের বুঝতে বাকি রইলো না সৈন্যদল খুব কাছাকাছি এসে গেছে! আরেকজন সদস্যকে নিয়ে মামুন পিছিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। একটা কভারে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো। হঠাৎ দুইপক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণ শুরু হল। সৈন্যদল বিভক্ত হয়ে গেল। এই ছয়জন সম্পূর্ণ একটা ঘাটিকে কোণঠাসা করে ফেলেছে! এরমধ্যে একটু একটু আগাতে শুরু করল মামুন ও নাসির। দশ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ ঘাটি সাফ সাফাই করে দিয়েছে তারা। এমন সময় মামুন "আঘাত" বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো! ওপাশ থেকেও "আঘাত" বলে ফিরতি উত্তর পাওয়া গেল। মামুন নাসিরকে মেরে তার হাতের বন্দুক নিয়ে নিল! ব্যথায় নাসির উঠে দারাতে পারছে না! মামুন একজন আন্ডারকভার লেফটেন্যান্ট অফিসার এবং যে টিম এসেছে এটা তার টিম। মামুন তার টিমকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এমন কাজের জন্য। এমন সময় নাসির হাসতে শুরু করলো! মামুনের টিমের ছয়জন হেলমেট/সেফটি গ্লাস সহ ইউনিফর্ম খুলে ফেললো! কিন্তু কাউকেই সে চিনতে পারছে না! নাসির হাসতে হাসতে বললো, "লেফটেন্যান্ট মামুন, এরা সবাই আমার লোক। আমার টিম!" নাসির আবারও বললেন, "আপনি কিংবা রাফি বা বাবুল কেউই আমার ধারে কাছে আসতে পারবেন না। একটুপর পুলিশ আর মিডিয়া এখানে আসবে, এই গভীর জংগলে! এখানে যাদের মৃত্যু হয়েছে এটা শুধু মাত্র একটা উদাহরণ..."
কথাটা শুনা মাত্রই মামুন নাসিরের গলা চেপে ধরে! নাসির মামুনের কপালে রিভলভার দিয়ে জোরে আঘাত করে! তারপর হাটু বরাবরা একটা গুলি করে। মামুন ব্যথায় কাতরাতে থাকে! "শুয়ারের বাচ্চা, এই নিরীহ লোক গুলা তোর কি ক্ষতি করছিল যে এদের মেরে ফেললি???" রেগে গিয়ে নাসিরকে বললো মামুন। নাসির শান্ত গলায় বললো, "মূর্খ ব্যক্তির অস্ত্রই হল গালাগাল করা। আচ্ছা মনে প্রশ্ন জাগে নি যে কিভাবে আমি খবর পেলাম?"
"আমি জিজ্ঞেস করলেও তুই বলবি না সে আমি জানি নাসির।" মামুন কাতরাতে কাতরাতে বললো। নাসির মামুনের কাছে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত স্বরে বললো, "অবশ্যই জানাবো তবে সেটা আপনার মৃত্যুর পর!"
এই বলে নাসির আবারও রিভলভার দিয়ে মামুনের মাথার পিছনে আঘাত করলো এবং সে মাটিতে লুটিয়ে পরলো! নাসিরের সেনারা মামুনের বডি তুলে গাড়িতে রেখে দিল এবং দ্রুত সেখান থেকে চলে গেল।


একগ্লাস পানি টেবিলে রেখে মুখোশধারি লোকটি বললো, "পানি পাবেন যদি আমাদের সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেন।"
গৌতম বললো, "কিসের উত্তর?"
লোকটি বললো, "তুমি কার আন্ডারে কাজ কর?"
গৌতম ঠাট্টার হাসি হেসে বললো, "উত্তরের পুরষ্কার তো টর্চার ছাড়া অন্য কিছু হবে না।" একথা শোনার সাথে সাথে লোকটি তার শক্তপোক্ত হাত মুষ্টিবদ্ধ করে সজোরে একটা ঘুষি মেরে দিল গৌতমের গালে। ওমনি রক্ত বের হতে লাগলো তার গাল দিয়ে!
লোকটি বললো, "অতিরিক্ত কথা বললে এই পুরষ্কার ছাড়া অন্য কিছু দিতে পারবো না।"
- আমাকে মেরে ফেললে আপনারা অনেক আগেই মারতে পারতেন।
- হুম পারতাম কিন্তু যা আমরা চাচ্ছি সেটা না পাওয়া পর্যন্ত এসব টর্চার চলতে থাকবে। ভেবে নাও কি করবে তুমি? টর্চার নাকি আজাদি?
গৌতম আবারও হেসে বললো, "মিলিটারি ট্রেনিংয়ে যা শিখছি সেটার কাছে এমন ঘুষি কিছুই না।" লোকটি দুইজন প্রহরীকে ডেকে ডাক্তার আনতে বললো। প্রহরী ডাক্তার এনে দিল। লোকটি ডাক্তারকে বললেন, "তাকে একটা শক্তিশালী ইনজেকশন দিন এবং তার শরীরের প্রতি যত্ন রাখবেন যেন সে মারা না যায়।"
গৌতম তার পাশের জনকে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু পারছে না।
"ঠিক আছে গৌতম, লাঞ্চ করে আসি তারপর আবারও কথা হবে।"
এই বলে লোকটি চলে গেল। গৌতম দেখলো লোকটির হাতে আরবি হরফে কি কি যেন লেখা আছে। কিছুটা ট্যাটু টাইপের। একটুপর ডাক্তারও বের হয়ে গেল রুম থেকে! গৌতম ভাবছে কিভাবে এখান থেকে বের হওয়া যায়। সামনের টেবিলে চাকু আর একটা রিভলভার দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু পাশে যে আহত লোকটি আছে তাকেও এক নজর দেখা দরকার। কিছুক্ষণ চেষ্টা করলো হাত এবং পায়ের বাধন খোলার জন্য কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। হঠাৎ খুব জোরে একটা ঝাকি লাগলো গৌতমের সারা শরীরে! বুঝতে পারলো তাকে শক দেয়া হচ্ছে এবং সেটা কিছুক্ষণ পর পর দেয়া হবে! একটা আওয়াজ আসলো তার কানে, "কষ্ট হচ্ছে? কষ্ট হওয়ার জন্যেই তো শাস্তি দেয়া হয়।" গৌতম চিৎকার দিয়ে বললো, "সাহস থাকলে সামনাসামনি লড়াই কর, আয় হাতে হাতে লড়ি.. কাপুষের মত লুকিয়ে আছিস কেন?"
আরেকবার পুরো শরীর বিদ্যুতের প্রবাহে কেঁপে উঠল! প্রচণ্ড যন্ত্রণায় গৌতম কাতরাতে লাগলো! ধীরে ধীরে জ্ঞান হারাতে লাগলো গৌতম।


২৯শে মে, ২০১০
রাত ১০.৩০ মিনিট,
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট


ক্যাপ্টেন রাফির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল কুমিল্লার দিকে রওনা হয়। প্যারা কমান্ডোর আরেকটি দলের রওনা দেয়ার কথা সিলেট থেকে। কিছুক্ষণ আগে তাদের সাথে যোগাযোগ হয়েছিল ক্যাপ্টেন রাফির। তারা অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে রওনা হবে বলে জানিয়েছে। রাফির টিমের মধ্যে দুই জন স্নাইপার রয়েছে। প্রত্যেকেই সাইলেন্স ওয়েপন নিয়ে যাচ্ছে। কিছুদুর যেতেই শুরু হল ঝুম বৃষ্টি! ড্রাইভার গাড়ির গতি কমিয়ে দিল। ক্যাপ্টেন রাফি প্যারা কমান্ডরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেন না। এদিকে প্রচুর বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হচ্ছে! দমকা বাতাসে হঠাৎ তাদের গাড়ির সামনে গাছ ভেঙে পরে যায় এবং রাস্তা ব্লক হয় যায়! ড্রাইভার বললো, "স্যার, আমার মনে হয় এটা কোনো ট্র‍্যাপ! আমাদের সাথে হয়তো খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে!" ক্যাপ্টেন রাফিও সেটাই ভাবছে। এমন সময় গাড়ির ভিতর থেকে ঘড়ির টিকটিক শব্দ শুনা গেল সাথে লাল আলো ঘুরতে শুরু করলো! ক্যাপ্টেন রাফি চিৎকার দিয়ে বললো, "গাড়িতে বোম!! বের হয়ে যাও সবাই...." এই কথা শুনে সবাই তাড়াহুড়ো করে বের হতে লাগলো আর তার কিছুক্ষণ পর বোম ব্লাস্ট হল! ক্যাপ্টেন রাফি বেশি দুর যেতে পারেন নি যার ফলে বোমার তরঙ্গে ছিটকে অন্যদিকে পরে যান! হঠাৎ রাস্তার অপর পাশ থেকে গোলাগুলি শুরু হল। ক্যাপ্টেন রাফি উঠে দারানোর চেষ্টা করছেন কিন্তু পারছেন না। বৃষ্টির বর্ষণ আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে মনে হয়। এমন সময় কালো মুখোশধারি ছয় জন লোক এসে টিমের অন্যান্য সদস্যদের মেরে ফেলল। তাদের রক্তে রাস্তা লাল হয়ে গেল। বৃষ্টির পানিতে মিশে সেটা ধানক্ষেতে মিশে গেল। ক্যাপ্টেন রাফিকে মুখোশধারি লোকেরা খোজা শুরু করল কিন্তু পেল না কারণ তিনি ধান ক্ষেতের সাথে একেবারে মিশে ছিলেন। তার হাত পা থেকে অনবরত রক্ত ধরছে! শত্রুপক্ষ এদিকে আসলেই তিনি ধরা পরে যাবেন! কিন্তু তারা এদিকে এল না। অল্পখানিক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে অন্যদিকে চলে গেল। ক্যাপ্টেন রাফি আস্তে আস্তে রাস্তার দিকে আগাতে লাগলেন।


আর্ম ফোর্স হসপিটাল
দুপুর ২.৩৭ মিনিট,

"আমি কোনরকমভাবে এগিয়ে গেলাম গাড়ির কাছে। গিয়ে দেখলাম সবাই লাশ হয়ে গেছে। লেফট. আজাদের রিভলভার নিলাম। জানি না কখন আবার ফিরতি আক্রমণ হয়!" ক্যাপ্টেন রাফি আবারও বললেন, "আমি এখনও বুঝতে পারছি প্যারা কমান্ডো টিমের সাথে যোগাযোগ করতে পারি নি কেন?"
আমি বললাম, "স্যার একটা সুষ্ঠু তদন্তের দরকার।"
তিনি বললেন, "তদন্তে কোন লাভ হবে না, এটা আমাদেরই খুঁজে বের করতে হবে এবং সেটা কাউকে না জানিয়ে।" তিনি আবারও বললেন, "আমার টিম নিয়ে যাচ্ছিলাম আমাদের আন্ডারকভার এজেন্ট মামুনের কাছে। মামুনের ইনফরমেশন অনুযায়ী ওইদিন সেখানে আর্মসের একটা ডিল হওয়ার কথা ছিল। ওটাই ছিল মামুনের সাথে আমার শেষ কথা। আর কোন কথা হয় নি তার সাথে। বাবুল, তোমাকে একটা টিম দিচ্ছি, তাদের সাথে নিয়ে নাটোর যাও। আনসার নামের এক ব্যক্তি আছে, তাকে যেভাবে হোক জীবিত ধরে নিয়ে আসো। পেট্রোল পাম্পে সার্জেন্ট আনসারি আছেন। তোমার আর তোমার টিমের সকল ব্যবস্থা তিনি করে রেখেছেন। এই নাও ম্যাপ। যাবতীয় ডিটেইলস এখানে আছে।"


২রা জুন, ২০১০
রাত ১.৪১মিনিট,
বড়াইগ্রাম, নাটোর

"স্যার গাড়ি এরচেয়ে বেশি নিয়ে যেতে পারবো না। কাঁদায় আটকে গেলে আমরাই ফিরতে পারবো না।" আমি ড্রাইভারকে বললাম, "ঠিক আছে, দুইজন আমার সাথে আসুন আর আপনারা দুইজন ক্যাম্পের পিছনে একটা সেফ ডিস্টেন্সে আমাদের জন্য অপেক্ষা করবেন। আমাদের একে অপরকে চিনতে যেন কোনো ভুল না হয় সেজন্য সবুজ ফ্লার আমাদের কাধে ব্যবহার করবেন। আর কনফারেন্সে যোগাযোগ তো থাকছেই, গুড লাক।" আমি আমার সাথে সার্জেন্ট এলেক্স ও সার্জেন্ট পিটারকে নিলাম। ধীরে ধীরে আগাতে লাগলাম। বৃষ্টিতে সারাটা পথ কাঁদা দিয়ে মাখামাখি হয়ে আছে। সবাই ওয়েপনে সাইলেন্সার লাগিয়ে নিলাম। স্পায়িং মিশন, যেকোন অপ্রয়োজনীয় শব্দ আমাদের মৃত্যুর কারণ যেকোনো সময় হতে পারে! "লেফট. বাবুল, আমি সম্ভবত কারও মুভমেন্ট দেখতে পাচ্ছি!" এলেক্সকে বললাম, "সবাই নাইট ভিশন চালু করুন।" আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম সেখানে। "সার্জেন্ট আনসারি, শুনতে পাচ্ছেন?" ওপর পাশ থেকে আনসারির হ্যাঁসূচক কথা শোনা গেল। "কি অবস্থা আপনার এরিয়ার?" "এখানের এরিয়াতে সিকিউরিটি খুব টাইট। আর কাদার রাস্তায় হাটবেন না। মাইন থাকার সম্ভাবনা বেশি!" "ধন্যবাদ সার্জেন্ট আনসারি।" পিটার বললো,
স্যার ওরা মাইন পুঁতে রাখতেছে।
কয়জন আছে?
তিনজন।।
ওকে গুড, মুভ ফর এ বেটার ভিউ।
রেডি? তিনজনকে একই সময় মারতে হবে। নো ডাবল চান্স। থ্রি, টু, ওয়ান...
ডু ইট!!!

বুলেটগুলো একদম তাদের বুক এবং মাথা বরাবর লাগিয়েছি এবং তিনজনই মরে গেছে! আমরা সামনে আগাতে শুরু করলাম। লাশগুলোর কাছে গেলাম। দেখলাম সবেমাত্র তারা মাইন বিছানো শুরু করেছিল তার আগেই তাদের মেরে দিয়েছি। আবারও সামনে আগানো শুরু করলাম। সিকিউরিটি অফিসের দিকে আগাচ্ছি এমন সময় অফিসের দরজাটা খুলে একজন বের হল। সাথে সাথে আমরা মাটিতে শুয়ে পরলাম। লোকটা বাইরে এসে প্রস্রাব করা শুরু করলেন। "পিটার, ড্রপ হিম। মি এন্ড এলেক্স টেকিং কেয়ার অফ ক্যামেরাস। ডু ইট নাও।" লোকটার পাশের দুইটি সিসিক্যামেরা আগে নষ্ট করলাম তারপর লোকটাকে মারলাম। তাকে মারার সাথে সাথে অফিসরুম থেকে আরেকজন বের হল। তাকেও মেরে ফেললাম। যাক কাজ এবং রাস্তা দুটোই এবার সহজ হয়ে গেল! অফিসে গিয়ে সকল সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দিলাম। কয়েকটা ক্লেমোর মাইন দরজার সামনে এবং দশ বার হাত দুরত্বে পুতে রেখে দিলাম। আবারও এগিয়ে যাওয়া শুরু করলাম। আনসারের রুমের দরজার পাশে তিনজন দারালাম। এলেক্স দরজাটা হালকা খুলে একটা ফ্লাশব্যঙ্ক ছুড়ে দিল। তারপর আমরা ঢুকে আনসারকে ধরে ফেলি!
"ব্যাটা আরামের ঘুম দিচ্ছিলি না? চল তোর কিছু খাতির দারি করি শ্বশুরবাড়ি নিয়ে।" ক্ষোভে পিটার বললো। "এলেক্স সিরিঞ্জ দিন আর ওর মুখটা চেপে ধরুন।" বলার সাথে পিটার আর এলেক্স ওর হাত মুখ চেপে ধরলো। আনসার চিৎকার করার ব্যর্থ চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। সঠিক পরিমাণে ঘুমের ওষুধ সিরিঞ্জে নিয়ে দুই তিনবার টোকা দিলাম। এমন এক ভাব নিলাম যেন পৃথিবীর বড় কোনো এক ডাক্তার! এরপর সিরিঞ্জ শক্ত করে ধরে সজোরে ওর বুকে বসিয়ে দিলাম! কিছুক্ষণের মধ্যে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো! "এটাতো আপনি একাই করতে পারতেন বাবুল!" এলেক্স বললো। আমি বললাম, "আরে বাদ দিন তো। আমাদের এত কষ্ট দিল আর আমি এত সহজে ইনজেকশন পুশ করব? নো, নেভার..." এমন সময় সার্জেন্ট পিটার বললো, "লেফট. বাবুল, এনিমি পেট্রোল! আমাদের কাছাকাছি এসে পরেছে!"
"ওকে, পিটার ওকে কাধে নিয়ে নিন। আপনাকে কভার করবো আমরা। এলেক্স, যাওয়ার সময় চার্জ সেট করে দিবেন যেন শত্রুপক্ষ আমাদের কাছে না আসতে পারে! লেটস গো" আমরা বের হলাম। আনসারের লোকজন তো টর্চ নিয়ে খোজা শুরু করে দিয়েছে! "লেফটেন্যান্ট বাবুল, ডু ইউ কপি?"
"ক্যাপ্টেন রাফি!!! কপি স্যার।"
"আমি একটা চপার পাঠিয়েছি যেটা পৌঁছাতে সাত আট মিনিট লাগবে। সে পর্যন্ত সার্ভাইভ করুন।" আমি বললাম আনসারকে সড়কপথে নিয়ে যাবো কিন্তু ক্যাপ্টেন বললেন সেখানে ইতোমধ্যে আনসারের সৈন্যবাহিনী ট্র্যাপ রেডি করে রেখেছে! "সার্জেন্ট আনসারি, আমাদের সাথে জয়েন দিন। এক্ষুণি বের হন সেখানে থেকে!"
"রজার দ্যাট, উই আর মুভিং।"
"এলেক্স চার্জ বসিয়ে দিন।" গাছগাছালিতেও লাগান। কোন কিছু বাদ রাখবেন না।" এমন সময় একটা বুলেট আনসারের পায়ে বিঁধল!
"ওয়েপনস ফ্রি, রিটার্ন ফায়ার!"
আমি এবং এলেক্স অতর্কিত গুলিবর্ষণ করা শুরু করলাম। "আনসারি, ওয়াটস ইয়্যর স্ট্যাটাস? ওভার।"
"মুভিং টুওয়ার্ডস ইউ স্যার"
গুলিবর্ষণ আরও বেশি হচ্ছে। এলেক্সকে চার্জগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলাম। সকল চার্জ একসাথে বিস্ফোরিত হওয়ায় কিছুটা চাপ কমলো! আমরা আবারও আগাতে লাগলাম। কিছুদুর পৌঁছে একটা স্থানে দারালাম। আনসারের পা থেকে টুপ টুপ করে রক্ত ঝরছে! যেভাবেই হোক সেটাকে বন্ধ করতে হবে। "এলেক্স ওর মুছে দিন। ওর রক্তের কারণেই আমরা আবার ধরা পরবো।" এলেক্সকে বলতে না বলতেই দেখি আরেক পাল সৈন্য লাইট নিয়ে তল্লাশি শুরু করে দিয়েছে! "লেফটেন্যান্ট বাবুল, মুভ, রাইট নাও। বিশাল পাল নিয়ে আসছে তারা।" সার্জেন্ট আনসারির কথায় আবারও আমরা চপারের কাছে যেতে লাগলাম।
চপারে উঠেই নির্বিচারে মিনিগান চালাতে শুরু করলাম। "ক্যাপ্টেন রাফি, উই গট আনসার!"
গুড জব টিম, এক্সিলেন্ট!
.
.
৫ই জুন, ২০১০
সেল নাম্বার ৫০৩

"স্যার, আনসার কিছুতেই মুখ খুলছে না!" ক্যাপ্টেন রাফি বললেন, "আমি দেখছি ওকে।" ক্যাপ্টেন রাফি এখন সুস্থ আছে। উনি গৌতম আর মামুনকে নিয়ে খুব চিন্তিত আছেন। ঘন্টাখানেক আনসারের ইন্টার্ভিউ নিয়ে সেল থেকে বের হলেন। হাতে দেখছি রক্ত মেখে আছে! তারমানে খাতিরদারি ভালই হয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "স্যার কোন খবর পেলেন?" "হুম একটা লোকেশন পেয়েছি। নীলফামারী তে নাসিরের ঘাটি। সে আছে কি না জানি না। তবে আমাদের এজেন্টের কোন খবর পেলাম না।" তিনি আবারও বললেন, "বাবুল তুমি এখানে থাকবে। আমাদের যখন যে তথ্য দরকার সব দিবে। আমি এবং ক্যাপ্টেন রাব্বি ও সার্জেন্ট ইউনুস যাবো নীলফামারী! অপারেশন ডে লাইট"


চলবে...

লেখা: Dorponer Protibimbo

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৩

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: খারাপ না। সামনের পর্বে দেখা যাক কি হয়।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৯

দর্পণের প্রতিবিম্ব বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.